alt

জাতীয়

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘লাভজনক’ প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে যাদের প্রস্তাব বেশি লাভজনক হবে, সেটাই বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এবিষয়ে ভারত ও চীন দুই দেশই প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, ভারতও করবে। তবে বাংলাদেশ সবদিক বিবেচনা করে যাদেরটা লাভজনক হবে সেটাই নেবে।

ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। পরে শুরু হয় সাংবাদিকদের প্রশ্নপর্ব। সেখানে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি তিস্তার বিষয়টিও আসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে।

তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যারই তো সমাধান হয়ে গেল। তো সেটাই আমার জন্য সহজ হলো না? ভারত যখন এগিয়ে আসছে, আমরা যদি এটা করি, তাহলে পানি নিয়ে আর প্রতিদিন প্যাঁ প্যাঁ করতে হবে না।’

গঙ্গা-তিস্তা ইস্যুতে হাসিনা-মোদি আলোচনা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও পাঠিয়েছেন মমতা। চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, তাকে পাশ কাটিয়ে তিস্তা-গঙ্গা নিয়ে যে কাজ করা হচ্ছে এটিতে তার সায় নেই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য জানতে চান এক সাংবাদিক।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির যে চিঠি, সেটা তো তিনি লিখেছেন উনার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। এটা তো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এখানে আমার তো কিছু বলার নাই। এটা সম্পূর্ণ ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এভাবে আমার তো নাক গলানোর কোনো দরকার নাই। কিছু বলার দরকার নাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তায় আমরা প্রজেক্ট নিয়েছি। পুরো নদীটাকে ড্রেজিং করা, পাড় বাঁধানো, পানি সংরক্ষণ, সমস্ত বিষয় সেখানে আলোচনা হয়েছে এবং তিস্তা এবং গঙ্গার জন্য, বিশেষ করে গঙ্গা চুক্তির জন্য, ২০২৬ সালে ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, এরপর এটা যদি নবায়ন নাও হয়, চুক্তি কিন্তু অব্যাহত থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তির মেয়াদটা শেষ হবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, একটা টেকনিক্যাল গ্রুপ করা হবে। যেটা মমতা ব্যনার্জি বলেছেন, উনার ক্ষোভ যে উনার সঙ্গে আলোচনা করেনি, উনি তো ছিলেন না দিল্লিতে। আমি নিজেই তো যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, উনি ছিলেন না। থাকলে নিশ্চয় উনাকে নিয়ে আমরা আলোচনা করতাম। অন্তত আমি করতাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে যে কাউকে বাদ দেয়া হবে না। এখানে টেকনিক্যাল গ্রুপ আসবে, কথা বলবে, আলোচনা করবে, তারপর সমঝোতা হবে। আমার সঙ্গে সকলের সম্পর্ক ভালো। মমতা ব্যানার্জির সম্পর্কও খুব ভালো। আবার প্রাইম মিনিস্টার নরেন্দ্র মোদি, তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো। উনাদের সব দলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। এটুকু বলতে পারি যে ভারতের দল-মত নির্বিশেষে প্রত্যেকের সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক আছে।’

দেশ বিক্রির কথা বলে ‘পাকিস্তানের দালালরা’
বাংলাদেশের ভেতরে দিয়ে ভারতের রেল চলাচলের সুযোগ দেয়ার নামে ভারতের কাছে ‘দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমালোচনা হচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রী কীভাবে দেখছেন- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশ ‘বিক্রির’ গুজব যারা ছড়াচ্ছে, তারা পাকিস্তানের ‘দালাল’।

একাত্তরে স্বাধীনের যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না। এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, এটা মনে রাখা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন আছে, বিক্রির ওজনটা কীভাবে মাপছে? কোনো কিছু বিক্রি হলে তো ওজন মাপা হয়, এখন তো অবশ্য ইলেকট্রিক মেশিন আছে। আগে তো দাঁড়িপাল্লায় হতো, কিসে মেপে বিক্রি হচ্ছে আর বিক্রিটা হয় কীভাবে?’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না, কারণ আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি, এটা ভুলে গেলে চলবে? আর যে কষ্টটা আমরা ভোগ করি সেটা আমরা জানি। যারা বিক্রির কথা বলে তারা একাত্তর সালে পাকিস্তানের দালালি করেছে।’ ভারত নিয়ে জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার ‘মনোভাব’ নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা তো দেখেছি... ওপর দিয়ে ভারতবিরোধী কথা বলেছে আর ভারতে যেয়ে পা ধরে বসে থেকেছে, এগুলো আমার নিজের দেখা, জানা। এই ধরনের কথা বলার কোন অর্থ হয় না।’

ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, যত ছোট হোক আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আর সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং স্বকীয়তা বজায় রেখেই আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করছি। আজকে আমরা সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম। এতে সব থেকে বেশি লাভবান তো আমাদের দেশের মানুষ। তাদের যোগাযোগ করতে হয়, যেতে হয়। চিকিৎসার জন্য যায়, পড়াশোনার জন্য যায়, অন্যান্য কাজে যায়, হাট বাজার করতে যায়, আজমির শরিফে যায়, বিভিন্ন জায়গায় যায়, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রটাও তো আরও উন্মুক্ত হবে। কাজেই বিক্রি আমরা করি না, যারা কথা বলে তারাই বাঁচার জন্য অথবা ব্যবহার করুন আমাকে এই দিয়ে বসে থাকে।’

একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী- এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেল যতগুলো বন্ধ ছিল আমরা আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। ফলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। আমাদের ওই অঞ্চলের লোকজন উপকৃত হচ্ছে। তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ হচ্ছে। আর যে সমস্ত জিনিস আমাদের দেশে আনার সুযোগ হচ্ছে, অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কি চারিদিকে দরজা বন্ধ করে বসে থাকবে এটা হয় না। কোনো দেশ পৃথিবীতে এমন করে না।’ ট্রানজিট প্রসঙ্গে ইউরোপের উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডারই নাই। তাহলে কি একটা দেশ আরেকটা দেশের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।’

নোবেল পুরস্কারের আকাক্সক্ষা নাই
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শান্তিতে নোবেল প্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কাউকে ঈর্ষা করেন না। নোবেল পুরস্কারের আকাক্সক্ষাও তার নেই।

ড. ইউনূসকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, সরকার ইউনূসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সব যন্ত্রই ব্যবহার করেছে। এ বিষয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রতিবেদনটি তিনি পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আবার লিখেছে যে নোবেল প্রাইজের জন্য তার সঙ্গে আমার...আমার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। নোবেলের জন্য আমার কোনো আকাক্সক্ষাও নেই। আর লবিস্ট রাখার মতো টাকাও নেই। আমি কখনো ওটা চাইনি।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পার্বত্য চুক্তি যখন করি, তখন দেশে-বিদেশে অনেকে আমার জন্য লিখেছে। আমি তো কখনো তদবির করতে যাইনি। কী পেলাম, না পেলাম, ওগুলো আমার মাথার মধ্যেও নেই। যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একজন এমডি। তিনি যখন নোবেল প্রাইজ পান, তার সঙ্গে আমি কনটেস্ট করতে যাব কেন।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, অধ্যাপক ইউনূস ‘পয়সা’ খরচ করে এসব লেখাচ্ছেন। এর আগে বিবৃতির কথা বলে অনেকের নামে ‘বিজ্ঞাপন’ ছাপিয়েছেন।

বিতর্কের চ্যালেঞ্জ
গণমাধ্যমে আসা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের আদলে আলোচনায় আসার চ্যালেঞ্জ ড. ইউনূসকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘উনাকে জেলাসি করার কী আছে? সে আসুক না, মাঠে আসুক, চলুক আমার সঙ্গে। আমেরিকায় ডিবেট হয় না- আসুক, কথা বলব।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারও সাথে জেলাসি করে না, শেখ হাসিনা জাতির পিতার মেয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। তো, এই জায়গাটাই কেউ আসতে পারবে না। আর সেটাই আমার গর্ব।’

