যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আদায় আপাতত চালিয়ে যেতে পারবেন বলে রায় দিয়েছে একটি আপিল আদালত। মাত্র এক দিন আগেই স্থানীয় এক আদালত এই শুল্ক আদায়কে বেআইনি ঘোষণা করে তা আটকে দিয়েছিল।
ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তার ক্ষমতা লঙ্ঘন করেছেন বলে রায় দেয়া হয়েছিল।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ওই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ করে, তারা এটিকে বিচারিক সীমা লঙ্ঘনের উদাহরণ বলে অভিহিত করে।
নিম্ন আদালতের ওই আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার জন্য হোয়াইট হাউসের একটি আবেদন মঞ্জুর করেছে একটি ফেডারেল আপিল আদালত।
শুল্কারোপসংক্রান্ত যেসব পদক্ষেপ ট্রাম্পের এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়া দিয়েছে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার। আপিল আবেদনে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এক দিন আগে কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের জারি করা সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে অসঙ্গতভাবে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে দেয়া। মাসের পর মাস ধরে চালানো বাণিজ্য আলোচনার ওপরও ওই রায় হুমকি তৈরি করেছে।
‘আদালত নয়, বরং রাজনৈতিক শাখাগুলোই বৈদেশিক নীতি তৈরি করে এবং অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করে,’ বলা হয়েছে আবেদনে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আপিল আদালত থেকে শুল্ক বহাল রাখার সিদ্ধান্ত আসে। এই সিদ্ধান্ত আসার কিছুক্ষণ আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিট এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা অন্য কোনো প্রেসিডেন্টের স্পর্শকাতর কূটনৈতিক বা বাণিজ্য আলোচনা যদি অ্যাক্টিভিস্ট বিচারকদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয় তবে আমেরিকা কাজ করতে পারবে না।’
ডনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের রায়ের তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আশা করা যায় সুপ্রিমকোর্ট এই ভয়াবহ, দেশকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত দ্রুত এবং কার্যকরভাবে বাতিল করবে।’
নিউইয়র্কের স্বল্প-পরিচিত কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের গত বুধবারের রায় চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বাতিল করে দিয়েছিল, যা তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেছিলেন এবং এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন ফেন্টানাইল মাদক চোরাচালান মোকাবিলার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে।
গত মাসে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ হারে যে আমদানি কর আরোপ করেছিলেন, একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ এবং চীনসহ অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর উচ্চতর যে ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করেছিলে, নি¤œ আদালতের সিদ্ধান্তের ফলে সেগুলোও বাতিল হয়ে যেত।
১৯৭৭ সালের যে আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের ওপর ভিত্তি করে ট্রাম্প অনেক দেশের ওপর শুল্কারোপ করেছিলেন, তাতে এই ধরনের ব্যাপক শুল্কারোপের অনুমতি ছিল না, নি¤œ আদালত জানিয়েছে।
তবে ওই আদালতের রায়ে গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপের ওপর প্রভাব ফেলেনি, যা অন্য আইনের অধীনে বাস্তবায়ন হয়েছিল।
তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চলমান থাকায় হোয়াইট হাউস তাদের অনেক শুল্কের কিছু অংশ স্থগিত বা সংশোধন করেছে।
আপিল আদালতের সিদ্ধান্তের ফলে মামলাটি বিচারাধীন থাকাকালে ট্রাম্প প্রশাসন আপাতত শুল্কারোপ করতে পারবে, আগামী পাঁচই জুন এর পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আরেকটি ফেডারেল আদালতও কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের রায়ের বিষয়ে একই ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। বিচারক রুডলফ কনট্রেরাস বলেছেন, শুল্কারোপের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কর্তৃত্বের বাইরে চলে গেছে ঠিক, তবে সেই রায় শুধু মামলার একটি খেলনা কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এরপর কী হবে?
ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধরে নিতে পারেন আমরা (আদালতে) হেরে গেলেও অন্যভাবে এটা (শুল্ক) করবো।’
১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার অধীনে জাতীয়-নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প যে গাড়ি, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কারোপ করেছিলেন, তা কোনো আদালতই বাতিল করেনি।
তিনি সেই আইনের অধীনে আমদানি কর সেমিকন্ডাক্টর ও কাঠের মতো অন্যান্য খাতে প্রসারিত করতে পারেন।
১৯৭৪ সালের বাণিজ্য আইনের ধারা ৩০১ও প্রয়োগ করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা তিনি চীনের ওপর তার প্রথম মেয়াদের শুল্কারোপের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।
১৯৩০ সালের একটি পৃথক বাণিজ্য আইন, বাণিজ্য আইনের ধারা ৩৩৮, যা কয়েক দশক ধরে ব্যবহার করা হয়নি, প্রেসিডেন্টকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণকারী দেশগুলো থেকে আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের অনুমতি দেয়।
কিন্তু হোয়াইট হাউস আপাতত আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার দিকে বেশি মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি সুপ্রিমকোর্টে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডে ব্যবসায়ীদের করা মামলায় সহায়তাকারী আইনজীবী ইলিয়া সোমিন বলেন, তিনি ‘মোটামুটি আশাবাদী’ যে শেষ পর্যন্ত আপিলের মাধ্যমে রায় বহাল থাকবে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই আদালতের আদেশ ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় প্রেসিডেন্টদের নিয়োগ করা বিচারকদের কাছ থেকে এসেছে, নিয়োগকর্তাদের মধ্যে ট্রাম্প নিজেও একজন।
‘যুক্তরাষ্ট্রের পেসিডেন্টের পক্ষে বিশ্ব অর্থনৈতিক মহামন্দার পর থেকে এত বিশাল ক্ষমতা প্রয়োগ করা এবং বৃহত্তম বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করা স্বাভাবিক বিষয় নয়,’ তিনি বলেন।
ওয়াশিংটনের নীতি সম্পর্কে বিভিন্ন সংস্থাকে পরামর্শ দেয় এমন প্রতিষ্ঠান প্যানজিয়া পলিসির প্রতিষ্ঠাতা টেরি হেইনস বলেন, তিনি মনে করেন আদালত ‘প্রেসিডেন্টকে সম্ভবত সন্দেহের সুবিধা’ দেবে।
ব্যবসায়িক উদ্যোক্তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, তারা এখনও মনে করেননি যে পরিস্থিতির সমাধান হয়েছে।
‘আমি অবিশ্বাস্যভাবে খুশি এবং স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু আমি এখনও খুব সতর্ক,’ বোস্টনভিত্তিক স্টোরি টাইম টয়সের মালিক কারা ডায়ার বলেন, যা চীনে খেলনা তৈরি করে এবং বিক্রির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করে।
‘পরিস্থিতি এতটাই বিশৃঙ্খল যে ব্যবসার পরিকল্পনা করা অসম্ভব,’ তিনি বলেন।
‘আমি চাই এটি আমাদের আদালত ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যকর হোক যাতে ভবিষ্যতে শুল্ক কী হবে সে সম্পর্কে আমাদের আরও কিছুটা নিশ্চয়তা থাকে।’
বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী প্রাক্তন বাণিজ্য আলোচক দিমিত্রি গ্রোজোবিনস্কি বলেছেন, আদালতের লড়াই ট্রাম্পের অন্যান্য দেশের ওপর কর্তৃত্বের জন্য শুল্ক ব্যবহার করার ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
‘ভবিষ্যতে শুল্ক বৃদ্ধি করা তার পক্ষে অনেক কঠিন হবে,’ তিনি বলেন।
‘এটি শেষ পর্যন্ত এমন একটি আলোচনা ছিল যেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্য দেশগুলোকে একটি বড় লাঠি দিয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন এবং সেই লাঠিটি আরও ক্ষণস্থায়ী হয়ে উঠল।’
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আদায় আপাতত চালিয়ে যেতে পারবেন বলে রায় দিয়েছে একটি আপিল আদালত। মাত্র এক দিন আগেই স্থানীয় এক আদালত এই শুল্ক আদায়কে বেআইনি ঘোষণা করে তা আটকে দিয়েছিল।
ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তার ক্ষমতা লঙ্ঘন করেছেন বলে রায় দেয়া হয়েছিল।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ওই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ করে, তারা এটিকে বিচারিক সীমা লঙ্ঘনের উদাহরণ বলে অভিহিত করে।
