সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে বিএনপি ‘বরাবরই অবস্থান নিয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে’ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলি না যে আমরা একেবারেই ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি। আজকের যে আকাশমাধ্যম, এটা আমাদের দ্বারাই শুরু হয়েছিল। অনেকগুলো মিডিয়া আছে যেগুলো আমাদের সময়ে তৈরি করা। আমাদের সময়েই সংবাদপত্রের এবং সংবাদকর্মীদের ওপর নিপীড়ন তুলনামূলক কম হয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। প্রকাশিত কোনো সংবাদ কারো পছন্দ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্য মাধ্যমে তার প্রতিবাদ জানাতে পারে। কিন্তু মব জাস্টিসের নামে সেই প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেওয়া কোনো স্বাধীনতার পর্যায়ে পড়ে না।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আগের থেকে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ১৬ ধাপ আমরা এগিয়েছি। সমস্যা দেখা দেয় তখন, যখন দেখি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেক গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনো কোনো জায়গায় দেখা যায় কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীও এটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে।’
বিএনপিই প্রথম সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে উন্মুক্ত করেছিল দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার আগে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল ছিল, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দ্বিধায়, দৃঢ় চিত্তে, স্পষ্ট করে বলতে পারি, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, যেখানেই থাকি, এই ব্যাপারে আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অতীতে যে নির্যাতন–নিপীড়ন হয়েছে, আপনাদের আইন–কানুন যে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চরিত্র দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারগুলোতে আমরা লড়াই করেছি। আমরা লড়াই করে চলেছি। এখনো করছি। খুব স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না। আমরা আরেকজনের মতের স্বাধীনতাকে নিশ্চয়ই দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেব।’
তবে বর্তমানে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে ‘কিছুটা আতঙ্কিত থাকেন’ বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, কোন প্রেস আমার কথাগুলো কীভাবে নেবে। তারপর তারা কীভাবে ছাপবে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে এটা উপস্থাপন করবে। এটা আমাদের জন্য, যারা আমরা রাজনীতি করি, সত্যি একটা চিন্তার বিষয়। কারণ, সাম্প্রতিক কালে চরিত্র হরণ করার যে প্রবণতা বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা দিয়েছে, এটাতে চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই।’
‘বিএনপি সংস্কারের বিরোধী’ এরকম প্রচারনার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রায়ই বলা হয়, সংস্কার নয় আমরা নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কারের বিষয়টি শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা এনেছি। আমরাই সংসদীয় ব্যবস্থায় গেছি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা থেকে। অনেক আপত্তি সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আমরা সংবিধানে নিয়ে এসেছি। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্য পথে দেখানো, এটার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’
গণতন্ত্রের জন্য গণতান্ত্রিক সমাজ প্রয়োজন বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি মনের মধ্যে চিন্তা করব, আমি যা বলব, সেটাই সঠিক, তাহলে সঠিকভাবে আমরা গণতন্ত্রচর্চা করতে সক্ষম হব না। একইভাবে সংবাদমাধ্যম আমার কথা বললে ঠিক আছে, আর আমার কথা না বললে ঠিক নেই, এই চিন্তাভাবনাও কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করবে না।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। আলোচনা সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন দ্য নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম প্রমুখ।
রোববার, ০৪ মে ২০২৫
সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে বিএনপি ‘বরাবরই অবস্থান নিয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে’ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলি না যে আমরা একেবারেই ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি। আজকের যে আকাশমাধ্যম, এটা আমাদের দ্বারাই শুরু হয়েছিল। অনেকগুলো মিডিয়া আছে যেগুলো আমাদের সময়ে তৈরি করা। আমাদের সময়েই সংবাদপত্রের এবং সংবাদকর্মীদের ওপর নিপীড়ন তুলনামূলক কম হয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। প্রকাশিত কোনো সংবাদ কারো পছন্দ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্য মাধ্যমে তার প্রতিবাদ জানাতে পারে। কিন্তু মব জাস্টিসের নামে সেই প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দেওয়া কোনো স্বাধীনতার পর্যায়ে পড়ে না।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আগের থেকে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ১৬ ধাপ আমরা এগিয়েছি। সমস্যা দেখা দেয় তখন, যখন দেখি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেক গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনো কোনো জায়গায় দেখা যায় কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীও এটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে।’
বিএনপিই প্রথম সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে উন্মুক্ত করেছিল দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার আগে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল ছিল, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দ্বিধায়, দৃঢ় চিত্তে, স্পষ্ট করে বলতে পারি, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, যেখানেই থাকি, এই ব্যাপারে আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অতীতে যে নির্যাতন–নিপীড়ন হয়েছে, আপনাদের আইন–কানুন যে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চরিত্র দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারগুলোতে আমরা লড়াই করেছি। আমরা লড়াই করে চলেছি। এখনো করছি। খুব স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না। আমরা আরেকজনের মতের স্বাধীনতাকে নিশ্চয়ই দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেব।’
তবে বর্তমানে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে ‘কিছুটা আতঙ্কিত থাকেন’ বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, কোন প্রেস আমার কথাগুলো কীভাবে নেবে। তারপর তারা কীভাবে ছাপবে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে এটা উপস্থাপন করবে। এটা আমাদের জন্য, যারা আমরা রাজনীতি করি, সত্যি একটা চিন্তার বিষয়। কারণ, সাম্প্রতিক কালে চরিত্র হরণ করার যে প্রবণতা বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা দিয়েছে, এটাতে চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই।’
‘বিএনপি সংস্কারের বিরোধী’ এরকম প্রচারনার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রায়ই বলা হয়, সংস্কার নয় আমরা নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কারের বিষয়টি শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা এনেছি। আমরাই সংসদীয় ব্যবস্থায় গেছি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা থেকে। অনেক আপত্তি সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আমরা সংবিধানে নিয়ে এসেছি। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্য পথে দেখানো, এটার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’
গণতন্ত্রের জন্য গণতান্ত্রিক সমাজ প্রয়োজন বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি মনের মধ্যে চিন্তা করব, আমি যা বলব, সেটাই সঠিক, তাহলে সঠিকভাবে আমরা গণতন্ত্রচর্চা করতে সক্ষম হব না। একইভাবে সংবাদমাধ্যম আমার কথা বললে ঠিক আছে, আর আমার কথা না বললে ঠিক নেই, এই চিন্তাভাবনাও কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করবে না।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। আলোচনা সভায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সম্পাদকদের মধ্যে বক্তব্য দেন দ্য নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম প্রমুখ।