alt

রাজনীতি

কিবরিয়া হত্যার ১৮ বছর : বারবার পেছায় মামলার তারিখ

প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ : শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর। ২০০৫ সালের এদিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়।

তবে দেড় যুগেও কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। নিয়মিত সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বারবার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছাচ্ছে।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না।

একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে এত দিনেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ১৮ বছর অপেক্ষা করেছেন, আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। তার মা বিচারের দাবিতে ‘শান্তির সপক্ষে নীলিমা’ নামে একটা কর্মসূচি করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি রাস্তায় দাঁড়াতেন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে এখন পারেন না।

তিনি বলেন, আমার মায়ের মতো এভাবে কাউকে যেন রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়, এটাই আমরা চাই। যাঁরা আসল খুনি, তাদের যদি চিহ্নিত করতে পারি, তাহলে তাঁদের আপনজনদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না।

রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছরের মধ্যে ২ বছর বিএনপি, ২ বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেউ বিচার করেনি। আমরা বারবার দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দাবি জানিয়েছি, হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা কে এবং গ্রেনেডের উৎস কি? কিন্তু এ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আগ্রহ কম। আছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এ জন্য বর্তমান সরকারের সময় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আশা করি না। তবে সরকার পরিবর্তন হলে আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে।’

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলার পুনর্তদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত ব্যক্তির পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিস্ফোরক মামলায় ১৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে অনুপস্থিত থাকছেন। এ অবস্থায় সাক্ষীদের উপস্থিত করতে সমন জারিসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়েছে। ওই দিন মো. শাহাদাত হোসেন প্রামাণিকের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত। সর্বশেষ তারিখে উপস্থিত না হওয়া কয়েকজন সাক্ষীর নামে পরোয়ানা ও সমন জারি করেন আদালত। তবে ওই দিন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছসসহ কয়েকজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত জামিনে থাকা পাঁচজন আদালতে উপস্থিত হতে না পেরে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সরোয়ার আহমদ চৌধুরী বলেন, ধার্য দিনে সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে। তবে সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলা শেষ করার চেষ্টা রয়েছে।

এদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ঢাকার বনানী কবরস্থানে বেলা ১১টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মোনাজাত ও ফাতেহা পাঠের পর মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে গণঅধিকার ফোরামের সভাপতি রেজা কিবরিয়াসহ সংগঠনের নেতাদের উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জে কিবরিয়া স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল বৈদ্যের বাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

ছবি

আওয়ামী লীগের সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবি এনসিপির, সহযোগী দলগুলোকেও নিষিদ্ধ করার আহ্বান

ছবি

চোখের চিকিৎসায় থাইল্যান্ড গেলেন মির্জা ফখরুল

ছবি

‘আবেগ নয়, দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিন’—অন্তর্বর্তী সরকারকে রিজভী

ছবি

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত, নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ

সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গ্রেপ্তার

ছবি

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, বিএনপির সমর্থন, বাসদের প্রশ্ন

ছবি

আন্দোলনকালীন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আইভী, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি

নিবন্ধন বাতিল নিয়ে সিদ্ধান্তে বসেছে ইসি, অপেক্ষায় গেজেট

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ

ছবি

সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন ঘটছে দেশে’ — মির্জা আব্বাসের অভিযোগ

ছবি

‘গোলাম আজমের বাংলায়’ স্লোগান নিয়ে বিতর্কে এনসিপি: দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট পক্ষকেই

ছবি

দ্বাদশ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতির অসীম ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেওয়া হয়েছিল: আলী রীয়াজ

ছবি

সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠনের দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের অনুষ্ঠানে

ছবি

আওয়ামী লীগের বিচার চেয়ে আগেই প্রস্তাব দিয়েছিল বিএনপি—সালাহউদ্দিন

ছবি

নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার স্পষ্ট করার আহ্বান নাহিদ ইসলামের

ছবি

‘গুম-খুন-নিপীড়নের বিচার প্রক্রিয়া সঠিক পথে’—মির্জা ফখরুল

ছবি

গণতন্ত্রের মা’কে গভীর শ্রদ্ধা জানালেন লন্ডনপ্রবাসী তারেক

ছবি

আহতদের সুচিকিৎসা ও জুলাই সনদ প্রকাশের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

ছবি

এক যুগ পর ভাইয়ের বাসায় খালেদা জিয়া, সঙ্গে ছিলেন পুত্রবধূরা

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন সংশোধিত, রাজনৈতিক দলকেও বিচারের আওতায় আনার পথ সুগম

ছবি

নিশ্চিত আদেশের অপেক্ষায় ইসি, নিষিদ্ধ হলে বাতিল হবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন

ছবি

শাহবাগে মধ্যরাতের পর জমায়েতে হাসনাত, সোমবার প্রজ্ঞাপন জারির পর আনন্দমিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান, বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা

ছবি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে এক ঘণ্টার আলটিমেটাম, শাহবাগে এনসিপির অবরোধ

ছবি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে রোডম্যাপ না পেয়ে ‘মার্চ টু যমুনা’ ঘোষণা

ছবি

নতুন দল ‘আপ বাংলাদেশ’-এর আত্মপ্রকাশ, আহ্বায়ক শিবিরের সাবেক নেতা জুনায়েদ

ছবি

শাহবাগে এনসিপির গণজমায়েত, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি হাসনাত আবদুল্লাহর

ছবি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ অব্যাহত, বিকেলে গণজমায়েতের প্রস্তুতি

ছবি

শাহবাগ ব্লকেড চলছে, মহাসড়কে ব্লকেড না দেওয়ার আহ্বান এনসিপি নেতার

ছবি

জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলায় আইভী কারাগারে

ছবি

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবি: যমুনার সামনে বাদ জুমা বড় জমায়েতের ডাক

ছবি

আ. লীগকে নিষিদ্ধের দাবি: রাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সকালেও চলছে

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধের চূড়ান্ত প্রক্রিয়ায়, দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার

ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সিইসি ও বিচারপতিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ছবি

“জাতির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নয়: মানবিক করিডোর নিয়ে সরকারকে বিএনপির হুঁশিয়ারি”

ছবি

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত সাবেক এমপি তুহিনের আপিল গ্রহণ, জামিন মঞ্জুর

tab

রাজনীতি

কিবরিয়া হত্যার ১৮ বছর : বারবার পেছায় মামলার তারিখ

প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ

শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

আজ সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর। ২০০৫ সালের এদিনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়।

তবে দেড় যুগেও কিবরিয়া হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। নিয়মিত সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বারবার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছাচ্ছে।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার বিচারকাজ শেষ হচ্ছে না।

একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে এত দিনেও মামলার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা। শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বলেন, ১৮ বছর অপেক্ষা করেছেন, আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করবেন। তার মা বিচারের দাবিতে ‘শান্তির সপক্ষে নীলিমা’ নামে একটা কর্মসূচি করতেন। প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি রাস্তায় দাঁড়াতেন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে এখন পারেন না।

তিনি বলেন, আমার মায়ের মতো এভাবে কাউকে যেন রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়, এটাই আমরা চাই। যাঁরা আসল খুনি, তাদের যদি চিহ্নিত করতে পারি, তাহলে তাঁদের আপনজনদের রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না।

রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছরের মধ্যে ২ বছর বিএনপি, ২ বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেউ বিচার করেনি। আমরা বারবার দুটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দাবি জানিয়েছি, হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা কে এবং গ্রেনেডের উৎস কি? কিন্তু এ নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের আগ্রহ কম। আছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এ জন্য বর্তমান সরকারের সময় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আশা করি না। তবে সরকার পরিবর্তন হলে আশা করি সুষ্ঠু বিচার হবে।’

আদালত সূত্র জানায়, মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলার পুনর্তদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত ব্যক্তির পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, একের পর এক তদন্ত এবং বাদীপক্ষের নারাজির কারণে মামলার বিচারকাজ শুরু হতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। মূলত হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ১০ বছর পর মামলার বিচার শুরু হয়। হত্যা মামলার ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আর বিস্ফোরক মামলায় ১৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অনেক সাক্ষীর মারা যাওয়া, সাক্ষী হিসেবে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে সাক্ষীরা ধার্য তারিখে অনুপস্থিত থাকছেন। এ অবস্থায় সাক্ষীদের উপস্থিত করতে সমন জারিসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।

আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়েছে। ওই দিন মো. শাহাদাত হোসেন প্রামাণিকের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত। সর্বশেষ তারিখে উপস্থিত না হওয়া কয়েকজন সাক্ষীর নামে পরোয়ানা ও সমন জারি করেন আদালত। তবে ওই দিন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছসসহ কয়েকজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত জামিনে থাকা পাঁচজন আদালতে উপস্থিত হতে না পেরে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সরোয়ার আহমদ চৌধুরী বলেন, ধার্য দিনে সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় নিষ্পত্তি হতে সময় লাগছে। তবে সাক্ষীদের হাজির করে দ্রুত মামলা শেষ করার চেষ্টা রয়েছে।

এদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ঢাকার বনানী কবরস্থানে বেলা ১১টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মোনাজাত ও ফাতেহা পাঠের পর মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

মানববন্ধনে গণঅধিকার ফোরামের সভাপতি রেজা কিবরিয়াসহ সংগঠনের নেতাদের উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জে কিবরিয়া স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল বৈদ্যের বাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

back to top