সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের দাবি রাজনীতিকদের
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁরা দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে এসব মন্তব্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
কাউন্সিলে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, "দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সাধারণ মানুষ দিশেহারা। অথচ সরকার কর ও ভ্যাট বাড়িয়ে জনজীবনকে আরও সংকটময় করে তুলছে। টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধ করে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। সরকার তাত্ত্বিক অর্থনীতি বোঝে, কিন্তু মানুষের বাস্তব জীবনযাত্রার সংকট বোঝে না।"
তিনি আরও বলেন, "সংস্কার যত দ্রুত সম্ভব করা দরকার। তবে সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। যোগ্যতার সঙ্গে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন।"
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের অভিযোগ করেন, সরকার দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে এ বছরের মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।"
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, "সরকার ফ্যাসিস্ট কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পুরোনো ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন। জনগণের কষ্ট বোঝার কোনো চেষ্টাই তারা করছে না।"
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, "সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণ ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করা। তবে অগ্রাধিকারের তালিকা সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন। নয়তো পথ হারানোর ঝুঁকি থাকবে।"
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, "পরিকল্পনাহীন একটি সরকার জনগণ দেখতে চায় না। সরকারের উচিত জনগণের আস্থা ফেরানোর ব্যবস্থা করা।"
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম লিখিত শুভেচ্ছা বার্তায় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির দাবি জানান। তাঁর বার্তা পড়ে শোনান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "আমরা আর বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের অধীনে ফিরে যেতে চাই না। নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।"
এবি পার্টির কাউন্সিল বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্যরা। শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়।
কাউন্সিলে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির নেতা আবদুল ওহাব মিনার প্রমুখ।
এ ছাড়া অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে পরিস্থিতির ভয়াবহতার চিত্র ফুটে ওঠে।
রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ স্পষ্ট হয়েছে। তাঁরা সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের দাবি রাজনীতিকদের
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁরা দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে এসব মন্তব্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
কাউন্সিলে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, "দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সাধারণ মানুষ দিশেহারা। অথচ সরকার কর ও ভ্যাট বাড়িয়ে জনজীবনকে আরও সংকটময় করে তুলছে। টিসিবির ট্রাক সেল বন্ধ করে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। সরকার তাত্ত্বিক অর্থনীতি বোঝে, কিন্তু মানুষের বাস্তব জীবনযাত্রার সংকট বোঝে না।"
তিনি আরও বলেন, "সংস্কার যত দ্রুত সম্ভব করা দরকার। তবে সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। যোগ্যতার সঙ্গে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন।"
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের অভিযোগ করেন, সরকার দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে এ বছরের মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।"
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, "সরকার ফ্যাসিস্ট কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য ও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পুরোনো ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন। জনগণের কষ্ট বোঝার কোনো চেষ্টাই তারা করছে না।"
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, "সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণ ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন করা। তবে অগ্রাধিকারের তালিকা সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন। নয়তো পথ হারানোর ঝুঁকি থাকবে।"
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, "পরিকল্পনাহীন একটি সরকার জনগণ দেখতে চায় না। সরকারের উচিত জনগণের আস্থা ফেরানোর ব্যবস্থা করা।"
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম লিখিত শুভেচ্ছা বার্তায় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির দাবি জানান। তাঁর বার্তা পড়ে শোনান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "আমরা আর বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের অধীনে ফিরে যেতে চাই না। নতুন সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।"
এবি পার্টির কাউন্সিল বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্যরা। শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে আয়োজনটি প্রাণবন্ত হয়।
কাউন্সিলে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির নেতা আবদুল ওহাব মিনার প্রমুখ।
এ ছাড়া অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে পরিস্থিতির ভয়াবহতার চিত্র ফুটে ওঠে।
রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ স্পষ্ট হয়েছে। তাঁরা সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।