alt

জাতীয়

সারজিস-হাসনাতের নেতৃত্বে হাইকোর্ট ঘেরাও

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

সারজিস-হাসনাতের নেতৃত্বে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা হাইকোর্ট ঘেরাও করে-সংবাদ

হাইকোটের ১২ জন বিচারপতিকে বিচারিক দায়িত্ব পালন থেকে ‘আপাতত’ বিরত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে হাইকোর্ট ঘেরাও করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত এলো। ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

এর আগে আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতি পদত্যাগ করেছিলেন।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল আদালত চত্বরে প্রবেশ করে। মিছিলটি অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এর আগে ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে দুই সমন্বয়ক সারজিস ও হাসনাত ফেইসবুকে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

বুধবার দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সারজিস বলেন, ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের স্থান আদালতে হবে না।’ হাসনাত বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের যারা দোসর ছিল, তাদের দিয়ে আওয়ামী খুনি-সন্ত্রাসীদের বিচার করা সম্ভব নয়।’

শিক্ষার্থীরা বিচারপতিদের অপসারণের দাবিতে বক্তব্য রাখেন এবং এ সময় ‘শেখ হাসিনার বিচারক, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট সরকার’, ‘দলবাজ বিচারপতি’ বলে সেøাগান দেন।

এরপর ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিকেল চারটার দিকে হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে আসেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হাইকোর্ট চত্বরে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘আপনাদের যে দাবি, আপনাদের যে লিডার, তারা আমার চেম্বারে বসেছিলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি। সঙ্গে দুইজন সহকর্মী ছিলেন।’

**প্রধান বিচারপতির যা করণীয়**
বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণের একটা প্রক্রিয়া আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিচারপতিদের পদত্যাগের আপনাদের যে দাবি, বিচারপতিদের নিয়োগকর্তা হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। পদত্যাগ বা অপসারণের সেই উদ্যোগও রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে হয়ে থাকে। এখানে সুপ্রিম কোর্টের, প্রধান বিচারপতির যেটা করণীয়, উনি সেটা করেছেন। জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, আপাতত ১২ জন বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। বেঞ্চ না দেয়ার অর্থই হলো, তারা এই যে আগামী ২০ অক্টোবর কোর্ট খুলবে, তারা আর বিচারকাজে অংশ নিতে পারবেন না।’

**ষোড়শ সংশোধনী রিভিউ**
বর্তমানে দেশে বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণ সংক্রান্ত কোনো আইন বিদ্যমান নেই দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘বিগত (আওয়ামী লীগ) সরকার সংসদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। একটা সংশোধনী (সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী) হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটা বাতিল করে দিয়েছেন। সেটা আবার সরকার রিভিউ আকারে পেশ করেছে। আগামী রোববার ২০ অক্টোবর সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগে শুনানি হবে। ১ নম্বর আইটেম রাখা হয়েছে সেটি।’

আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘আশা করছি, এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো শুরু হবে। আর বিচারপতি অপসারণের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এককভাবে জড়িত নন; রাষ্ট্রপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও আইন উপদেষ্টা জড়িত আছে। আপাতত ১২ জনকে বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে শুনানির মাধ্যমে বাকিগুলো আপনাদের সামনে আসবে।’

রেজিস্ট্রার জেনারেলের এ ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছাড়েন।

**বৈষ্যম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ**
হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে একই দিন বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। আর ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইং।

বুধবার হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলার মধ্যেই খবর ছড়ায়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়। পরে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল জানান, আপাতত হাইকোর্ট বিভাগে ১২ বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না।

**বেঞ্চ পাবেন না যারা**
হাইকোর্ট বিভাগের যে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না, তাদের নাম প্রকাশ করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। তবে আইনজীবী ও বিচারালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সম্ভাব্য তালিকার বিচারপতিদের নাম জানা গেছে।

তারা হলেন- বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান, বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন। তাদের মধ্যে শেষের ছয়জন বুধবার দুপুরে পৃথকভাবে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

**জজ কোর্টে মিছিল, হাইকোর্ট ঘেরাও **
এর আগে, মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে হট্টগোলের ঘটনার পর ওই বেঞ্চের বিচারক বদলে দেন প্রধান বিচারপতি।

বেঞ্চ অফিসাররা ‘দুর্নীতির’ মাধ্যমে কার্যতালিকায় মামলা তোলায় অনেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ওই বেঞ্চের বিচারকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন একজন আইনজীবী। কিন্তু তার প্রতিকার না করে বিচারপতি আতোয়ার রহমান সেই আইনজীবীর সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করেন এমন অভিযোগে মঙ্গলবারই ‘উচ্চ আদালতের বিতর্কিত বিচারপতিদের অপসারণের’ দাবিতে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেন আইজীবীদের একটি অংশ।

বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্ট ভবনের মূল ফটকের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান নেন। আইনজীবী নেতারা বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও। তারপর বিচারপতি আতোয়ার রহমান খানকে বাদ দিয়ে বেঞ্চ নতুন করে গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি।

এদিকে, মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর দুইজন সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ ফারুক খান ও আব্দুর রাজ্জাকের রিমান্ড আবেদন শুনানির সময় তারা এ মিছিল করেন।

এ সময় তারা ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’; ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’; ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’সহ নানা স্লোগান দেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়। ২০-২৫ আইনজীবী এই বিক্ষোভে অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ সময় বিক্ষোভ থেকে একজনকে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

এসব ঘটনার মধ্যেই হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের কর্মসূচির ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক।

**ঢাবি থেকে মিছিল শুরু**
সে অনুযায়ী বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। একই সময়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ দেখায় ‘বৈষম্য ও গণহত্যাবিরোধী আইনজীবী সমাজ’।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, হাইকোর্ট ঘেরাও হবে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’. ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ফ্যাসিবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

**চায়ের দাওয়াত**
এদিকে বুধবার সকালেই খবর আসে, বিগত সরকারের ‘দোসর’ হিসেবে কাজ করা এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা হাইকোর্টের ১২ জন বিচারককে ‘চায়ের দাওয়াত’ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সেজন্য প্রধান বিচারপতির দিনের কর্মসূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়।

বেলা ২টা পর্যন্ত ছয়জন বিচারক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন। তখনই সুপ্রিম কোর্টে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে, ওই বিচারকদের ‘ছুটিতে পাঠানোর’ কথা জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

এরপর বিকেলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞার কক্ষে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও এ আর রায়হান এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঞা এবং বাংলাদেশ আইন সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম মাহবুবুর রহমান খানও উপস্থিতি ছিলেন সেই বৈঠকে।

**প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত**
ওই বৈঠক শেষে প্রধান বিচারপতির কক্ষে যান রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হয়ে তিনি প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

**প্রশাসন-পুলিশের প্রক্সি**
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বিচারিক আধা-বিচারিক সংস্থা ও কমিশন থেকে থেকে দায়িত্বরতদের পদত্যাগের ঘটনা আগেও ঘটেছে।

এছাড়া, বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইন শৃক্সক্ষলা বাহিনীর ‘প্রক্সি’ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা দেখা গেছে।

১০ আগস্ট সমন্বয়কদের ডাকে হাইকোর্টে জমায়েত হয়েছিল একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবির পর ওইদিন পদ ছাড়তে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতিও পদত্যাগ করেন।

গত ২৫ আগস্ট সচিবালয় অবরোধ করা অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের প্রতিরোধ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দিনভর নানা ঘটনার পর রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ-শতাধিক মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হন। অবরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার সাড়ে তিনশ’র বেশি আনসার সদস্যকে গত সোমবার গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই সময় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ঘেরাও করা আনসার সদস্যদের ‘মোকাবিলা’ না করলে সেখানে ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ হতে পারতো।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে রিভিউ আবেদনে ১০ যুক্তি

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পরোয়ানা, সঙ্গে আরও ৪৫

ছবি

হাসিনাকে এক মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত হলো আরও ৪ কমিশন, নেতৃত্বে যারা

ছবি

শেখ হাসিনা ভারতে আছেন, ভারতেই থাকবেন: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি

রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়াই মতিয়া চৌধুরীর শেষ বিদায়

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৮ জনের মৃত্যু

ছবি

২০২৫ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন দিলো সরকার

ছবি

পদত্যাগ করলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন

ছবি

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তাঁর স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

জামিন নামঞ্জুর, সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাক ও ফারুক কারাগারে

ছবি

সেপ্টেম্বরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯৮ জনের মৃত্যু : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ছবি

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

ছবি

আমরা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ভাঙার কাজ করছি : আসিফ মাহমুদ

ছবি

জুলাই-আগস্ট গণহত্যার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু ট্রাইব্যুনালে

ছবি

নতুন সিআইডি প্রধান মতিউর রহমান শেখ

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পর্যটক-শূন্য খাগড়াছড়ি তিন সপ্তাহে লোকসান ১২ কোটি টাকা

