যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির ঘোষণা আসার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানায় মুম্বাইয়ের এই শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দু’পক্ষ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তাদের অভিনন্দন।’
এর কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেন, উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি একে দুই দেশের নেতৃত্বের ‘বিচক্ষণতার’ প্রকাশ বলে মন্তব্য করেন।
এক্সে দেয়া এক পোস্টে রুবিও লেখেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান সরকার তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং তারা নিরপেক্ষ স্থানে বহুমুখী বিষয়ে আলোচনা চালাতে রাজি হয়েছে।’ তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের শান্তিপূর্ণ ও রাষ্ট্রনায়কসুলভ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর যখন দুই দেশ বড় ধরনের সংঘাতের পথে এগোচ্ছিল, তখনই আসে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা।
রুবিও এ সিদ্ধান্তের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভবিষ্যৎ সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স শনিবার বিকেলে তার ভারতীয় সমপদের কর্মকর্তাকে ফোন করে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেন। উভয়পক্ষ সম্মত হয় যে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে স্থলে, আকাশে ও সমুদ্রে গোলাগুলি বন্ধ থাকবে। আগামী ১২ মে দুই পক্ষ আবার আলোচনায় বসবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও এক্স হ্যান্ডেলে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময়ই এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা চেয়েছে, তবে সার্বভৌমত্ব ও অখ-তার প্রশ্নে কোনো আপস করেনি।’
এর আগে জিও নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসহাক দার বলেন, ‘ভারত থামলে আমরাও থামব। ধ্বংস বা সম্পদের অপচয় আমরা চাই না। শান্তিই আমাদের লক্ষ্য।’
তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার আগে শনিবার ভোরে পাকিস্তান ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মজুতাগারসহ একাধিক সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালায়, যার নাম দেয়া হয় ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’। পাকিস্তান জানায়, এটি ছিল ভারতের আগের হামলার জবাব।
এর আগে টানা প্রায় তিন দিনের সংঘাতে উভয় দেশের শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে একাধিক যুদ্ধবিমান এবং বেশ কিছু ড্রোন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর ও ফিরোজপুরে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। জম্মু, সাম্বা ও পাঠানকোট এলাকায় একাধিক ড্রোন শনাক্ত করা হয়েছে।
ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরেও পুনরায় গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়। সেখানে বর্তমানে কী পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
সাম্প্রতিক হামলায় পাকিস্তান আবারও তাদের স্বল্প-পাল্লার উন্নততর ‘ফাতাহ-২’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দাবি, ভারত হামলায় যেসব ড্রোন ব্যবহার করেছে, তার একটিও ফিরে আসেনি। তাদের মতে, ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে তৈরি ৭৭টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাল্টা অভিযোগ করে জানিয়েছে, পাকিস্তান ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির ঘোষণা আসার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানায় মুম্বাইয়ের এই শিক্ষার্থীরা
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দু’পক্ষ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তাদের অভিনন্দন।’
এর কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেন, উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তিনি একে দুই দেশের নেতৃত্বের ‘বিচক্ষণতার’ প্রকাশ বলে মন্তব্য করেন।
এক্সে দেয়া এক পোস্টে রুবিও লেখেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান সরকার তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং তারা নিরপেক্ষ স্থানে বহুমুখী বিষয়ে আলোচনা চালাতে রাজি হয়েছে।’ তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের শান্তিপূর্ণ ও রাষ্ট্রনায়কসুলভ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার পর যখন দুই দেশ বড় ধরনের সংঘাতের পথে এগোচ্ছিল, তখনই আসে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা।
রুবিও এ সিদ্ধান্তের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভবিষ্যৎ সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স শনিবার বিকেলে তার ভারতীয় সমপদের কর্মকর্তাকে ফোন করে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেন। উভয়পক্ষ সম্মত হয় যে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে স্থলে, আকাশে ও সমুদ্রে গোলাগুলি বন্ধ থাকবে। আগামী ১২ মে দুই পক্ষ আবার আলোচনায় বসবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও এক্স হ্যান্ডেলে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময়ই এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা চেয়েছে, তবে সার্বভৌমত্ব ও অখ-তার প্রশ্নে কোনো আপস করেনি।’
এর আগে জিও নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসহাক দার বলেন, ‘ভারত থামলে আমরাও থামব। ধ্বংস বা সম্পদের অপচয় আমরা চাই না। শান্তিই আমাদের লক্ষ্য।’
তবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার আগে শনিবার ভোরে পাকিস্তান ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মজুতাগারসহ একাধিক সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালায়, যার নাম দেয়া হয় ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’। পাকিস্তান জানায়, এটি ছিল ভারতের আগের হামলার জবাব।
এর আগে টানা প্রায় তিন দিনের সংঘাতে উভয় দেশের শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে একাধিক যুদ্ধবিমান এবং বেশ কিছু ড্রোন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর ও ফিরোজপুরে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। জম্মু, সাম্বা ও পাঠানকোট এলাকায় একাধিক ড্রোন শনাক্ত করা হয়েছে।
ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরেও পুনরায় গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়। সেখানে বর্তমানে কী পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
সাম্প্রতিক হামলায় পাকিস্তান আবারও তাদের স্বল্প-পাল্লার উন্নততর ‘ফাতাহ-২’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দাবি, ভারত হামলায় যেসব ড্রোন ব্যবহার করেছে, তার একটিও ফিরে আসেনি। তাদের মতে, ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে তৈরি ৭৭টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাল্টা অভিযোগ করে জানিয়েছে, পাকিস্তান ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।