ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে না পারলেও নগর ভবনে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
সোমবার দুপুরে নগর ভবনের মিলনায়তনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেখানে তার নামের আগে ব্যানারে লেখা ছিল ‘মাননীয় মেয়র’।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইশরাক বলেন, কেবল নগর ভবন নয়, যে কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আয়োজকরা ব্যানারে তার নামের আগে ‘মেয়র’ লেখেন।
তিনি বলেন, এটি তার নয়, ‘জনগণের দাবি’।
ইশরাক বলেন, “বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে এটা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যারা বিষয়টি নিয়ে কথা তোলার চেষ্টা করছেন, তাদের বলব, তারা যেন নিজেদের জ্ঞান আরেকটু সমৃদ্ধ করে। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে, সেখানে স্পষ্টভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে।”
মতবিনিময় সভায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন তিনি।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন, কিছুদিন যাবৎ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। যার কারণে আগামী দিনগুলোতে ঢাকা শহরকে নিরাপদ রাখার জন্য মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে বেগবান করার এবং সেটি চলমান রাখার লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করছি।”
ইশরাক জানান, পর্যায়ক্রমে ডিএসসিসির সব বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করব। ওয়ার্ড কমিশনের কার্যালয় থেকে যেন জন্ম, নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদ এই আবেদনগুলো দেওয়া যায়, সেটি নিশ্চিত করব। পরশুদিন আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করব।”
গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাকের সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও এতে যোগ দেয়।
ঈদের ছুটির পর সোমবার ফের সেখানে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
সে সময় ইশরাক জানান, আন্দোলনের পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমে অচলাবস্থা কাটাতে নিজের তত্ত্বাবধানে ডিএসসিসির কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হবে। জন্ম নিবন্ধনসহ জরুরি সব সেবা চালু রাখার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবেন না।
তবে সেবা কার্যক্রম চালু রাখলেও আন্দোলন থেকে পিছু হটার কোনো ‘সুযোগ নেই’ বলে জানান তিনি। বলেন, নগর ভবনের ফটকে ‘তালা ঝুলবেই’, কারণ এটি তাদের আন্দোলনের প্রতীক।
সংকট সমাধানে মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার অনুমতি দিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ইশরাক। তা না হলে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “আমি শুরু থেকেই বলে আসছি, আমার এই বিষয়টা (শপথ পাঠ) সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিকভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাকে বা বিএনপির প্রার্থীকে এখানে বসতে দেওয়া হবে না।”
সরকারের উদ্দেশ্যে ইশরাক বলেন, “এখানে তারা তাদের পছন্দের সেই প্রশাসককে বসাবে এবং সেই প্রশাসককে বসানোর মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবে। এটি তাদের উদ্দেশ্য ছিল।”
তিনি বলেন, এতদিন আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি।
“আজ পর্যন্ত, এই মুহূর্ত পর্যন্ত এতদিন যাবৎ আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আদালতের রায় পাওয়ার পরও সরকার ‘প্যারালাল’ প্রশাসন চালাচ্ছে।
“সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যখন মেয়রের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে করা রিটটি খারিজ করে, তখন থেকেই ডিএসসিসির প্রশাসক অবৈধ হয়ে গিয়েছে। এখানে প্যারালাল প্রশাসন তারা চালাচ্ছিল। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি এবং আদালতের মাধ্যমে আমার অবস্থান প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অথচ তারা অবৈধভাবে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে।”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে আইনি জটিলতার কথা বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকে।
এই পরিস্থিতিতে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামলে নগর ভবনের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে না পারলেও নগর ভবনে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
সোমবার দুপুরে নগর ভবনের মিলনায়তনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেখানে তার নামের আগে ব্যানারে লেখা ছিল ‘মাননীয় মেয়র’।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইশরাক বলেন, কেবল নগর ভবন নয়, যে কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আয়োজকরা ব্যানারে তার নামের আগে ‘মেয়র’ লেখেন।
তিনি বলেন, এটি তার নয়, ‘জনগণের দাবি’।
ইশরাক বলেন, “বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে এটা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যারা বিষয়টি নিয়ে কথা তোলার চেষ্টা করছেন, তাদের বলব, তারা যেন নিজেদের জ্ঞান আরেকটু সমৃদ্ধ করে। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে, সেখানে স্পষ্টভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে।”
মতবিনিময় সভায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন তিনি।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আপনারা সকলেই জানেন, কিছুদিন যাবৎ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। যার কারণে আগামী দিনগুলোতে ঢাকা শহরকে নিরাপদ রাখার জন্য মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে বেগবান করার এবং সেটি চলমান রাখার লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করছি।”
ইশরাক জানান, পর্যায়ক্রমে ডিএসসিসির সব বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করব। ওয়ার্ড কমিশনের কার্যালয় থেকে যেন জন্ম, নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, নাগরিক সনদ এই আবেদনগুলো দেওয়া যায়, সেটি নিশ্চিত করব। পরশুদিন আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করব।”
গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাকের সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও এতে যোগ দেয়।
ঈদের ছুটির পর সোমবার ফের সেখানে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
সে সময় ইশরাক জানান, আন্দোলনের পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমে অচলাবস্থা কাটাতে নিজের তত্ত্বাবধানে ডিএসসিসির কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হবে। জন্ম নিবন্ধনসহ জরুরি সব সেবা চালু রাখার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবেন না।
তবে সেবা কার্যক্রম চালু রাখলেও আন্দোলন থেকে পিছু হটার কোনো ‘সুযোগ নেই’ বলে জানান তিনি। বলেন, নগর ভবনের ফটকে ‘তালা ঝুলবেই’, কারণ এটি তাদের আন্দোলনের প্রতীক।
সংকট সমাধানে মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার অনুমতি দিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ইশরাক। তা না হলে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “আমি শুরু থেকেই বলে আসছি, আমার এই বিষয়টা (শপথ পাঠ) সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিকভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাকে বা বিএনপির প্রার্থীকে এখানে বসতে দেওয়া হবে না।”
সরকারের উদ্দেশ্যে ইশরাক বলেন, “এখানে তারা তাদের পছন্দের সেই প্রশাসককে বসাবে এবং সেই প্রশাসককে বসানোর মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবে। এটি তাদের উদ্দেশ্য ছিল।”
তিনি বলেন, এতদিন আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি।
“আজ পর্যন্ত, এই মুহূর্ত পর্যন্ত এতদিন যাবৎ আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আদালতের রায় পাওয়ার পরও সরকার ‘প্যারালাল’ প্রশাসন চালাচ্ছে।
“সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যখন মেয়রের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে করা রিটটি খারিজ করে, তখন থেকেই ডিএসসিসির প্রশাসক অবৈধ হয়ে গিয়েছে। এখানে প্যারালাল প্রশাসন তারা চালাচ্ছিল। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি এবং আদালতের মাধ্যমে আমার অবস্থান প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অথচ তারা অবৈধভাবে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে।”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে আইনি জটিলতার কথা বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকে।
এই পরিস্থিতিতে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামলে নগর ভবনের কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।