ছবি

ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আতিক গ্রেফতার

ছবি

১২ বিচারপতি ‘বিচারিক দায়িত্ব’ পালন করতে পারবেন না

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ছবি

১০ অতিরিক্ত আইজিপি’র বদল

ছবি

৭ মার্চ, ১৫ আগস্টসহ জাতীয় আট দিবস বাতিল হচ্ছে

ছবি

মাইনাস টু’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

ছবি

সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে দূরবর্তী সতর্ক সংকেত

শনিবার আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ফের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামের সহিংসতায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

ছবি

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ: আইনি প্রক্রিয়া মেনে পদক্ষেপ নেবে প্রসিকিউশন টিম

হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা সারজিস-হাসনাতের

ছবি

বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীর গ্রেপ্তারের পর জামিন পেলেন

ছবি

বিচারকের অসৌজন্যমূলক আচরণ : বেঞ্চ ভেঙে দিলেন প্রধান বিচারপতি

ছবি

জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা-পুনর্বাসনে সরকার বদ্ধপরিকর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যোগ দিলেন চেয়ারম্যানসহ বিচারিক প্যানেল

ছবি

আব্দুর রাজ্জাক ও ফারুক খান ২ দিনের রিমান্ডে

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাকচাপায় শিশুসহ নিহত ৩

ছবি

বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার

tab

জাতীয়

সারজিস-হাসনাতের নেতৃত্বে হাইকোর্ট ঘেরাও

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সারজিস-হাসনাতের নেতৃত্বে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা হাইকোর্ট ঘেরাও করে-সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

হাইকোটের ১২ জন বিচারপতিকে বিচারিক দায়িত্ব পালন থেকে ‘আপাতত’ বিরত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে হাইকোর্ট ঘেরাও করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত এলো। ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

এর আগে আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতি পদত্যাগ করেছিলেন।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল আদালত চত্বরে প্রবেশ করে। মিছিলটি অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এর আগে ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে দুই সমন্বয়ক সারজিস ও হাসনাত ফেইসবুকে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

বুধবার দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সারজিস বলেন, ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের স্থান আদালতে হবে না।’ হাসনাত বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের যারা দোসর ছিল, তাদের দিয়ে আওয়ামী খুনি-সন্ত্রাসীদের বিচার করা সম্ভব নয়।’

শিক্ষার্থীরা বিচারপতিদের অপসারণের দাবিতে বক্তব্য রাখেন এবং এ সময় ‘শেখ হাসিনার বিচারক, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট সরকার’, ‘দলবাজ বিচারপতি’ বলে সেøাগান দেন।

এরপর ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিকেল চারটার দিকে হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে আসেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হাইকোর্ট চত্বরে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘আপনাদের যে দাবি, আপনাদের যে লিডার, তারা আমার চেম্বারে বসেছিলেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি। সঙ্গে দুইজন সহকর্মী ছিলেন।’

**প্রধান বিচারপতির যা করণীয়**
বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণের একটা প্রক্রিয়া আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিচারপতিদের পদত্যাগের আপনাদের যে দাবি, বিচারপতিদের নিয়োগকর্তা হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। পদত্যাগ বা অপসারণের সেই উদ্যোগও রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে হয়ে থাকে। এখানে সুপ্রিম কোর্টের, প্রধান বিচারপতির যেটা করণীয়, উনি সেটা করেছেন। জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, আপাতত ১২ জন বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। বেঞ্চ না দেয়ার অর্থই হলো, তারা এই যে আগামী ২০ অক্টোবর কোর্ট খুলবে, তারা আর বিচারকাজে অংশ নিতে পারবেন না।’

**ষোড়শ সংশোধনী রিভিউ**
বর্তমানে দেশে বিচারপতির পদত্যাগ বা অপসারণ সংক্রান্ত কোনো আইন বিদ্যমান নেই দাবি করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, ‘বিগত (আওয়ামী লীগ) সরকার সংসদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। একটা সংশোধনী (সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী) হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটা বাতিল করে দিয়েছেন। সেটা আবার সরকার রিভিউ আকারে পেশ করেছে। আগামী রোববার ২০ অক্টোবর সেটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগে শুনানি হবে। ১ নম্বর আইটেম রাখা হয়েছে সেটি।’

আজিজ আহমদ ভূঞা বলেন, ‘আশা করছি, এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো শুরু হবে। আর বিচারপতি অপসারণের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এককভাবে জড়িত নন; রাষ্ট্রপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও আইন উপদেষ্টা জড়িত আছে। আপাতত ১২ জনকে বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে শুনানির মাধ্যমে বাকিগুলো আপনাদের সামনে আসবে।’

রেজিস্ট্রার জেনারেলের এ ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছাড়েন।

**বৈষ্যম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ**
হাইকোর্ট বিভাগের ‘দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে একই দিন বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আইনজীবী সমাজ। আর ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি-লিগ্যাল উইং।

