alt

রাজনীতি

আমি টাকা পাচার করি না, কারা করে কীভাবে জানবো : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, কারা বিদেশে টাকা পাচার করে তা তিনি জানেন না। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেন না। তিনি কীভাবে জানবেন কারা টাকা পাচার করে? তিনি টাকা পাচারকারীদের তালিকা দেওয়ার জন্য বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেশসৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে কম এখন। ২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। এখন সেপ্টেম্বর কোয়ার্টার পর্যন্ত ১ লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। সবচেয়ে নিম্নে আছে এখন। ঋণ নিয়ে যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করা হয়।

আজ শনিবার সংসদে একটি বিল পাসের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এর আগে বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব বিষয়ে তারা অর্থমন্ত্রীর জবাব চান এবং একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি তুলেন।

শুরুতে অর্থমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে নীরব থাকায় সংসদ সদস্যদের সমালোচনার মুখে পড়েন। পরে অর্থমন্ত্রী কথা বলেন।

টাকা পাচার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলেছেন দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনাদের বলেছি, যারা পাচার করে তাদের তালিকা আমাকে দেন। আমিতো পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও পাচার করে না। সুতরাং পাচার কে করে, আমি জানব কেমন করে, যদি আপনারা না দেন।

এ সময় বিরোধী দলের সদস্যদের অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে কিছু বলতে দেখা যায়। তবে তাদের মাইক বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য শোনা যায়নি। তাদের কথার ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, ইয়েস আপনারা বলেন। আপনারা লিস্ট দেন পাচারকারীদের।

তখন একজন সংসদ সদস্য বলেন, এটা অর্থমন্ত্রী বলবেন কারা পাচার করে । তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, না অর্থমন্ত্রী বলতে পারবে না। একটা কথা আমি আবারও বলি, আপনারা আমরা কিন্তু একই পথের পথিক। আপনারা যেটা জানেন আমিও সেটা জানি। বারবার আমি বলেছি, আমি জানি না। আমাকে জানান।

এ পর্যায়ে বিরোধী দলের একজন সদস্য কিছু একটা বলেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঠিক আছে প্লিজ কাম উইথ এ লিস্ট।

এ সময় বিরোধী দল থেকে কিছু একটা বলা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আবার একই কথা! আমিতো বলছি, আমি কোথায় পাব? আপনি আমাকে বলেন। আচ্ছা ঠিক আছে, অলরাইট, আমি দেখব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালক হলো সে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর। সারা বিশ্বের অর্থনীতি যখন টালমাটাল অবস্থা সবাই কিন্তু বলছেন তখন আমরা ভাল করছি। আপনার কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে বাংলাদেশের অর্থনীতি আমাদের আশেপাশের প্রতিবেশী দেশ, সাউথ এশিয়া, সাউথইস্ট এশিয়া, কোনো দেশের চাইতে যদি মনে করেন বা প্রমাণ থাকে যে আমরা তাদের চাইতে অর্থনৈতিক এলাকায় পেছনে আছি, তাহলে ইন দ্যাট কেস ইউ কাম টু মি, আই উইল গেট ইউ টু দ্য সল্যুশন। অবশ্যই আমি দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটি করব।

সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি এখন একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি ৩ শতাংশ কনট্র্যাকশন হয়েছে। কিন্তু দেশে এটি হয়নি। বলা হচ্ছে ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ হবে সারা বিশ্বে ২৫তম।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই যে অর্জনগুলা, আপনারা যেভাবে বলেন মনে হয় যেনো দেশে কোনো অর্থনীতি নাই, দেশে কোনো ব্যাংকিং খাত নাই, দেশে কিছুই নাই। কিন্তু কিছুই যদি না থাকবে এগুলো বাদ দিয়ে আমরা উন্নতি করছি কীভাবে। এগুলো বাদ দিয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি আসছে কীভাবে?

অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে, গ্রাহক বেড়েছে, আমানত বেড়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা ব্যাংক লাভে আছে। ঋণ নিয়ে যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করা হয়। চলমান মামলা সংখ্যা ২ লাখ ৪৩ হাজার।

ই-কমার্সের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এর আগে বিলটির উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক বলেন, খেলাপ ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার বেশি। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে রাজনীতিবিদ, আমলাসহ অনেকে টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

এসব বিষয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগে আমলা, রাজনীতিবিদদের বদনাম হয়। টাকা পাচার হয় কি না, হলে কারা করে এটা বের করতে তিনি ব্যাংক কমিশন গঠন করে তদন্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদের স্বার্থে এটা হওয়া উচিত।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, অর্থমন্ত্রীকে আমরা অনেক প্রশ্ন করি, তিনি কোনো উত্তর দেন না। ঠাণ্ডা মাথায় এড়িয়ে যান। ই-কমার্সের নামে লুটপাট হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণরে কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। তাহলে কে দায় নেবে?

