ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
এয়ার টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও প্রতারণা এড়াতে চারটি নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি তৎপরতা বাড়িয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নেয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতা যাচাই করতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গতকাল রোববার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন।
সে সময় তিনি যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের অভিযোগ শোনেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পরে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন
সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব উদ্যোগের কথা জানান বাণিজ্য সচিব নাসরীন জাহান। যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে-
নির্দেশনা জারি : ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট মন্ত্রণালয় চারটি নির্দেশনা জারি করে। এর মধ্যে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে প্রতিটি টিকেটে এজেন্সির নাম, লাইসেন্স নম্বর ও বিক্রয়মূল্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে আকাশপথের যাত্রীরা সহজেই মূল্য যাচাই করে লাইসেন্সবিহীন এজেন্সি এড়িয়ে চলতে পারবেন।
‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ : ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ নামক ট্রাভেল এজেন্সির আর্থিক অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার সব এয়ারলাইন্স ও সিএএবিকে ক্ষতিগ্রস্ত আকাশপথের যাত্রীদের টিকেট বহাল রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া, এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার পরিবারের সদস্যরা কোন দেশে পলায়ন করেছে সে বিষয়ে তথ্য দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং অর্থ পাচার রোধে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।
টাস্কফোর্স গঠন : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এর প্রধান লক্ষ্য হলো- টিকেটের উচ্চমূল্য পর্যবেক্ষণ করা, এর কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা। এই টাস্কফোর্সকে অধিকতর কার্যকর করা হয়েছে।
লাইসেন্সবিহীন এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : সরকার সব জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লাইসেন্সবিহীন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে।
নন-রিফান্ডেবল টিকেটের ট্যাক্স ফেরত : মন্ত্রণালয় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-কে অনুরোধ করেছে যেন তারা এয়ারলাইন্সগুলোকে নন-রিফান্ডেবল টিকেটের ক্ষেত্রেও যাত্রীরা ভ্রমণ না করলে দ্রুত ট্যাক্স বাবদ প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশনা দেয়।
এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল : একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সিকে অবৈধভাবে টিকেট ব্লক করা ও উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য চিহ্নিত করেছে। তাদের নিবন্ধন বাতিলের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এছাড়া, মন্ত্রণালয় অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত অন্য এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইন ও বিধিমালা সংশোধন : সরকার বিদ্যমান আইনগুলোকে আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করতে কাজ করছে। বর্তমান আইন সংশোধনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আরও কঠোর হবে। অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ)-কে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে একটি খসড়া গাইডলাইন এবং নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে।
সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ : ট্রাভেল এজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিএএমএস)-এর মাধ্যমে নিবন্ধন ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। সরকার এখন আরও উন্নত ও স্বয়ংক্রিয় ওটিএএমএস সফটওয়্যার তৈরির কাজ করছে, যা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ সহজ করবে।
সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ : ট্রাভেল এজেন্সি সংক্রান্ত আইন ছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইন, ভোক্তা অধিকার আইন, মানিলন্ডারিং আইন, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং অন্য বিদ্যমান আইনানুযায়ী সামগ্রিকভাবে এয়ার টিকেট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর কার্যক্রম শুরু করেছে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
এয়ার টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও প্রতারণা এড়াতে চারটি নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি তৎপরতা বাড়িয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নেয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতা যাচাই করতে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গতকাল রোববার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন।
সে সময় তিনি যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের অভিযোগ শোনেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পরে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন
সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব উদ্যোগের কথা জানান বাণিজ্য সচিব নাসরীন জাহান। যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে-
নির্দেশনা জারি : ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট মন্ত্রণালয় চারটি নির্দেশনা জারি করে। এর মধ্যে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে প্রতিটি টিকেটে এজেন্সির নাম, লাইসেন্স নম্বর ও বিক্রয়মূল্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে আকাশপথের যাত্রীরা সহজেই মূল্য যাচাই করে লাইসেন্সবিহীন এজেন্সি এড়িয়ে চলতে পারবেন।
‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ : ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ নামক ট্রাভেল এজেন্সির আর্থিক অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার সব এয়ারলাইন্স ও সিএএবিকে ক্ষতিগ্রস্ত আকাশপথের যাত্রীদের টিকেট বহাল রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া, এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার পরিবারের সদস্যরা কোন দেশে পলায়ন করেছে সে বিষয়ে তথ্য দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং অর্থ পাচার রোধে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।
টাস্কফোর্স গঠন : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এর প্রধান লক্ষ্য হলো- টিকেটের উচ্চমূল্য পর্যবেক্ষণ করা, এর কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা। এই টাস্কফোর্সকে অধিকতর কার্যকর করা হয়েছে।
লাইসেন্সবিহীন এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : সরকার সব জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লাইসেন্সবিহীন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে।
নন-রিফান্ডেবল টিকেটের ট্যাক্স ফেরত : মন্ত্রণালয় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-কে অনুরোধ করেছে যেন তারা এয়ারলাইন্সগুলোকে নন-রিফান্ডেবল টিকেটের ক্ষেত্রেও যাত্রীরা ভ্রমণ না করলে দ্রুত ট্যাক্স বাবদ প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশনা দেয়।
এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল : একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সিকে অবৈধভাবে টিকেট ব্লক করা ও উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য চিহ্নিত করেছে। তাদের নিবন্ধন বাতিলের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এছাড়া, মন্ত্রণালয় অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত অন্য এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছে।
আইন ও বিধিমালা সংশোধন : সরকার বিদ্যমান আইনগুলোকে আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করতে কাজ করছে। বর্তমান আইন সংশোধনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আরও কঠোর হবে। অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (ওটিএ)-কে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে একটি খসড়া গাইডলাইন এবং নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে।
সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ : ট্রাভেল এজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিএএমএস)-এর মাধ্যমে নিবন্ধন ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। সরকার এখন আরও উন্নত ও স্বয়ংক্রিয় ওটিএএমএস সফটওয়্যার তৈরির কাজ করছে, যা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ সহজ করবে।
সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ : ট্রাভেল এজেন্সি সংক্রান্ত আইন ছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইন, ভোক্তা অধিকার আইন, মানিলন্ডারিং আইন, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং অন্য বিদ্যমান আইনানুযায়ী সামগ্রিকভাবে এয়ার টিকেট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর কার্যক্রম শুরু করেছে।