২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, নদীগর্ভে চলে গেছে হাতিয়ার মাছ বাজার
গভীর নিম্নচাপ ও দুই দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নোয়াখালী নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত -সংবাদ
গভীর নিম্নচাপের কারণে নোয়াখালীর অধিকাংশ এলাকা বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। নোয়াখালীতে শুক্রবার,(৩০ মে ২০২৫) ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জোয়ারের ঢেউয়ে নদীগর্ভে চলে গেছে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজার। বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্কে মেঘনা উপকূলের মানুষ। জেলায় চলতি মৌসুমে এক দিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। গভীর নিম্নচাপের কারণে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বর্তমানে নোয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় ও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, প্রবল জোয়ারে কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। ডুবে গেছে ধান, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসল। জোয়ারে মেঘনা নদীতে এমভি প্রাহিম নামের একটি পণ্যবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। উপকূলীয় এলাকায় বর্তমানে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা জারি রয়েছে। এই নিম্নচাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিঝুমদ্বীপ। টানা বৃষ্টিতে জেলাশহর মাইজদীতে ও বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অধিকাংশ বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জেলার বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও মাইজদীতে বিভিন্ন গাছপালা উপড়ে পড়ায় গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ, টানা ভারী বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ফলে জেলার অনেক স্থানে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কেও মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, চরজব্বর, চাটখিল ও সদর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল টাওয়ারগুলোর ব্যাকআপ শক্তিও শেষ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্ক। এতে প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ, জরুরি প্রয়োজনে ডাক্তার ও হাসপাতালে যোগাযোগসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় অনেক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ঝড়-বৃষ্টিতে চাটখিল উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয় ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। হাসান মাহমুদ বাবু নামের এক পথচারী সাংবাদিকদের বলেন, গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নাই। আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগ যদি দ্রুত কাজ করে তাহলে আমরা বিদ্যুৎ পাব। হাতিয়ার বাসিন্দা ইরাক হোসেন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। এখন মোবাইলেও নেটওয়ার্ক নাই। কোনো আত্মীয়ের খোঁজ নিতে পারতেছি না। বাচ্চারা ভয়ে আছে, কেউ জানে না সামনে কী হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা দ্রুত পুনরুদ্ধার।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সক্রিয় মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। নোয়াখালীতে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ সরওয়ার জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও টানা বৃষ্টির কারণে জেলার বহু জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে পানি ওঠায় অনেক স্থানে মেরামত কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বাতাস হচ্ছে। আমরা নির্ঘুম কাজ করছি। যেখানে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধান করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে. বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব ও জোয়ারের ঢেউয়ে নদীগর্ভে চলে গেছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐতিহ্যবাহী মাছ বাজারটির বড় একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চেয়ারম্যান ঘাটের পাশে অবস্থিত মাছ বাজারটির একাংশ ভেঙে পড়ে নদীতে। এছাড়া বাজারের অনেক দোকান ও অস্থায়ী ছাউনি পানির নিচে তলিয়ে যায়। হঠাৎ পানির তোড়ে অনেক ব্যবসায়ীর মাছ, ওজন মাপার যন্ত্র এবং অন্যান্য মালামাল পানিতে ভেসে যায়। ওই মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন বলেন, শত শত কোটি টাকার মাছ ঘাট আজ বিলীন। আজ যদি সময়মতো পদক্ষেপ নেয়া হতো, তাহলে এভাবে ভেঙে যেত না। আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ ও ব্লক হোক, যেন জোয়ার এলেও আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই না হারিয়ে ফেলি। আব্দুর রহমান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় বহু বছর ধরে মাছ বাজারটি চলে এলেও আজ পর্যন্ত কোনো টেকসই বাঁধ বা প্রতিরোধমূলক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। এ বাজারটি অর্থনীতির একটি হাতিয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু কোনো স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর জোয়ারের সময় ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজারটি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে খবর পেলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি স্থানে বেঁড়িবাধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর স্থানীয়রা আমাদের জানিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, নিম্নচাপ চলাকালে সব রকমের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেডক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, নদীগর্ভে চলে গেছে হাতিয়ার মাছ বাজার
