বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ হলেও ইয়াবা আসা বন্ধ হয়নি; কথা রাখেনি আত্মসমর্পণকারীরা
বাংলাদেশের সঙ্গে মায়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মরণ নেশা ইয়াবার চালানসহ কয়েক আইটেমের মাদক স্রোতের ন্যায় ঢুকছে। বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ হলেও বন্ধ হচ্ছে না সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান। দেশের সর্বত্র এ মাদক ছড়িয়ে দিতে স্থল ও সমুদ্রপথে ইয়াবা চালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন মাদক কারবারিরা। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদকের বড় চালান উদ্ধারসহ মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে র?্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। পাশাপাশি মাদকের আগ্রাসন কমাতে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনীও। মামলা হচ্ছে আবার জামিনে বেরিয়ে এসে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। এজাহার নামীয় আসামি মামলার চার্জশিট থেকে বাদও পড়ছে মোটা অংকের টাকা দিয়ে।
তথ্যসূত্রে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি পয়েন্টে সরেজমিন ঘুরে জানা যায় মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ চলমান যুদ্ধের সময় কিছুটা ইয়াবা পাচার বন্ধ থাকার পরে হঠাৎ ইয়াবা চাহিদা বৃদ্ধি পেলে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার আশায় চিহ্নিত নতুন পুরাতন ইয়াবা কারবারিরা নিষিদ্ধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। চোরাচালান কারবারিরা দেশের সর্বত্র মরণনেশা ইয়াবা ছড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে টেকনাফের আশপাশের উপকূলবর্তী এলাকাজুড়ে অবৈধ ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য চলছে। কোটিপতি হওয়ার হাতছানিতে একশ্রেণীর মানুষ উন্মাদের মতো এ অবৈধ ব্যবসার পেছনে ছুটছে। তাদের রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট, একেকজন একেক দায়িত্বে থাকে।
পূর্ববর্তী গভীর সমুদ্র থেকে ইয়াবা নিরাপদে তীরে পৌঁছে দিতে কারবারিদের সঙ্গে বোটমালিক বা মাঝির মধ্যে পিসপ্রতি ৪ টাকা করে চুক্তি হয়। পরে তাদের নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে মায়ানমারের সীমানায় গিয়ে, মায়ানমারের ইয়াবাবাহী জাহাজ থেকে ইয়াবা চালান নিয়ে এসে কারবারিদের গন্তব্যস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে
দেয় দেশীয় ইয়াবা বহনকারী বোটের মালিক ও স্টাফরা। মায়ানমার থেকে আসা কিছু বড় বড় ইয়াবা চালান বঙ্গোপসাগর হয়ে নৌপথ দিয়ে বিভিন্ন নৌযানযোগে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ হয়ে ইয়াবার চালান পৌঁছে যাচ্ছে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। ইয়াবা সেবনকারীরা এখন জেলা শহর থেকে উপজেলা এমনকি গ্রামপর্যায়েও ক্রমাগত আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তার পাশাপাশি সড়কপথে এমন কোনো যানবাহন নেই যেখানে কোনো না কোনো যাত্রী বা হেলপারের শরীর তল্লাশিতে ইয়াবা মিলছে না। শুধু তাই নয়, রোগী বহনের কাজে নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্স, মাছ, শাক-সবজি, লবণের ট্রাক, সিএনজি, ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস, কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের যানবাহনেও বিশেষ কায়দায় পরিবাহিত হচ্ছে ইয়াবার চালান। এনজিও গাড়ি, বিভিন্ন প্রশাসনের স্টিকারও ব্যবহার করছে কারবারিরা।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী তুমুল লড়াইয়ের পর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিজিপি ঘাঁটিগুলো এখন আরাকান আর্মির দখলে। ঘাঁটিগুলোতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। বিশেষ করে গত ৮ ডিসেম্বর রাখাইনে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মির দখলের পর বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যে বন্ধ থাকলে সেদেশ থেকে মাদক ইয়াবা আসা বন্ধ হয়নি।
মায়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির গৃহযুদ্ধের মধ্যেও মাদক ইয়াবা প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না। রাখাইন অঞ্চলের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাগুলো এখন যুদ্ধকবলিত হয়ে