বুধবার হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলার মধ্যেই খবর ছড়ায়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়। পরে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল জানান, আপাতত হাইকোর্ট বিভাগে ১২ বিচারপতিকে প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না।

**বেঞ্চ পাবেন না যারা**
হাইকোর্ট বিভাগের যে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ দেয়া হচ্ছে না, তাদের নাম প্রকাশ করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। তবে আইনজীবী ও বিচারালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সম্ভাব্য তালিকার বিচারপতিদের নাম জানা গেছে।

তারা হলেন- বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান, বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন। তাদের মধ্যে শেষের ছয়জন বুধবার দুপুরে পৃথকভাবে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

**জজ কোর্টে মিছিল, হাইকোর্ট ঘেরাও **
এর আগে, মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে হট্টগোলের ঘটনার পর ওই বেঞ্চের বিচারক বদলে দেন প্রধান বিচারপতি।

বেঞ্চ অফিসাররা ‘দুর্নীতির’ মাধ্যমে কার্যতালিকায় মামলা তোলায় অনেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ওই বেঞ্চের বিচারকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন একজন আইনজীবী। কিন্তু তার প্রতিকার না করে বিচারপতি আতোয়ার রহমান সেই আইনজীবীর সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করেন এমন অভিযোগে মঙ্গলবারই ‘উচ্চ আদালতের বিতর্কিত বিচারপতিদের অপসারণের’ দাবিতে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেন আইজীবীদের একটি অংশ।

বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা সুপ্রিম কোর্ট ভবনের মূল ফটকের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান নেন। আইনজীবী নেতারা বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও। তারপর বিচারপতি আতোয়ার রহমান খানকে বাদ দিয়ে বেঞ্চ নতুন করে গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি।

এদিকে, মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর দুইজন সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ ফারুক খান ও আব্দুর রাজ্জাকের রিমান্ড আবেদন শুনানির সময় তারা এ মিছিল করেন।

এ সময় তারা ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’; ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’; ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’সহ নানা স্লোগান দেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়। ২০-২৫ আইনজীবী এই বিক্ষোভে অংশ নেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ সময় বিক্ষোভ থেকে একজনকে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

এসব ঘটনার মধ্যেই হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের কর্মসূচির ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক।

**ঢাবি থেকে মিছিল শুরু**
সে অনুযায়ী বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। একই সময়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ দেখায় ‘বৈষম্য ও গণহত্যাবিরোধী আইনজীবী সমাজ’।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, হাইকোর্ট ঘেরাও হবে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’. ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ফ্যাসিবাদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

**চায়ের দাওয়াত**
এদিকে বুধবার সকালেই খবর আসে, বিগত সরকারের ‘দোসর’ হিসেবে কাজ করা এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা হাইকোর্টের ১২ জন বিচারককে ‘চায়ের দাওয়াত’ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সেজন্য প্রধান বিচারপতির দিনের কর্মসূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়।

বেলা ২টা পর্যন্ত ছয়জন বিচারক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন। তখনই সুপ্রিম কোর্টে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে, ওই বিচারকদের ‘ছুটিতে পাঠানোর’ কথা জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

এরপর বিকেলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞার কক্ষে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও এ আর রায়হান এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঞা এবং বাংলাদেশ আইন সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এম মাহবুবুর রহমান খানও উপস্থিতি ছিলেন সেই বৈঠকে।

**প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত**
ওই বৈঠক শেষে প্রধান বিচারপতির কক্ষে যান রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হয়ে তিনি প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

**প্রশাসন-পুলিশের প্রক্সি**
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বিচারিক আধা-বিচারিক সংস্থা ও কমিশন থেকে থেকে দায়িত্বরতদের পদত্যাগের ঘটনা আগেও ঘটেছে।

এছাড়া, বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইন শৃক্সক্ষলা বাহিনীর ‘প্রক্সি’ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা দেখা গেছে।

১০ আগস্ট সমন্বয়কদের ডাকে হাইকোর্টে জমায়েত হয়েছিল একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবির পর ওইদিন পদ ছাড়তে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতিও পদত্যাগ করেন।

গত ২৫ আগস্ট সচিবালয় অবরোধ করা অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের প্রতিরোধ করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দিনভর নানা ঘটনার পর রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ-শতাধিক মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হন। অবরোধ ও সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার সাড়ে তিনশ’র বেশি আনসার সদস্যকে গত সোমবার গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই সময় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ঘেরাও করা আনসার সদস্যদের ‘মোকাবিলা’ না করলে সেখানে ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ হতে পারতো।

back to top