alt

আন্তর্জাতিক

গাজায় গণহত্যা চালাতে ‘ক্ষুধা’কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

গাজায় একটি ত্রাণবাহী গাড়ির সামনে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ভিড় -এএফপি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য মানুষকে অনাহারে রাখাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এমন মন্তব্যই করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

এছাড়া গাজায় শিশুদের জন্য পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল এখনও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধা’কে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যা ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যার অংশ।

লন্ডনভিত্তিক এই সংগঠনটি বলেছে, গাজার পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। টানা বোমাবর্ষণ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট — সব মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয় চরমে। অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড বলেছেন, “ইসরায়েল যে জীবনধারণের মৌলিক চাহিদাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করছে — তা আসলে শারীরিকভাবে ধ্বংস করে ফেলার এক কৌশল”। তার ভাষায়, এই অবস্থা গণহত্যার সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহায়তা নিতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন কখনও ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে, কখনও সাহায্যের খোঁজে যাওয়ার পথেই। তাদের ভাষায়, “ইসরায়েলের পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ ব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে একটা ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ক্ষুধার্ত মানুষ সেই ফাঁদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।” প্রতিদিন শত শত সাহায্যবাহী ট্রাক গাজার বাইরে অপেক্ষা করলেও ইসরায়েলের অনুমতি না মেলায় সেগুলো ঢুকতে পারছে না।

এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৬ শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। আরও বহু শিশু অসুখে ভুগে মারা গেছে, যেগুলো প্রতিরোধযোগ্য ছিল যদি সেখানে খাবার ও ওষুধ থাকত।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক নিহত

উদাহরণ হিসেবে ৪ মাস বয়সি জিনান ইসকাফি নামে এক শিশুর মৃত্যুর তথ্য তুলে ধরা হয়। ছোট্ট এই শিশুটি দুধের অভাবে অত্যন্ত পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে মারা যায়। গাজা শহর ও খান ইউনিসের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন যে শিশুরা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আসছে, তাদের প্রায় ১৫ শতাংশের মধ্যে গুরুতর বা মাঝারি অপুষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, “প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও অনেক শিশু আবার অসুস্থ হয়ে ফিরছে, কারণ ক্যাম্পের পরিস্থিতি আরও খারাপ।” এছাড়া চিকিৎসকরাও বিপদে রয়েছেন। নিজেরাই বাস্তুহারা ও অপুষ্টিতে ভোগা অনেক চিকিৎসক তাদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন। অ্যামনেস্টি বলেছে, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু ইসরায়েলের গণহত্যা থামাতেই ব্যর্থ নয়, বরং তারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চলতে দিচ্ছে।” সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের জন্য সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে বাডুজ্য ও বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং যেসব ইসরায়েলি কর্মকর্তা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।

এদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত মানবিক সংগঠন গাজা হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনকে (জিএইচএফ) নিয়ে বিতর্ক দিনে দিনে বাড়ছেই। সংস্থাটির ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে কীভাবে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন সংস্থাটির সাবেক এক নিরাপত্তা ঠিকাদার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি জানান, কোনো কারণ ছাড়াই ত্রাণ নিতে আসা অভুক্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।

উদাহরণ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। জানান, শুধু ত্রাণকেন্দ্র ছাড়তে দেরি হচ্ছিল বলে একদল নারী, শিশু আর বৃদ্ধের ওপর মেশিনগান দিয়ে গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি সেনারা। তিনি বলেন, ‘যখন নারী-শিশু-বৃদ্ধদের ওপর গুলি চালানো হলো, তখন সেখানে থাকা আরেকজন ঠিকাদার, যিনি বের হওয়ার পথের ওপরে একটি উঁচু মাটির বাঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি ভিড়ের দিকে টানা ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি চালান। একজন ফিলিস্তিনি পুরুষ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন ঠিকাদার বলল, দারুণ! মনে হচ্ছে তুমি একটা স্কোর করেছ! এরপর তারা এ ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করতে শুরু করে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ঠিকাদার বিবিসিকে বলেন, তিনি জিএইচএফ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা এটিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। তাদের ভাষ্য ছিল—হয়তো ফিলিস্তিনি ওই লোকটি অসাবধানতাবশত পড়ে গেছে, অথবা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। বিবিসি এ বিষয়ে জিএইচএফের কাছে জানতে চাইলে তারা তা পুরোপুরি অস্বীকার করে। তাদের দাবি—জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে কখনো বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি।

