ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর স্থানীয় সরকার কাঠামো ‘ভেঙে পড়ায়’ নাগরিকরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি আছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকার বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতি
বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি সামনে এসেছে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের পর। ওই দিন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা তাকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভেঙে পড়েছে কাঠামো
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নাগরিক কমিটির অবস্থান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ, মৃত্যুসনদের মতো মৌলিক সেবাগুলো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে (স্থানীয় সরকার) নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটিও মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতার পরিচয় দিতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদেরকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে আলাদা করে বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠন করার জন্য একটি নির্বাচন দরকার।’
প্রশাসক নিয়োগ
অন্তর্বর্তী সরকার সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভা ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আর ইউনিয়ন পরিষদ বলবৎ থাকলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে অথবা নানা মামলায় কারাগারে। তারা ইউনিয়ন পরিষদে না যাওয়ায় নাগরিকরা কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর গত বৃহস্পতিবার তার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) নিয়ে অগ্রসর হতে পারবো।’ তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে কিনা, সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি।
নির্বাচন পরিস্থিতি
নির্বাচন প্রক্রিয়ার (শুরু করার) পরিস্থিতি এখনই আছে বলে মনে করে আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। তিনি বলেন, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তা শুরু করে যুগপৎভাবে স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচন (প্রক্রিয়া) চালাতে পারে সরকার।
এদিনই সিলেটে এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার ইলেকশন কবে হবে, না হবে- এই বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য এখনই করতে চান না।
শতাধিক পণ্যে ভ্যাট
শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয় নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলনে।
কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটো অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্থীতি ও ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।’
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর স্থানীয় সরকার কাঠামো ‘ভেঙে পড়ায়’ নাগরিকরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেছেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি আছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকার বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতি
বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি সামনে এসেছে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের পর। ওই দিন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা তাকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভেঙে পড়েছে কাঠামো
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নাগরিক কমিটির অবস্থান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ, মৃত্যুসনদের মতো মৌলিক সেবাগুলো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে (স্থানীয় সরকার) নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটিও মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতার পরিচয় দিতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদেরকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে আলাদা করে বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠন করার জন্য একটি নির্বাচন দরকার।’
প্রশাসক নিয়োগ
অন্তর্বর্তী সরকার সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভা ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আর ইউনিয়ন পরিষদ বলবৎ থাকলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে অথবা নানা মামলায় কারাগারে। তারা ইউনিয়ন পরিষদে না যাওয়ায় নাগরিকরা কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর গত বৃহস্পতিবার তার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) নিয়ে অগ্রসর হতে পারবো।’ তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে কিনা, সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি।
নির্বাচন পরিস্থিতি
নির্বাচন প্রক্রিয়ার (শুরু করার) পরিস্থিতি এখনই আছে বলে মনে করে আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। তিনি বলেন, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তা শুরু করে যুগপৎভাবে স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচন (প্রক্রিয়া) চালাতে পারে সরকার।
এদিনই সিলেটে এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার ইলেকশন কবে হবে, না হবে- এই বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য এখনই করতে চান না।
শতাধিক পণ্যে ভ্যাট
শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয় নাগরিক কমিটির সংবাদ সম্মেলনে।
কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটো অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্থীতি ও ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।’