পড়ার সুযোগে ইয়াবাসহ মাদক পাচার চলছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির পৃষ্ঠপোষকতায় মায়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পর্যাপ্ত অর্থের যে প্রয়োজন তার জোগান দেয়া হচ্ছে ইয়াবা থেকে। এ কারণে মায়ানমার হয়ে বাংলাদেশের বাজারে আসা এসব ইয়াবার চালান নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। মায়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধের মধ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইন প্রদেশ দখল করে নেয়ার পর এখন মাদক ইয়াবা পাচার বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে। নাফ নদী পথে টেকনাফ স্থলবন্দরে সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ থাকলেও, ইয়াবা বিভিন্ন মাদক আসা কমছে না।
সীমান্ত পাড়ে নজির আহমদের বাড়ি, তিনি প্রতিরাতে দেখতে পান, আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত মংডু থেকে, লালদিয়া ও জালিয়ার দ্বীপ হয়ে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান ঢুকতে। এ মাদকের চালানগুলো আরএসও ও রোহিঙ্গা মিলে এপাড়ে ঢুকতে সাহায্য করে।
নিষিদ্ধ বাজারে মাদক কারবার বৃদ্ধি পেয়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। গত ২০০৬/৭ সালে একটি কার্ড (১০০০০) পিস ইয়াবার মূল্য ছিল আটাশ লাখ থেকে ত্রিশ লাখ, ২০২০/২৪-এর শেষের দিকে ছিল একটি কার্ড ৫ লাখ থেকে আড়াই লাখ, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে নিষিদ্ধ বাজারের এর মূল্য ১০ লাখ থেকে ৮ লাখ পর্যন্ত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মায়ানমার থেকে মাদক পাচার রোধে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল জোরদার করেছে
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কিন্তু তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে কারবারিরা কৌশল অবলম্বন করে মাদকের চালান প্রবেশ করছে এপাড়ে। তারা যে পয়েন্টগুলো ব্যবহার করে তা হলো টেকনাফ সাবরাং, জিনাপাড়া স্লুইস গেট, সাবরাং খালের স্লুইস গেট, মুন্ডার ডেইল ঘাট, বাহার ছড়ার ঘাট, কাটাবনিয়া ঘাট। শাহপরীর দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার ঘাট, মিস্ত্রিপাড়ার ঘাট, পশ্চিমপাড়ার ঘাট, জেটির ঘাট, জালিয়াপাড়ার ঘাট। টেকনাফ পৌরসভার, কায়ুকখালী খাল, জেটি ঘাট (বদির জেটি) নাইট্যংপাড়া ঘাট, হেস্কার খাল, টেকনাফ সদর, বড়ইতুলী ঘাট, লম্বরি ঘাট, হাবির ছাড়া ঘাট, তুলাতুলী ঘাট, মহেশখালীয়াপাড়া ঘাট, হ্নীলা ইউনিয়ন, হোয়াব্রাং, হ্নীলা এক নাম্বার স্লুইস গেইট এলাকা, চৌধুরীপাড়া, লেদা, জাদিমোড়া, নার্সারি পার্কের বিপরীত বিউপির উত্তর দিক দিয়ে। এসব ঘাট দিয়ে নিয়মিত ইয়াবা ঢুকছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পুরনো ইয়াবা কারবারিরা যেমন নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে একইভাবে তাদের শেল্টার দিচ্ছে প্রভাবশালী কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যের মধ্য দিয়ে জানা যায়, ওই চোরাচালানের পয়েন্টগুলো যেসব মাদক গডফাদার নিয়ন্ত্রণ করে শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, হেলাল, নুরুল আলম মেম্বারের ছেলে হেলাল, সাবরাং এলাকার নুর হোসেন চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফারুক, ট্রাক মালিক রবিউল রবি, দিল মোহাম্মদ দিলু (আত্মসমর্পণকারী) দুবাই কালোর ছেলে হোসন (ট্রাকমালিক) আলির ডেইলের কামাল, জসিম, ডানু মেম্বার, আব্দুল আমিন (লোলা মাজি), ইব্রাহিম (সোর্স), কালাইয়া (প্রকাশ ইয়াবা কালাইয়া) গিয়াস উদ্দিন, তালা কবিরের ছেলে সাদ্দাম তার ভাই রুবেল ও নুরুল আলম, লেজিরপাড়ার ফয়াজ, খারিয়া খালীর জিয়ারু, জাহেদ, সাবরাং এলাকার মাফিয়া সাদ্দাম (আত্মসমর্পণকারী), ইয়াসিন, আব্দুল গফুরের ছেলে রাশেল, নোয়াপাড়ার কালা মঞ্জুর, সাকের, ওসমান, ওমর, গুরা মিয়া। টেকনাফ সদরের, থানার ডেইল এলাকার আলী
আহমদ ও তার ভাইজি জামাই রোহিঙ্গা আজিজ (এন আইডিতে) আরমান, আব্দুর রহমান ও তার ভাই একরাম (আত্মসমর্পণকারী) সৈয়দের ছেলে বাক্কুইচ্ছা, দালাল হামিদের ছেলে জাকির, ড্রাইভার ইব্রাহিম, বড় হাবিবরপাড়ার আব্দুর রশিদ, বদিউর রহমানের ছেলে কালাইয়া, আবু বক্কর, আব্দুল আমিন (প্রকাশ সাতমাইসসা) খুশী, ব্লেক সিদ্দিকের ছেলে ফরিদ আলম, কালাইয়া, মহেশখালীয়া পাড়ার মাহমুদুল, নরুল ইসলাম মেম্বারের ছেলে তারেক তার ভাই রাশেল, রকিম বলির ছেলে তজিল, সোহেল, কাসিমের ছেলে ফারুক, শাহ আলমের ছেলে নুরুল আলম, দুদু মিয়ানমার ছেলে ফারুক, আব্দুল্লাহ মেম্বার ও তার বোনের জামাই সাইফুল, কালা বাম্বু, কাদের (পাগলা কাদের), বদিউর রহমান (আত্মসমর্পণকারী) তার