রাজনীতিতে তার ব্যর্থতার দায় কি আমার?
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠন নিয়েও শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বিরোধ’ হওয়ার কথা বলা হয়েছে টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে। ড. ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে সেখানে লেখার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক দল করতে গিয়ে ব্যর্থ হল কেন? সে যদি গ্রামের মানুষকে এত কিছু দিয়ে থাকে, সেই গ্রামের মানুষতো ঝাঁপিয়ে আসবে। আসেনি কেন? কারণ সুদের চাপে তারা মৃতপ্রায় ছিল। সেজন্য তাকে কেউ সাড়া দেয়নি। সেখানে সে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায়িত্ব কি আমার? আমিতো তখন জেলে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে অ্যারেস্ট করার পরে তিনিতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং প্রেসিডেন্টকে এ ডাবল প্লাস দিয়ে আসছে। আমার বিরুদ্ধে তো একটার পর একটা মামলা হচ্ছে। আমি যখন বিদেশে, আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেয়া হয়েছিল।’

বিদেশে ইউনূসের বিনিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে বিদেশে এত বিনিয়োগ করে আসছে, টাকাটা কোত্থেকে আসছে? কীভাবে কামাই করেছে এই টাকাটা? এটার বিনিয়োগ কী করে হল? এই প্রশ্নটা কি কেউ করেছে কখনো? কীসের টাকা? সেই জবাবটা দিক। একটা সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় চাকরি করা অবস্থায় সেই বিদেশে ব্যবসা করে। আমাদের আেইন কী বলে। তারপরও আমরা সবাই মিলেই তাকে তুলেছি এটা ঠিক। এখন সব কিছুর দোষ আমার।’

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে লেখে কীভাবে
শ্রম আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির ‘পক্ষ’ নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রতিবেদন ছাপানো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এখন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির পক্ষে এত কথা লেখে কীভাবে, ওই সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা-ইউরোপে কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তার সম্পত্তি সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে দেবে। এটাই তাদের নিয়ম। সেটা দেখেন না কেন? প্রতিবার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবার মামলা করে তার কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করতে হচ্ছে। যারা লিখেছে, তারা এই অনুসন্ধানটা করুক।’

ড. ইউনূসের মাইক্রোক্রেডিট সামিট আন্তর্জাতিকভাবে খুব একটা গ্রহণযোগ্য ছিল না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যশোরের যে এলাকায় হিলারি ক্লিনটনকে নিয়ে মাইক্রোক্রেডিট দিয়েছিল, সেই পরিবারগুলি কোথায় এখন? খোঁজ করেন। জমিজমা সব বিক্রি করে ওখান থেকে তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়, অনেকে আত্মহত্যা করেছে এই সুদের চাপে।’

আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব
ব্যাংক খাতের নানা সমস্যা দূর করতে ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠনের কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টর কেউ ভালো চালাচ্ছে। কেউ খারাপ চালাচ্ছে। অনেকে ঠিকমত চালাতে পারেন না। সেখানকার আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ কিন্তু সরকারের দায়িত্ব, সেটাই পালন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও কিছু মানুষ তো লোভী হয়ে যায়। টাকা পয়সার লোভ এত বেড়ে যায় যে, দেশ রেখে বিদেশে রাখতে গিয়ে শেষে দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়। তা সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো?’

ওষুধ শিল্পের চুক্তি
ভারতের সঙ্গে ওষুধ শিল্পের চুক্তিতে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে ওষুধ শিল্পের অনেক কাঁচামাল আমাদের আনতে হয়। কিছু কিছু ওষুধ আছে যেগুলো আমরা উৎপাদন করতে পারছি না। যদিও আমাদের ওষুধ শিল্প অনেক উন্নত। বিভিন্ন দেশে আমরা রপ্তানি করি। এরপরও কিছু কিছু ওষুধ থাকে যেটার শিল্প আমাদের দেশে ওইভাবে গড়ে ওঠেনি।’

ভারতের কারাগারে হাজার বাংলাদেশি
ভারতের কারাগারে সাজা ভোগ করার পরও মানবেতর জীবনযাপন করা হাজার হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিয়মিত আমরা যখনই খবর পাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফেরত আনা হচ্ছে। আমাদের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কোথায় কতজন আছেন, আপনার কাছে তথ্য থাকলে তালিকা দেন, আমি নিয়ে আসব, কোনো অসুবিধা নেই।’

সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
ভারত সফরে দেশটির কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সৌজন্যমূলক নাকি অন্য কোনও অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়েছে- এমন পশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো বলেছি, আমার সঙ্গে ভারতের প্রত্যেকটা দল, সকলের সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ইন্দিরা গান্ধীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটা পারিবারিক বন্ধন আছে। সেটা সকল রাজনীতি, সব কিছুর ঊর্ধ্বে।’

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ
ভারতের ভেতর দিয়ে এনার্জি ট্রানজিট তৈরি করে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ নিয়ে আসার সরকারি উদ্যোগের জন্য সংবাদ সম্মেলনে ধন্যবাদ জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এ সময় তিনি বলেন, ‘তার এ দুটি দ্রুত ও সংক্ষিপ্ত ভারত সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। এই সফর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা আরো বলেন, তার সরকার আরও ৭টি বর্ডার হাট করবে এবং কানেকটিভির উন্নয়নে বিবিআইএন করেছে এবং এখন যেতে খুব একটা সমস্যা হয় না, অনেকেই কিন্তু যাতায়াত করছে।

যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মইনুদ্দিনের বন্দী বিনিময়ের ক্ষেত্রে প্রদত্ত রায়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে এবং যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার আমরা তা নিচ্ছি।’

ভয় করলে মানুষকে, সাপকে নয়
‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীব-জন্তু বা সাপকে ভয়ের কিছু নেই, তবে সবার সতর্ক থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যই জীবজন্তু। একটু সতর্ক হয়ে চলতে হবে এটাই তো। আমি একটা বিষয়ে বিশ্বাস করি, জীব-জন্তু-সাপ যাই বলেন, এরা কোনো দিন খামাখা কোনো মানুষকে আক্রমণ করে না, যদি না তারা ভীত হয়ে যায় বা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে থাকে। তাছাড়া তারা কোনো দিন কারো ক্ষতি করে না। সাপ বরং মানুষকে ভয় পায়। ভয় বা আতঙ্ক থেকেই মানুষকে কামড় দিতে আসে। তাই সাপকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয় করলে মানুষকেই করতে হয়, জীব-জন্তু বা সাপকে নয়।’

ভারত সফর
শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২১ ও ২২ জুন নয়াদিল্লি সফর করেন। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। এছাড়া এই সফরটি ছিল ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। কারণ, তিনি ৯ জুন মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

ছবি

অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সরকারের স্পষ্ট বার্তা চায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৭ জনের মৃত্যু, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিনশারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

আন্দোলনকারিকে নির্যাতনের এক মাস বিশ দিন পর ভিডিও ফাঁস

ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ১৫৮১ জনের প্রাথমিক তালিকা বৈষম্যবিরোধীদের

ছবি

কারাভোগ শেষে দেশে আসছেন ৮৫ বাংলাদেশি, ফিরবেন ১২৩ মায়ানমার নাগরিক

ছবি

জাতিসংঘ অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক ত্যাগ

ছবি

কুমিল্লায় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে চেয়ারেই বসে গেলেন ছাত্র

ছবি

নিয়ন্ত্রণে নেই নিত্যপণ্যের বাজার, অস্বস্তিতে সাধারণ মানুষ

ছবি

বাংলাদেশের অভ্যুত্থান বিশ্বকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে প্রেরণা যোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

সরকারের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ : মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

খুব দেরি হওয়ার আগেই আমাদের সমাধান করতে হবে, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে ইউনূস

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আইসিসি প্রধান কৌঁসুলির বৈঠক

ছবি

সকল সিটি করপোরেশন-পৌরসভার কাউন্সিলরদের অপসারণ

ছবি

লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ারের স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ

আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করা হবে

ছবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য হলেই নির্বাচন : নিউইয়র্কে মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন অধ্যাপক ইউনূস

ছবি

অতিরিক্ত ডিআইজি হলেন ৪৭ এসপি

ছবি

অপরাধ করে থাকলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত: ইউনূস

ছবি

সংস্কার উদ্যোগে ৩৫০ কোটি ডলার দেবে বিশ্ব ব্যাংক

ছবি

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে শাহবাজ শরিফ ও মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক

বিদ্যুতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি : ভারত-বাংলাদেশের সম্মতির অপেক্ষায় নেপাল

ছবি

সরকার পতনের পর দেড়মাসে শতাধিক খুন রাজধানীতে

ছবি

গুলিতেই মারা গেছে আবু সাইদ ,মাথায় আঘাত উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ময়না তদন্ত প্রতিবেদনটি ভুয়া

ছবি

নাহিদ ইসলাম এর সাথে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মিরাজ ও রাব্বির পরিবারের সাক্ষাৎ

ছবি

‘বিরল’ বৈঠকে ইউনূসকে বুকে টেনে নিলেন বাইডেন

ছবি

তরুণদের আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা, বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা কামনা ইউনূসের

ছবি

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় ৮৫৪ জন ভর্তি, ২ জনের মৃত্যু

ছবি

দুর্গাপূজায় প্রতিটি মণ্ডপের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

তরুণদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা চান ইউনূস

ছবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক করলেন মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পূর্ণ সমর্থন মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে

ছবি

ইউনূস ও জাস্টিন ট্রুডো একান্ত বৈঠক

ছবি

এ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশতাধিক

tab

জাতীয়

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘লাভজনক’ প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মহাপরিকল্পনা নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে যাদের প্রস্তাব বেশি লাভজনক হবে, সেটাই বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এবিষয়ে ভারত ও চীন দুই দেশই প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, ভারতও করবে। তবে বাংলাদেশ সবদিক বিবেচনা করে যাদেরটা লাভজনক হবে সেটাই নেবে।

ভারত সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। পরে শুরু হয় সাংবাদিকদের প্রশ্নপর্ব। সেখানে অন্যান্য প্রসঙ্গের পাশাপাশি তিস্তার বিষয়টিও আসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে।

তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যারই তো সমাধান হয়ে গেল। তো সেটাই আমার জন্য সহজ হলো না? ভারত যখন এগিয়ে আসছে, আমরা যদি এটা করি, তাহলে পানি নিয়ে আর প্রতিদিন প্যাঁ প্যাঁ করতে হবে না।’

গঙ্গা-তিস্তা ইস্যুতে হাসিনা-মোদি আলোচনা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও পাঠিয়েছেন মমতা। চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, তাকে পাশ কাটিয়ে তিস্তা-গঙ্গা নিয়ে যে কাজ করা হচ্ছে এটিতে তার সায় নেই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য জানতে চান এক সাংবাদিক।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির যে চিঠি, সেটা তো তিনি লিখেছেন উনার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। এটা তো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এখানে আমার তো কিছু বলার নাই। এটা সম্পূর্ণ ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এভাবে আমার তো নাক গলানোর কোনো দরকার নাই। কিছু বলার দরকার নাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তায় আমরা প্রজেক্ট নিয়েছি। পুরো নদীটাকে ড্রেজিং করা, পাড় বাঁধানো, পানি সংরক্ষণ, সমস্ত বিষয় সেখানে আলোচনা হয়েছে এবং তিস্তা এবং গঙ্গার জন্য, বিশেষ করে গঙ্গা চুক্তির জন্য, ২০২৬ সালে ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, এরপর এটা যদি নবায়ন নাও হয়, চুক্তি কিন্তু অব্যাহত থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তির মেয়াদটা শেষ হবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, একটা টেকনিক্যাল গ্রুপ করা হবে। যেটা মমতা ব্যনার্জি বলেছেন, উনার ক্ষোভ যে উনার সঙ্গে আলোচনা করেনি, উনি তো ছিলেন না দিল্লিতে। আমি নিজেই তো যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, উনি ছিলেন না। থাকলে নিশ্চয় উনাকে নিয়ে আমরা আলোচনা করতাম। অন্তত আমি করতাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে যে কাউকে বাদ দেয়া হবে না। এখানে টেকনিক্যাল গ্রুপ আসবে, কথা বলবে, আলোচনা করবে, তারপর সমঝোতা হবে। আমার সঙ্গে সকলের সম্পর্ক ভালো। মমতা ব্যানার্জির সম্পর্কও খুব ভালো। আবার প্রাইম মিনিস্টার নরেন্দ্র মোদি, তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো। উনাদের সব দলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। এটুকু বলতে পারি যে ভারতের দল-মত নির্বিশেষে প্রত্যেকের সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক আছে।’

