বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তাদের স্বজনরা। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘রাজবন্দীদের স্বজন’-এর ব্যানারে হয় এই কর্মসূচি।
মানববন্ধনে একটি মামলায় দন্ড পাওয়া যুবদলের সাবেক সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমার স্বামীকে সাজা দেয়া হয়েছে। পুলিশ নিজেই সাজানো মামলা দিয়েছে। আবার নিজেরাই সাক্ষ্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু বলতে দেয়া হয় না। আজকে বিচার নিয়ে এসেছি। কিন্তু বিচার করবে কে? আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এই সরকারের পতন চাই।
বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাসের ছোট বোন বেগম শাহিদা মির্জা বলেন, আমার ছেলে কোনো অপরাধ না করেও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাসায় আসতে পারছে না। অনেকদিন ধরে আমি আমার ছেলেকে দেখতে পাই না। পুলিশ এসে ভাঙচুর করে। আমরা এমন অবস্থার অবসান চাই।
অজ্ঞাত পরিচয়ে ধরে নিয়ে টর্চার সেলে রেখে ভাইকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যুবদল নেতা রাজিবের বড় বোন আফরোজা পারভিন জবা বলেন, ওরা আমার ভাইকে অজ্ঞাতপরিচয়ে ধরে নিয়ে টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন করছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। কোন অপরাধে আটক করা হয়েছে, আর কেন জামিন দেয়া হচ্ছে না কিছুই জানি না।
যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্ত্রী মাহবুবা খানম বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই একের পর এক মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আমার স্বামীকে রাখা হয়েছে। অসুস্থ থাকার পরও তার জামিন দেয়া হচ্ছে না। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই। সেই বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দমন করা গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, লেখক-সাহিত্যিক ও কবি আবদুল হাই সিকদার, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সভাপতি ড. লুৎফর রহমান, ঢাবির অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আফজাল আহমদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সদস্য সচিব রাশেদ খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীরা।
কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অসহনীয় পরিস্থিতিতে বিরোধী দলীয় নেতারা সময় কাটাচ্ছেন। নির্যাতনের চরম মাত্রা আমাদের ওপর নেমে এসেছে।
এ সময় ‘ফরমায়েশি ও গায়েবি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আটক রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে’ প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেন তিনি।
পরে মানববন্ধন শেষে সেই স্মারকলিপি প্রধান বিচারপতিকে দেয়ার উদ্দেশে রওনা হলে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
পরে স্বারকলিপির একটি অনুলিপি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
স্বারক লিপিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথায় গায়েবি মামলাকে বিরোধী দল দমনের প্রধান অবলম্বনে পরিণত করেছে। এই কাজে তারা রাষ্ট্রের পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। সরকার ও সরকারি দল বিচার বিভাগকে তাদের অপতৎপরতার প্রধান বাহনে পরিণত করেছে।
স্বারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, মিথ্যা গ্রেপ্তারের পর তাদের অনেকের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। অনেককে আটক করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রিমান্ডে নির্যাতন থেকে বাচানোর কথা বলে পরিবারের কাছ থেকে অবৈধ আর্থিক সুবিধা দাবি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেককে নির্যাতন করে মিডিয়ার সামনে তথাকথিত স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এহাজার বহির্ভূত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মধ্য রাতের পর বাড়ি বাড়ি আকস্মিক হানা দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক করতে না পারলে তাদের পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য নাবালক সন্তানদের আটক করা হচ্ছে।
২৮ অক্টোবরের পর ৮১৫টির বেশি মামলায় ১৯ হাজার ৬০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ৭০ হাজার ৫০৮ জন নেতাকর্মীকে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ৫০ লাখের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তাদের স্বজনরা। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘রাজবন্দীদের স্বজন’-এর ব্যানারে হয় এই কর্মসূচি।
মানববন্ধনে একটি মামলায় দন্ড পাওয়া যুবদলের সাবেক সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমার স্বামীকে সাজা দেয়া হয়েছে। পুলিশ নিজেই সাজানো মামলা দিয়েছে। আবার নিজেরাই সাক্ষ্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু বলতে দেয়া হয় না। আজকে বিচার নিয়ে এসেছি। কিন্তু বিচার করবে কে? আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এই সরকারের পতন চাই।
বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাসের ছোট বোন বেগম শাহিদা মির্জা বলেন, আমার ছেলে কোনো অপরাধ না করেও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাসায় আসতে পারছে না। অনেকদিন ধরে আমি আমার ছেলেকে দেখতে পাই না। পুলিশ এসে ভাঙচুর করে। আমরা এমন অবস্থার অবসান চাই।
অজ্ঞাত পরিচয়ে ধরে নিয়ে টর্চার সেলে রেখে ভাইকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যুবদল নেতা রাজিবের বড় বোন আফরোজা পারভিন জবা বলেন, ওরা আমার ভাইকে অজ্ঞাতপরিচয়ে ধরে নিয়ে টর্চার সেলে রেখে নির্যাতন করছে। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। কোন অপরাধে আটক করা হয়েছে, আর কেন জামিন দেয়া হচ্ছে না কিছুই জানি না।
যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের মুক্তির দাবি জানিয়ে স্ত্রী মাহবুবা খানম বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যেই একের পর এক মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আমার স্বামীকে রাখা হয়েছে। অসুস্থ থাকার পরও তার জামিন দেয়া হচ্ছে না। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই। সেই বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দমন করা গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, লেখক-সাহিত্যিক ও কবি আবদুল হাই সিকদার, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সভাপতি ড. লুৎফর রহমান, ঢাবির অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আফজাল আহমদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সদস্য সচিব রাশেদ খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীরা।
কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অসহনীয় পরিস্থিতিতে বিরোধী দলীয় নেতারা সময় কাটাচ্ছেন। নির্যাতনের চরম মাত্রা আমাদের ওপর নেমে এসেছে।
এ সময় ‘ফরমায়েশি ও গায়েবি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আটক রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে’ প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেন তিনি।
পরে মানববন্ধন শেষে সেই স্মারকলিপি প্রধান বিচারপতিকে দেয়ার উদ্দেশে রওনা হলে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
পরে স্বারকলিপির একটি অনুলিপি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
স্বারক লিপিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথায় গায়েবি মামলাকে বিরোধী দল দমনের প্রধান অবলম্বনে পরিণত করেছে। এই কাজে তারা রাষ্ট্রের পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। সরকার ও সরকারি দল বিচার বিভাগকে তাদের অপতৎপরতার প্রধান বাহনে পরিণত করেছে।
স্বারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, মিথ্যা গ্রেপ্তারের পর তাদের অনেকের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। অনেককে আটক করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির না করে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রিমান্ডে নির্যাতন থেকে বাচানোর কথা বলে পরিবারের কাছ থেকে অবৈধ আর্থিক সুবিধা দাবি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেককে নির্যাতন করে মিডিয়ার সামনে তথাকথিত স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এহাজার বহির্ভূত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মধ্য রাতের পর বাড়ি বাড়ি আকস্মিক হানা দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটক করতে না পারলে তাদের পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য নাবালক সন্তানদের আটক করা হচ্ছে।
২৮ অক্টোবরের পর ৮১৫টির বেশি মামলায় ১৯ হাজার ৬০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ৭০ হাজার ৫০৮ জন নেতাকর্মীকে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ৫০ লাখের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে।