শনিবার (১০ মে) রাত ২টা ৯ মিনিটে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে একটি বিমানঘাঁটির কাছের বাসিন্দা আহমাদ সুবহান প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন। জোরে কেঁপে ওঠে তার বাড়ির জানালাগুলো। ঠিক তখনই দক্ষিণ এশিয়া পৌঁছে যায় যুদ্ধের দোরগোড়ায়। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলা উত্তেজনার জেরে সেদিন ভোরে পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশকের শুরু হওয়া সবচেয়ে তীব্র লড়াই চরম আকার ধারণ করে। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল অঞ্চলটির আকাশে শুরু হয় যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রের আনাগোনা। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানান, শীর্ষ পারমাণবিক নীতিনির্ধারণী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করবেন তারা।
রাত ২টা থেকে ভোরে সংকটময় আট ঘণ্টার মধ্যেই ভারত পাকিস্তানের তিনটি বড় বিমানঘাঁটি ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর মধ্যে নূর খান বিমানঘাঁটিও ছিল। এটি আহমাদ সুবহানের মতো সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে ঘেরা ও রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। আমাদের রাজধানীর একেবারে কাছাকাছি নূর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার পর আমাদের জন্য প্রতিশোধ নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
প্রথম বিস্ফোরণের পর আহমাদ সুবহান ও তার স্ত্রী তিন সন্তানকে নিয়ে দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কী ঘটেছে। এর মধ্যেই আরেকটা বিস্ফোরণ হলো।’ হামলার সুনির্দিষ্ট সময় তিনি এখনো স্পষ্ট মনে রেখেছেন। কারণ, ঠিক তখনই তিনি ফোন করতে যাচ্ছিলেন।
শনিবারের ঘটনাবলির সূত্রপাত হয়েছিল এক সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে। তবে সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, এমন ঘোষণা দেওয়ার পর এ আশঙ্কা দূর হয়। রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানের ১৪ জন কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার এবং তিন দেশের রাজধানী থেকে প্রকাশিত সরকারি বিবৃতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।
এসব সূত্র তুলে ধরে, কীভাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি দ্রুতই বিপজ্জনক রূপ ধারণ করে; সঙ্গে পর্দার আড়ালে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চলে। এই তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তান সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১০ মে রাতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নূর খান ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এটি এমন এক স্থান, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটির সামরিক সদর দপ্তর অবস্থিত।
আহমাদ সুবহান ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তার বলেন, নূর খান বিমানঘাঁটিতে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালানো হয়।
এ হামলায় দুটি ছাদ ধসে পড়ে এবং একটি জ্বালানি সরবরাহকারী বিমানের হ্যাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘাঁটি পরিদর্শনকারী এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, হামলার সময় বিমানটি আকাশে ছিল। তবে ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা গত রোববার সাংবাদিকদের জানান, নূর খান ঘাঁটির একটি অপারেশন কমান্ড সেন্টারে হামলা চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের রাজধানীর একেবারে কাছাকাছি নূর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার পর আমাদের জন্য প্রতিশোধ নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।’ এ ঘাঁটিতে (নূর খান বিমানঘাঁটি) হামলার ঘটনা ভারতের লক্ষ্য-অভিপ্রায়ের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক ছিল বলে ধরা যায়। দুই দেশকেই এ বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে এমন একটি সংঘাত পারমাণবিক রূপ না নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধরে নেয়া ভুল হতে পারে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা সামরিক সংস্থার কাছ থেকে মাত্র এক মাইলের দূরত্বে নূর খান বিমানঘাঁটি অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারির মতে, এই ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ভারতের লক্ষ্য অভিপ্রায়ের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক ছিল বলে ধরা যায়। দুই দেশকেই এ বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে এমন একটি সংঘাত পারমাণবিক রূপ না নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধরে নেয়া ভুল হতে পারে।
‘আপনি যদি রুশ রুলেট খেলেন (এক ধরনের জুয়া) ও ধরা খাওয়া থেকে বেঁচে যান, তার মানে এই নয় যে একই কাজ আবার করাই ঠিক হবে’, বলেন ক্ল্যারি। এসব বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের লিখিত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র এ সংঘাত নিরসনে দেশটির ভূমিকা নিয়ে রয়টার্সের করা প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিলেও বলেন, দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়লে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য তা মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারত।
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
শনিবার (১০ মে) রাত ২টা ৯ মিনিটে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে একটি বিমানঘাঁটির কাছের বাসিন্দা আহমাদ সুবহান প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন। জোরে কেঁপে ওঠে তার বাড়ির জানালাগুলো। ঠিক তখনই দক্ষিণ এশিয়া পৌঁছে যায় যুদ্ধের দোরগোড়ায়। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলা উত্তেজনার জেরে সেদিন ভোরে পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশকের শুরু হওয়া সবচেয়ে তীব্র লড়াই চরম আকার ধারণ করে। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল অঞ্চলটির আকাশে শুরু হয় যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্রের আনাগোনা। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানান, শীর্ষ পারমাণবিক নীতিনির্ধারণী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করবেন তারা।
রাত ২টা থেকে ভোরে সংকটময় আট ঘণ্টার মধ্যেই ভারত পাকিস্তানের তিনটি বড় বিমানঘাঁটি ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর মধ্যে নূর খান বিমানঘাঁটিও ছিল। এটি আহমাদ সুবহানের মতো সাধারণ মানুষের বাড়িঘরে ঘেরা ও রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। আমাদের রাজধানীর একেবারে কাছাকাছি নূর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার পর আমাদের জন্য প্রতিশোধ নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
প্রথম বিস্ফোরণের পর আহমাদ সুবহান ও তার স্ত্রী তিন সন্তানকে নিয়ে দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কী ঘটেছে। এর মধ্যেই আরেকটা বিস্ফোরণ হলো।’ হামলার সুনির্দিষ্ট সময় তিনি এখনো স্পষ্ট মনে রেখেছেন। কারণ, ঠিক তখনই তিনি ফোন করতে যাচ্ছিলেন।
শনিবারের ঘটনাবলির সূত্রপাত হয়েছিল এক সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে। তবে সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, এমন ঘোষণা দেওয়ার পর এ আশঙ্কা দূর হয়। রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানের ১৪ জন কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার এবং তিন দেশের রাজধানী থেকে প্রকাশিত সরকারি বিবৃতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।
এসব সূত্র তুলে ধরে, কীভাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে শত্রুতাপূর্ণ পরিস্থিতি দ্রুতই বিপজ্জনক রূপ ধারণ করে; সঙ্গে পর্দার আড়ালে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চলে। এই তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তান সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১০ মে রাতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নূর খান ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এটি এমন এক স্থান, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটির সামরিক সদর দপ্তর অবস্থিত।
আহমাদ সুবহান ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তার বলেন, নূর খান বিমানঘাঁটিতে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ড্রোন দিয়ে আক্রমণ চালানো হয়।
এ হামলায় দুটি ছাদ ধসে পড়ে এবং একটি জ্বালানি সরবরাহকারী বিমানের হ্যাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘাঁটি পরিদর্শনকারী এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, হামলার সময় বিমানটি আকাশে ছিল। তবে ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা গত রোববার সাংবাদিকদের জানান, নূর খান ঘাঁটির একটি অপারেশন কমান্ড সেন্টারে হামলা চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের রাজধানীর একেবারে কাছাকাছি নূর খান বিমানঘাঁটিতে হামলার পর আমাদের জন্য প্রতিশোধ নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।’ এ ঘাঁটিতে (নূর খান বিমানঘাঁটি) হামলার ঘটনা ভারতের লক্ষ্য-অভিপ্রায়ের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক ছিল বলে ধরা যায়। দুই দেশকেই এ বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে এমন একটি সংঘাত পারমাণবিক রূপ না নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধরে নেয়া ভুল হতে পারে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা সামরিক সংস্থার কাছ থেকে মাত্র এক মাইলের দূরত্বে নূর খান বিমানঘাঁটি অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারির মতে, এই ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ভারতের লক্ষ্য অভিপ্রায়ের তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক ছিল বলে ধরা যায়। দুই দেশকেই এ বার্তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে এমন একটি সংঘাত পারমাণবিক রূপ না নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধরে নেয়া ভুল হতে পারে।
‘আপনি যদি রুশ রুলেট খেলেন (এক ধরনের জুয়া) ও ধরা খাওয়া থেকে বেঁচে যান, তার মানে এই নয় যে একই কাজ আবার করাই ঠিক হবে’, বলেন ক্ল্যারি। এসব বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের লিখিত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র এ সংঘাত নিরসনে দেশটির ভূমিকা নিয়ে রয়টার্সের করা প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিলেও বলেন, দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়লে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য তা মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারত।