ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের বিষয়ে নারাজি আবেদন দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ মামলায় ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। রোববার ২ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নারাজি দাখিল করা হয়।
নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি শেষ করে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান। আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত বলেন, ‘মামলার তদন্ত সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী সেলিম জাবেদ আদালতে নারাজি দাখিল করেন। এজন্য মামলাটির অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন।
‘পরে শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন।’ শুনানির সময় ভুক্তভোগী তোফাজ্জলের ফুফাত বোন মোসা. আসমা আক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিন সকালে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে তারা এ নারাজি দাখিল করেছে। আমরা চাচ্ছি, অভিযোগপত্রটি যেন আদালত গ্রহণ করে বিচার প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করেন।’
এর আগে তদন্ত শেষে ১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আসামিরা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। এদের মধ্যে প্রথম ৬ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তোফাজ্জলকে মারধরের আগে তাকে ভাত খাওয়ানো হয়, তখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভাত খেতে তার কেমন লাগছে। খবর রয়েছে, ভাত খাওয়ানোর পর তাকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরের দিন শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলায় বলা হয়, ওই রাতে পৌনে ৮টার দিকে এক যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন।
‘জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র মারধর করে। এতে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’ ঘটনার কয়েকদিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের ফুফাত বোন আসমা আক্তার। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার সঙ্গে আসমার মামলাটি একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
রোববার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের বিষয়ে নারাজি আবেদন দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ মামলায় ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। রোববার ২ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নারাজি দাখিল করা হয়।
নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি শেষ করে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছেন ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান। আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত বলেন, ‘মামলার তদন্ত সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী সেলিম জাবেদ আদালতে নারাজি দাখিল করেন। এজন্য মামলাটির অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন।
‘পরে শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন।’ শুনানির সময় ভুক্তভোগী তোফাজ্জলের ফুফাত বোন মোসা. আসমা আক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিন সকালে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে তারা এ নারাজি দাখিল করেছে। আমরা চাচ্ছি, অভিযোগপত্রটি যেন আদালত গ্রহণ করে বিচার প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করেন।’
এর আগে তদন্ত শেষে ১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আসামিরা হলেন- ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। এদের মধ্যে প্রথম ৬ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তোফাজ্জলকে মারধরের আগে তাকে ভাত খাওয়ানো হয়, তখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভাত খেতে তার কেমন লাগছে। খবর রয়েছে, ভাত খাওয়ানোর পর তাকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরের দিন শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। মামলায় বলা হয়, ওই রাতে পৌনে ৮টার দিকে এক যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন।
‘জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র মারধর করে। এতে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’ ঘটনার কয়েকদিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের ফুফাত বোন আসমা আক্তার। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার সঙ্গে আসমার মামলাটি একসঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেয়।