সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের বৈঠকে
আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার ১২ এপ্রিল বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস এ তাগিদ দেন। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের তথ্য তার দপ্তরের এক সংশোধিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের হাল ধরে।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারে সরকার দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে। প্রথম ধাপের ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে পাঁচটির গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০ মার্চ থেকে সংলাপ শুরু করেছে। তবে সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে সরকার দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করবে।
অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ কয়েকটি দল চায় সংস্কার পুরোপুরি শেষ করে নির্বাচন করতে।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, কম সংস্কার করে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে এ বছর ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আর যদি সংস্কার পুরোপুরি শেষ করার পক্ষে মত দেয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে কমিশনের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা চলমান রয়েছে। এদিন পর্যন্ত মোট আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করা আছে।
গত বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হবে আগামী ১৬ এপ্রিল; যেখানে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়া হবে। সেদিন দুপুর ১২টায় এ বৈঠকের সূচি ঠিক হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপিকে নিয়ে নানান খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সালাহ উদ্দিন। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের আগে একটা রোডম্যাপ অবশ্যই চাইব। যাতে উনি ক্লিয়ারলি জাতির সামনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করেন, যাতে জাতির মধ্যে যে একটা অনিশ্চিত-অস্থিরতার যে ভাব আছে এবং রাজনীতিতে যাতে স্থিতিশীলতা আসে, অর্থনৈতিক কর্মকা-ে যাতে একটা গতিশীলতা আসে সেগুলো লক্ষ্য রেখে আমরা বলব যে, এটা যথেষ্ট সময়।’
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা (নির্বাচন কমিশন) জুনের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সমাপ্ত করতে পারবে এবং প্রধান উপদেষ্টা ইতোপূর্বে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সমস্ত কর্মকা- পরিচালনা করছেন। যেহেতু বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে সেটা পরিষ্কার করার জন্য আমরা উনার কাছে এই আহ্বান জানাব।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা জানান যে সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত যাচাই এবং সে বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ সময় কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা তথা সামগ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দেন।
সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের বৈঠকে
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার ১২ এপ্রিল বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস এ তাগিদ দেন। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের তথ্য তার দপ্তরের এক সংশোধিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের হাল ধরে।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারে সরকার দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে। প্রথম ধাপের ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে পাঁচটির গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০ মার্চ থেকে সংলাপ শুরু করেছে। তবে সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে সরকার দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করবে।
অন্যদিকে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ কয়েকটি দল চায় সংস্কার পুরোপুরি শেষ করে নির্বাচন করতে।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি বেশ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, কম সংস্কার করে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে এ বছর ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আর যদি সংস্কার পুরোপুরি শেষ করার পক্ষে মত দেয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে কমিশনের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা চলমান রয়েছে। এদিন পর্যন্ত মোট আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করা আছে।
গত বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হবে আগামী ১৬ এপ্রিল; যেখানে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়া হবে। সেদিন দুপুর ১২টায় এ বৈঠকের সূচি ঠিক হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপিকে নিয়ে নানান খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সালাহ উদ্দিন। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের আগে একটা রোডম্যাপ অবশ্যই চাইব। যাতে উনি ক্লিয়ারলি জাতির সামনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করেন, যাতে জাতির মধ্যে যে একটা অনিশ্চিত-অস্থিরতার যে ভাব আছে এবং রাজনীতিতে যাতে স্থিতিশীলতা আসে, অর্থনৈতিক কর্মকা-ে যাতে একটা গতিশীলতা আসে সেগুলো লক্ষ্য রেখে আমরা বলব যে, এটা যথেষ্ট সময়।’
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা (নির্বাচন কমিশন) জুনের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সমাপ্ত করতে পারবে এবং প্রধান উপদেষ্টা ইতোপূর্বে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সমস্ত কর্মকা- পরিচালনা করছেন। যেহেতু বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে সেটা পরিষ্কার করার জন্য আমরা উনার কাছে এই আহ্বান জানাব।’
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা জানান যে সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত যাচাই এবং সে বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ সময় কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা তথা সামগ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দেন।