alt

রাজনীতি

ইসির ‘রোডম্যাপ’ : আস্থা নেই বিরোধী দলগুলোর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের ‘কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ’ বিরোধী দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারেনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি বলছে, এই রোডম্যাপ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি বলছে, এই নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই। তাই তাদের রোডম্যাপেরও কোন মূল্য নেই। এই রোডম্যাপকে ‘আবেদনহীন’ বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

কমিশন বলছে, দায়িত্ব নেয়ার পর ‘আস্থার ঘাটতির কারণে’ নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে নিজেদের ‘কর্মকান্ড’ দিয়ে আস্থা অর্জনের পথে তারা কিছুটা হলেও এগিয়ে গেছে। কমিশনের মতে, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন করাই তাদের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্দেশ্য।

তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, এই রোডম্যাপ সংশোধন করা প্রয়োজন। তা না হলে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতোই নির্বাচন হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। টিআইবির মতে, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি) পদত্যাগ না করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাপে থাকে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়। তাই আইনেরও সংস্কার প্রয়োজন।

আগামী বছর ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘১৩টি চ্যালেঞ্জ’ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘১৯টি করণীয়’ নির্ধারণ করে গত বুধবার একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি।

টানা ১৩ বছরের বেশি ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়ও দলটি ক্ষমতায় থাকবে। আওয়ামী লীগের আমলে গঠিত আগের নির্বাচন কমিশনগুলোর মতো কাজী হাবিবুর আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বিএনপিসহ তাদের মিত্রদলগুলো।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

কমিশনারদের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। এই নির্বাচন কমিশনার কোথা থেকে এসেছেন, কে তাকে নিয়োগ দিয়েছে? অবৈধ সরকার যাদের নিয়োগ দিয়েছে; সেই নির্বাচন কমিশন অবৈধ।’

এদিকে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টিও সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে সখ্য গড়ার চেষ্টা করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বর্তমান ইসির প্রতি আস্থা নেই বলেও জানিয়েছে জাতীয় পার্টি।

জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুু বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন। যে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে বলে মনে হয় না।’

জাপা মহাসচিব জানান, জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে আইন করা হোক। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে যেন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনই ক্ষমতা চায় না।

বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো শুরু থেকেই চলমান কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি দল ইসির কোন আমন্ত্রণেই সাড়া দেয়নি।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ সম্পর্কে গত বুধবার নিজের নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকেই মানি না, আবার রোডম্যাপ! এ নিয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই।’

নির্বাচন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার অর্থাৎ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে সে নির্বাচন কখনই গ্রহণযোগ্য ও অবাধ সুষ্ঠু হবে না। দেশের মানুষ অংশ নেবে না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ইসির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে জাপার মুজিবুল হক বলেন, ‘ইভিএম হচ্ছে ভোটের রেজাল্ট কারচুপির সিস্টেম। সংলাপে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। শুধু সরকার ও তাদের কয়েকটি মিত্র রাজনৈতিক দল ইভিএমে নির্বাচন চেয়েছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএমে নির্বাচন করতে চাচ্ছে।’

ইসির রোডম্যাপ আবেদনহীন বলে গত বুধবার এক বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। তার মতে, এই কমিশন ‘হুদা কমিশনের ফটোকপি’ ছাড়া কিছুই না। কারণ জনমতের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে বর্তমান কমিশন দেড়শ’ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কিভাবে নির্বাচনে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করাই ইসির দায়িত্ব দাবি করে মহাসচিব বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘যদি তা না পারে তবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই।’

তবে আওয়ামী লীগের দাবি, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে রোডম্যাপ ইসি দিয়েছে, এটা তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুচিন্তিতভাবেই তারা এই রোডম্যাপ দিয়েছে।’

ছবি

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন: বিভক্তি ও অস্থিরতার আশঙ্কায় তারেক রহমান

ছবি

গুম-খুনের তালিকা তৈরির তাগিদ, আন্দোলনে নিহতদের পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব খালেদা জিয়ার

ছবি

নির্বাচনের তারিখ বা সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়নি: সিইসি

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি থাকবেন খালেদা-তারেক

ছবি

জুলাই সনদ আদায় করেই ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম

ছবি

আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু

ছবি

রংপুরের পথে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু

আনুপাতিক ভোটের পক্ষে একমত হওয়ার আহ্বান ‘৬০ নাগরিকের

ছবি

‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা ২০২৫’ প্রকাশ, বাদ ডিসি-এসপি, ইভিএম সংশ্লিষ্ট ধারা

ছবি

নির্বাচিত সরকার এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে—চীন সফর শেষে বললেন মির্জা ফখরুল

ছবি

‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পূরণ সম্ভব’: এনসিপি আহ্বায়ক

ছবি

একজন উপদেষ্টা মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন: মির্জা ফখরুল

ছবি

“নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার” — জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

ছবি

মুরাদনগরে হিন্দু নারী নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাল বিএনপি

ছবি

নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাবে এখনো একমত নয় সব রাজনৈতিক দল

ছবি

নির্বাচনের সময় বিলম্বে জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

ছবি

আনুপাতিক নির্বাচন দেশের উপযোগী নয়: সালাহউদ্দিন

ছবি

‘রাষ্ট্র সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, চিরস্থায়ী নয়’— বললেন বিএনপি নেতা

