নারী ও শিশু নির্যাতনের কিছু ধরনের অপরাধের ঘটনা গত বছর যা ছিল, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই সেই সংখ্যার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে তা ছাড়িয়ে গেছে। ধর্ষণের ঘটনা প্রথম ছয় মাসেই গত বছরের সমান, কিন্তু যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ, বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের সংখ্যা এখনই বেশি।
এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে মঙ্গলবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন: ২০২৪ সমীক্ষা’ প্রতিবেদনের অনুষ্ঠানে। সমীক্ষা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সমীক্ষাটি ১৪টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েশিশু এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী নারী—দুই ভিন্ন বয়সভিত্তিক গ্রুপে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা, যৌন হয়রানি, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, গৃহকর্মী নির্যাতন ও সাইবার অপরাধ—এই আটটি অপরাধ আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মোট নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ২,৯৩৭টি, ২০২৪ সালে ২,৫২৫টি এবং চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১,৫৫৫টি ঘটনা ঘটেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী সাইবার অপরাধ ও গৃহকর্মী নির্যাতনের সংখ্যা কিছুটা কমলেও অন্যান্য অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে।
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ১৮ বছরের কম বয়সীরাই বেশি ভুক্তভোগী। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই প্রধান। ধর্ষণের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ২৮ শতাংশ ১১ থেকে ৩০ বছর বয়সী, যার মধ্যে ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ধর্ষণের শিকার ৩৬৪ জন, এর মধ্যে ২২০ জন কন্যা ও ১৪৪ জন নারী। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৪৮ জন, কন্যা ৪৯ ও নারী ৯৯ জন। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ২১১ জন। যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার ২২৪ জনের মধ্যে ১২৫ জন কন্যা। বাল্যবিবাহের শিকার ২০ জন কন্যা, যৌতুকের শিকার ৬৬ জন নারী ও ২ জন কন্যা। গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার ২৪ জন এবং সাইবার অপরাধে ২৯ জন।
মামলার প্রবণতা বেড়েছে। ধর্ষণের ৬২ শতাংশ ঘটনার পরে মামলা করা হয়। তবে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, পারিবারিক সহিংসতা ও ফলোআপ সংক্রান্ত তথ্য সবসময় গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় না।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, দেশে নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতনের ব্যাপ্তি ও ভয়াবহতা বেড়েছে। কম বয়সীরাই বেশি নির্যাতনের শিকার এবং অভিযুক্তরাও তরুণ। একই অপরাধী বারবার অপরাধে জড়াচ্ছে। তিনি সামাজিক আন্দোলন ও গণমাধ্যমকে নারীবিদ্বেষী সংস্কৃতি দূর করতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
মালেকা বানু বলেন, নারী নির্যাতনের মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমাতে সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ঘরে-বাইরে শিশুরা অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার উপপরিষদের সম্পাদক রীনা আহমেদ, লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা, লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫
নারী ও শিশু নির্যাতনের কিছু ধরনের অপরাধের ঘটনা গত বছর যা ছিল, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই সেই সংখ্যার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে তা ছাড়িয়ে গেছে। ধর্ষণের ঘটনা প্রথম ছয় মাসেই গত বছরের সমান, কিন্তু যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ, বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের সংখ্যা এখনই বেশি।
এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে মঙ্গলবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন: ২০২৪ সমীক্ষা’ প্রতিবেদনের অনুষ্ঠানে। সমীক্ষা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সমীক্ষাটি ১৪টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েশিশু এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী নারী—দুই ভিন্ন বয়সভিত্তিক গ্রুপে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা, যৌন হয়রানি, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, গৃহকর্মী নির্যাতন ও সাইবার অপরাধ—এই আটটি অপরাধ আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে মোট নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ২,৯৩৭টি, ২০২৪ সালে ২,৫২৫টি এবং চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১,৫৫৫টি ঘটনা ঘটেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী সাইবার অপরাধ ও গৃহকর্মী নির্যাতনের সংখ্যা কিছুটা কমলেও অন্যান্য অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে।
সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ১৮ বছরের কম বয়সীরাই বেশি ভুক্তভোগী। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই প্রধান। ধর্ষণের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ২৮ শতাংশ ১১ থেকে ৩০ বছর বয়সী, যার মধ্যে ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ধর্ষণের শিকার ৩৬৪ জন, এর মধ্যে ২২০ জন কন্যা ও ১৪৪ জন নারী। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৪৮ জন, কন্যা ৪৯ ও নারী ৯৯ জন। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ২১১ জন। যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার ২২৪ জনের মধ্যে ১২৫ জন কন্যা। বাল্যবিবাহের শিকার ২০ জন কন্যা, যৌতুকের শিকার ৬৬ জন নারী ও ২ জন কন্যা। গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার ২৪ জন এবং সাইবার অপরাধে ২৯ জন।
মামলার প্রবণতা বেড়েছে। ধর্ষণের ৬২ শতাংশ ঘটনার পরে মামলা করা হয়। তবে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, পারিবারিক সহিংসতা ও ফলোআপ সংক্রান্ত তথ্য সবসময় গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় না।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, দেশে নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতনের ব্যাপ্তি ও ভয়াবহতা বেড়েছে। কম বয়সীরাই বেশি নির্যাতনের শিকার এবং অভিযুক্তরাও তরুণ। একই অপরাধী বারবার অপরাধে জড়াচ্ছে। তিনি সামাজিক আন্দোলন ও গণমাধ্যমকে নারীবিদ্বেষী সংস্কৃতি দূর করতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
মালেকা বানু বলেন, নারী নির্যাতনের মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমাতে সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ঘরে-বাইরে শিশুরা অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার উপপরিষদের সম্পাদক রীনা আহমেদ, লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা, লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।