বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের দেখা হবার কথা আজ। সাড়ে সাত বছর পর হিথ্রো বিমানবন্দরে মায়ের সঙ্গে ছেলের এই দেখা হওয়ার কথা। বিমানবন্দরে মা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন তারেক রহমান এবং পরিবারের সদস্যরা। ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই সর্বশেষ যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়া। ওই সময় লন্ডনে থাকা ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এরপর আর মা ছেলের দেখা হয়নি। ওই সময় নিজে গাড়ি চালিয়ে মা খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় নিয়ে যান, যা নিয়ে তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তারেক রহমানকে নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিল।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেন। আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে’ নিয়ে যাওয়া হতে পারে খালেদা জিয়াকে।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে তাদের রাজকীয় বহরের এই বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছেন। সোমবার রাত ৭টা ৪০ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হয়রত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জানা গেছে, হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি হওয়ার কথা রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। এই হাসপাতালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা মূলত চিকিৎসা নেন।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য রওনা দেন খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে রাত ১০টায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক অবস্থায় ছিলো।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ও একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার জানান, ‘লন্ডন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে ম্যাডামকে। আমরা সেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এজন্য সেখানে না যাওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না সব চিকিৎসা শেষ করতে কতদিন সময় লাগতে পারে।’
আরেক সফরসঙ্গী ও বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডাম কতদিন চিকিৎসা নিবেন এটা দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বলতে পারবে। বোর্ড যেভাবে পরামর্শ দিবেন সেভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম লিভার থেকে শুরু করে নানা জটিলতায় আক্রান্ত। লম্বা চিকিৎসা নিতে দেড় দুই মাসের মতো সময় লাগার কথা। কিন্তু এর আগে সুস্থ হয়ে গেলে তিনি দেশে চলে আসবেন। আর খালেদা জিয়ার দেশের বাইরে থাকার মানুষ নন। সফরসঙ্গীদের কয়েকজন ১৫ দিনের মতো থেকে দেশে ফিরে আসবেন। ৪-৫ জনের মতো সফরসঙ্গী ম্যাডামের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকার কথা রয়েছে। ম্যাডাম নিজে সফরসঙ্গী ঠিক করে দিয়েছেন। বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন ম্যাডামের পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান।’
৬ জানুয়ারি সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী লন্ডন ক্লিনিক হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হবে। হিথ্রো এয়ারপোর্ট থেকে উনাকে সরাসরি সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানকার চিকিৎসকরাই তার চিকিৎসার বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেবেন। মঙ্গলবার রাত ১০টায় স্পেশাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ম্যাডাম ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-দোহা এবং দোহা-লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।’
বিশেষ সুবিধাসংবলিত কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাতারের রাজকীয় চারজনসহ দশজন চিকিৎসক এবং নার্স, পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আরও ছয়জন খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন।
চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরতে পারবেন এ বিষয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য জানাতে না পেরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আবেগমাখা এক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করেছে। তবে চিকিৎসা শেষে তারেক রহমান তার মায়ের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে, যদিও বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেশে ফেরার আগে তাদের ওমরাহ পালন করার কথা রয়েছে বলে দলিয় সূত্রে জানা গেছে। এজন্য সৌদি আরবের ভিসাও নেয়া হয়েছে।
বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান সংবাদকে বলেন, ‘ম্যাডামকে শুভেচ্ছা জানাতে দলীয় নেতাকর্মীরা সড়কের উভয় পাশে থাকবেন। এইসময় কোনো ধরনের মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো গাড়ি ব্যবহার করতে নেতাকর্মীদের নিষেধ করা হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কাজটি সহজ এবং জনদুর্ভোগ লাঘব করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে রবিবার রাতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। জানা গেছে, সেই সাক্ষাতে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নেতারা। সাক্ষাৎকালে খালেদা জিয়া বেশ হাসিখুশি ছিলেন বলে জানান এক নেতা।
