দেশের সংখ্যালঘুরা এখনও চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আগামী জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ সব ক্ষেত্রে আসন সংরক্ষণ ও আলাদা নির্বাচনব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে হিন্দু মহাজোট। জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ হিন্দু শুন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। ‘সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ ও প্রতিনিধিত্বশীল প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধান ও নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রস্তাব’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষিত, উদার ও নির্লোভ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। আশা করছি, এই সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্কার কমিটি এবং রাজনৈতিক দলগুলো প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে আসন সংরক্ষণ ও আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করবে। সংখ্যালঘুদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাবে।
পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার রূপরেখার বিষয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জনসংখ্যা ১২ শতাংশ (হিন্দু-১০, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান-২) অনুপাতে ৩৫০টি আসন হলে ৪২টি আসন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। এর মধ্যে ৩৮টি হিন্দুদের জন্য, বৌদ্ধদের ৩টি ও খ্রিষ্টানদের জন্য ১টি আসন। আর ছয়টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের মধ্যে ৪টি হিন্দু, ২টি বৌদ্ধ সারা দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-আদিবাসী নারীদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। সারা দেশের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সদস্য মনোনীত করবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কখনোই জনসংখ্যার অনুপাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে মনোনয়ন দেয়নি। যৌথ নির্বাচনের কারণে স্বাধীনতার ৫৫ বছরে কোনো সংসদেই হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি। বিএনপি থেকে মাত্র ১ জন, জাতীয় পার্টি থেকে ২ থেকে ৩ জন এবং আওয়ামী লীগ থেকে ৬ থেকে ১৫ জন সংসদ সদস্য হতে পেরেছেন। তাই সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার বিকল্প নেই।
দেশ-বিদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু ইস্যু ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করছে জানিয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ভারতের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে এমনকি আমেরিকার নির্বাচনেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু তাদের ভোট বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ কেউই স্থায়ী সমাধানের কথা বলছে না। আবার সংখ্যালঘু বিষয়ে দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এক ভীতিকর পরিবেশে বাস করছে। হিন্দু জনসংখ্যা ৩৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমেছে।
এসময় মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, ‘সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, দাবিদাওয়া শোনা হয় না। কিন্তু আমরা আশা করব, সরকার ও অন্যান্য ধর্মের লোকজন যাতে আমাদের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দিয়ে দেখেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, জোটের নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, সহসভাপতি দুলাল কুমার মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি তরুণ কুমার ঘোষ, যুগ্ম মহাসচিব হেমন্ত দাস, বিপুল বিশ্বাস, নকুল কুমার মণ্ডলসহ মহাজোটের বিভাগীয় মহাজোট, মহিলা মহাজোট, যুব মহাজোট ও ছাত্র মহাজোটের নেতারা।
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সংখ্যালঘুরা এখনও চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আগামী জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ সব ক্ষেত্রে আসন সংরক্ষণ ও আলাদা নির্বাচনব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে হিন্দু মহাজোট। জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ হিন্দু শুন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আজ শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। ‘সংখ্যালঘু সমস্যার স্থায়ী সমাধান, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ ও প্রতিনিধিত্বশীল প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংবিধান ও নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রস্তাব’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষিত, উদার ও নির্লোভ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। আশা করছি, এই সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্কার কমিটি এবং রাজনৈতিক দলগুলো প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে আসন সংরক্ষণ ও আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করবে। সংখ্যালঘুদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাবে।
পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার রূপরেখার বিষয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জনসংখ্যা ১২ শতাংশ (হিন্দু-১০, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান-২) অনুপাতে ৩৫০টি আসন হলে ৪২টি আসন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। এর মধ্যে ৩৮টি হিন্দুদের জন্য, বৌদ্ধদের ৩টি ও খ্রিষ্টানদের জন্য ১টি আসন। আর ছয়টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের মধ্যে ৪টি হিন্দু, ২টি বৌদ্ধ সারা দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-আদিবাসী নারীদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। সারা দেশের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো সদস্য মনোনীত করবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কখনোই জনসংখ্যার অনুপাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে মনোনয়ন দেয়নি। যৌথ নির্বাচনের কারণে স্বাধীনতার ৫৫ বছরে কোনো সংসদেই হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি পাঠাতে পারেনি। বিএনপি থেকে মাত্র ১ জন, জাতীয় পার্টি থেকে ২ থেকে ৩ জন এবং আওয়ামী লীগ থেকে ৬ থেকে ১৫ জন সংসদ সদস্য হতে পেরেছেন। তাই সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে পৃথক নির্বাচনব্যবস্থার বিকল্প নেই।
দেশ-বিদেশে রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু ইস্যু ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করছে জানিয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ভারতের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে এমনকি আমেরিকার নির্বাচনেও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু তাদের ভোট বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ কেউই স্থায়ী সমাধানের কথা বলছে না। আবার সংখ্যালঘু বিষয়ে দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এক ভীতিকর পরিবেশে বাস করছে। হিন্দু জনসংখ্যা ৩৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমেছে।
এসময় মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায় বলেন, ‘সংখ্যালঘু হওয়ায় আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, দাবিদাওয়া শোনা হয় না। কিন্তু আমরা আশা করব, সরকার ও অন্যান্য ধর্মের লোকজন যাতে আমাদের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দিয়ে দেখেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, জোটের নির্বাহী সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, সহসভাপতি দুলাল কুমার মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি তরুণ কুমার ঘোষ, যুগ্ম মহাসচিব হেমন্ত দাস, বিপুল বিশ্বাস, নকুল কুমার মণ্ডলসহ মহাজোটের বিভাগীয় মহাজোট, মহিলা মহাজোট, যুব মহাজোট ও ছাত্র মহাজোটের নেতারা।