রংপুরের পীরগাছায় অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে -সংবাদ
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির কৃষি ফসল নিমজ্জিত। ফলে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপদে। তবে ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি বিএমডিএ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী স্থানীয় হওয়ায় তার পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম নির্মাণে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জলাবদ্ধতার ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল, কল্যাণী ও সদর ইউনিয়নের আংশিকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ই আই আর পি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব নগরজিৎপুর এলাকায় আলাইকুমারি নদীর ওপর ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছে। গুগল সূত্রে জানা যায়, নদীটি ৪৫ মিটার প্রস্থের ও ২৬ কিলো. মি. দৈর্ঘ্যের। কিন্তু ক্রসড্যামটি নির্মাণ করা হয় মাত্র ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের আবার সাত ফুট চওড়া। এই ক্রসড্যামটি নির্মাণের ফলে উজানে পারুল, কল্যাণী ও সদর ইউনিয়নের আংশিক প্লাবিত হয়েছে। কৃষক ওমর ফারুক ও জহুরুল ইসলাম জানান, মোসকার পাতার, ভাতার মারির পাতার, বুকশিলার পাতার, ডুবেস্রির পাতারসহ উজানে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির বোরো ধান, পাট ও ভুট্টা পানিতে নিমজ্জিত আর কয়েকশ’ হেক্টর জমির সবজি ও বীজ পল্লি প্লাবিত হয়েছে। তবে পীরগাছা কৃষি বিভাগ ৭০ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। স্বাভাবিক পানি চলাচল বাধাগ্রস্থের ফলে কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক হাবীব বলেন, বরেন্দ্রের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান আলমগীর স্থানীয় লোক হওয়ায় সে সাধারণ কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে ক্রসড্যাম নির্মাণ করায় হাজার-হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ড্যামে দু’টি গেট ভাল্প থাকার কথা থাকলেও রাখা হয়নি। কৃষক রেজাউল বলেন, মাসুদার রহমান আলমগীর নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। তার ছোট ভাই মানুন এর স্বার্থে এখানে ড্যাম করেছে। মামুন এলএলপি পরিচালনা করলেও অন্যদের জমিতে সেচ দেন না কেউ সেচ চাইলে মাসুদার রহমান আলমগীর লাইন নির্মানের জন্য টাকা চান। অথচ বর্তমানে হাজার-হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ।
শুধ কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত না, ক্রসড্যাম এর উজানের ইটভাটা মালিকরাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তাদের ইটভাটার অস্বাভাবিক ক্ষতি হচ্ছে।
পীরগাছার দায়িত্বপ্রাপ্ত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা খায়রুল আলম ক্রসড্যামের বিষয়ে বলেন, পানি বেশি থাকায় এখন কিছু করা যাবে না। পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান আলমগীর/অথবা ছোট মামুন সাধারণ কৃষকদের পানি সেচ না দেয়া বা লাইন নির্মানের জন্য টাকা চাওয়ার বিষয়ে কৃষকদের মৌখিক অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেন খায়রুল আলম।
উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, ক্রসড্যাম ভেঙে সুইচ গেট করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ক্রসড্যাম না ভাঙা হলে কৃষি ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম শুক্রবার,(২৩ মে ২০২৫) ক্রসড্যাম সরেজমিনে পরিদর্শন করে সংবাদকে জানান, নদীর চওড়া ও পানির চাপ অনুযায়ী ক্রসড্যাম সংকুচিত হওয়ায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। তিনি অপরিকল্পিতভাবে ক্রসড্যামটি নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আরও বলেন, যথাসময়ে পানি নেমে না গেলে কৃষির বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
রংপুরের পীরগাছায় অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে -সংবাদ
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির কৃষি ফসল নিমজ্জিত। ফলে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপদে। তবে ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি বিএমডিএ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী স্থানীয় হওয়ায় তার পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য অপরিকল্পিত ক্রসড্যাম নির্মাণে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জলাবদ্ধতার ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল, কল্যাণী ও সদর ইউনিয়নের আংশিকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ই আই আর পি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব নগরজিৎপুর এলাকায় আলাইকুমারি নদীর ওপর ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছে। গুগল সূত্রে জানা যায়, নদীটি ৪৫ মিটার প্রস্থের ও ২৬ কিলো. মি. দৈর্ঘ্যের। কিন্তু ক্রসড্যামটি নির্মাণ করা হয় মাত্র ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের আবার সাত ফুট চওড়া। এই ক্রসড্যামটি নির্মাণের ফলে উজানে পারুল, কল্যাণী ও সদর ইউনিয়নের আংশিক প্লাবিত হয়েছে। কৃষক ওমর ফারুক ও জহুরুল ইসলাম জানান, মোসকার পাতার, ভাতার মারির পাতার, বুকশিলার পাতার, ডুবেস্রির পাতারসহ উজানে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির বোরো ধান, পাট ও ভুট্টা পানিতে নিমজ্জিত আর কয়েকশ’ হেক্টর জমির সবজি ও বীজ পল্লি প্লাবিত হয়েছে। তবে পীরগাছা কৃষি বিভাগ ৭০ হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। স্বাভাবিক পানি চলাচল বাধাগ্রস্থের ফলে কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
ক্রসড্যাম ও ফুটওভার ব্রিজ এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক হাবীব বলেন, বরেন্দ্রের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান আলমগীর স্থানীয় লোক হওয়ায় সে সাধারণ কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে ক্রসড্যাম নির্মাণ করায় হাজার-হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ড্যামে দু’টি গেট ভাল্প থাকার কথা থাকলেও রাখা হয়নি। কৃষক রেজাউল বলেন, মাসুদার রহমান আলমগীর নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। তার ছোট ভাই মানুন এর স্বার্থে এখানে ড্যাম করেছে। মামুন এলএলপি পরিচালনা করলেও অন্যদের জমিতে সেচ দেন না কেউ সেচ চাইলে মাসুদার রহমান আলমগীর লাইন নির্মানের জন্য টাকা চান। অথচ বর্তমানে হাজার-হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ।
শুধ কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত না, ক্রসড্যাম এর উজানের ইটভাটা মালিকরাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তাদের ইটভাটার অস্বাভাবিক ক্ষতি হচ্ছে।
পীরগাছার দায়িত্বপ্রাপ্ত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা খায়রুল আলম ক্রসড্যামের বিষয়ে বলেন, পানি বেশি থাকায় এখন কিছু করা যাবে না। পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান আলমগীর/অথবা ছোট মামুন সাধারণ কৃষকদের পানি সেচ না দেয়া বা লাইন নির্মানের জন্য টাকা চাওয়ার বিষয়ে কৃষকদের মৌখিক অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেন খায়রুল আলম।
উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, ক্রসড্যাম ভেঙে সুইচ গেট করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ক্রসড্যাম না ভাঙা হলে কৃষি ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম শুক্রবার,(২৩ মে ২০২৫) ক্রসড্যাম সরেজমিনে পরিদর্শন করে সংবাদকে জানান, নদীর চওড়া ও পানির চাপ অনুযায়ী ক্রসড্যাম সংকুচিত হওয়ায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। তিনি অপরিকল্পিতভাবে ক্রসড্যামটি নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আরও বলেন, যথাসময়ে পানি নেমে না গেলে কৃষির বড় ধরনের ক্ষতি হবে।