বিএনপির সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, রাঘব বোয়ালরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মেরে দিয়ে আয়েশি জীবন যাপন করছে। গরীব মানুষ ঋণ পায় না। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, কাগজে কলমে মন্দ ঋণ এক লাক কোটি টাকার মত। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা ঋণ হিসাব করলে সেটা আসলে মোট ৪ থেকে সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলারা টাকা পাচার করেন, এমন শোনা যায়। কারা কত পাচার করে অর্থমন্ত্রী যদি পরিষ্কার চিত্র দেন তাহলে রাজনীতিবিদ ও সৎ আমলারা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।

ছবি

জুলাই পদযাত্রার ভ্যানে ‘হাতবোমা’ বিস্ফোরণের অভিযোগ, এনসিপির বিক্ষোভ

ছবি

দেশের প্রয়োজনে বেগম খালেদা জিয়া যখন ডাক দিবেন মানুষ রাজপথ প্রকম্পিত করে ছুটে আসবে : মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন

ছবি

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন: বিভক্তি ও অস্থিরতার আশঙ্কায় তারেক রহমান

ছবি

গুম-খুনের তালিকা তৈরির তাগিদ, আন্দোলনে নিহতদের পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব খালেদা জিয়ার

ছবি

নির্বাচনের তারিখ বা সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়নি: সিইসি

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি থাকবেন খালেদা-তারেক

ছবি

জুলাই সনদ আদায় করেই ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম

ছবি

আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু

ছবি

রংপুরের পথে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু

আনুপাতিক ভোটের পক্ষে একমত হওয়ার আহ্বান ‘৬০ নাগরিকের

ছবি

‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা ২০২৫’ প্রকাশ, বাদ ডিসি-এসপি, ইভিএম সংশ্লিষ্ট ধারা

ছবি

নির্বাচিত সরকার এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে—চীন সফর শেষে বললেন মির্জা ফখরুল

ছবি

‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পূরণ সম্ভব’: এনসিপি আহ্বায়ক

ছবি

একজন উপদেষ্টা মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন: মির্জা ফখরুল

ছবি

“নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার” — জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

ছবি

মুরাদনগরে হিন্দু নারী নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাল বিএনপি

ছবি

নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাবে এখনো একমত নয় সব রাজনৈতিক দল

ছবি

নির্বাচনের সময় বিলম্বে জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

ছবি

আনুপাতিক নির্বাচন দেশের উপযোগী নয়: সালাহউদ্দিন

ছবি

‘রাষ্ট্র সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, চিরস্থায়ী নয়’— বললেন বিএনপি নেতা

ছবি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

আলোচনা, দোয়া, গণমিছিলসহ ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত

ছবি

সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ছবি

ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র: হেফাজত

ছবি

হাসনাতের ভিডিও পোস্ট ঘিরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, দুদকের পাল্টা সতর্কতা

ছবি

বটবাহিনীর সহযোগিতায় মুনাফেকি রাজনীতি করছে জামায়াত-শিবির: ছাত্রদল সভাপতি

ছবি

হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্তে দুদক

ছবি

স্বৈরাচার ঠেকাতে দরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন: বিএনপি নেতা

ছবি

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কর্মী সভায় মারধর: এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর কমিটি স্থগিত

ছবি

‘চা-নাস্তার জন্য এক লাখ টাকা’ দাবি: মাহমুদা মিতুর অভিযোগে দুদকের প্রতিবাদ

ছবি

কে এম নূরুল হুদা হেনস্তা মামলায় জামিন পেলেন মোজাম্মেল, হানিফ ও কাইয়ুম

ছবি

“রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি বাদ, নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন স্পিকার ও রাজনৈতিক নেতারা”

ছবি

ইশরাকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ

ছবি

দুদকের আবেদনে আদালতের আদেশ, হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দলের নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদনের ‘হিড়িক’

tab

রাজনীতি

আমি টাকা পাচার করি না, কারা করে কীভাবে জানবো : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, কারা বিদেশে টাকা পাচার করে তা তিনি জানেন না। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেন না। তিনি কীভাবে জানবেন কারা টাকা পাচার করে? তিনি টাকা পাচারকারীদের তালিকা দেওয়ার জন্য বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেশসৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে কম এখন। ২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। এখন সেপ্টেম্বর কোয়ার্টার পর্যন্ত ১ লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এটা ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। সবচেয়ে নিম্নে আছে এখন। ঋণ নিয়ে যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করা হয়।

আজ শনিবার সংসদে একটি বিল পাসের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এর আগে বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব বিষয়ে তারা অর্থমন্ত্রীর জবাব চান এবং একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি তুলেন।