ভাই ফারুক, ইউনুস, মিয়ালা মাছন, জাফর চেয়ারম্যানের ছেলে ইলিয়াস, দিদার মিয়া (আত্মসমর্পণকারী)। শিল বলিয়াপাড়ার বর্মায়া তাহের, বর্মায়াকাসেম, মিঠাপানির ছাড়ার কালা শামশু, শফিক (ইয়াবা শফিক) আবুল কালাম বাইট্রা, পৌরসভা জুবাইর (আত্মসমর্পণকারী) খোকন, মুজাম্মেল (আত্মসমর্পণকারী) মোহাম্মুদুল হক (প্রকাশ বগ্গু), সৈয়দ আলম (প্রকাশ লাল কিয়ায়া,) দেলোয়ার হোসেন, নুরুল কায়েছ, মৌলভি মজিব। ইসলামাবাদ বর্মায়া জিয়াবু, রিয়াজ উদ্দিন, শহিদ উল্লাহ, নেজাম, মনছুর। বড়ইতুলী মিজান (প্রকাশ কোস্ট গার্ড মিজান), হোসেন প্রকা (লাম্বা হোসেন), হ্নীলা জামাল মেম্বারে (আত্মসমর্পণকারী) ও জামাল মেম্বারের ছেলে শাহ আজম (আত্মসমর্পণকারী) আবুল কাসেমের ছেলে রেজাউল করিম মেম্বার ও সাইফুল করিম, রশিদের ছেলে হারুন (আত্মসমর্পণকারী) লেদার বোরহান উদ্দিন (আত্মসমর্পণকারী) শামসুর ছেলে সাইফুল (প্রকাশ আতর
সাইফুল)। আনোয়ার হোসেন ননাইয়া, নুরুল কবিরের ছেলে আবু তালেব, ওয়াব্রাং এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে ফরিদ নুর,জাফর আলম, ছৈয়দ নুরের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (প্রকাশ লালু), ছৈয়দ নুরের ছেলে সেলিম,হাজি কবির আহমেদের ছেলে হামিদ হোসেন, শামসুল আলমের ছেলে ইউনুস। লেদার আবছার, নুর হুদা মেম্বার (আত্মসমর্পণকারী), আবু তাহের (আত্মসমর্পণকারী) এ বিষয়ে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত নই, আমি একজন ইউপি সদস্য। উত্তরপাড়ার ঘাট আমি নিয়ন্ত্রণ করি না। ওই নৌকা ঘাট দেখভাল করে নৌঘাটের সভাপতি। একপর্যায়ে প্রতিবেদককে দেখা করতে বলে ইউপি সদস্য। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া এলাকায় র?্যাব-১৫ সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ পিতা ছেলে আটক হয়। সেই ইয়াবার মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে মান্নান মেম্বারকে ৪নং আসামি করা হয়। এসব মাদক কারবারির রয়েছে ডজনখানিক মাদক মামলা। কেউ আছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি, ১০২ জন আত্মসমর্পনকারীও। এসব মাদক কারবারি ওপেন সিক্রেট এই ব্যবসা করছে। যেসব কারবারি গোপনে ইয়াবা কারবার করতো তারা প্রকাশ্যে, সবার সামনে এখন দৌড়ঝাঁপ, প্রভাব বিস্তার করে বেড়াচ্ছে।
এদিকে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-এর ডিসেম্বর হতে ২৩ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত এক লাখ ৬৪ হাজার ৯শত ত্রিশ পিস ইয়াবা ৮ কেজি গাঁজা, ৬৪ লিটার চোলাইমদ ও ১৬টি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। এসব উদ্ধারে ৩৬টি মামলায় ৪১ জন আসামির মধ্যে ৩৫ জন কারবারিকে আটক করা হয়, তার মধ্যে রোহিঙ্গা ৩ জন। তাদের গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান আসে শান রাজ্য হয়ে আকিয়াব ও মংডু থেকে। ইয়াবার পাশাপাশি ওই রাজ্যে বিনা বাধায় উৎপাদন করা হচ্ছে ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ (আইস)।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, নাফ নদীর সীমান্তবর্তী এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারিতে
মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে গত রোববার ৪ মে, ভোর ৪টায় গভীর সমুদ্র থেকে দুইজন মাদক বহনকারী
সাঁতার কেটে সীমান্তে পৌঁছলে টহলরত বিজিবি-৩৯;র সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করলে মায়ানমারের নাগরিক ১ জন মাদক কারবারি আটকসহ ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্ত অঞ্চলে মাদকদ্রব্য, অবৈধ অস্ত্র, চোরাচালান ও সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম
প্রতিরোধে সর্বদা তৎপর এবং জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে কার্যকর অভিযান অব্যাহত রাখবে। জাতীয়
নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা সুদৃঢ়করণে বিজিবির এই ধরনের অপারেশনাল পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলছেন, সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি খুব শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি কোনো মাদক ঢুকতে না পারে সেজন্য বিজিবি রাত-দিন টহল অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবির তথ্য বলছে, সীমান্ত দিয়ে নানা কৌশলে মায়ানমার থেকে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস পাচার হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর পেছনে পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে নাম আসে মায়ানমারের আরাকান আর্মির। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে টহল দেয়া আমাদের জন্য জটিল হয়ে পড়ছে। কারণ
