মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে, মোট মৃত্যু ১১৪ জন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ২৪৭ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে একদিনে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শনিবার,(২৩ আগস্ট ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৮ হাজার ২০২ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে ৩১ জন, ঢাকা উত্তরে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৬৮ জন, ময়মনসিংহে ৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বয়সভেদে ৫ বছর বয়সের শিশু ১৮টি, ৬-১০ বছর বয়সের শিশু ৯টি, ১১-১৫ বছর বয়সের শিশু ১০টি, ১৬-২০ বছর বয়সের ২৪ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ৩৩ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ২৮ জন, ৮০ বছর বয়সের ২ জন, ৭৬-৮০ বছর বয়সের ৩ জন। ৭১-৭৫ বছর বয়সের ১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ বছর বয়সের ২ হাজার ১শ’ ৯৯ জন। ৬-১০ বছর বয়সের ১ হাজার ৮শ’ ৫৪ জন। ১১-১৫ বছর বয়সের ২ হাজার ৬ জন।
মোট আক্রান্তের মধ্যে নারী ১১ হাজার ৫০৩ জন। পুরুষ ১৬ হাজার ১৬ হাজার ৬৯৯ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ২০২ জন।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৩ জন, সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩২ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ৪৯ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ৩৪৩ জন ভর্তি আছে। সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১৩০৭ জন ভর্তি আছে। প্রতি বছরের মতো এ বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।
আগে ডেঙ্গু শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ব ছিল। এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ছে। আগে ডেঙ্গু দিনের কামড়াতো। এখন সন্ধ্যার সময়ও মানুষকে কামড়ায়। বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় প্রমাণিত, ডেঙ্গু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতেও কামড়ায়।
এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার ও জমে থাকা পানিতেক ডিম পাড়ে। যেমনÑ ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, ফ্রিজের ট্রে, এসির পানি জমানোর স্থান ইত্যাদি।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, ছোট শহরে অধিক জনসংখ্যার কারণে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় পাত্র তৈরি হয়, যার মধ্যে পানি জমা হয়ে মশার বংশবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করছে।
বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের অভাবে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে, যা মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্র তৈরি করে। শহরে উঁচু ভবন ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আলো-বাতাস চলাচল কম হওয়ায় মশার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে তাপমাত্রা ও আদ্রর্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে।
আগে শুধুমাত্র বর্ষাকালে ডেঙ্গু দেখা যেত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন গ্রীষ্মকালেও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনিয়ম ও অতিবর্ষণের ফলে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। যা মশার জন্মের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
ডেঙ্গু ভাইরাস খুব দ্রুত মিউটেটেড বা পরিবর্তিত হতে পারে। ডেঙ্গুর ধরণ পরিবর্তিত হলে সংক্রমণ মারাত্বক আকার ধারণ করে। একবার কেউ একটি ধরনের আক্রান্ত হওয়ার পর আবার যদি অন্য ধরন দ্বারা সংক্রমিত হয়। তাহলে এন্টিবডি-ডিপেন্ডেন্ট এনহান্সমেন্ট নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ আরও গুরুতর হতে পারে। এ প্রক্রিয়াতে রোগী রোগ প্রতিরোধ হারিয়ে ফেলে।
পরিবর্তিত পরিবেশে ভাইরাস খুব দ্রুত অভিযোচিত হয়। ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তনের ফলে এটি আরও সংক্রমক হতে পারে। এতে ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা পদ্ধতিও কম কার্যকর হয়ে যেতে পারে।
এটি প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতা এবং ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এই প্রসঙ্গে মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, এখন বৃষ্টির মৌসুম। বৃষ্টি কমার পর ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে। কারণ জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। সে ডিম থেকে বাচ্চা হয়। এ বাচ্চা বড় হয়ে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়। ওই মশা আবার কামড়তে থাকে। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই এখনই চিকিৎসা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রিকরণ করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দরকার। তা না হলে মৃত্যু বাড়তে থাকবে।
মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে, মোট মৃত্যু ১১৪ জন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ২৪৭ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে একদিনে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শনিবার,(২৩ আগস্ট ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৮ হাজার ২০২ জন। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে ৩১ জন, ঢাকা উত্তরে ৩২ জন, ঢাকা দক্ষিণে ৬৮ জন, ময়মনসিংহে ৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
বয়সভেদে ৫ বছর বয়সের শিশু ১৮টি, ৬-১০ বছর বয়সের শিশু ৯টি, ১১-১৫ বছর বয়সের শিশু ১০টি, ১৬-২০ বছর বয়সের ২৪ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ৩৩ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ২৮ জন, ৮০ বছর বয়সের ২ জন, ৭৬-৮০ বছর বয়সের ৩ জন। ৭১-৭৫ বছর বয়সের ১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ বছর বয়সের ২ হাজার ১শ’ ৯৯ জন। ৬-১০ বছর বয়সের ১ হাজার ৮শ’ ৫৪ জন। ১১-১৫ বছর বয়সের ২ হাজার ৬ জন।
মোট আক্রান্তের মধ্যে নারী ১১ হাজার ৫০৩ জন। পুরুষ ১৬ হাজার ১৬ হাজার ৬৯৯ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ২০২ জন।
হাসপাতালের তথ্যমতে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৪ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪৩ জন, সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩২ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ৪৯ জন ভর্তি আছে। এভাবে রাজধানীর ১৮টি সরকারি হাসপাতালে ৩৪৩ জন ভর্তি আছে। সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১৩০৭ জন ভর্তি আছে। প্রতি বছরের মতো এ বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।
আগে ডেঙ্গু শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ব ছিল। এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগী বাড়ছে। আগে ডেঙ্গু দিনের কামড়াতো। এখন সন্ধ্যার সময়ও মানুষকে কামড়ায়। বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় প্রমাণিত, ডেঙ্গু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাতেও কামড়ায়।
এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার ও জমে থাকা পানিতেক ডিম পাড়ে। যেমনÑ ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, ফ্রিজের ট্রে, এসির পানি জমানোর স্থান ইত্যাদি।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, ছোট শহরে অধিক জনসংখ্যার কারণে প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড় পাত্র তৈরি হয়, যার মধ্যে পানি জমা হয়ে মশার বংশবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করছে।
বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের অভাবে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে, যা মশার বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্র তৈরি করে। শহরে উঁচু ভবন ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আলো-বাতাস চলাচল কম হওয়ায় মশার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে তাপমাত্রা ও আদ্রর্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ডেঙ্গু সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত সহায়ক পরিবেশ তৈরি করছে।
আগে শুধুমাত্র বর্ষাকালে ডেঙ্গু দেখা যেত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন গ্রীষ্মকালেও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনিয়ম ও অতিবর্ষণের ফলে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। যা মশার জন্মের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
ডেঙ্গু ভাইরাস খুব দ্রুত মিউটেটেড বা পরিবর্তিত হতে পারে। ডেঙ্গুর ধরণ পরিবর্তিত হলে সংক্রমণ মারাত্বক আকার ধারণ করে। একবার কেউ একটি ধরনের আক্রান্ত হওয়ার পর আবার যদি অন্য ধরন দ্বারা সংক্রমিত হয়। তাহলে এন্টিবডি-ডিপেন্ডেন্ট এনহান্সমেন্ট নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ আরও গুরুতর হতে পারে। এ প্রক্রিয়াতে রোগী রোগ প্রতিরোধ হারিয়ে ফেলে।
পরিবর্তিত পরিবেশে ভাইরাস খুব দ্রুত অভিযোচিত হয়। ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তনের ফলে এটি আরও সংক্রমক হতে পারে। এতে ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা পদ্ধতিও কম কার্যকর হয়ে যেতে পারে।
এটি প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতা এবং ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এই প্রসঙ্গে মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, এখন বৃষ্টির মৌসুম। বৃষ্টি কমার পর ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে। কারণ জমে থাকা পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। সে ডিম থেকে বাচ্চা হয়। এ বাচ্চা বড় হয়ে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ মশা হয়। ওই মশা আবার কামড়তে থাকে। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই এখনই চিকিৎসা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রিকরণ করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা দরকার। তা না হলে মৃত্যু বাড়তে থাকবে।