দেশ বিক্রির কথা বলে ‘পাকিস্তানের দালালরা’
বাংলাদেশের ভেতরে দিয়ে ভারতের রেল চলাচলের সুযোগ দেয়ার নামে ভারতের কাছে ‘দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমালোচনা হচ্ছে, তা প্রধানমন্ত্রী কীভাবে দেখছেন- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশ ‘বিক্রির’ গুজব যারা ছড়াচ্ছে, তারা পাকিস্তানের ‘দালাল’।

একাত্তরে স্বাধীনের যুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না। এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি, এটা মনে রাখা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন আছে, বিক্রির ওজনটা কীভাবে মাপছে? কোনো কিছু বিক্রি হলে তো ওজন মাপা হয়, এখন তো অবশ্য ইলেকট্রিক মেশিন আছে। আগে তো দাঁড়িপাল্লায় হতো, কিসে মেপে বিক্রি হচ্ছে আর বিক্রিটা হয় কীভাবে?’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘শেখ হাসিনা এই দেশকে বিক্রি করে না, কারণ আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি, এটা ভুলে গেলে চলবে? আর যে কষ্টটা আমরা ভোগ করি সেটা আমরা জানি। যারা বিক্রির কথা বলে তারা একাত্তর সালে পাকিস্তানের দালালি করেছে।’ ভারত নিয়ে জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার ‘মনোভাব’ নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা তো দেখেছি... ওপর দিয়ে ভারতবিরোধী কথা বলেছে আর ভারতে যেয়ে পা ধরে বসে থেকেছে, এগুলো আমার নিজের দেখা, জানা। এই ধরনের কথা বলার কোন অর্থ হয় না।’

ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, যত ছোট হোক আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আর সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং স্বকীয়তা বজায় রেখেই আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করছি। আজকে আমরা সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে দিলাম। এতে সব থেকে বেশি লাভবান তো আমাদের দেশের মানুষ। তাদের যোগাযোগ করতে হয়, যেতে হয়। চিকিৎসার জন্য যায়, পড়াশোনার জন্য যায়, অন্যান্য কাজে যায়, হাট বাজার করতে যায়, আজমির শরিফে যায়, বিভিন্ন জায়গায় যায়, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রটাও তো আরও উন্মুক্ত হবে। কাজেই বিক্রি আমরা করি না, যারা কথা বলে তারাই বাঁচার জন্য অথবা ব্যবহার করুন আমাকে এই দিয়ে বসে থাকে।’

একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী- এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেল যতগুলো বন্ধ ছিল আমরা আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। ফলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য সহজ হচ্ছে। আমাদের ওই অঞ্চলের লোকজন উপকৃত হচ্ছে। তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ হচ্ছে। আর যে সমস্ত জিনিস আমাদের দেশে আনার সুযোগ হচ্ছে, অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কি চারিদিকে দরজা বন্ধ করে বসে থাকবে এটা হয় না। কোনো দেশ পৃথিবীতে এমন করে না।’ ট্রানজিট প্রসঙ্গে ইউরোপের উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডারই নাই। তাহলে কি একটা দেশ আরেকটা দেশের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।’

নোবেল পুরস্কারের আকাক্সক্ষা নাই
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শান্তিতে নোবেল প্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কাউকে ঈর্ষা করেন না। নোবেল পুরস্কারের আকাক্সক্ষাও তার নেই।

ড. ইউনূসকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, সরকার ইউনূসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সব যন্ত্রই ব্যবহার করেছে। এ বিষয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রতিবেদনটি তিনি পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আবার লিখেছে যে নোবেল প্রাইজের জন্য তার সঙ্গে আমার...আমার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। নোবেলের জন্য আমার কোনো আকাক্সক্ষাও নেই। আর লবিস্ট রাখার মতো টাকাও নেই। আমি কখনো ওটা চাইনি।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পার্বত্য চুক্তি যখন করি, তখন দেশে-বিদেশে অনেকে আমার জন্য লিখেছে। আমি তো কখনো তদবির করতে যাইনি। কী পেলাম, না পেলাম, ওগুলো আমার মাথার মধ্যেও নেই। যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একজন এমডি। তিনি যখন নোবেল প্রাইজ পান, তার সঙ্গে আমি কনটেস্ট করতে যাব কেন।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, অধ্যাপক ইউনূস ‘পয়সা’ খরচ করে এসব লেখাচ্ছেন। এর আগে বিবৃতির কথা বলে অনেকের নামে ‘বিজ্ঞাপন’ ছাপিয়েছেন।