আমাদের জনবল সংকট। এতে সুযোগ নিচ্ছে চোরাচালান কারবারিরা।
এদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পূর্ব জোন টেকনাফ বিসিজি স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বরের ২০২৪ হতে চলতি বছরের ৯ মে পর্যন্ত, ২৬ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার, ৩ কেজি আইস, গাঁজা ৭১ কেজি, বিদেশি মদ ১৪১০ বোতল, বিয়ার ১২২৯ ক্যান, বাংলা মদ ৫০ লিটার, টুইন ভ্যালি অলিভ ওয়েল ৪ বোতল, ফেনসিডিল ৪ বোতলসহ উদ্ধার করা হয়। এসব উদ্ধার ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ১১৭ জনকে আসামি করে ৩৯টি মামলা রেকর্ড করা হয় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে। সর্বশেষ টেকনাফে কোস্ট গার্ড মেরিন ড্রাইভ হাবিরছড়া এলাকায় গত ৮ মে অভিযানে চালিয়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকা মূল্যের ৩ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
টেকনাফ কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এবং মাদক, চোরাচালান ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ঠেকাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ২৪ ঘণ্টা টহল জারি রেখেছে। মাদক পাচার রোধে কোস্ট গার্ডের এরূপ অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। মাদক রোধে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিফাত উল্লাহ তাসনিম বলেন, প্রতিনিয়ত ইয়াবার বড় চালান আটক হলেও গডফাদাররা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ গডফাদাররা আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে সমস্ত কিছু পরিচালনা করে। আর তাদের বাড়িতে অভিযান চালালেও মাদক পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তারা লিস্টে মাদক গডফাদার হলেও এ কারণে বেঁচে যাচ্ছে। যদি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) টেকনাফ অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত, মানি লন্ডারিংয়ের ব্যাপারগুলো দেখতো মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা যেত। তিনি আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মাদক কারবারিদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে, অতি শিগগিরই তালিকাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হবে।
এদিকে টেকনাফ থানা সূত্রে জানা যায়, মাদকবিরোধী অভিযানে ১৮ নভেম্বর ২০২৪ হতে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ১৬ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়, এছাড়া ৫৪টি চোলাই মদ, ৭০ বোতল বিদেশি মদ ও ২০টি বিয়ার উদ্ধার করা হয়। এতে ১৭টি মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান
অব্যাহত থাকবে। আগামীতে আমাদের আইজিপি ও জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সম্প্রতি টেকনাফ আইন রক্ষা কমিটির সভায় উপস্থিত এক বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দোষারোপ করে বলেন। বিজিবি চাইলে, সীমান্তে ইয়াবা তো দূরের কথা একটা পিঁপড়াও ঢুকতে পারবে না। কিন্তু বিজিবি সেভাবে সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে না মাদক পাচারের বিরুদ্ধে।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী সংবাদকে বলেন, নিশ্চয়ই সরকারের কাছে মাদক কারবারিদের তালিকা আছে। সরকারের উচিত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। প্রায় ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। মায়ানমারের আরাকান আর্মির ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা এপাড়ে মাদকপাচার করছে, বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে সিমেন্ট, খাদ্য পণ্য ও বিভিন্ন সামগ্রী। যেহেতু আরাকান আর্মির আয়ের উৎস মাদক পাচার ছাড়া কিছু নেই।
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ অভিযান কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য, কক্সবাজার থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে কাল ১২ মে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ডিজিসহ ভিন্ন সংস্থার প্রধান কক্সবাজারে আসবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিবেন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ হলেও ইয়াবা আসা বন্ধ হয়নি; কথা রাখেনি আত্মসমর্পণকারীরা