গভীর নিম্নচাপ ও দুই দিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নোয়াখালী নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত -সংবাদ
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
গভীর নিম্নচাপের কারণে নোয়াখালীর অধিকাংশ এলাকা বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। নোয়াখালীতে শুক্রবার,(৩০ মে ২০২৫) ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জোয়ারের ঢেউয়ে নদীগর্ভে চলে গেছে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজার। বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্কে মেঘনা উপকূলের মানুষ। জেলায় চলতি মৌসুমে এক দিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। গভীর নিম্নচাপের কারণে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বর্তমানে নোয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় ও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, প্রবল জোয়ারে কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। ডুবে গেছে ধান, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসল। জোয়ারে মেঘনা নদীতে এমভি প্রাহিম নামের একটি পণ্যবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। উপকূলীয় এলাকায় বর্তমানে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা জারি রয়েছে। এই নিম্নচাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিঝুমদ্বীপ। টানা বৃষ্টিতে জেলাশহর মাইজদীতে ও বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অধিকাংশ বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জেলার বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও মাইজদীতে বিভিন্ন গাছপালা উপড়ে পড়ায় গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ, টানা ভারী বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ফলে জেলার অনেক স্থানে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কেও মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, চরজব্বর, চাটখিল ও সদর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল টাওয়ারগুলোর ব্যাকআপ শক্তিও শেষ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্ক। এতে প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ, জরুরি প্রয়োজনে ডাক্তার ও হাসপাতালে যোগাযোগসহ নিত্য-প্রয়োজনীয় অনেক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, ঝড়-বৃষ্টিতে চাটখিল উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয় ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। হাসান মাহমুদ বাবু নামের এক পথচারী সাংবাদিকদের বলেন, গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ নাই। আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগ যদি দ্রুত কাজ করে তাহলে আমরা বিদ্যুৎ পাব। হাতিয়ার বাসিন্দা ইরাক হোসেন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। এখন মোবাইলেও নেটওয়ার্ক নাই। কোনো আত্মীয়ের খোঁজ নিতে পারতেছি না। বাচ্চারা ভয়ে আছে, কেউ জানে না সামনে কী হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা দ্রুত পুনরুদ্ধার।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সক্রিয় মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। নোয়াখালীতে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ সরওয়ার জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও টানা বৃষ্টির কারণে জেলার বহু জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে পানি ওঠায় অনেক স্থানে মেরামত কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বাতাস হচ্ছে। আমরা নির্ঘুম কাজ করছি। যেখানে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধান করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে. বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব ও জোয়ারের ঢেউয়ে নদীগর্ভে চলে গেছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐতিহ্যবাহী মাছ বাজারটির বড় একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চেয়ারম্যান ঘাটের পাশে অবস্থিত মাছ বাজারটির একাংশ ভেঙে পড়ে নদীতে। এছাড়া বাজারের অনেক দোকান ও অস্থায়ী ছাউনি পানির নিচে তলিয়ে যায়। হঠাৎ পানির তোড়ে অনেক ব্যবসায়ীর মাছ, ওজন মাপার যন্ত্র এবং অন্যান্য মালামাল পানিতে ভেসে যায়। ওই মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন বলেন, শত শত কোটি টাকার মাছ ঘাট আজ বিলীন। আজ যদি সময়মতো পদক্ষেপ নেয়া হতো, তাহলে এভাবে ভেঙে যেত না। আমাদের টেকসই বেড়িবাঁধ ও ব্লক হোক, যেন জোয়ার এলেও আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই না হারিয়ে ফেলি। আব্দুর রহমান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় বহু বছর ধরে মাছ বাজারটি চলে এলেও আজ পর্যন্ত কোনো টেকসই বাঁধ বা প্রতিরোধমূলক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। এ বাজারটি অর্থনীতির একটি হাতিয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু কোনো স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর জোয়ারের সময় ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান ঘাটের মাছ বাজারটি নদীভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে খবর পেলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, উপকূলীয় এলাকার কয়েকটি স্থানে বেঁড়িবাধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর স্থানীয়রা আমাদের জানিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, নিম্নচাপ চলাকালে সব রকমের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেডক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে।