alt

জাতীয়

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হতে আবেদনের ‘ভিড়’: সাড়ে ৪ হাজার পদের বিপরীতে ‘৬০ হাজার’ আবেদন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হওয়ার জন্য ব্যাপক আবেদন জমা পড়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), জেনারেল প্র্যাকটিশনার (জিপি) ও অতিরিক্ত পিপির মতো প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পদের বিপরীতে ৬০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ায় নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ‘হিমশিম’ খাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা প্রায় সবাই সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় আদালতগুলোর বিচারিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নতুন সরকার আসার পর আগের প্রশাসন ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে আদালতেও নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে দুই মাসেও এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আগস্টের ৫ তারিখে সরকার পতনের পর নিম্ন আদালতগুলোতে বিচারকাজ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সাড়ে ৪ হাজার সরকারি আইনজীবীর মধ্যে অধিকাংশই হয় পালিয়ে গেছেন, নয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন। এর ফলে আদালতে অনেক মামলার বিচারকাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।”

তিনি আরও জানান, “নতুন করে আইনজীবী নিয়োগের জন্য আমরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার আবেদন পেয়েছি, যা আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি। এই বিপুল সংখ্যক আবেদন থেকে সাড়ে ৪ হাজার পদে আইনজীবী নির্বাচন করা একটি দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া।”

৭০০ এর বেশি আইনজীবী নিয়োগ, তবুও ধীরগতি

ঢাকা জেলার জন্য ইতোমধ্যে ৭০০ এর বেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আজকেই (সোমবার) ঢাকা জেলার সরকারি কৌঁসুলিদের নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করেছি। এই জেলায় ১০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল, তবে ৭০০ এর বেশি আইনজীবী চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “শুক্র ও শনিবারেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। রাত ৭টা বা ৮টা পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ করতে হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাহ্যিকভাবে হয়তো সহজ মনে হতে পারে, তবে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও কঠিন একটি কাজ।”

পুরনো মামলার বিচারিক জটিলতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া

গণআন্দোলনের সময়কার ভুক্তভোগীদের মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে না পারার কারণে নতুন সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই প্রসঙ্গে বলেন, “গত সরকারের আমলে অনেক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, যা আমরা প্রত্যাহার করতে পারছি না। কারণ, একবার যখন কোনো মামলার চার্জশিট হয়ে যায়, তখন সেটি প্রত্যাহার করার ক্ষমতা আমাদের থাকে না। কেবল তদন্তাধীন থাকা মামলাগুলোই প্রত্যাহার করা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব মামলায় সাজা হয়ে গেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা আইন অনুযায়ী সম্ভব নয়। এমনকি যদি সেই মামলাগুলো মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক, কিংবা অবিশ্বাস্য মনে হয়, তবুও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি আবেদন না করেন, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। অনেকেই না বুঝে আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন, কিন্তু আমরা আইন মেনেই কাজ করছি।”

ঢাকার প্রধান পিপি পদে নতুন নিয়োগের বিলম্ব

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবুর নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নিয়োগ পাওয়ার মাত্র দুই দিনের মধ্যেই তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পদটি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে এখনো ঢাকার প্রধান পিপি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এই নিয়োগের পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে সমাজীর নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান, কারণ তাদের অভিযোগ ছিল, সমাজী আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। এসব পরিস্থিতির মধ্যে এখনও প্রধান পিপি নিয়োগে বিলম্ব হচ্ছে, যার ফলে ঢাকার আদালতগুলোতে বিচারিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

আদালতগুলোতে বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার প্রয়াস

অন্তর্বর্তী সরকার আদালতগুলোর বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে দ্রুত আইনজীবী নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। ড. আসিফ নজরুল বলেন, “নিম্ন আদালতে বিচারকাজ শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। বিচার ব্যবস্থায় অনেক মামলা আটকে আছে, যা সমাধান করতে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। পুরনো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলোও যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা স্বীকার করছি, এই প্রক্রিয়ায় কিছু ভুল হতে পারে। তবে বেআইনিভাবে কিছু করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে জনগণ বিচার পায় এবং আদালতগুলো স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চালাতে পারে।”

আইন উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর, বিচার ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ছবি

ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আতিক গ্রেফতার

ছবি

১২ বিচারপতি ‘বিচারিক দায়িত্ব’ পালন করতে পারবেন না

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ছবি

১০ অতিরিক্ত আইজিপি’র বদল

ছবি

৭ মার্চ, ১৫ আগস্টসহ জাতীয় আট দিবস বাতিল হচ্ছে

ছবি

মাইনাস টু’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

ছবি

সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত

শনিবার আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ফের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামের সহিংসতায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

ছবি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ: আইনি প্রক্রিয়া মেনে পদক্ষেপ নেবে প্রসিকিউশন টিম

হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা সারজিস-হাসনাতের

ছবি

বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীর গ্রেপ্তারের পর জামিন পেলেন

ছবি

বিচারকের অসৌজন্যমূলক আচরণ : বেঞ্চ ভেঙে দিলেন প্রধান বিচারপতি

ছবি

জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনে সরকার বদ্ধপরিকর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যোগ দিলেন চেয়ারম্যানসহ বিচারিক প্যানেল

ছবি

আব্দুর রাজ্জাক ও ফারুক খান ২ দিনের রিমান্ডে

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাকচাপায় শিশুসহ নিহত ৩

ছবি

বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার

ছবি

সাকিবের দেশে আসা-যাওয়ায় আইনি বাধা নেই : আসিফ মাহমুদ

ছবি

শপথ নিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যান

ছবি

মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশন চালু, সংস্কারে খরচ ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা