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
বাংলাদেশের সঙ্গে মায়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মরণ নেশা ইয়াবার চালানসহ কয়েক আইটেমের মাদক স্রোতের ন্যায় ঢুকছে। বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ হলেও বন্ধ হচ্ছে না সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান। দেশের সর্বত্র এ মাদক ছড়িয়ে দিতে স্থল ও সমুদ্রপথে ইয়াবা চালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন মাদক কারবারিরা। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদকের বড় চালান উদ্ধারসহ মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে র?্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। পাশাপাশি মাদকের আগ্রাসন কমাতে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনীও। মামলা হচ্ছে আবার জামিনে বেরিয়ে এসে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। এজাহার নামীয় আসামি মামলার চার্জশিট থেকে বাদও পড়ছে মোটা অংকের টাকা দিয়ে।
তথ্যসূত্রে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি পয়েন্টে সরেজমিন ঘুরে জানা যায় মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ চলমান যুদ্ধের সময় কিছুটা ইয়াবা পাচার বন্ধ থাকার পরে হঠাৎ ইয়াবা চাহিদা বৃদ্ধি পেলে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার আশায় চিহ্নিত নতুন পুরাতন ইয়াবা কারবারিরা নিষিদ্ধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। চোরাচালান কারবারিরা দেশের সর্বত্র মরণনেশা ইয়াবা ছড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে টেকনাফের আশপাশের উপকূলবর্তী এলাকাজুড়ে অবৈধ ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য চলছে। কোটিপতি হওয়ার হাতছানিতে একশ্রেণীর মানুষ উন্মাদের মতো এ অবৈধ ব্যবসার পেছনে ছুটছে। তাদের রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট, একেকজন একেক দায়িত্বে থাকে।
পূর্ববর্তী গভীর সমুদ্র থেকে ইয়াবা নিরাপদে তীরে পৌঁছে দিতে কারবারিদের সঙ্গে বোটমালিক বা মাঝির মধ্যে পিসপ্রতি ৪ টাকা করে চুক্তি হয়। পরে তাদের নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে মায়ানমারের সীমানায় গিয়ে, মায়ানমারের ইয়াবাবাহী জাহাজ থেকে ইয়াবা চালান নিয়ে এসে কারবারিদের গন্তব্যস্থলে গিয়ে বুঝিয়ে
দেয় দেশীয় ইয়াবা বহনকারী বোটের মালিক ও স্টাফরা। মায়ানমার থেকে আসা কিছু বড় বড় ইয়াবা চালান বঙ্গোপসাগর হয়ে নৌপথ দিয়ে বিভিন্ন নৌযানযোগে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ হয়ে ইয়াবার চালান পৌঁছে যাচ্ছে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। ইয়াবা সেবনকারীরা এখন জেলা শহর থেকে উপজেলা এমনকি গ্রামপর্যায়েও ক্রমাগত আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তার পাশাপাশি সড়কপথে এমন কোনো যানবাহন নেই যেখানে কোনো না কোনো যাত্রী বা হেলপারের শরীর তল্লাশিতে ইয়াবা মিলছে না। শুধু তাই নয়, রোগী বহনের কাজে নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্স, মাছ, শাক-সবজি, লবণের ট্রাক, সিএনজি, ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস, কাঠসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের যানবাহনেও বিশেষ কায়দায় পরিবাহিত হচ্ছে ইয়াবার চালান। এনজিও গাড়ি, বিভিন্ন প্রশাসনের স্টিকারও ব্যবহার করছে কারবারিরা।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী তুমুল লড়াইয়ের পর মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিজিপি ঘাঁটিগুলো এখন আরাকান আর্মির দখলে। ঘাঁটিগুলোতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। বিশেষ করে গত ৮ ডিসেম্বর রাখাইনে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মির দখলের পর বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যে বন্ধ থাকলে সেদেশ থেকে মাদক ইয়াবা আসা বন্ধ হয়নি।
মায়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির গৃহযুদ্ধের মধ্যেও মাদক ইয়াবা প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না। রাখাইন অঞ্চলের বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাগুলো এখন যুদ্ধকবলিত হয়ে
পড়ার সুযোগে ইয়াবাসহ মাদক পাচার চলছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির পৃষ্ঠপোষকতায় মায়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পর্যাপ্ত অর্থের যে প্রয়োজন তার জোগান দেয়া হচ্ছে ইয়াবা থেকে। এ কারণে মায়ানমার হয়ে বাংলাদেশের বাজারে আসা এসব ইয়াবার চালান নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। মায়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধের মধ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইন প্রদেশ দখল করে নেয়ার পর এখন মাদক ইয়াবা পাচার বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে। নাফ নদী পথে টেকনাফ স্থলবন্দরে সীমান্তবাণিজ্য বন্ধ থাকলেও, ইয়াবা বিভিন্ন মাদক আসা কমছে না।
সীমান্ত পাড়ে নজির আহমদের বাড়ি, তিনি প্রতিরাতে দেখতে পান, আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত মংডু থেকে, লালদিয়া ও জালিয়ার দ্বীপ হয়ে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার চালান ঢুকতে। এ মাদকের চালানগুলো আরএসও ও রোহিঙ্গা মিলে এপাড়ে ঢুকতে সাহায্য করে।
নিষিদ্ধ বাজারে মাদক কারবার বৃদ্ধি পেয়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। গত ২০০৬/৭ সালে একটি কার্ড (১০০০০) পিস ইয়াবার মূল্য ছিল আটাশ লাখ থেকে ত্রিশ লাখ, ২০২০/২৪-এর শেষের দিকে ছিল একটি কার্ড ৫ লাখ থেকে আড়াই লাখ, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে নিষিদ্ধ বাজারের এর মূল্য ১০ লাখ থেকে ৮ লাখ পর্যন্ত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মায়ানমার থেকে মাদক পাচার রোধে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল জোরদার করেছে
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কিন্তু তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে কারবারিরা কৌশল অবলম্বন করে মাদকের চালান প্রবেশ করছে এপাড়ে। তারা যে পয়েন্টগুলো ব্যবহার করে তা হলো টেকনাফ সাবরাং, জিনাপাড়া স্লুইস গেট, সাবরাং খালের স্লুইস গেট, মুন্ডার ডেইল ঘাট, বাহার ছড়ার ঘাট, কাটাবনিয়া ঘাট। শাহপরীর দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার ঘাট, মিস্ত্রিপাড়ার ঘাট, পশ্চিমপাড়ার ঘাট, জেটির ঘাট, জালিয়াপাড়ার ঘাট। টেকনাফ পৌরসভার, কায়ুকখালী খাল, জেটি ঘাট (বদির জেটি) নাইট্যংপাড়া ঘাট, হেস্কার খাল, টেকনাফ সদর, বড়ইতুলী ঘাট, লম্বরি ঘাট, হাবির ছাড়া ঘাট, তুলাতুলী ঘাট, মহেশখালীয়াপাড়া ঘাট, হ্নীলা ইউনিয়ন, হোয়াব্রাং, হ্নীলা এক নাম্বার স্লুইস গেইট এলাকা, চৌধুরীপাড়া, লেদা, জাদিমোড়া, নার্সারি পার্কের বিপরীত বিউপির উত্তর দিক দিয়ে। এসব ঘাট দিয়ে নিয়মিত ইয়াবা ঢুকছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পুরনো ইয়াবা কারবারিরা যেমন নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে একইভাবে তাদের শেল্টার দিচ্ছে প্রভাবশালী কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যের মধ্য দিয়ে জানা যায়, ওই চোরাচালানের পয়েন্টগুলো যেসব মাদক গডফাদার নিয়ন্ত্রণ করে শাহপরীর দ্বীপ ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, হেলাল, নুরুল আলম মেম্বারের ছেলে হেলাল, সাবরাং এলাকার নুর হোসেন চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফারুক, ট্রাক মালিক রবিউল রবি, দিল মোহাম্মদ দিলু (আত্মসমর্পণকারী) দুবাই কালোর ছেলে হোসন (ট্রাকমালিক) আলির ডেইলের কামাল, জসিম, ডানু মেম্বার, আব্দুল আমিন (লোলা মাজি), ইব্রাহিম (সোর্স), কালাইয়া (প্রকাশ ইয়াবা কালাইয়া) গিয়াস উদ্দিন, তালা কবিরের ছেলে সাদ্দাম তার ভাই রুবেল ও নুরুল আলম, লেজিরপাড়ার ফয়াজ, খারিয়া খালীর জিয়ারু, জাহেদ, সাবরাং এলাকার মাফিয়া সাদ্দাম (আত্মসমর্পণকারী), ইয়াসিন, আব্দুল গফুরের ছেলে রাশেল, নোয়াপাড়ার কালা মঞ্জুর, সাকের, ওসমান, ওমর, গুরা মিয়া। টেকনাফ সদরের, থানার ডেইল এলাকার আলী
আহমদ ও তার ভাইজি জামাই রোহিঙ্গা আজিজ (এন আইডিতে) আরমান, আব্দুর রহমান ও তার ভাই একরাম (আত্মসমর্পণকারী) সৈয়দের ছেলে বাক্কুইচ্ছা, দালাল হামিদের ছেলে জাকির, ড্রাইভার ইব্রাহিম, বড় হাবিবরপাড়ার আব্দুর রশিদ, বদিউর রহমানের ছেলে কালাইয়া, আবু বক্কর, আব্দুল আমিন (প্রকাশ সাতমাইসসা) খুশী, ব্লেক সিদ্দিকের ছেলে ফরিদ আলম, কালাইয়া, মহেশখালীয়া পাড়ার মাহমুদুল, নরুল ইসলাম মেম্বারের ছেলে তারেক তার ভাই রাশেল, রকিম বলির ছেলে তজিল, সোহেল, কাসিমের ছেলে ফারুক, শাহ আলমের ছেলে নুরুল আলম, দুদু মিয়ানমার ছেলে ফারুক, আব্দুল্লাহ মেম্বার ও তার বোনের জামাই সাইফুল, কালা বাম্বু, কাদের (পাগলা কাদের), বদিউর রহমান (আত্মসমর্পণকারী) তার ভাই ফারুক, ইউনুস, মিয়ালা মাছন, জাফর চেয়ারম্যানের ছেলে ইলিয়াস, দিদার মিয়া (আত্মসমর্পণকারী)। শিল