সংবিধান সংস্কার কমিশনকে ৬২ প্রস্তাব
সংবিধান সংস্কার কমিশনকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্যসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, গণভোট, সংসদের উচ্চকক্ষ, উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এই প্রস্তাবগুলোসহ সংস্কার কমিশনকে মোট ৬২টি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে বিএনপির প্রস্তাবনাগুলো জমা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন আহমেদ। বেলা ১১টার পরে তিনি কার্যালয়ে আসেন। প্রায় আধ ঘণ্টার মতো সেখানে অবস্থান করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন রানা।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে বিএনপির প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, সূচনা থেকে শুরু করে তফসিল পর্যন্ত ৬২টি জায়গায় বিভিন্ন প্রস্তাব, সংশোধনী জমা দিয়েছি। কমিটি বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।
প্রস্তাবনার মূল অংশে বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্র পরিবর্তনের বিধান ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ করেছিল, সেগুলোসহ বিএনপি কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রস্তাবে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদের রক্তের অঙ্গীকার ও বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যাতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র সৃষ্টি না হয়, সেগুলো মাথায় রেখে আমাদের প্রস্তাবনা দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরপর দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন না হয় সে বিধান রেখেছি। নতুন করে সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টির বিধানের প্রস্তাব করেছি।
বিচার বিভাগের বিষয়ে বিএনপি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ যাতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকে।
নতুন পদ হিসেবে উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রী পদ সৃজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, এটা আগে ছিল আমরা তা পুনঃপ্রবর্তনের বিধানের প্রস্তাব করেছি। যেসব বিষয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেশি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষের এক নম্বর আকাঙ্ক্ষা, সেটি আদালতের বিচারাধীন আছে, আশা করি মানুষের পক্ষে আসবে। গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব করেছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাবনায় প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয়ে অ্যাড্রেস করেছি। যাতে সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধিত হয় এবং সেটার রূপকার জনগণ পায়। রাষ্ট্রের সব অঙ্গে যাতে সবক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হয়, সেই প্রস্তাব দিয়েছি।
সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছি। যাতে এটা গণতান্ত্রিক সংবিধান সংশোধন হয় এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়।
সংসদের অবর্তমানে সংবিধান সংশোধনীর অনুমোদন কীভাবে হবে এমন প্রশ্নে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তবনাগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পেশ করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞসহ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে চূড়ান্ত করবেন। এক্ষেত্রে দেখা যাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবাই একমত হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকতেই পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে সেগুলো আমরা যদি অঙ্গীকার করি এবং নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন করি, তাহলে সবার অঙ্গীকার থাকবে পরবর্তী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা সংবিধান সেভাবে প্রস্তাব করুক।
সংবিধান সংস্কার কমিশনকে ৬২ প্রস্তাব
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবিধান সংস্কার কমিশনকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্যসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, গণভোট, সংসদের উচ্চকক্ষ, উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। এই প্রস্তাবগুলোসহ সংস্কার কমিশনকে মোট ৬২টি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে বিএনপির প্রস্তাবনাগুলো জমা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন আহমেদ। বেলা ১১টার পরে তিনি কার্যালয়ে আসেন। প্রায় আধ ঘণ্টার মতো সেখানে অবস্থান করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন রানা।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে বিএনপির প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, সূচনা থেকে শুরু করে তফসিল পর্যন্ত ৬২টি জায়গায় বিভিন্ন প্রস্তাব, সংশোধনী জমা দিয়েছি। কমিটি বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।
প্রস্তাবনার মূল অংশে বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্র পরিবর্তনের বিধান ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ করেছিল, সেগুলোসহ বিএনপি কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রস্তাবে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদের রক্তের অঙ্গীকার ও বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যাতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র সৃষ্টি না হয়, সেগুলো মাথায় রেখে আমাদের প্রস্তাবনা দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরপর দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন না হয় সে বিধান রেখেছি। নতুন করে সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টির বিধানের প্রস্তাব করেছি।
বিচার বিভাগের বিষয়ে বিএনপি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ যাতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকে।
নতুন পদ হিসেবে উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রী পদ সৃজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, এটা আগে ছিল আমরা তা পুনঃপ্রবর্তনের বিধানের প্রস্তাব করেছি। যেসব বিষয়ে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেশি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষের এক নম্বর আকাঙ্ক্ষা, সেটি আদালতের বিচারাধীন আছে, আশা করি মানুষের পক্ষে আসবে। গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব করেছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাবনায় প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয়ে অ্যাড্রেস করেছি। যাতে সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধিত হয় এবং সেটার রূপকার জনগণ পায়। রাষ্ট্রের সব অঙ্গে যাতে সবক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হয়, সেই প্রস্তাব দিয়েছি।
সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছি। যাতে এটা গণতান্ত্রিক সংবিধান সংশোধন হয় এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়।
সংসদের অবর্তমানে সংবিধান সংশোধনীর অনুমোদন কীভাবে হবে এমন প্রশ্নে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তবনাগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পেশ করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞসহ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে চূড়ান্ত করবেন। এক্ষেত্রে দেখা যাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবাই একমত হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকতেই পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে সেগুলো আমরা যদি অঙ্গীকার করি এবং নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন করি, তাহলে সবার অঙ্গীকার থাকবে পরবর্তী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা সংবিধান সেভাবে প্রস্তাব করুক।