alt

কিবরিয়া হত্যার ১৮ বছর : বারবার পেছায় মামলার তারিখ

প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ : শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর। ২০০৫ সালের এদিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়।

তবে দেড় যুগেও কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। নিয়মিত সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বারবার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছাচ্ছে।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না।

একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে এত দিনেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ১৮ বছর অপেক্ষা করেছেন, আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। তার মা বিচারের দাবিতে ‘শান্তির সপক্ষে নীলিমা’ নামে একটা কর্মসূচি করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি রাস্তায় দাঁড়াতেন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে এখন পারেন না।

তিনি বলেন, আমার মায়ের মতো এভাবে কাউকে যেন রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়, এটাই আমরা চাই। যাঁরা আসল খুনি, তাদের যদি চিহ্নিত করতে পারি, তাহলে তাঁদের আপনজনদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না।

রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছরের মধ্যে ২ বছর বিএনপি, ২ বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেউ বিচার করেনি। আমরা বারবার দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দাবি জানিয়েছি, হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা কে এবং গ্রেনেডের উৎস কি? কিন্তু এ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আগ্রহ কম। আছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এ জন্য বর্তমান সরকারের সময় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আশা করি না। তবে সরকার পরিবর্তন হলে আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে।’

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলার পুনর্তদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত ব্যক্তির পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিস্ফোরক মামলায় ১৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে অনুপস্থিত থাকছেন। এ অবস্থায় সাক্ষীদের উপস্থিত করতে সমন জারিসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়েছে। ওই দিন মো. শাহাদাত হোসেন প্রামাণিকের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত। সর্বশেষ তারিখে উপস্থিত না হওয়া কয়েকজন সাক্ষীর নামে পরোয়ানা ও সমন জারি করেন আদালত। তবে ওই দিন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছসসহ কয়েকজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত জামিনে থাকা পাঁচজন আদালতে উপস্থিত হতে না পেরে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সরোয়ার আহমদ চৌধুরী বলেন, ধার্য দিনে সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে। তবে সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলা শেষ করার চেষ্টা রয়েছে।

এদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ঢাকার বনানী কবরস্থানে বেলা ১১টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মোনাজাত ও ফাতেহা পাঠের পর মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে গণঅধিকার ফোরামের সভাপতি রেজা কিবরিয়াসহ সংগঠনের নেতাদের উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জে কিবরিয়া স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল বৈদ্যের বাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

বিএনপির হাত ধরে বারবার গণতন্ত্র এসেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

বিএনপি থেকে ৫ শতাংশ শিক্ষককে মনোনয়ন দেয়ার দাবি

ছবি

নিবন্ধনের দাবিতে ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনশনে আমজনতার সদস্য সচিব

ছবি

সংবিধানে গণভোটের কিছু নেই: আমীর খসরু

ছবি

আগেই গণভোট, নইলে কঠোর আন্দোলন: জামায়াতসহ ৮ দলের হুঁশিয়ারি

ছবি

কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

ছবি

বিএনপি বলছে, প্রধান উপদেষ্টা আহ্বান জানালে ‘আলোচনায় রাজি’, তবে ‘রাজনৈতিক দল দিয়ে আহ্বান কেন?’

ছবি

জামালপুরে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ যুবদলের বিরুদ্ধে

ছবি

বিএনপির আচরণে আওয়ামী লীগের ছায়া দেখছেন হামিদুর রহমান আযাদ

ছবি

বাংলাদেশে মানুষ সংঘর্ষ নয়, স্থিতিশীলতা চায়: আমীর খসরু

ছবি

৫ আগস্টের আগের স্বপ্ন ১৫ মাসেও পূরণ হয়নি: নুরুল হক

ছবি

যতই চালাকি হোক, আগে গণভোট, তারপর সংসদ নির্বাচন: তাহের

নতুন নামে ‘ফ্যাসিবাদ’ কায়েমের পাঁয়তারা চলছে: মুশতাক

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আ’লীগের ‘ডোনার খ্যাত’ আনিসুল হক!