বলিয়াপাড়ার বর্মায়া তাহের, বর্মায়াকাসেম, মিঠাপানির ছাড়ার কালা শামশু, শফিক (ইয়াবা শফিক) আবুল কালাম বাইট্রা, পৌরসভা জুবাইর (আত্মসমর্পণকারী) খোকন, মুজাম্মেল (আত্মসমর্পণকারী) মোহাম্মুদুল হক (প্রকাশ বগ্গু), সৈয়দ আলম (প্রকাশ লাল কিয়ায়া,) দেলোয়ার হোসেন, নুরুল কায়েছ, মৌলভি মজিব। ইসলামাবাদ বর্মায়া জিয়াবু, রিয়াজ উদ্দিন, শহিদ উল্লাহ, নেজাম, মনছুর। বড়ইতুলী মিজান (প্রকাশ কোস্ট গার্ড মিজান), হোসেন প্রকা (লাম্বা হোসেন), হ্নীলা জামাল মেম্বারে (আত্মসমর্পণকারী) ও জামাল মেম্বারের ছেলে শাহ আজম (আত্মসমর্পণকারী) আবুল কাসেমের ছেলে রেজাউল করিম মেম্বার ও সাইফুল করিম, রশিদের ছেলে হারুন (আত্মসমর্পণকারী) লেদার বোরহান উদ্দিন (আত্মসমর্পণকারী) শামসুর ছেলে সাইফুল (প্রকাশ আতর
সাইফুল)। আনোয়ার হোসেন ননাইয়া, নুরুল কবিরের ছেলে আবু তালেব, ওয়াব্রাং এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে ফরিদ নুর,জাফর আলম, ছৈয়দ নুরের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (প্রকাশ লালু), ছৈয়দ নুরের ছেলে সেলিম,হাজি কবির আহমেদের ছেলে হামিদ হোসেন, শামসুল আলমের ছেলে ইউনুস। লেদার আবছার, নুর হুদা মেম্বার (আত্মসমর্পণকারী), আবু তাহের (আত্মসমর্পণকারী) এ বিষয়ে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো মাদকের সঙ্গে জড়িত নই, আমি একজন ইউপি সদস্য। উত্তরপাড়ার ঘাট আমি নিয়ন্ত্রণ করি না। ওই নৌকা ঘাট দেখভাল করে নৌঘাটের সভাপতি। একপর্যায়ে প্রতিবেদককে দেখা করতে বলে ইউপি সদস্য। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়া এলাকায় র?্যাব-১৫ সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ পিতা ছেলে আটক হয়। সেই ইয়াবার মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে মান্নান মেম্বারকে ৪নং আসামি করা হয়। এসব মাদক কারবারির রয়েছে ডজনখানিক মাদক মামলা। কেউ আছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি, ১০২ জন আত্মসমর্পনকারীও। এসব মাদক কারবারি ওপেন সিক্রেট এই ব্যবসা করছে। যেসব কারবারি গোপনে ইয়াবা কারবার করতো তারা প্রকাশ্যে, সবার সামনে এখন দৌড়ঝাঁপ, প্রভাব বিস্তার করে বেড়াচ্ছে।
এদিকে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-এর ডিসেম্বর হতে ২৩ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত এক লাখ ৬৪ হাজার ৯শত ত্রিশ পিস ইয়াবা ৮ কেজি গাঁজা, ৬৪ লিটার চোলাইমদ ও ১৬টি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। এসব উদ্ধারে ৩৬টি মামলায় ৪১ জন আসামির মধ্যে ৩৫ জন কারবারিকে আটক করা হয়, তার মধ্যে রোহিঙ্গা ৩ জন। তাদের গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান আসে শান রাজ্য হয়ে আকিয়াব ও মংডু থেকে। ইয়াবার পাশাপাশি ওই রাজ্যে বিনা বাধায় উৎপাদন করা হচ্ছে ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ (আইস)।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, নাফ নদীর সীমান্তবর্তী এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারিতে
মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে গত রোববার ৪ মে, ভোর ৪টায় গভীর সমুদ্র থেকে দুইজন মাদক বহনকারী
সাঁতার কেটে সীমান্তে পৌঁছলে টহলরত বিজিবি-৩৯;র সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করলে মায়ানমারের নাগরিক ১ জন মাদক কারবারি আটকসহ ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্ত অঞ্চলে মাদকদ্রব্য, অবৈধ অস্ত্র, চোরাচালান ও সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম
প্রতিরোধে সর্বদা তৎপর এবং জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে কার্যকর অভিযান অব্যাহত রাখবে। জাতীয়
নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা সুদৃঢ়করণে বিজিবির এই ধরনের অপারেশনাল পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বিজিবির এক কর্মকর্তা বলছেন, সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
সীমান্তে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি খুব শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি কোনো মাদক ঢুকতে না পারে সেজন্য বিজিবি রাত-দিন টহল অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবির তথ্য বলছে, সীমান্ত দিয়ে নানা কৌশলে মায়ানমার থেকে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস পাচার হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর পেছনে পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে নাম আসে মায়ানমারের আরাকান আর্মির। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে টহল দেয়া আমাদের জন্য জটিল হয়ে পড়ছে। কারণ