শিকাগোতে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৪

ছবি

তালেবান সরকারকে প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতি

ছবি

চীনের হামলা মোকাবিলায় ব্যাপক যুদ্ধ প্রস্তুতি তাইওয়ানের

গুপ্তচর সন্দেহ, হাজার হাজার আফগানকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান

গাজার মানুষ নিরাপদে থাকুক, এটাই চাই : ট্রাম্প

ছবি

ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’-এ কী আছে

ছবি

কংগ্রেসে উতরে গেল ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’

ছবি

তালেবান সরকারকে প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল রাশিয়া

ছবি

র‌্যাপারের অ্যালবাম রিলিজ অনুষ্ঠানে রক্তক্ষয়ী হামলা, পালালো হামলাকারীরা

ছবি

ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ যে প্রভাব ফেলবে যুক্তরাষ্ট্রে

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ২ বছর পিছিয়ে গেছে : পেন্টাগন

ছবি

গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে

মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় ইউক্রেন

গুপ্তচর সন্দেহে বিপুলসংখ্যক আফগানকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান

ছবি

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ, বহু দেশে ‘রেড অ্যালার্ট’

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দুই বছর পিছিয়ে গেছে: পেন্টাগন

ছবি

বালি উপকূলে ফেরি ডুবি, চারজনের মৃত্যু

ছবি

‘গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি ইসরায়েল’

তৃতীয় দফা ভোটেও জয়, জোহরান এখন নিউইয়র্ক সিটির আনুষ্ঠানিক মেয়র প্রার্থী

ছবি

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের বড় ঘোষণা

মুসলিম দেশ কাজাখস্তানে বোরকা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ

ইরান ভ্রমণে আবারও নাগরিকদের সতর্ক করল চীন

ছবি

হরমুজ প্রণালিতে ইরানের মাইন পাতার প্রস্তুতি, উদ্বেগে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

গাজায় ৬০ দিনের অস্ত্রবিরতিতে রাজি ইসরায়েল: ট্রাম্প

ছবি

তেলেঙ্গানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ: নিহত ৪৪, নিখোঁজ ১২ শ্রমিক

ছবি

আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব নিল পাকিস্তান

ফোনালাপ ফাঁসের জেরে বরখাস্ত থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র

ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৩৪

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া কতদূর

ছবি

সীমান্ত বিরোধ নিয়ে অডিও ফাঁস: থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত

ছবি

ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানের হামলা থেকে বাদ গেল না ক্যাফেও, গাজায় এক দিনে নিহত ৯৫

ছবি

ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ: বিনিয়োগ প্রত্যাহার করল নরওয়ের বৃহৎ পেনশন কোম্পানি কেএলপি

ছবি

‘শুকিয়ে যাচ্ছে কাস্পিয়ান সাগর, দেখা যায় খালি চোখেও’

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্ত করার দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ

tab

আন্তর্জাতিক

গাজায় গণহত্যা চালাতে ‘ক্ষুধা’কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

গাজায় একটি ত্রাণবাহী গাড়ির সামনে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ভিড় -এএফপি

শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য মানুষকে অনাহারে রাখাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এমন মন্তব্যই করেছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

এছাড়া গাজায় শিশুদের জন্য পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল এখনও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধা’কে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যা ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যার অংশ।