ছবি

সাবেক বিমানমন্ত্রী ফারুক খান গ্রেপ্তার

ছবি

বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ জানালেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ রওনক হাসান রিটন নিহত

গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়দের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা

ছবি

রেন্টালের অভাব পূরণে টেকসই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঘাটতি

ছবি

নিত্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি: ডিম সংকটে বাজারে বিশৃঙ্খলা

ছবি

রাখাইনে বাস্তুচ্যুতদের জন্য ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির এবার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান গোলাম মর্তূজা মজুমদার

ছবি

সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক গ্রেফতার

সিলেটে ‘সুযোগসন্ধানী’ এক সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা একাংশের

ছবি

মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন চালু হচ্ছে কাল

ছবি

নোয়াখালীতে গ্রেপ্তার তিনজনকে নিয়ে যা বললেন সারজিস

ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে পুরুষের ৩৫, নারীর ৩৭ বছর করার সুপারিশ

tab

জাতীয়

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হতে আবেদনের ‘ভিড়’: সাড়ে ৪ হাজার পদের বিপরীতে ‘৬০ হাজার’ আবেদন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হওয়ার জন্য ব্যাপক আবেদন জমা পড়েছে। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), জেনারেল প্র্যাকটিশনার (জিপি) ও অতিরিক্ত পিপির মতো প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পদের বিপরীতে ৬০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ায় নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ‘হিমশিম’ খাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা প্রায় সবাই সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় আদালতগুলোর বিচারিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নতুন সরকার আসার পর আগের প্রশাসন ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে আদালতেও নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে দুই মাসেও এ নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আগস্টের ৫ তারিখে সরকার পতনের পর নিম্ন আদালতগুলোতে বিচারকাজ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সাড়ে ৪ হাজার সরকারি আইনজীবীর মধ্যে অধিকাংশই হয় পালিয়ে গেছেন, নয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন। এর ফলে আদালতে অনেক মামলার বিচারকাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।”

তিনি আরও জানান, “নতুন করে আইনজীবী নিয়োগের জন্য আমরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার আবেদন পেয়েছি, যা আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি। এই বিপুল সংখ্যক আবেদন থেকে সাড়ে ৪ হাজার পদে আইনজীবী নির্বাচন করা একটি দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া।”

৭০০ এর বেশি আইনজীবী নিয়োগ, তবুও ধীরগতি

ঢাকা জেলার জন্য ইতোমধ্যে ৭০০ এর বেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আজকেই (সোমবার) ঢাকা জেলার সরকারি কৌঁসুলিদের নিয়োগের কাগজে স্বাক্ষর করেছি। এই জেলায় ১০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল, তবে ৭০০ এর বেশি আইনজীবী চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “শুক্র ও শনিবারেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। রাত ৭টা বা ৮টা পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ করতে হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বাহ্যিকভাবে হয়তো সহজ মনে হতে পারে, তবে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও কঠিন একটি কাজ।”

পুরনো মামলার বিচারিক জটিলতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া

গণআন্দোলনের সময়কার ভুক্তভোগীদের মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে না পারার কারণে নতুন সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই প্রসঙ্গে বলেন, “গত সরকারের আমলে অনেক মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, যা আমরা প্রত্যাহার করতে পারছি না। কারণ, একবার যখন কোনো মামলার চার্জশিট হয়ে যায়, তখন সেটি প্রত্যাহার করার ক্ষমতা আমাদের থাকে না। কেবল তদন্তাধীন থাকা মামলাগুলোই প্রত্যাহার করা সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব মামলায় সাজা হয়ে গেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা আইন অনুযায়ী সম্ভব নয়। এমনকি যদি সেই মামলাগুলো মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক, কিংবা অবিশ্বাস্য মনে হয়, তবুও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি আবেদন না করেন, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। অনেকেই না বুঝে আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন, কিন্তু আমরা আইন মেনেই কাজ করছি।”

ঢাকার প্রধান পিপি পদে নতুন নিয়োগের বিলম্ব

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবুর নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নিয়োগ পাওয়ার মাত্র দুই দিনের মধ্যেই তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পদটি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে এখনো ঢাকার প্রধান পিপি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এই নিয়োগের পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে সমাজীর নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান, কারণ তাদের অভিযোগ ছিল, সমাজী আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। এসব পরিস্থিতির মধ্যে এখনও প্রধান পিপি নিয়োগে বিলম্ব হচ্ছে, যার ফলে ঢাকার আদালতগুলোতে বিচারিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

আদালতগুলোতে বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার প্রয়াস

অন্তর্বর্তী সরকার আদালতগুলোর বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে দ্রুত আইনজীবী নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। ড. আসিফ নজরুল বলেন, “নিম্ন আদালতে বিচারকাজ শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। বিচার ব্যবস্থায় অনেক মামলা আটকে আছে, যা সমাধান করতে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। পুরনো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলোও যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা স্বীকার করছি, এই প্রক্রিয়ায় কিছু ভুল হতে পারে। তবে বেআইনিভাবে কিছু করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে জনগণ বিচার পায় এবং আদালতগুলো স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম চালাতে পারে।”

আইন উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর, বিচার ব্যবস্থার পুনর্গঠন ও নতুন আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

back to top