যাছাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জ ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং অফিসার এছাড়া একটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম এই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে বাতিল ঘোষণা করেন। আগামী সোমবার বাকি তিনটি আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হবে।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিনের ছেলে শরীফ আহাম্মদ সাদী ও বিএনপি থেকে নির্বাচিত তিনবারের সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান।
জেলার সংসদীয় আসনগুলোতে এবার মোট ৫৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১, ২ ও ৩ আসনে রোববার বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন নয়জন। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নাসিরুল ইসলাম খানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।
কিশোরগঞ্জ-১: সদর ও হোসেনপুর উপজেলা মিলিয়ে আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপিকে। তিনি সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে। তার ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই আসন থেকে ১৯৯৬ থেকে পাঁচটি নির্বাচনে জিতেছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরপর তার মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে লিপিকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।
এই আসনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থী হন লিপির ভাই প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম ও বেসরকারি শিক্ষক অবসর সুবিধা বোর্ডের এর সদস্যসচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহাম্মদ সাদী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে এক শতাংশ ভোটারের সইয়ের যে শর্ত আছে, সেখানে ঝামেলায় পড়েন তারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নিয়ম মোতাবেক দাখিল করা ভোটারদের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল হয় বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। একই আসনে বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র।
কিশোরগঞ্জ-২: কদিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা মিলিয়ে এই আসনে বাতিল হয়েছে তিনজনের মনোনয়ন। এদের একজন হলেন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের দুটি নির্বাচনে বিএনপির হয়ে বিজয়ী আখতারুজ্জামান।‘বিএনপির ভোট বর্জন ভুল’, উল্লেখ করে তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণের কারণে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রার্থিতা বাতিলের পর আখতারুজ্জমান সাংবাদিকদের বলেন, “আমার প্রার্থিতা বাতিলের ফলে প্রমাণ হয়েছে আমি সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। আমি শুধু বিএনপির ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্যই নির্বাচনে প্রার্থিতা দাখিল করেছিলাম। আমি বিএনপি করি এবং আমৃত্যু বিএনপি করে যাব।” বিএনপি চাইলে মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলেও জানান তিনি।
একই আসনে হলফনামায় তথ্য গোপন করায় গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী মো. আশরাফ আলী এবং প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী অন্য আসনের ভোটার হওয়ায় তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আহসান উল্লাহর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ-৩: করিমগঞ্জ-তাড়াইল আসনে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এরা হলেন শামীম আহম্মদ, মো. রুবেল মিয়া ও ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঁইয়া।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে এক শতাংশ ভোটারের যে সই জমা দিতে হয়, যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাদের সবাই আসলে ভোটার নন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির কাগজ দেখাতে না পারায় নাসিরুল ইসলাম খানের প্রার্থিতা প্রথমে স্থগিত রাখা হয়। পরে বিকালেও কাগজ জমা না দেওয়ায় সেটি বাতিল করা হয়।
এই আসনটিতে গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ছাড় পেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনটি নির্বাচনেই নাসিরুলকে মনোনয়ন দিয়েও পরে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার তাকে ভোটের মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। নাসিরুল ভোটের লড়াইয়ে নামতে করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন।
রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
যাছাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জ ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং অফিসার এছাড়া একটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম এই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রাথমিকভাবে বাতিল ঘোষণা করেন। আগামী সোমবার বাকি তিনটি আসনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হবে।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ উদ্দিনের ছেলে শরীফ আহাম্মদ সাদী ও বিএনপি থেকে নির্বাচিত তিনবারের সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান।
জেলার সংসদীয় আসনগুলোতে এবার মোট ৫৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১, ২ ও ৩ আসনে রোববার বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন নয়জন। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নাসিরুল ইসলাম খানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।
কিশোরগঞ্জ-১: সদর ও হোসেনপুর উপজেলা মিলিয়ে আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপিকে। তিনি সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে। তার ভাই আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই আসন থেকে ১৯৯৬ থেকে পাঁচটি নির্বাচনে জিতেছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরপর তার মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে লিপিকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।
এই আসনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থী হন লিপির ভাই প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম ও বেসরকারি শিক্ষক অবসর সুবিধা বোর্ডের এর সদস্যসচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহাম্মদ সাদী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে এক শতাংশ ভোটারের সইয়ের যে শর্ত আছে, সেখানে ঝামেলায় পড়েন তারা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নিয়ম মোতাবেক দাখিল করা ভোটারদের স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল হয় বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। একই আসনে বাতিল হয়েছে বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র।
কিশোরগঞ্জ-২: কদিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা মিলিয়ে এই আসনে বাতিল হয়েছে তিনজনের মনোনয়ন। এদের একজন হলেন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের দুটি নির্বাচনে বিএনপির হয়ে বিজয়ী আখতারুজ্জামান।‘বিএনপির ভোট বর্জন ভুল’, উল্লেখ করে তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খেলাপি ঋণের কারণে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রার্থিতা বাতিলের পর আখতারুজ্জমান সাংবাদিকদের বলেন, “আমার প্রার্থিতা বাতিলের ফলে প্রমাণ হয়েছে আমি সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। আমি শুধু বিএনপির ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্যই নির্বাচনে প্রার্থিতা দাখিল করেছিলাম। আমি বিএনপি করি এবং আমৃত্যু বিএনপি করে যাব।” বিএনপি চাইলে মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলেও জানান তিনি।
একই আসনে হলফনামায় তথ্য গোপন করায় গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী মো. আশরাফ আলী এবং প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী অন্য আসনের ভোটার হওয়ায় তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আহসান উল্লাহর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ-৩: করিমগঞ্জ-তাড়াইল আসনে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এরা হলেন শামীম আহম্মদ, মো. রুবেল মিয়া ও ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূঁইয়া।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে এক শতাংশ ভোটারের যে সই জমা দিতে হয়, যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাদের সবাই আসলে ভোটার নন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির কাগজ দেখাতে না পারায় নাসিরুল ইসলাম খানের প্রার্থিতা প্রথমে স্থগিত রাখা হয়। পরে বিকালেও কাগজ জমা না দেওয়ায় সেটি বাতিল করা হয়।
এই আসনটিতে গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ছাড় পেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনটি নির্বাচনেই নাসিরুলকে মনোনয়ন দিয়েও পরে বসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার তাকে ভোটের মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। নাসিরুল ভোটের লড়াইয়ে নামতে করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন।