২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পন্ড হওয়ার পর একের পর এক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী পালন করে আসছে বিএনপি। এক মাস পর এখন আবার সমাবেশ কর্মসূচীর মাধ্যমে মাঠে নামতে চাইছে দলটি। তবে এবার সরাসরি নিজস্ব ব্যানারে না গিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে সমাবেশ করতে চাইছে তারা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ‘গুম-খুনের শিকার’ এবং দলটির কারাবন্দি নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ১০ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে এই সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করতে যাচ্ছে দলটি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ‘প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হতো। তবে এবারে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সভা আয়োজন করার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। তাই বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত আর নির্যাতিত পরিবারের ব্যানারে কর্মসূচি হতে পারে।’
বিএনপির নবম দফা অবরোধের শেষ দিন গতকাল সোমবার অজ্ঞাত স্থান থেকে এক ভিডিও বার্তায় রুহুল কবির রিজভী আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার দশম দফা অবরোধ এবং রোববার মানববন্ধনের কর্মসূচী ঘোষনা করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ওই দিন ‘গুম হওয়াদের’ পরিবার সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকেও এদিন কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেখানে বিএনপির পদধারী নেতাকর্মী উপস্থিত থাকতে না পারলেও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, এমনকি ইউনিট পর্যায়ে আটক নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের হাজির করা হবে। তাতেও ‘১০ হাজারের ওপর উপস্থিতি’ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিএনপি নেতারা।
একই দিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে সমাবেশ করবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দলটি। অর্থাৎ একই দিনে রাজপথে আবার সমাবেশ করতে যাচ্ছে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে যাচ্ছে তারা।
এবিষয়ে গাজীপুরের বিএনপি নেতা শেখ মো. আলেক সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও পুলিশ আমাদের বাড়ি ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের পরিবেশ নাই। এই অবস্থায় গুম, খুন আর কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীর পরিবার নিয়ে রাজধানীসহ দেশের সকল জেলা শহরে সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। দেশের এই ক্রান্তি কালে বসে থাকলেও চলবে না।’
বিএনপির আরেক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিন্ন উপায়ে মাঠে থাকার কৌশল নিয়েছি আমরা। দেশের বর্তমান অবস্থায় মাঠের আন্দোলন চাঙ্গা করতে বাধ্য হয়েই আমাদের ভিন্ন কৌশল বেছে নিতে হচ্ছে।’
২৮ অক্টোবর হাসমাবেশ পÐ হওয়ার পর সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি নিয়ে বিএনপিকে আর রাজপথে দেখা যায়নি। ওই দিন বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও এবং পুলিশ হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’ শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার সমর্থক নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠেছেন। রাজপথে দলীয় সমাবেশ করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি লাগবে বলে জানিয়েছে কমিশন। সেজন্য অনুমতি চেয়ে নির্বচন কমিশন (ইসি) বরাবর চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষমমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। যদিও ইসি জানিয়েছে তারা কোন চিঠি পায়নি।
বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সম্ভাব্য সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ঠেকাতে রাজপথে সতর্ক পাহারা অব্যাহত রাখার জন্য দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মাঠ পর্যয়ের নেতাকর্মীরা। তাই রাজধানীর সড়ক ও প্রবেশমুখগুলোতে সতর্ক অবস্থান নেবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী। ঢাকার প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও বুড়িগঙ্গা নদীর দুই সেতুর মুখেও অবস্থান করবে আওয়ামী লীগ।
চলতি বছরের জুলাইয়ে বিএনপি ও তার মিত্ররা এক দফা দাবিতে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করলে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি পালন জোরদার করতে থাকে। নির্বাচন পর্যন্ত মাঠ নিজেদের দখলে রেখে শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। বিএনপি ও তার মিত্রদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগ গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে শান্তি সমাবেশ ও সতর্ক অবস্থানের কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বিএনপির অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে ২০ হাজারের ওপর নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু ঢাকাতেই ১০ হাজার নেতাকর্মী এখন কারাগারে বলে দলটির অভিযোগ। এসব পরিবারের সদস্যদের ১০ ডিসেম্সবরের মাবেশে হাজির করা হবে। এর সঙ্গে বিগত দিনে সারাদেশে ‘গুম-খুনের শিকার’ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন।
