২৪৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৫৭ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ২৪৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৫৭ কোটি টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগে চারটি মামলা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, কমিশন মামলাগুলোর অনুমোদন দিয়েছে, যা সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দায়ের করা হবে।
একসময় ভালো অবস্থানে থাকা বেসিক ব্যাংক চার হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান থাকাকালীন বেনামি ও ভুয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ৫৯টি মামলা দায়ের করেছিল দুদক। তবে সেসব মামলায় বাচ্চুর নাম না থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
দীর্ঘ তদন্তের পর, ২০২৩ সালের জুনে ৫৯ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় দুদক, যেখানে ৫৮টিতে বাচ্চুর নাম আসে। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহক থাকলেও পরিচালনা পর্ষদের কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত গত জানুয়ারিতে ১৪টি মামলার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়।
দুদকের নতুন মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন এবং ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
দুদক বলছে, সম্পদ বিবরণীতে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।
১. প্রধান মামলায় বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
৫৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক ঋণ অনুমোদন
১২৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন
কানাডায় ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা পাচার
২. স্ত্রী শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে মামলা
দ্বিতীয় মামলায় বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আকতারকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি স্বামীর সহায়তায় ৩৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
৩. ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে মামলা
তৃতীয় মামলায় বাচ্চুর ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক আসামি হয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ৪৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
বাবার কাছ থেকে পাওয়া ২৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ২ কাঠা জমি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন
৮৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা কানাডায় পাচার করেছেন
৪. মেয়ে শেখ রাফা হাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
চতুর্থ মামলায় বাচ্চুর মেয়ে শেখ রাফা হাই আসামি হয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি বাবার সহায়তায় ৪০ কোটি ৪১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
৮৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার ৬ কাঠা জমি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন
৭৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা কানাডায় পাচার করেছেন
জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বাচ্চুকে ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ব্যাংকের ঢাকার গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখায় ব্যাপক ঋণ কেলেঙ্কারি শুরু হয়।
ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম ছাড়াও ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালে জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সংক্রান্ত কমিটি এই বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে।
ঘটনাগুলো সামনে আসার পর, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোনায়েম খানকে অপসারণ করে এবং পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের সুপারিশ করে। পরে আব্দুল হাই বাচ্চু পদত্যাগ করেন।
দুদকের চারটি নতুন মামলা এই কেলেঙ্কারির তদন্তের আরও একটি ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২৪৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৫৭ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ২৪৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৫৭ কোটি টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগে চারটি মামলা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, কমিশন মামলাগুলোর অনুমোদন দিয়েছে, যা সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দায়ের করা হবে।
একসময় ভালো অবস্থানে থাকা বেসিক ব্যাংক চার হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্যান থাকাকালীন বেনামি ও ভুয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ৫৯টি মামলা দায়ের করেছিল দুদক। তবে সেসব মামলায় বাচ্চুর নাম না থাকায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
দীর্ঘ তদন্তের পর, ২০২৩ সালের জুনে ৫৯ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় দুদক, যেখানে ৫৮টিতে বাচ্চুর নাম আসে। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহক থাকলেও পরিচালনা পর্ষদের কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত গত জানুয়ারিতে ১৪টি মামলার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়।
দুদকের নতুন মামলায় আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন এবং ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
দুদক বলছে, সম্পদ বিবরণীতে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।
১. প্রধান মামলায় বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
৫৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক ঋণ অনুমোদন
১২৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন
কানাডায় ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা পাচার
২. স্ত্রী শিরিন আকতারের বিরুদ্ধে মামলা
দ্বিতীয় মামলায় বাচ্চুর স্ত্রী শিরিন আকতারকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি স্বামীর সহায়তায় ৩৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
৩. ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিকের বিরুদ্ধে মামলা
তৃতীয় মামলায় বাচ্চুর ছেলে শেখ ছাবিদ হাই অনিক আসামি হয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ৪৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
বাবার কাছ থেকে পাওয়া ২৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ২ কাঠা জমি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন
৮৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা কানাডায় পাচার করেছেন
৪. মেয়ে শেখ রাফা হাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
চতুর্থ মামলায় বাচ্চুর মেয়ে শেখ রাফা হাই আসামি হয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি বাবার সহায়তায় ৪০ কোটি ৪১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
৮৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার ৬ কাঠা জমি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন
৭৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা কানাডায় পাচার করেছেন
জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বাচ্চুকে ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর ব্যাংকের ঢাকার গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখায় ব্যাপক ঋণ কেলেঙ্কারি শুরু হয়।
ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম ছাড়াও ব্যাংকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। ২০২২ সালে জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সংক্রান্ত কমিটি এই বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে।
ঘটনাগুলো সামনে আসার পর, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোনায়েম খানকে অপসারণ করে এবং পরিচালনা পর্ষদ বাতিলের সুপারিশ করে। পরে আব্দুল হাই বাচ্চু পদত্যাগ করেন।
দুদকের চারটি নতুন মামলা এই কেলেঙ্কারির তদন্তের আরও একটি ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।