alt

মিডিয়া

আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী কাল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আগামীকাল ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, দৈনিক ‘সংবাদ’র সাবেক প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী।

১৯২৩ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টা জাতীয় প্রেসক্লাবে কেক কাট হবে। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি ঘোড়াশালে মিয়াবাড়িতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে; সকালে কোরান খতম, সকাল ১০টায় তার কবরে পুস্পস্তবক অর্পন , সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা, ১১টায় গরীবদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ, বাদ জুমা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং বাদ আসর কেক কাটা অনুষ্ঠান।

আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা।

তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির।

দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন।

সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’। দৈনিক সংবাদ-এ বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি তার এই আদর্শ লালন করে গেছেন।

কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এ দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার সক্রিয় অবদান রয়েছে।

শিক্ষা ও অন্য কর্মকান্ড :

অর্থনীতিতে সম্মানসহ বিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে ডাকসুর প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়াও ১৯৪২-৪৩ সালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ-শিবপুর) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

আহমদুল কবির অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৫১ সালে গ্যাটে সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি নিজের ব্যবসায় যোগদান করেন।

আহমদুল কবির তদানীন্তন পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আশির দশকে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সময়ে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন। রোমে ফাও-এর কনফারেন্সে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। ইইসি দেশগুলোতে তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার ‘সংবাদ’ অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং আহমদুল কবিরকে গ্রেফতার করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সংবাদ প্রকাশের জন্য অনেক প্রলোভন দেখায়; কিন্তু আহমদুল কবির পত্রিকা প্রকাশ করেননি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন এবং সংবাদ পুনঃপ্রকাশ করেন।

আহমদুল কবির ১৯৫৪ সালে সংবাদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে প্রধান সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

আহমদুল কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন। প্রয়াত আহমদুল কবিরের স্ত্রী লায়লা রহমান কবির দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তার বড় ছেলে আলতামাশ কবির ‘সংবাদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সম্পাদক, দ্বিতীয় ছেলে আরদাশির কবির দেশের বিশিষ্ট চা ব্যবসায়ী এবং একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার নিহাদ কবির সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

ছবি

কপিরাইট বিল পাস

ছবি

ওয়ার্ল্ড ভিশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন সংবাদ প্রতিবেদকসহ ৬ সাংবাদিক

ছবি

ওয়ার্ল্ড ভিশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন সংবাদ প্রতিবেদকসহ ৬ সাংবাদিক

ছবি

র‍্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেলেন করভি রাখসান্দ

ছবি

সাংবাদিক হাববিুর রহমান খান মারা গেছেন

ছবি

কক্সবাজার কণ্ঠ হোক গণমানুষের কন্ঠ: মতবিনিময় সভায় বক্তারা

ছবি

সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন পেছানোর সেঞ্চুরি

ছবি

জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. শাহজাহান মিয়া আর নেই

ছবি

কার্টুনিস্ট এমএ কুদ্দুস আর নেই

ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি তৈরি করছে

ছবি

পি কে হালদারের বান্ধবী নাহিদা রুনাইয়ের জামিন স্থগিত

ছবি

৯৯ বার পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

ছবি

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাদী, সাধারণ সম্পাদক মাহী

ছবি

কলকাতার ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবে বাংলাদেশের আম উৎসব

ছবি

সাংবাদিক নাদিম হত্যা: জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি সম্পাদক পরিষদের

এনবিজেএফ’র কমিটি গঠিত

ছবি

মোটরসাইকেল কবর দেওয়ার ঘটনা সাজানো নাটক

ছবি

ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন মেয়র তাপস

ছবি

৯৮ বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে চাপে সাংবাদিকেরা

ছবি

ঝালকাঠি জেলা সাংবাদিক সমিতি’র সভাপতি সালেহ আকন ও সম্পাদক মানিক লাল

ছবি

শাকিল আনোয়ার সভাপতি ও সাজ্জাত লতিফ সাধারণ সম্পাদক নির্াচিত

ছবি

সংবাদ-এর ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

ছবি

নওগাঁয় সংবাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

আরডিআরএফ’র নতুন নির্বাহী কমিটি গঠন

ছবি

নিউইয়র্কে ‘সাপ্তাহিক আজকাল’ নতুন সম্পাদনায় ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত হবে

ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবি সাবেক তথ্যমন্ত্রীর

ছবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি সম্পাদক পরিষদের

ছবি

৩১৯ বছরের পুরনো পত্রিকা উইনার জেইতুংয়ের প্রিন্ট বন্ধ হচ্ছে

ছবি

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে দিপু সভািতি ও জীবন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

ছবি

আরেক মামলায় জামিন পেলেন সাংবাদিক শামসুজ্জামান

ছবি

মোদি সরকারের পরিকল্পনায় ভারতের এডিটর্স গিল্ডের উদ্বেগ

ছবি

কারামুক্ত প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান

ছবি

জামিন পেলেন সাংবাদিক শামসুজ্জামান

ছবি

প্রথম আলো সম্পাদকের ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন

tab

মিডিয়া

আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী কাল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আগামীকাল ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, দৈনিক ‘সংবাদ’র সাবেক প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী।

১৯২৩ সালের এই দিনে নরসিংদীর ঘোড়াশালে মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আহমদুল কবিরের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টা জাতীয় প্রেসক্লাবে কেক কাট হবে। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি ঘোড়াশালে মিয়াবাড়িতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে; সকালে কোরান খতম, সকাল ১০টায় তার কবরে পুস্পস্তবক অর্পন , সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা, ১১টায় গরীবদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ, বাদ জুমা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং বাদ আসর কেক কাটা অনুষ্ঠান।

আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপসহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা।

তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির।

দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন।

আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন।

সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’। দৈনিক সংবাদ-এ বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি তার এই আদর্শ লালন করে গেছেন।

কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এ দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার সক্রিয় অবদান রয়েছে।

শিক্ষা ও অন্য কর্মকান্ড :

অর্থনীতিতে সম্মানসহ বিএ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯৪৫-৪৬ সালে ডাকসুর প্রথম সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়াও ১৯৪২-৪৩ সালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ-শিবপুর) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে নরসিংদী-২ (পলাশ) নির্বাচনী এলাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

আহমদুল কবির অর্থনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করার পর রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ায় যোগদান করেন এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ সালে তিনি পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন এবং ১৯৫১ সালে গ্যাটে সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি নিজের ব্যবসায় যোগদান করেন।

আহমদুল কবির তদানীন্তন পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আশির দশকে তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রী পার্টি গঠিত হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ছিলেন।

১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সময়ে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন। রোমে ফাও-এর কনফারেন্সে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। ইইসি দেশগুলোতে তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার ‘সংবাদ’ অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং আহমদুল কবিরকে গ্রেফতার করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সংবাদ প্রকাশের জন্য অনেক প্রলোভন দেখায়; কিন্তু আহমদুল কবির পত্রিকা প্রকাশ করেননি। স্বাধীনতার পরপরই তিনি জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন এবং সংবাদ পুনঃপ্রকাশ করেন।

আহমদুল কবির ১৯৫৪ সালে সংবাদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে প্রধান সম্পাদক হন এবং আমৃত্যু এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

আহমদুল কবির স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন। প্রয়াত আহমদুল কবিরের স্ত্রী লায়লা রহমান কবির দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তার বড় ছেলে আলতামাশ কবির ‘সংবাদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সম্পাদক, দ্বিতীয় ছেলে আরদাশির কবির দেশের বিশিষ্ট চা ব্যবসায়ী এবং একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার নিহাদ কবির সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।

back to top