নিম্ন আদালতের ওই আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করার জন্য হোয়াইট হাউসের একটি আবেদন মঞ্জুর করেছে একটি ফেডারেল আপিল আদালত।
শুল্কারোপসংক্রান্ত যেসব পদক্ষেপ ট্রাম্পের এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়া দিয়েছে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার। আপিল আবেদনে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এক দিন আগে কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের জারি করা সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে অসঙ্গতভাবে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে দেয়া। মাসের পর মাস ধরে চালানো বাণিজ্য আলোচনার ওপরও ওই রায় হুমকি তৈরি করেছে।
‘আদালত নয়, বরং রাজনৈতিক শাখাগুলোই বৈদেশিক নীতি তৈরি করে এবং অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করে,’ বলা হয়েছে আবেদনে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আপিল আদালত থেকে শুল্ক বহাল রাখার সিদ্ধান্ত আসে। এই সিদ্ধান্ত আসার কিছুক্ষণ আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিট এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা অন্য কোনো প্রেসিডেন্টের স্পর্শকাতর কূটনৈতিক বা বাণিজ্য আলোচনা যদি অ্যাক্টিভিস্ট বিচারকদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয় তবে আমেরিকা কাজ করতে পারবে না।’
ডনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের রায়ের তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আশা করা যায় সুপ্রিমকোর্ট এই ভয়াবহ, দেশকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত দ্রুত এবং কার্যকরভাবে বাতিল করবে।’
নিউইয়র্কের স্বল্প-পরিচিত কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের গত বুধবারের রায় চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর ট্রাম্প আরোপিত শুল্ক বাতিল করে দিয়েছিল, যা তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেছিলেন এবং এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন ফেন্টানাইল মাদক চোরাচালান মোকাবিলার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে।
গত মাসে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ হারে যে আমদানি কর আরোপ করেছিলেন, একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ এবং চীনসহ অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর উচ্চতর যে ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করেছিলে, নি¤œ আদালতের সিদ্ধান্তের ফলে সেগুলোও বাতিল হয়ে যেত।
১৯৭৭ সালের যে আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের ওপর ভিত্তি করে ট্রাম্প অনেক দেশের ওপর শুল্কারোপ করেছিলেন, তাতে এই ধরনের ব্যাপক শুল্কারোপের অনুমতি ছিল না, নি¤œ আদালত জানিয়েছে।
তবে ওই আদালতের রায়ে গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ট্রাম্পের শুল্কারোপের ওপর প্রভাব ফেলেনি, যা অন্য আইনের অধীনে বাস্তবায়ন হয়েছিল।
তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চলমান থাকায় হোয়াইট হাউস তাদের অনেক শুল্কের কিছু অংশ স্থগিত বা সংশোধন করেছে।
আপিল আদালতের সিদ্ধান্তের ফলে মামলাটি বিচারাধীন থাকাকালে ট্রাম্প প্রশাসন আপাতত শুল্কারোপ করতে পারবে, আগামী পাঁচই জুন এর পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আরেকটি ফেডারেল আদালতও কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের রায়ের বিষয়ে একই ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। বিচারক রুডলফ কনট্রেরাস বলেছেন, শুল্কারোপের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কর্তৃত্বের বাইরে চলে গেছে ঠিক, তবে সেই রায় শুধু মামলার একটি খেলনা কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এরপর কী হবে?
ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ধরে নিতে পারেন আমরা (আদালতে) হেরে গেলেও অন্যভাবে এটা (শুল্ক) করবো।’
১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার অধীনে জাতীয়-নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প যে গাড়ি, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কারোপ করেছিলেন, তা কোনো আদালতই বাতিল করেনি।
তিনি সেই আইনের অধীনে আমদানি কর সেমিকন্ডাক্টর ও কাঠের মতো অন্যান্য খাতে প্রসারিত করতে পারেন।
১৯৭৪ সালের বাণিজ্য আইনের ধারা ৩০১ও প্রয়োগ করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা তিনি চীনের ওপর তার প্রথম মেয়াদের শুল্কারোপের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।
১৯৩০ সালের একটি পৃথক বাণিজ্য আইন, বাণিজ্য আইনের ধারা ৩৩৮, যা কয়েক দশক ধরে ব্যবহার করা হয়নি, প্রেসিডেন্টকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণকারী দেশগুলো থেকে আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের অনুমতি দেয়।
কিন্তু হোয়াইট হাউস আপাতত আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার দিকে বেশি মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি সুপ্রিমকোর্টে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডে ব্যবসায়ীদের করা মামলায় সহায়তাকারী আইনজীবী ইলিয়া সোমিন বলেন, তিনি ‘মোটামুটি আশাবাদী’ যে শেষ পর্যন্ত আপিলের মাধ্যমে রায় বহাল থাকবে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই আদালতের আদেশ ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় প্রেসিডেন্টদের নিয়োগ করা বিচারকদের কাছ থেকে এসেছে, নিয়োগকর্তাদের মধ্যে ট্রাম্প নিজেও একজন।
‘যুক্তরাষ্ট্রের পেসিডেন্টের পক্ষে বিশ্ব অর্থনৈতিক মহামন্দার পর থেকে এত বিশাল ক্ষমতা প্রয়োগ করা এবং বৃহত্তম বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করা স্বাভাবিক বিষয় নয়,’ তিনি বলেন।
ওয়াশিংটনের নীতি সম্পর্কে বিভিন্ন সংস্থাকে পরামর্শ দেয় এমন প্রতিষ্ঠান প্যানজিয়া পলিসির প্রতিষ্ঠাতা টেরি হেইনস বলেন, তিনি মনে করেন আদালত ‘প্রেসিডেন্টকে সম্ভবত সন্দেহের সুবিধা’ দেবে।
ব্যবসায়িক উদ্যোক্তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, তারা এখনও মনে করেননি যে পরিস্থিতির সমাধান হয়েছে।
‘আমি অবিশ্বাস্যভাবে খুশি এবং স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু আমি এখনও খুব সতর্ক,’ বোস্টনভিত্তিক স্টোরি টাইম টয়সের মালিক কারা ডায়ার বলেন, যা চীনে খেলনা তৈরি করে এবং বিক্রির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করে।
‘পরিস্থিতি এতটাই বিশৃঙ্খল যে ব্যবসার পরিকল্পনা করা অসম্ভব,’ তিনি বলেন।
‘আমি চাই এটি আমাদের আদালত ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যকর হোক যাতে ভবিষ্যতে শুল্ক কী হবে সে সম্পর্কে আমাদের আরও কিছুটা নিশ্চয়তা থাকে।’
বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী প্রাক্তন বাণিজ্য আলোচক দিমিত্রি গ্রোজোবিনস্কি বলেছেন, আদালতের লড়াই ট্রাম্পের অন্যান্য দেশের ওপর কর্তৃত্বের জন্য শুল্ক ব্যবহার করার ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
‘ভবিষ্যতে শুল্ক বৃদ্ধি করা তার পক্ষে অনেক কঠিন হবে,’ তিনি বলেন।
‘এটি শেষ পর্যন্ত এমন একটি আলোচনা ছিল যেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্য দেশগুলোকে একটি বড় লাঠি দিয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন এবং সেই লাঠিটি আরও ক্ষণস্থায়ী হয়ে উঠল।’