সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র তৈরিতে সর্বদলীয় উদ্যোগ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের কাছ থেকে মতামত আহ্বান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় সংলাপের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঘোষণাপত্র চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে মতামত পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও অংশীজনেরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ঠিকানায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বরাবর এ মতামত জমা দিতে পারবেন।
সকল অভিমত পর্যালোচনা শেষে সংশোধিত ঘোষণাপত্র তৈরি করা হবে এবং তা জনগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়, যা আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সরবরাহ করা হয়েছিল।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন বা বাতিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ঘোষণাপত্র গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়।
প্রথমদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং বিষয়টি সরকার-সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করলেও, পরে ৩০ ডিসেম্বর এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের ৩১ ডিসেম্বরের কর্মসূচি পরিবর্তন করে ঐক্যের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই কর্মসূচি থেকে সরকারকে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
সর্বদলীয় সংলাপের মাধ্যমে ঘোষণাপত্রের খসড়া নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের অভিমত সংগ্রহ করে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হবে।
এর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরির চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ১৯৭২ সালের সংবিধানের প্রসঙ্গ উত্থাপন এবং এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রস্তাব নতুন সম্ভাবনা ও বিতর্ক উভয়ের জন্ম দিয়েছে।
প্রাথমিক বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বিষয়টিকে ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। তবে কিছু দল খসড়ার ভাষা এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় সাধারণ মানুষের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটানো প্রয়োজন। অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দাবি করেছেন, ঘোষণাপত্রে তাদের সংগঠনের প্রস্তাবিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত মতামতগুলো যাচাই-বাছাই শেষে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ও গ্রহণযোগ্য ঘোষণাপত্র তৈরি করা হবে। এরপর জনগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ঘোষিত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। তবে এটি কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করছে ঘোষণাপত্রে সাধারণ মানুষের চাহিদা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের দাবি যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্তির ওপর।
সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র তৈরিতে সর্বদলীয় উদ্যোগ
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের কাছ থেকে মতামত আহ্বান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় সংলাপের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঘোষণাপত্র চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে মতামত পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল ও অংশীজনেরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ঠিকানায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বরাবর এ মতামত জমা দিতে পারবেন।
সকল অভিমত পর্যালোচনা শেষে সংশোধিত ঘোষণাপত্র তৈরি করা হবে এবং তা জনগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়, যা আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সরবরাহ করা হয়েছিল।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন বা বাতিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ঘোষণাপত্র গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়।
প্রথমদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং বিষয়টি সরকার-সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করলেও, পরে ৩০ ডিসেম্বর এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি তাদের ৩১ ডিসেম্বরের কর্মসূচি পরিবর্তন করে ঐক্যের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই কর্মসূচি থেকে সরকারকে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
সর্বদলীয় সংলাপের মাধ্যমে ঘোষণাপত্রের খসড়া নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের অভিমত সংগ্রহ করে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হবে।
এর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক ভিত্তি তৈরির চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ১৯৭২ সালের সংবিধানের প্রসঙ্গ উত্থাপন এবং এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রস্তাব নতুন সম্ভাবনা ও বিতর্ক উভয়ের জন্ম দিয়েছে।
প্রাথমিক বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বিষয়টিকে ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। তবে কিছু দল খসড়ার ভাষা এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় সাধারণ মানুষের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটানো প্রয়োজন। অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দাবি করেছেন, ঘোষণাপত্রে তাদের সংগঠনের প্রস্তাবিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত মতামতগুলো যাচাই-বাছাই শেষে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ও গ্রহণযোগ্য ঘোষণাপত্র তৈরি করা হবে। এরপর জনগণের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ঘোষিত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। তবে এটি কতটা সফল হবে, তা নির্ভর করছে ঘোষণাপত্রে সাধারণ মানুষের চাহিদা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের দাবি যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্তির ওপর।