ছবি

রংপুরের দুই আসনে এনসিপি ও জামায়াতের মর্যাদার লড়াই

ছবি

জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট বলে কিছু থাকবে না: নাহিদ ইসলাম

ছবি

বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘে মোমেনের চিঠি

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ ও গণভোট ইস্যুতে ফখরুলের কঠোর হুঁশিয়ারি

ছবি

শুক্রবার ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় সংহতি ও বিপ্লব দিবস’

ছবি

জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যের আহ্বান বিএনপি নেতাদের

ছবি

আঙুল বাঁকা করার হুমকি জামায়াতের তাহেরের, কারণ ‘ঘি তাদের লাগবেই’

ছবি

গণতন্ত্রের পথ সরকারকেই সুগম করতে হবে, যশোরে মির্জা ফখরুল

ছবি

সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট হতে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট দাবিতে প্রয়োজনে ‘আঙ্গুল বাঁকা’ করার হুঁশিয়ারি  : জামায়াত নেতৃত্ব

ছবি

৯ রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা , জাতীয় সনদ ও গণভোটে দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ

ছবি

৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতিতে এনসিপি, জোট না হলে সরাসরি লড়াই

ছবি

পদ ছেড়ে ‘ভোট করবেন’ অ্যাটর্নি জেনারেল, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ‘আশাবাদী’

ছবি

বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা ও পৃথক দিনে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী

নীলফামারী ১ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছবি

বরিশাল বিভাগে একমাত্র নারী প্রার্থী ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো

ছবি

শেষ নির্বাচন ঘোষণা দিয়ে আবেগঘন বার্তা দিলেন বিএনপি মহাসচিব

ছবি

প্রার্থী ঘোষণা: সিলেট বিএনপিতে অস্থিরতা

ছবি

চাঁদপুরে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় জাসদ থেকে শতাধিক নেতাকর্মীর এনসিপিতে যোগদান

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কোথাও আনন্দ, কোথাও বিক্ষোভ

tab

কিবরিয়া হত্যার ১৮ বছর : বারবার পেছায় মামলার তারিখ

প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ

শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর। ২০০৫ সালের এদিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়।

তবে দেড় যুগেও কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। নিয়মিত সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বারবার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছাচ্ছে।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না।

একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে এত দিনেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ১৮ বছর অপেক্ষা করেছেন, আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। তার মা বিচারের দাবিতে ‘শান্তির সপক্ষে নীলিমা’ নামে একটা কর্মসূচি করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি রাস্তায় দাঁড়াতেন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে এখন পারেন না।

তিনি বলেন, আমার মায়ের মতো এভাবে কাউকে যেন রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়, এটাই আমরা চাই। যাঁরা আসল খুনি, তাদের যদি চিহ্নিত করতে পারি, তাহলে তাঁদের আপনজনদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না।

রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছরের মধ্যে ২ বছর বিএনপি, ২ বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেউ বিচার করেনি। আমরা বারবার দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দাবি জানিয়েছি, হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা কে এবং গ্রেনেডের উৎস কি? কিন্তু এ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আগ্রহ কম। আছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এ জন্য বর্তমান সরকারের সময় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আশা করি না। তবে সরকার পরিবর্তন হলে আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে।’

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলার পুনর্তদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত ব্যক্তির পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিস্ফোরক মামলায় ১৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে অনুপস্থিত থাকছেন। এ অবস্থায় সাক্ষীদের উপস্থিত করতে সমন জারিসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়েছে। ওই দিন মো. শাহাদাত হোসেন প্রামাণিকের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত। সর্বশেষ তারিখে উপস্থিত না হওয়া কয়েকজন সাক্ষীর নামে পরোয়ানা ও সমন জারি করেন আদালত। তবে ওই দিন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছসসহ কয়েকজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত জামিনে থাকা পাঁচজন আদালতে উপস্থিত হতে না পেরে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সরোয়ার আহমদ চৌধুরী বলেন, ধার্য দিনে সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে। তবে সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলা শেষ করার চেষ্টা রয়েছে।

এদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ঢাকার বনানী কবরস্থানে বেলা ১১টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মোনাজাত ও ফাতেহা পাঠের পর মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে গণঅধিকার ফোরামের সভাপতি রেজা কিবরিয়াসহ সংগঠনের নেতাদের উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জে কিবরিয়া স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল বৈদ্যের বাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

back to top