রাখাইনে মানবিক সহায়তা নেওয়ার পথ তৈরির ক্ষেত্রে জাতিসংঘ যদি জড়িত হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মায়ানমার সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়।
বুধবার এক বার্তায় ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর এক মুখপাত্র বলেন, “আন্তঃসীমান্ত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমোদন নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা জাতিসংঘের রয়েছে। এটা ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি সম্পৃক্ততা সীমিত।”
মায়ানমারের গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের ‘মানবিক করিডোর’ হওয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এ প্রতিক্রিয়া জানায় জাতিসংঘ।
ওই বার্তায় আরও বলা হয়, “জাতিসংঘ বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা কার্যক্রম এবং রাখাইনে বাজে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রাখছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা হিসাবে বাংলাদেশ যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে থাকে, সে মানবিক সহযোগীদের নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ঢাকা সফরের পর গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের ‘মানবিক সহায়তা চ্যানেল’ বিষয়ে প্রথম ধারণা দেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা এবং অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান।
৭ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনায় ‘হিউম্যানিটারিয়ান চ্যানেলে’ বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার বিষয় প্রথম আসার কথা তুলে ধরে ওইদিন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আরাকান আর্মি, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মায়ানমার সরকার- সবার সঙ্গে আলোচনা করেই জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে গিয়েছিলেন তিনি।
“তাকে আমরা বলেছি, রাখাইনে যে মানবিক সমস্যা, যে সংকট সেটা মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিকল্প নাই। সেই কাজটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেই হবে।”
মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিকল্প না থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র চ্যানেল, যার মাধ্যমে এটা করা সম্ভব। কারণ, রাখাইনের উপকূল এখনও তাতমাদোর দখলে এবং অন্যান্য জায়গা দিয়ে সহজে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব নয়।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান বলেন, আইনি কারণে এটাকে ‘করিডোর’ না বলে ‘চ্যানেল’ বলা হচ্ছে।
তার ওই বক্তব্যের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘মানবিক প্যাসেজ’ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এটাতে সম্মত। কারণ, মানবিক প্যাসেজ হবে। কিন্তু এটাতে আমাদের কিছু শর্ত আছে, সেটার বিস্তারিততে যাচ্ছি না, সেই শর্তাবলী যদি পালিত হয়, আমরা এটাতে অবশ্যই সহযোগিতা করব, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবশ্যই।”
তার ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক তৈরি হয়। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে রাজনৈতিক দলগুলো।
‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের যে ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ তা দেশের ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির’ মুখে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তার মতে, এক্ষেত্রে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটি ঠিক হয়নি। উচিৎ ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এই করিডোর দেওয়ার ফলে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকি’র মুখে পড়বে।
রাজনৈতিক দলগুলোর এমন বিরোধিতার মুখে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ বা ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া নিয়ে ‘জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার’ সঙ্গে সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি।
এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, 'যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ যৌক্তিক পরিকাঠামোগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে।'
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবারের বার্তায় নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়।
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
রাখাইনে মানবিক সহায়তা নেওয়ার পথ তৈরির ক্ষেত্রে জাতিসংঘ যদি জড়িত হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মায়ানমার সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়।
বুধবার এক বার্তায় ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর এক মুখপাত্র বলেন, “আন্তঃসীমান্ত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমোদন নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা জাতিসংঘের রয়েছে। এটা ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি সম্পৃক্ততা সীমিত।”
মায়ানমারের গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের ‘মানবিক করিডোর’ হওয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এ প্রতিক্রিয়া জানায় জাতিসংঘ।
ওই বার্তায় আরও বলা হয়, “জাতিসংঘ বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা কার্যক্রম এবং রাখাইনে বাজে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ অব্যাহত রাখছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা হিসাবে বাংলাদেশ যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে থাকে, সে মানবিক সহযোগীদের নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ।”
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ঢাকা সফরের পর গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের ‘মানবিক সহায়তা চ্যানেল’ বিষয়ে প্রথম ধারণা দেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা এবং অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান।
৭ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনায় ‘হিউম্যানিটারিয়ান চ্যানেলে’ বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার বিষয় প্রথম আসার কথা তুলে ধরে ওইদিন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আরাকান আর্মি, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মায়ানমার সরকার- সবার সঙ্গে আলোচনা করেই জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে গিয়েছিলেন তিনি।
“তাকে আমরা বলেছি, রাখাইনে যে মানবিক সমস্যা, যে সংকট সেটা মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিকল্প নাই। সেই কাজটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানেই হবে।”
মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিকল্প না থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র চ্যানেল, যার মাধ্যমে এটা করা সম্ভব। কারণ, রাখাইনের উপকূল এখনও তাতমাদোর দখলে এবং অন্যান্য জায়গা দিয়ে সহজে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব নয়।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমান বলেন, আইনি কারণে এটাকে ‘করিডোর’ না বলে ‘চ্যানেল’ বলা হচ্ছে।
তার ওই বক্তব্যের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘মানবিক প্যাসেজ’ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এটাতে সম্মত। কারণ, মানবিক প্যাসেজ হবে। কিন্তু এটাতে আমাদের কিছু শর্ত আছে, সেটার বিস্তারিততে যাচ্ছি না, সেই শর্তাবলী যদি পালিত হয়, আমরা এটাতে অবশ্যই সহযোগিতা করব, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবশ্যই।”
তার ওই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক তৈরি হয়। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে রাজনৈতিক দলগুলো।
‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের যে ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ তা দেশের ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির’ মুখে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তার মতে, এক্ষেত্রে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটি ঠিক হয়নি। উচিৎ ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এই করিডোর দেওয়ার ফলে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকি’র মুখে পড়বে।
রাজনৈতিক দলগুলোর এমন বিরোধিতার মুখে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘হিউম্যানিটারিয়ান প্যাসেজ’ বা ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া নিয়ে ‘জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার’ সঙ্গে সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি।
এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, 'যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ যৌক্তিক পরিকাঠামোগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে।'
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবারের বার্তায় নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়।