আমাদের জনবল সংকট। এতে সুযোগ নিচ্ছে চোরাচালান কারবারিরা।
এদিকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পূর্ব জোন টেকনাফ বিসিজি স্টেশন সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বরের ২০২৪ হতে চলতি বছরের ৯ মে পর্যন্ত, ২৬ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার, ৩ কেজি আইস, গাঁজা ৭১ কেজি, বিদেশি মদ ১৪১০ বোতল, বিয়ার ১২২৯ ক্যান, বাংলা মদ ৫০ লিটার, টুইন ভ্যালি অলিভ ওয়েল ৪ বোতল, ফেনসিডিল ৪ বোতলসহ উদ্ধার করা হয়। এসব উদ্ধার ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ১১৭ জনকে আসামি করে ৩৯টি মামলা রেকর্ড করা হয় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে। সর্বশেষ টেকনাফে কোস্ট গার্ড মেরিন ড্রাইভ হাবিরছড়া এলাকায় গত ৮ মে অভিযানে চালিয়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকা মূল্যের ৩ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
টেকনাফ কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এবং মাদক, চোরাচালান ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ঠেকাতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ২৪ ঘণ্টা টহল জারি রেখেছে। মাদক পাচার রোধে কোস্ট গার্ডের এরূপ অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। মাদক রোধে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিফাত উল্লাহ তাসনিম বলেন, প্রতিনিয়ত ইয়াবার বড় চালান আটক হলেও গডফাদাররা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ গডফাদাররা আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে সমস্ত কিছু পরিচালনা করে। আর তাদের বাড়িতে অভিযান চালালেও মাদক পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তারা লিস্টে মাদক গডফাদার হলেও এ কারণে বেঁচে যাচ্ছে। যদি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) টেকনাফ অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত, মানি লন্ডারিংয়ের ব্যাপারগুলো দেখতো মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা যেত। তিনি আরও বলেন, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মাদক কারবারিদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে, অতি শিগগিরই তালিকাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠানো হবে।
এদিকে টেকনাফ থানা সূত্রে জানা যায়, মাদকবিরোধী অভিযানে ১৮ নভেম্বর ২০২৪ হতে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১ লাখ ১৬ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়, এছাড়া ৫৪টি চোলাই মদ, ৭০ বোতল বিদেশি মদ ও ২০টি বিয়ার উদ্ধার করা হয়। এতে ১৭টি মামলায় ২৪ জনকে আসামি করে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান
অব্যাহত থাকবে। আগামীতে আমাদের আইজিপি ও জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সম্প্রতি টেকনাফ আইন রক্ষা কমিটির সভায় উপস্থিত এক বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দোষারোপ করে বলেন। বিজিবি চাইলে, সীমান্তে ইয়াবা তো দূরের কথা একটা পিঁপড়াও ঢুকতে পারবে না। কিন্তু বিজিবি সেভাবে সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে না মাদক পাচারের বিরুদ্ধে।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী সংবাদকে বলেন, নিশ্চয়ই সরকারের কাছে মাদক কারবারিদের তালিকা আছে। সরকারের উচিত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। প্রায় ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। মায়ানমারের আরাকান আর্মির ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা এপাড়ে মাদকপাচার করছে, বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে সিমেন্ট, খাদ্য পণ্য ও বিভিন্ন সামগ্রী। যেহেতু আরাকান আর্মির আয়ের উৎস মাদক পাচার ছাড়া কিছু নেই।
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ অভিযান কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য, কক্সবাজার থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে কাল ১২ মে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ডিজিসহ ভিন্ন সংস্থার প্রধান কক্সবাজারে আসবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিবেন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।