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানের দেখা হবার কথা আজ। সাড়ে সাত বছর পর হিথ্রো বিমানবন্দরে মায়ের সঙ্গে ছেলের এই দেখা হওয়ার কথা। বিমানবন্দরে মা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন তারেক রহমান এবং পরিবারের সদস্যরা। ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই সর্বশেষ যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়া। ওই সময় লন্ডনে থাকা ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এরপর আর মা ছেলের দেখা হয়নি। ওই সময় নিজে গাড়ি চালিয়ে মা খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় নিয়ে যান, যা নিয়ে তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তারেক রহমানকে নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছিল।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেন। আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে’ নিয়ে যাওয়া হতে পারে খালেদা জিয়াকে।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে তাদের রাজকীয় বহরের এই বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছেন। সোমবার রাত ৭টা ৪০ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হয়রত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জানা গেছে, হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি হওয়ার কথা রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। এই হাসপাতালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা মূলত চিকিৎসা নেন।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য রওনা দেন খালেদা জিয়া। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে রাত ১০টায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক অবস্থায় ছিলো।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ও একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার জানান, ‘লন্ডন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হবে ম্যাডামকে। আমরা সেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এজন্য সেখানে না যাওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না সব চিকিৎসা শেষ করতে কতদিন সময় লাগতে পারে।’
আরেক সফরসঙ্গী ও বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডাম কতদিন চিকিৎসা নিবেন এটা দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বলতে পারবে। বোর্ড যেভাবে পরামর্শ দিবেন সেভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম লিভার থেকে শুরু করে নানা জটিলতায় আক্রান্ত। লম্বা চিকিৎসা নিতে দেড় দুই মাসের মতো সময় লাগার কথা। কিন্তু এর আগে সুস্থ হয়ে গেলে তিনি দেশে চলে আসবেন। আর খালেদা জিয়ার দেশের বাইরে থাকার মানুষ নন। সফরসঙ্গীদের কয়েকজন ১৫ দিনের মতো থেকে দেশে ফিরে আসবেন। ৪-৫ জনের মতো সফরসঙ্গী ম্যাডামের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকার কথা রয়েছে। ম্যাডাম নিজে সফরসঙ্গী ঠিক করে দিয়েছেন। বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছেন ম্যাডামের পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান।’
৬ জানুয়ারি সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী লন্ডন ক্লিনিক হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হবে। হিথ্রো এয়ারপোর্ট থেকে উনাকে সরাসরি সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানকার চিকিৎসকরাই তার চিকিৎসার বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেবেন। মঙ্গলবার রাত ১০টায় স্পেশাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ম্যাডাম ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-দোহা এবং দোহা-লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।’
বিশেষ সুবিধাসংবলিত কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাতারের রাজকীয় চারজনসহ দশজন চিকিৎসক এবং নার্স, পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আরও ছয়জন খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন।
চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরতে পারবেন এ বিষয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য জানাতে না পেরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আবেগমাখা এক ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করেছে। তবে চিকিৎসা শেষে তারেক রহমান তার মায়ের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে, যদিও বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দেশে ফেরার আগে তাদের ওমরাহ পালন করার কথা রয়েছে বলে দলিয় সূত্রে জানা গেছে। এজন্য সৌদি আরবের ভিসাও নেয়া হয়েছে।
বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান সংবাদকে বলেন, ‘ম্যাডামকে শুভেচ্ছা জানাতে দলীয় নেতাকর্মীরা সড়কের উভয় পাশে থাকবেন। এইসময় কোনো ধরনের মোটরসাইকেল বা অন্য কোনো গাড়ি ব্যবহার করতে নেতাকর্মীদের নিষেধ করা হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কাজটি সহজ এবং জনদুর্ভোগ লাঘব করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে রবিবার রাতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। জানা গেছে, সেই সাক্ষাতে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নেতারা। সাক্ষাৎকালে খালেদা জিয়া বেশ হাসিখুশি ছিলেন বলে জানান এক নেতা।