বিতর্কের চ্যালেঞ্জ
গণমাধ্যমে আসা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের আদলে আলোচনায় আসার চ্যালেঞ্জ ড. ইউনূসকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘উনাকে জেলাসি করার কী আছে? সে আসুক না, মাঠে আসুক, চলুক আমার সঙ্গে। আমেরিকায় ডিবেট হয় না- আসুক, কথা বলব।’ সরকারপ্রধান বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারও সাথে জেলাসি করে না, শেখ হাসিনা জাতির পিতার মেয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। তো, এই জায়গাটাই কেউ আসতে পারবে না। আর সেটাই আমার গর্ব।’

রাজনীতিতে তার ব্যর্থতার দায় কি আমার?
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠন নিয়েও শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বিরোধ’ হওয়ার কথা বলা হয়েছে টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে। ড. ইউনূসের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে সেখানে লেখার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক দল করতে গিয়ে ব্যর্থ হল কেন? সে যদি গ্রামের মানুষকে এত কিছু দিয়ে থাকে, সেই গ্রামের মানুষতো ঝাঁপিয়ে আসবে। আসেনি কেন? কারণ সুদের চাপে তারা মৃতপ্রায় ছিল। সেজন্য তাকে কেউ সাড়া দেয়নি। সেখানে সে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায়িত্ব কি আমার? আমিতো তখন জেলে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে অ্যারেস্ট করার পরে তিনিতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং প্রেসিডেন্টকে এ ডাবল প্লাস দিয়ে আসছে। আমার বিরুদ্ধে তো একটার পর একটা মামলা হচ্ছে। আমি যখন বিদেশে, আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দেয়া হয়েছিল।’

বিদেশে ইউনূসের বিনিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে বিদেশে এত বিনিয়োগ করে আসছে, টাকাটা কোত্থেকে আসছে? কীভাবে কামাই করেছে এই টাকাটা? এটার বিনিয়োগ কী করে হল? এই প্রশ্নটা কি কেউ করেছে কখনো? কীসের টাকা? সেই জবাবটা দিক। একটা সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় চাকরি করা অবস্থায় সেই বিদেশে ব্যবসা করে। আমাদের আেইন কী বলে। তারপরও আমরা সবাই মিলেই তাকে তুলেছি এটা ঠিক। এখন সব কিছুর দোষ আমার।’

সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পক্ষে লেখে কীভাবে
শ্রম আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির ‘পক্ষ’ নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রতিবেদন ছাপানো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এখন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির পক্ষে এত কথা লেখে কীভাবে, ওই সাংবাদিককে জিজ্ঞেস করেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা-ইউরোপে কেউ ট্যাক্স ফাঁকি দিলে তার সম্পত্তি সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে দেবে। এটাই তাদের নিয়ম। সেটা দেখেন না কেন? প্রতিবার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবার মামলা করে তার কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করতে হচ্ছে। যারা লিখেছে, তারা এই অনুসন্ধানটা করুক।’

ড. ইউনূসের মাইক্রোক্রেডিট সামিট আন্তর্জাতিকভাবে খুব একটা গ্রহণযোগ্য ছিল না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যশোরের যে এলাকায় হিলারি ক্লিনটনকে নিয়ে মাইক্রোক্রেডিট দিয়েছিল, সেই পরিবারগুলি কোথায় এখন? খোঁজ করেন। জমিজমা সব বিক্রি করে ওখান থেকে তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়, অনেকে আত্মহত্যা করেছে এই সুদের চাপে।’

আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব
ব্যাংক খাতের নানা সমস্যা দূর করতে ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠনের কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ব্যাংকিং সেক্টর কেউ ভালো চালাচ্ছে। কেউ খারাপ চালাচ্ছে। অনেকে ঠিকমত চালাতে পারেন না। সেখানকার আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ কিন্তু সরকারের দায়িত্ব, সেটাই পালন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও কিছু মানুষ তো লোভী হয়ে যায়। টাকা পয়সার লোভ এত বেড়ে যায় যে, দেশ রেখে বিদেশে রাখতে গিয়ে শেষে দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়। তা সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো?’

ওষুধ শিল্পের চুক্তি
ভারতের সঙ্গে ওষুধ শিল্পের চুক্তিতে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে ওষুধ শিল্পের অনেক কাঁচামাল আমাদের আনতে হয়। কিছু কিছু ওষুধ আছে যেগুলো আমরা উৎপাদন করতে পারছি না। যদিও আমাদের ওষুধ শিল্প অনেক উন্নত। বিভিন্ন দেশে আমরা রপ্তানি করি। এরপরও কিছু কিছু ওষুধ থাকে যেটার শিল্প আমাদের দেশে ওইভাবে গড়ে ওঠেনি।’

ভারতের কারাগারে হাজার বাংলাদেশি
ভারতের কারাগারে সাজা ভোগ করার পরও মানবেতর জীবনযাপন করা হাজার হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিয়মিত আমরা যখনই খবর পাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফেরত আনা হচ্ছে। আমাদের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কোথায় কতজন আছেন, আপনার কাছে তথ্য থাকলে তালিকা দেন, আমি নিয়ে আসব, কোনো অসুবিধা নেই।’

সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
ভারত সফরে দেশটির কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সৌজন্যমূলক নাকি অন্য কোনও অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়েছে- এমন পশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো বলেছি, আমার সঙ্গে ভারতের প্রত্যেকটা দল, সকলের সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ইন্দিরা গান্ধীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটা পারিবারিক বন্ধন আছে। সেটা সকল রাজনীতি, সব কিছুর ঊর্ধ্বে।’

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ
ভারতের ভেতর দিয়ে এনার্জি ট্রানজিট তৈরি করে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ নিয়ে আসার সরকারি উদ্যোগের জন্য সংবাদ সম্মেলনে ধন্যবাদ জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এ সময় তিনি বলেন, ‘তার এ দুটি দ্রুত ও সংক্ষিপ্ত ভারত সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে। এই সফর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা আরো বলেন, তার সরকার আরও ৭টি বর্ডার হাট করবে এবং কানেকটিভির উন্নয়নে বিবিআইএন করেছে এবং এখন যেতে খুব একটা সমস্যা হয় না, অনেকেই কিন্তু যাতায়াত করছে।

যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মইনুদ্দিনের বন্দী বিনিময়ের ক্ষেত্রে প্রদত্ত রায়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে এবং যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার আমরা তা নিচ্ছি।’

ভয় করলে মানুষকে, সাপকে নয়
‘রাসেলস ভাইপার’ সাপ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীব-জন্তু বা সাপকে ভয়ের কিছু নেই, তবে সবার সতর্ক থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যই জীবজন্তু। একটু সতর্ক হয়ে চলতে হবে এটাই তো। আমি একটা বিষয়ে বিশ্বাস করি, জীব-জন্তু-সাপ যাই বলেন, এরা কোনো দিন খামাখা কোনো মানুষকে আক্রমণ করে না, যদি না তারা ভীত হয়ে যায় বা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে থাকে। তাছাড়া তারা কোনো দিন কারো ক্ষতি করে না। সাপ বরং মানুষকে ভয় পায়। ভয় বা আতঙ্ক থেকেই মানুষকে কামড় দিতে আসে। তাই সাপকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয় করলে মানুষকেই করতে হয়, জীব-জন্তু বা সাপকে নয়।’

ভারত সফর
শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২১ ও ২২ জুন নয়াদিল্লি সফর করেন। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার পর ভারতে কোনো সরকার প্রধানের এটিই প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। এছাড়া এই সফরটি ছিল ১৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতের রাজধানীতে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর। কারণ, তিনি ৯ জুন মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

back to top