ছবি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

আলোচনা, দোয়া, গণমিছিলসহ ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত

ছবি

সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ছবি

ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র: হেফাজত

ছবি

হাসনাতের ভিডিও পোস্ট ঘিরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, দুদকের পাল্টা সতর্কতা

ছবি

বটবাহিনীর সহযোগিতায় মুনাফেকি রাজনীতি করছে জামায়াত-শিবির: ছাত্রদল সভাপতি

ছবি

হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্তে দুদক

ছবি

স্বৈরাচার ঠেকাতে দরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন: বিএনপি নেতা

ছবি

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কর্মী সভায় মারধর: এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর কমিটি স্থগিত

ছবি

‘চা-নাস্তার জন্য এক লাখ টাকা’ দাবি: মাহমুদা মিতুর অভিযোগে দুদকের প্রতিবাদ

ছবি

কে এম নূরুল হুদা হেনস্তা মামলায় জামিন পেলেন মোজাম্মেল, হানিফ ও কাইয়ুম

ছবি

“রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি বাদ, নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন স্পিকার ও রাজনৈতিক নেতারা”

ছবি

ইশরাকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ

ছবি

দুদকের আবেদনে আদালতের আদেশ, হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দলের নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদনের ‘হিড়িক’

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: একমত জামায়াত-এনসিপি, বিএনপিসহ ৩ দলের ভিন্নমত

নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনসিপির আবেদন

tab

রাজনীতি

ইসির ‘রোডম্যাপ’ : আস্থা নেই বিরোধী দলগুলোর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের ‘কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ’ বিরোধী দলগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারেনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি বলছে, এই রোডম্যাপ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি বলছে, এই নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই। তাই তাদের রোডম্যাপেরও কোন মূল্য নেই। এই রোডম্যাপকে ‘আবেদনহীন’ বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

কমিশন বলছে, দায়িত্ব নেয়ার পর ‘আস্থার ঘাটতির কারণে’ নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে নিজেদের ‘কর্মকান্ড’ দিয়ে আস্থা অর্জনের পথে তারা কিছুটা হলেও এগিয়ে গেছে। কমিশনের মতে, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন করাই তাদের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্দেশ্য।

তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, এই রোডম্যাপ সংশোধন করা প্রয়োজন। তা না হলে ২০১৪ ও ১৮ সালের মতোই নির্বাচন হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। টিআইবির মতে, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা (এমপি) পদত্যাগ না করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাপে থাকে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়। তাই আইনেরও সংস্কার প্রয়োজন।

আগামী বছর ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘১৩টি চ্যালেঞ্জ’ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘১৯টি করণীয়’ নির্ধারণ করে গত বুধবার একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি।

টানা ১৩ বছরের বেশি ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়ও দলটি ক্ষমতায় থাকবে। আওয়ামী লীগের আমলে গঠিত আগের নির্বাচন কমিশনগুলোর মতো কাজী হাবিবুর আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বিএনপিসহ তাদের মিত্রদলগুলো।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি ঘোষিত ‘রোডম্যাপ’ আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

কমিশনারদের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। এই নির্বাচন কমিশনার কোথা থেকে এসেছেন, কে তাকে নিয়োগ দিয়েছে? অবৈধ সরকার যাদের নিয়োগ দিয়েছে; সেই নির্বাচন কমিশন অবৈধ।’

এদিকে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র জাতীয় পার্টিও সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে সখ্য গড়ার চেষ্টা করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। বর্তমান ইসির প্রতি আস্থা নেই বলেও জানিয়েছে জাতীয় পার্টি।

জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুু বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ মূল্যহীন। যে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে বলে মনে হয় না।’

জাপা মহাসচিব জানান, জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে আইন করা হোক। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে যেন কমিশন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনই ক্ষমতা চায় না।

বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো শুরু থেকেই চলমান কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি দল ইসির কোন আমন্ত্রণেই সাড়া দেয়নি।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ সম্পর্কে গত বুধবার নিজের নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকেই মানি না, আবার রোডম্যাপ! এ নিয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই।’

নির্বাচন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার অর্থাৎ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে সে নির্বাচন কখনই গ্রহণযোগ্য ও অবাধ সুষ্ঠু হবে না। দেশের মানুষ অংশ নেবে না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ইসির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে জাপার মুজিবুল হক বলেন, ‘ইভিএম হচ্ছে ভোটের রেজাল্ট কারচুপির সিস্টেম। সংলাপে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। শুধু সরকার ও তাদের কয়েকটি মিত্র রাজনৈতিক দল ইভিএমে নির্বাচন চেয়েছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএমে নির্বাচন করতে চাচ্ছে।’

ইসির রোডম্যাপ আবেদনহীন বলে গত বুধবার এক বিবৃতিতে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। তার মতে, এই কমিশন ‘হুদা কমিশনের ফটোকপি’ ছাড়া কিছুই না। কারণ জনমতের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে বর্তমান কমিশন দেড়শ’ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কমিশনের কোন ক্ষমতা নেই।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কিভাবে নির্বাচনে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করাই ইসির দায়িত্ব দাবি করে মহাসচিব বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘যদি তা না পারে তবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকার অধিকার নেই।’

তবে আওয়ামী লীগের দাবি, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে রোডম্যাপ ইসি দিয়েছে, এটা তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুচিন্তিতভাবেই তারা এই রোডম্যাপ দিয়েছে।’

back to top