টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে গেল ৭ ফেব্রুয়ারি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণার করে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর আগে ভারত টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।
বলা হচ্ছে, এখন দুই দেশেরই জিআই হয়েছে টাঙ্গাইল শাড়ি। তাহলে প্রকৃতপক্ষে টাঙ্গাইল শাড়ি কার, ভারত নাকি বাংলাদেশের? সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের দিনগুলোতে তিনি টাঙ্গাইল শাড়ি পরেছিলেন।
টাঙ্গাইলের শাড়ির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অলরেডি আমরা আবেদন করেছি। কয়েক দিন আমি সমান তালে টাঙ্গাইলের শাড়ি পরলাম। এই জন্য যে, যাতে দেখাতে পারি- এটা আমাদের। কাজেই এটা অন্য কেউ নিতে পারবে না।
এ সময় নিজের পরনে থাকা সফিপুরের শাড়ির আঁচল দেখিয়ে প্রশংসা করেন তিনি।
টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০২০ সালে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করে পশ্চিমবঙ্গের তন্তুবায়ী সমবায় সমিতি। পর্যবেক্ষণের নানা ধাপ পেরিয়ে গত ২ জানুয়ারি এর স্বীকৃতি দেয় ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্যাটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস বিভাগ। তাতে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমানের পণ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের শিল্প মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘বাংলার টাঙ্গাইল শাড়ি’ বা ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে একটি শাড়িকে জিআই স্বীকৃতি দেয়। ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও) এর কাছ থেকে অনুমোদনও পেয়ে যায় তারা।
বিষয়টি বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। টাঙ্গাইল বাংলাদেশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হওয়ার পরও ভারত কীভাবে তা নিজেদের পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পায়, সেট প্রশ্ন তোলেন শাড়ির ব্যবসায়ী, আইনজ্ঞ ও অধিকার কর্মীরা।
টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল আইডেনটিটি) ভারত নিয়ে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর প্যাটেন্ট, শিল্প নকশা ও ট্রেডমার্কে স্বীকৃতি প্রদান করে শিল্প মন্ত্রণালয়।
এরপর বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো উদ্যোগী হয়। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতির আবেদন করে। পরে তা অনুমোদন করে গেজেট প্রকাশ করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর।
এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়ি, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা ও গোপালগঞ্জের রসগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও সচিব জাকিয়া সুলতানা।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে শুক্রবার ডাকা সম্মেলনে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব নিয়ে সরকারের উদ্যোগের বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় সরকার প্রধানকে।
জামদানি ও টাঙ্গাইলের মত দেশীয় শাড়ির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুরাগের কথা তুলে ধরে ওই সাংবাদিক বলেন, “আমি ধারণা করি, আপনার পরনে এখনো টাঙ্গাইল শাড়ি।”
তখন তাকে শুধরে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সংবাদ সম্মেলনের জন্য তিনি গায়ে জড়িয়েছেন গাজীপুরের সফিপুর থেকে সংগ্রহ করা সিফন শাড়ি। হাসতে হাসতে এর নাম তিনি দিয়ে দেন ‘সফিপুর শিফন’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা আমাদের আনসার-ভিডিপির তৈরি করা। এটার নাম দিলাম সফিপুর শিফন। সবাই ফ্রেঞ্চ শিফনের প্রশংসা করে, এটার নাম দিলাম সফিপুর সিফন। ওরা শাড়ি তৈরি করে, আমি কিনে উপহার দিই। আজকে পরে আসলাম।”
সফিপুরে আনসার-ভিডিপির একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে পরনের শাড়িটি কেনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সফিপুর শিফন… কাজেই এটা বুঝতে হবে, আমি এ দেশের মাটি-মানুষের সাথে আছি। ফ্রান্স থেকে আমি আর পরি না।“
টাঙ্গাইল শাড়ি সবসময় পরার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “পেটেন্ট রাইটসের জন্য আমরা ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। আপনারা লক্ষ্য করবেন, কয়দিন আমি সমানতালে টাঙ্গাইল শাড়ি পরলাম এজন্য, যেন দেখাতে পারি- এটা আমাদের।“
শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে গেল ৭ ফেব্রুয়ারি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণার করে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর আগে ভারত টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।
বলা হচ্ছে, এখন দুই দেশেরই জিআই হয়েছে টাঙ্গাইল শাড়ি। তাহলে প্রকৃতপক্ষে টাঙ্গাইল শাড়ি কার, ভারত নাকি বাংলাদেশের? সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের দিনগুলোতে তিনি টাঙ্গাইল শাড়ি পরেছিলেন।
টাঙ্গাইলের শাড়ির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অলরেডি আমরা আবেদন করেছি। কয়েক দিন আমি সমান তালে টাঙ্গাইলের শাড়ি পরলাম। এই জন্য যে, যাতে দেখাতে পারি- এটা আমাদের। কাজেই এটা অন্য কেউ নিতে পারবে না।
এ সময় নিজের পরনে থাকা সফিপুরের শাড়ির আঁচল দেখিয়ে প্রশংসা করেন তিনি।
টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০২০ সালে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করে পশ্চিমবঙ্গের তন্তুবায়ী সমবায় সমিতি। পর্যবেক্ষণের নানা ধাপ পেরিয়ে গত ২ জানুয়ারি এর স্বীকৃতি দেয় ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্যাটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস বিভাগ। তাতে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমানের পণ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের শিল্প মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘বাংলার টাঙ্গাইল শাড়ি’ বা ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে একটি শাড়িকে জিআই স্বীকৃতি দেয়। ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও) এর কাছ থেকে অনুমোদনও পেয়ে যায় তারা।
বিষয়টি বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। টাঙ্গাইল বাংলাদেশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হওয়ার পরও ভারত কীভাবে তা নিজেদের পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পায়, সেট প্রশ্ন তোলেন শাড়ির ব্যবসায়ী, আইনজ্ঞ ও অধিকার কর্মীরা।
টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল আইডেনটিটি) ভারত নিয়ে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর প্যাটেন্ট, শিল্প নকশা ও ট্রেডমার্কে স্বীকৃতি প্রদান করে শিল্প মন্ত্রণালয়।
এরপর বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো উদ্যোগী হয়। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন ৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতির আবেদন করে। পরে তা অনুমোদন করে গেজেট প্রকাশ করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর।
এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়ি, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা ও গোপালগঞ্জের রসগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির সনদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও সচিব জাকিয়া সুলতানা।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে শুক্রবার ডাকা সম্মেলনে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব নিয়ে সরকারের উদ্যোগের বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় সরকার প্রধানকে।
জামদানি ও টাঙ্গাইলের মত দেশীয় শাড়ির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুরাগের কথা তুলে ধরে ওই সাংবাদিক বলেন, “আমি ধারণা করি, আপনার পরনে এখনো টাঙ্গাইল শাড়ি।”
তখন তাকে শুধরে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সংবাদ সম্মেলনের জন্য তিনি গায়ে জড়িয়েছেন গাজীপুরের সফিপুর থেকে সংগ্রহ করা সিফন শাড়ি। হাসতে হাসতে এর নাম তিনি দিয়ে দেন ‘সফিপুর শিফন’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা আমাদের আনসার-ভিডিপির তৈরি করা। এটার নাম দিলাম সফিপুর শিফন। সবাই ফ্রেঞ্চ শিফনের প্রশংসা করে, এটার নাম দিলাম সফিপুর সিফন। ওরা শাড়ি তৈরি করে, আমি কিনে উপহার দিই। আজকে পরে আসলাম।”
সফিপুরে আনসার-ভিডিপির একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে পরনের শাড়িটি কেনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সফিপুর শিফন… কাজেই এটা বুঝতে হবে, আমি এ দেশের মাটি-মানুষের সাথে আছি। ফ্রান্স থেকে আমি আর পরি না।“
টাঙ্গাইল শাড়ি সবসময় পরার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “পেটেন্ট রাইটসের জন্য আমরা ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। আপনারা লক্ষ্য করবেন, কয়দিন আমি সমানতালে টাঙ্গাইল শাড়ি পরলাম এজন্য, যেন দেখাতে পারি- এটা আমাদের।“