প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে চিকনগুনিয়া।
১৭১ জনের মধ্যে ১৪০ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত, শতকরা ৮২ ভাগ রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩২৬ জন ভর্তি,
মৃত্যু ২ জন
মহাখালী আইসিডিডিআর,বির তথ্যমতে চলতি জুন মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে জ্বর ও ব্যাথাসহ অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে ১৭১ জন রোগীর নমুনা তাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৪০ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এতে শতকরা ৮২ ভাগ রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে ধারণা করা হচ্ছে। এডিস মশার কামড়ে মানুষ তিন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তা হলো ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলাকা ভিত্তিক সন্দেহভাজন আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি খরচে পরীক্ষা করে চিকিৎসা গাইলাইন দেয়া দরকার। না হয় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত রোগীরা এক মাস থেকে কমপক্ষে ৬ মাস কর্মক্ষমতা হারাবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীরা হাঁটু, পাসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টগুলোতে মারাত্মক ব্যাথা অনুভব করেন। অনেকেই হাঁটা-চলাও করতে কষ্ট হয়। এই ব্যাথা বহুদিন স্থায়ী হয়।
চিকুনগুনিয়া সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে চিকিৎসকেরা। গেল কোরবানির ঈদের সময় মানুষ শহর থেকে গ্রামে, আবার গ্রাম থেকে শহরে আসছে। এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন সারাদেশে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও মশা নিয়ন্ত্রণে ঢিলাঢালাভাবের কারণে এর বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। এই মশার বিস্তার প্রতিরোধে দরকার, পরিকল্পিত নগরায়ন, পরিচ্ছন্নতা এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়য়া ও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর কষ্ট বেশি। এক মাস থেকে ৬ মাস শরীরে ব্যাথা থাকে। আর পায়ের জয়েন্টেগুলোতে অসহনীয় ব্যাথা হয়।
জরুরি ভিত্তিতে চিকুনগুনিয়া
শনাক্ত করার জন্য এলাকা ভিত্তিক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি খরচে পরীক্ষা করা দরকার। আর চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। না হয় এই রোগী স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা কষ্টকর। তার কর্মক্ষমতা হারাবে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমাজেন্সি ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন ঢাকা দক্ষিণ ও অন্যজন রাজশাহীতে মারা গেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বুধবার,(২৫ জুন ২০২৫) পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮ হাজার ৭৭০ জন। তার চিকৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, ঢাকা বিভাগে ৪৩, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪৫ জন, খুলনায় ১৬ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন, রাজশাহীতে ২৬ জন ও সিলেটে ১ জন আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছে।
জুন মাসে বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর মৃত্যুর শীর্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি, এখানে মারা গেছে ১৭ জন।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৮ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৩ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৪ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসিপাতালে ৬৭ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২০ জন ভর্তি আছে। এনিয়ে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ২৩৯ জন। ঢাকার বাইরে পর্যটন জেলা কক্সবাজারে ভর্তি আছে ১৪ জন।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিভাগের কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ কবিরুল বাসারের এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জনসচেতনতার অভাবে এডিস মশা বাহিত এই রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। এখন বর্ষার মৌসুম। এই রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে চিকনগুনিয়া।
১৭১ জনের মধ্যে ১৪০ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত, শতকরা ৮২ ভাগ রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩২৬ জন ভর্তি,
মৃত্যু ২ জন
মহাখালী আইসিডিডিআর,বির তথ্যমতে চলতি জুন মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে জ্বর ও ব্যাথাসহ অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে ১৭১ জন রোগীর নমুনা তাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৪০ জনের শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এতে শতকরা ৮২ ভাগ রোগীর শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে ধারণা করা হচ্ছে। এডিস মশার কামড়ে মানুষ তিন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তা হলো ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলাকা ভিত্তিক সন্দেহভাজন আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি খরচে পরীক্ষা করে চিকিৎসা গাইলাইন দেয়া দরকার। না হয় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত রোগীরা এক মাস থেকে কমপক্ষে ৬ মাস কর্মক্ষমতা হারাবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীরা হাঁটু, পাসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টগুলোতে মারাত্মক ব্যাথা অনুভব করেন। অনেকেই হাঁটা-চলাও করতে কষ্ট হয়। এই ব্যাথা বহুদিন স্থায়ী হয়।
চিকুনগুনিয়া সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে চিকিৎসকেরা। গেল কোরবানির ঈদের সময় মানুষ শহর থেকে গ্রামে, আবার গ্রাম থেকে শহরে আসছে। এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন সারাদেশে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও মশা নিয়ন্ত্রণে ঢিলাঢালাভাবের কারণে এর বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। এই মশার বিস্তার প্রতিরোধে দরকার, পরিকল্পিত নগরায়ন, পরিচ্ছন্নতা এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়য়া ও জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর কষ্ট বেশি। এক মাস থেকে ৬ মাস শরীরে ব্যাথা থাকে। আর পায়ের জয়েন্টেগুলোতে অসহনীয় ব্যাথা হয়।
জরুরি ভিত্তিতে চিকুনগুনিয়া
শনাক্ত করার জন্য এলাকা ভিত্তিক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি খরচে পরীক্ষা করা দরকার। আর চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। না হয় এই রোগী স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা কষ্টকর। তার কর্মক্ষমতা হারাবে।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমাজেন্সি ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন ঢাকা দক্ষিণ ও অন্যজন রাজশাহীতে মারা গেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বুধবার,(২৫ জুন ২০২৫) পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮ হাজার ৭৭০ জন। তার চিকৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, ঢাকা বিভাগে ৪৩, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪৫ জন, খুলনায় ১৬ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন, রাজশাহীতে ২৬ জন ও সিলেটে ১ জন আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছে।
জুন মাসে বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর মৃত্যুর শীর্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি, এখানে মারা গেছে ১৭ জন।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৮ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৩ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৪ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসিপাতালে ৬৭ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ২০ জন ভর্তি আছে। এনিয়ে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছে ২৩৯ জন। ঢাকার বাইরে পর্যটন জেলা কক্সবাজারে ভর্তি আছে ১৪ জন।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিভাগের কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ কবিরুল বাসারের এক প্রতিবেদনে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জনসচেতনতার অভাবে এডিস মশা বাহিত এই রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। এখন বর্ষার মৌসুম। এই রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।