শিক্ষক সমিতির দাবি- এই সিদ্ধান্ত ‘ন্যায়বিচারের পরাজয়’ ৪ মে ক্লাস শুরু হতে পারে
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) এবং উপ-উপাচার্যকে (প্রো-ভিসি) দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ‘চাপের মুখে’ ভিসি ও প্রোভিসির পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে ‘ন্যায়বিচারের পরাজয়’ হিসেবে দেখছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। আগামী ৪ মে থেকে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(২৪ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
‘অনতিবিলম্বে’ একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।’
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এর পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
গত ১৪ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এসব ঘটনায় কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের একদফা দাবিতে ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে বসেন ২৯ শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার শিক্ষা উপদেষ্টা গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভিসির পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন।
চাপের মুখে ভিসি-প্রোভিসির অব্যাহতি ন্যায়বিচারের পরাজয় শিক্ষক সমিতি :
সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তারা আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম একটা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন করে আসছিল, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির করালগ্রাসে বন্দি। এ কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে শিক্ষকদের কোনো চেষ্টায় সফল হয়নি।’
শিক্ষা উপদেষ্টাসহ তার পাঠানো প্রতিনিধিদলও এক্ষেত্রে ‘অসহায়ত্ব’ প্রকাশ করেছেন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দীর্ঘ আট মাস পরও যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কার্যক্রম চলতে থাকে, তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় সমগ্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলতে পারে, যা নিয়ে শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা সব সময় সচেষ্ট থাকবে।
৪ মে ক্লাস শুরু হতে পারে :
কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য অব্যাহতির ঘোষণার মধ্যদিয়ে আন্দোলন থেকে সরে এসেছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ৪ মে শুরু হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম।
অবশেষে বুধবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, ভিসি ও প্রোভিসিকে সরানোর যে দাবি শিক্ষার্থীদের ছিল সেটি মেনে নেয়া হচ্ছে। এরপর সব আন্দোলনের সমাপ্তি টানেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক সমিতির দাবি- এই সিদ্ধান্ত ‘ন্যায়বিচারের পরাজয়’ ৪ মে ক্লাস শুরু হতে পারে
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) এবং উপ-উপাচার্যকে (প্রো-ভিসি) দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ‘চাপের মুখে’ ভিসি ও প্রোভিসির পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে ‘ন্যায়বিচারের পরাজয়’ হিসেবে দেখছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। আগামী ৪ মে থেকে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(২৪ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
‘অনতিবিলম্বে’ একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।’
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এর পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
গত ১৪ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এসব ঘটনায় কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের একদফা দাবিতে ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে বসেন ২৯ শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার শিক্ষা উপদেষ্টা গিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভিসির পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন।
চাপের মুখে ভিসি-প্রোভিসির অব্যাহতি ন্যায়বিচারের পরাজয় শিক্ষক সমিতি :
সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তারা আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম একটা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন করে আসছিল, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির করালগ্রাসে বন্দি। এ কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে শিক্ষকদের কোনো চেষ্টায় সফল হয়নি।’
শিক্ষা উপদেষ্টাসহ তার পাঠানো প্রতিনিধিদলও এক্ষেত্রে ‘অসহায়ত্ব’ প্রকাশ করেছেন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দীর্ঘ আট মাস পরও যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন কার্যক্রম চলতে থাকে, তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় সমগ্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলতে পারে, যা নিয়ে শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা সব সময় সচেষ্ট থাকবে।
৪ মে ক্লাস শুরু হতে পারে :
কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য অব্যাহতির ঘোষণার মধ্যদিয়ে আন্দোলন থেকে সরে এসেছে শিক্ষার্থীরা। আগামী ৪ মে শুরু হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম।
অবশেষে বুধবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, ভিসি ও প্রোভিসিকে সরানোর যে দাবি শিক্ষার্থীদের ছিল সেটি মেনে নেয়া হচ্ছে। এরপর সব আন্দোলনের সমাপ্তি টানেন শিক্ষার্থীরা।