লন্ডনভিত্তিক এই সংগঠনটি বলেছে, গাজার পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। টানা বোমাবর্ষণ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট — সব মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয় চরমে। অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড বলেছেন, “ইসরায়েল যে জীবনধারণের মৌলিক চাহিদাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করছে — তা আসলে শারীরিকভাবে ধ্বংস করে ফেলার এক কৌশল”। তার ভাষায়, এই অবস্থা গণহত্যার সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে।

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহায়তা নিতে গিয়ে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন কখনও ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে, কখনও সাহায্যের খোঁজে যাওয়ার পথেই। তাদের ভাষায়, “ইসরায়েলের পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ ব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে একটা ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ক্ষুধার্ত মানুষ সেই ফাঁদে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।” প্রতিদিন শত শত সাহায্যবাহী ট্রাক গাজার বাইরে অপেক্ষা করলেও ইসরায়েলের অনুমতি না মেলায় সেগুলো ঢুকতে পারছে না।

এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৬ শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। আরও বহু শিশু অসুখে ভুগে মারা গেছে, যেগুলো প্রতিরোধযোগ্য ছিল যদি সেখানে খাবার ও ওষুধ থাকত।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক নিহত

উদাহরণ হিসেবে ৪ মাস বয়সি জিনান ইসকাফি নামে এক শিশুর মৃত্যুর তথ্য তুলে ধরা হয়। ছোট্ট এই শিশুটি দুধের অভাবে অত্যন্ত পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে মারা যায়। গাজা শহর ও খান ইউনিসের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন যে শিশুরা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় আসছে, তাদের প্রায় ১৫ শতাংশের মধ্যে গুরুতর বা মাঝারি অপুষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, “প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও অনেক শিশু আবার অসুস্থ হয়ে ফিরছে, কারণ ক্যাম্পের পরিস্থিতি আরও খারাপ।” এছাড়া চিকিৎসকরাও বিপদে রয়েছেন। নিজেরাই বাস্তুহারা ও অপুষ্টিতে ভোগা অনেক চিকিৎসক তাদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন। অ্যামনেস্টি বলেছে, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু ইসরায়েলের গণহত্যা থামাতেই ব্যর্থ নয়, বরং তারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চলতে দিচ্ছে।” সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের জন্য সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে বাডুজ্য ও বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং যেসব ইসরায়েলি কর্মকর্তা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।

এদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত মানবিক সংগঠন গাজা হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনকে (জিএইচএফ) নিয়ে বিতর্ক দিনে দিনে বাড়ছেই। সংস্থাটির ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে কীভাবে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন সংস্থাটির সাবেক এক নিরাপত্তা ঠিকাদার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি জানান, কোনো কারণ ছাড়াই ত্রাণ নিতে আসা অভুক্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা।

উদাহরণ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট ঘটনা তুলে ধরেন তিনি। জানান, শুধু ত্রাণকেন্দ্র ছাড়তে দেরি হচ্ছিল বলে একদল নারী, শিশু আর বৃদ্ধের ওপর মেশিনগান দিয়ে গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি সেনারা। তিনি বলেন, ‘যখন নারী-শিশু-বৃদ্ধদের ওপর গুলি চালানো হলো, তখন সেখানে থাকা আরেকজন ঠিকাদার, যিনি বের হওয়ার পথের ওপরে একটি উঁচু মাটির বাঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি ভিড়ের দিকে টানা ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি চালান। একজন ফিলিস্তিনি পুরুষ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন ঠিকাদার বলল, দারুণ! মনে হচ্ছে তুমি একটা স্কোর করেছ! এরপর তারা এ ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করতে শুরু করে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ঠিকাদার বিবিসিকে বলেন, তিনি জিএইচএফ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা এটিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। তাদের ভাষ্য ছিল—হয়তো ফিলিস্তিনি ওই লোকটি অসাবধানতাবশত পড়ে গেছে, অথবা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। বিবিসি এ বিষয়ে জিএইচএফের কাছে জানতে চাইলে তারা তা পুরোপুরি অস্বীকার করে। তাদের দাবি—জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে কখনো বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি।

back to top