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পন্ড হওয়ার পর একের পর এক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী পালন করে আসছে বিএনপি। এক মাস পর এখন আবার সমাবেশ কর্মসূচীর মাধ্যমে মাঠে নামতে চাইছে দলটি। তবে এবার সরাসরি নিজস্ব ব্যানারে না গিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে সমাবেশ করতে চাইছে তারা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ‘গুম-খুনের শিকার’ এবং দলটির কারাবন্দি নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ১০ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে এই সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করতে যাচ্ছে দলটি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ‘প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হতো। তবে এবারে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সভা আয়োজন করার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। তাই বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত আর নির্যাতিত পরিবারের ব্যানারে কর্মসূচি হতে পারে।’
বিএনপির নবম দফা অবরোধের শেষ দিন গতকাল সোমবার অজ্ঞাত স্থান থেকে এক ভিডিও বার্তায় রুহুল কবির রিজভী আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার দশম দফা অবরোধ এবং রোববার মানববন্ধনের কর্মসূচী ঘোষনা করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ওই দিন ‘গুম হওয়াদের’ পরিবার সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকেও এদিন কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেখানে বিএনপির পদধারী নেতাকর্মী উপস্থিত থাকতে না পারলেও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, এমনকি ইউনিট পর্যায়ে আটক নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের হাজির করা হবে। তাতেও ‘১০ হাজারের ওপর উপস্থিতি’ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিএনপি নেতারা।
একই দিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে সমাবেশ করবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দলটি। অর্থাৎ একই দিনে রাজপথে আবার সমাবেশ করতে যাচ্ছে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে যাচ্ছে তারা।
এবিষয়ে গাজীপুরের বিএনপি নেতা শেখ মো. আলেক সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও পুলিশ আমাদের বাড়ি ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের পরিবেশ নাই। এই অবস্থায় গুম, খুন আর কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীর পরিবার নিয়ে রাজধানীসহ দেশের সকল জেলা শহরে সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। দেশের এই ক্রান্তি কালে বসে থাকলেও চলবে না।’
বিএনপির আরেক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভিন্ন উপায়ে মাঠে থাকার কৌশল নিয়েছি আমরা। দেশের বর্তমান অবস্থায় মাঠের আন্দোলন চাঙ্গা করতে বাধ্য হয়েই আমাদের ভিন্ন কৌশল বেছে নিতে হচ্ছে।’
২৮ অক্টোবর হাসমাবেশ পÐ হওয়ার পর সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি নিয়ে বিএনপিকে আর রাজপথে দেখা যায়নি। ওই দিন বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও এবং পুলিশ হত্যার ঘটনা ঘটে। তবে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’ শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সরকার সমর্থক নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠেছেন। রাজপথে দলীয় সমাবেশ করতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি লাগবে বলে জানিয়েছে কমিশন। সেজন্য অনুমতি চেয়ে নির্বচন কমিশন (ইসি) বরাবর চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষমমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। যদিও ইসি জানিয়েছে তারা কোন চিঠি পায়নি।
বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সম্ভাব্য সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ঠেকাতে রাজপথে সতর্ক পাহারা অব্যাহত রাখার জন্য দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মাঠ পর্যয়ের নেতাকর্মীরা। তাই রাজধানীর সড়ক ও প্রবেশমুখগুলোতে সতর্ক অবস্থান নেবে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী। ঢাকার প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও বুড়িগঙ্গা নদীর দুই সেতুর মুখেও অবস্থান করবে আওয়ামী লীগ।
চলতি বছরের জুলাইয়ে বিএনপি ও তার মিত্ররা এক দফা দাবিতে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করলে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি পালন জোরদার করতে থাকে। নির্বাচন পর্যন্ত মাঠ নিজেদের দখলে রেখে শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। বিএনপি ও তার মিত্রদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগ গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে শান্তি সমাবেশ ও সতর্ক অবস্থানের কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বিএনপির অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে ২০ হাজারের ওপর নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু ঢাকাতেই ১০ হাজার নেতাকর্মী এখন কারাগারে বলে দলটির অভিযোগ। এসব পরিবারের সদস্যদের ১০ ডিসেম্সবরের মাবেশে হাজির করা হবে। এর সঙ্গে বিগত দিনে সারাদেশে ‘গুম-খুনের শিকার’ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত থাকবেন।