শুরুতে অর্থমন্ত্রী এসব বিষয় নিয়ে নীরব থাকায় সংসদ সদস্যদের সমালোচনার মুখে পড়েন। পরে অর্থমন্ত্রী কথা বলেন।

টাকা পাচার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলেছেন দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনাদের বলেছি, যারা পাচার করে তাদের তালিকা আমাকে দেন। আমিতো পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও পাচার করে না। সুতরাং পাচার কে করে, আমি জানব কেমন করে, যদি আপনারা না দেন।

এ সময় বিরোধী দলের সদস্যদের অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে কিছু বলতে দেখা যায়। তবে তাদের মাইক বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য শোনা যায়নি। তাদের কথার ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, ইয়েস আপনারা বলেন। আপনারা লিস্ট দেন পাচারকারীদের।

তখন একজন সংসদ সদস্য বলেন, এটা অর্থমন্ত্রী বলবেন কারা পাচার করে । তখন অর্থমন্ত্রী বলেন, না অর্থমন্ত্রী বলতে পারবে না। একটা কথা আমি আবারও বলি, আপনারা আমরা কিন্তু একই পথের পথিক। আপনারা যেটা জানেন আমিও সেটা জানি। বারবার আমি বলেছি, আমি জানি না। আমাকে জানান।

এ পর্যায়ে বিরোধী দলের একজন সদস্য কিছু একটা বলেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ঠিক আছে প্লিজ কাম উইথ এ লিস্ট।

এ সময় বিরোধী দল থেকে কিছু একটা বলা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আবার একই কথা! আমিতো বলছি, আমি কোথায় পাব? আপনি আমাকে বলেন। আচ্ছা ঠিক আছে, অলরাইট, আমি দেখব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালক হলো সে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর। সারা বিশ্বের অর্থনীতি যখন টালমাটাল অবস্থা সবাই কিন্তু বলছেন তখন আমরা ভাল করছি। আপনার কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে বাংলাদেশের অর্থনীতি আমাদের আশেপাশের প্রতিবেশী দেশ, সাউথ এশিয়া, সাউথইস্ট এশিয়া, কোনো দেশের চাইতে যদি মনে করেন বা প্রমাণ থাকে যে আমরা তাদের চাইতে অর্থনৈতিক এলাকায় পেছনে আছি, তাহলে ইন দ্যাট কেস ইউ কাম টু মি, আই উইল গেট ইউ টু দ্য সল্যুশন। অবশ্যই আমি দায়িত্ব নিয়ে সে কাজটি করব।

সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি এখন একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতি ৩ শতাংশ কনট্র্যাকশন হয়েছে। কিন্তু দেশে এটি হয়নি। বলা হচ্ছে ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ হবে সারা বিশ্বে ২৫তম।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই যে অর্জনগুলা, আপনারা যেভাবে বলেন মনে হয় যেনো দেশে কোনো অর্থনীতি নাই, দেশে কোনো ব্যাংকিং খাত নাই, দেশে কিছুই নাই। কিন্তু কিছুই যদি না থাকবে এগুলো বাদ দিয়ে আমরা উন্নতি করছি কীভাবে। এগুলো বাদ দিয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি আসছে কীভাবে?

অর্থমন্ত্রী জানান, ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে, গ্রাহক বেড়েছে, আমানত বেড়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা ব্যাংক লাভে আছে। ঋণ নিয়ে যারা অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা করা হয়। চলমান মামলা সংখ্যা ২ লাখ ৪৩ হাজার।

ই-কমার্সের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এর আগে বিলটির উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক বলেন, খেলাপ ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার বেশি। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে রাজনীতিবিদ, আমলাসহ অনেকে টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

এসব বিষয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগে আমলা, রাজনীতিবিদদের বদনাম হয়। টাকা পাচার হয় কি না, হলে কারা করে এটা বের করতে তিনি ব্যাংক কমিশন গঠন করে তদন্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদের স্বার্থে এটা হওয়া উচিত।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, অর্থমন্ত্রীকে আমরা অনেক প্রশ্ন করি, তিনি কোনো উত্তর দেন না। ঠাণ্ডা মাথায় এড়িয়ে যান। ই-কমার্সের নামে লুটপাট হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণরে কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। তাহলে কে দায় নেবে?

বিএনপির সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, রাঘব বোয়ালরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মেরে দিয়ে আয়েশি জীবন যাপন করছে। গরীব মানুষ ঋণ পায় না। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে যারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, কাগজে কলমে মন্দ ঋণ এক লাক কোটি টাকার মত। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা ঋণ হিসাব করলে সেটা আসলে মোট ৪ থেকে সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলারা টাকা পাচার করেন, এমন শোনা যায়। কারা কত পাচার করে অর্থমন্ত্রী যদি পরিষ্কার চিত্র দেন তাহলে রাজনীতিবিদ ও সৎ আমলারা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।

back to top