জীবনানন্দের কবিতার মতো বলতে হয়ঃ ‘পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়,
নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়।’
কবিতার পংক্তিগুলো যেন ম্যানচেষ্টার সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার জন্যেই লেখা। এই সিজন শুরুর আগে যা চিন্তাই করা যায়নি, সেই হতাশাই পোক্ত হয়েছে ম্যানচেষ্টার সিটির কোচের।
টানা গত চার সিজনে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ট্রফি জয়। ২০২২-২৩ সিজনের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী দলটি এবং তাদের কোচকে এখন মাঠে দুয়োধ্বনি শুনতে হয়। অথচ এই লোকটি কখনোই টানা এতো ম্যাচ জয়হীন এবং কোন বছর ট্রফি বিহীন থাকেননি।
গত দুই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে যিনি ৭টির বেশি ম্যাচ হারেননি, সেই কোচ এবং তার দল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত ১০ ম্যাচের ৭ টি হেরে বিব্রতকর রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে। এরচেয়ে বড় হতাশার কি হতে পারে একজন ‘সফল’ ফুটবল কোচের জন্য।
নাকের মাঝ বরাবর একটা নিখুঁত দাগের চিহ্ন। কৌতুহলি সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন কিসের দাগ? সংবাদ সম্মেলনে পেপ গুয়ার্দিওলার সহজ স্বীকারোক্তিঃ নিজেই দিয়েছেন, উত্তেজনা সামলাতে না পেরে।একজন কোচের সবচেয়ে বড় কাজ ম্যাচ টু ম্যাচ এগিয়ে যাওয়া। সেখানে টানা হার তাকে মানসিকভাবে ভীষণ চাপে রাখে, সেই হতাশা থেকেই কি এমনটা!
যদিও যেই ম্যাচে পাগলামি করেছেন সেই ম্যাচ টি সিটি হারেনি। তবে অদ্ভুত ভাবে ড্র করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব ফেইনুর্দের বিপক্ষে। ৭৪ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে পরের ১৫ মিনিটে ৩ গোল হজম করে ড্র করেছিল সিটি। এমন ঘটনা তাদের গত ১৬ বছরের মধ্যে প্রথম ঘটলো। কতোটা হতাশার বুঝতেই পারছেন।
আজকের দিনটি অবশ্য ম্যানচেস্টার ডার্বির। বন্দর নগরী ম্যানচেস্টার শহরের দুটি ক্লাব। হাসিকান্না, আনন্দ, অনূভুতি তাদের ফুটবল ঘিরে। কথিত আছে ডার্বির পর হেরে যাওয়া ক্লাবের সর্মথকরা রাগ করে বিপরীত ক্লাবের এলাকা এড়িয়ে চলেন। জয়ী সর্মথকরা মহিষের সিং রেখে আসেন পরাজিত ক্লাবের আঙিনায়। উচ্চস্বরে হর্ন বাজানো, গায়ে রং ছিটানো কতো কি করে জয়ের উৎসবে মাতোহারা হন তারা।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেই আগের দিন নেই। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন যেখানে রেখে গিয়েছেন তা আজ কেবল সোনায় মোড়ানো অতীত। নিজেদেরকে হারিয়ে খুঁজছেন ইউনাইটেডের তারা। ইংলিশ ফুটবলের অনযাতম সফল ক্লাবটি শেষ প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে ২০১২-১৩ মৌসুমে। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় তো দূরের কথা, সেখানে তারা কোয়ালিফাইই করতে পারেনা এখন।
ফার্গুসন ২০১৩ শেষে চলে যাওয়ার পর ক্লাবটি আর আগের অবস্থানে শত চেস্টা করেও ফিরতে পারেনি।পরিবর্তন হয়েছে অসংখ্য কোচ, খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ। কিন্তু ফেরা হয়নি রাজসিক সেই অতীতে।
সে লক্ষেই স্পোর্তিং লিসবনের সফল কোচ রুবেন আমোরিম কে নিয়ে এসেছে ইউনাইটেড নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায়।
দায়িত্ব নিয়ে আমোরিম বলেছেন, যথেষ্ট সময় দিতে হবে তাকে। এবার ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের অবস্থা লিগে আরো খারাপ। তারা পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান করছেন ১৩ নম্বরে। সর্বশেষ দুটি ম্যাচেই হেরেছে। সিটির অবশ্য লিগে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
তবে দুই প্রতিবেশী এখন একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। একদল খুঁজছে তাদের বেশ কিছু বছর আগের ইতিহাস ঐতিহ্য। আর আরেকদল তাদের সাম্প্রতিক অকাতরেই ফেরাতে চাইছে।
আজ এই দুই প্রতিবেশীর লড়াই। লড়াই দুই কোচেরও। সেই লড়াইয়ে অবশ্য আমোরিম এগিয়ে আছেন। গুয়ার্দিওলার সাথে মুখোমুখি সর্বশেষ লড়াইয়ে তিনি ৪-১ গোলে জয়ী হয়েছিলেন। তবে দয়া দল ছিলো স্পোর্তিং লিসবন। তখন আমোরিম ওই পর্তুগীজ দলেরই কোচ। আর এখন ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের ডাগ আউট মাতাচ্ছেন।
আজকের ম্যাচটি অবশ্য দুইদলের জন্যই অনুপ্রেরণা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ হতে পারে।
কারন প্রতিবেশীর সাথে জিতে নিজ সর্মথকদের চাঙ্গা করার সুযোগ কেউই হারাতে চাইবেন না।
এখন অব্দি ম্যানচেষ্টারের দুই প্রতিবেশী ইউনাইটেড এবং সিটি ১৮০ বার প্রতিযোগীতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। তাতে জয়ের পাল্লা ভারী ইউনাইটেডের, তাদের জয় ৭৭ ম্যাচে। আর সিটির জয় ৫৫ ম্যাচে।
ম্যাচটি আজ রাত বাংলাদেশ সময় ১০:৩০ এ ম্যানচেষ্টার সিটির ঘরের মাঠ ইত্তিহাদে অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
জীবনানন্দের কবিতার মতো বলতে হয়ঃ ‘পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়,
প্রেম ধীরে মুছে যায়,
নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়।’
কবিতার পংক্তিগুলো যেন ম্যানচেষ্টার সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার জন্যেই লেখা। এই সিজন শুরুর আগে যা চিন্তাই করা যায়নি, সেই হতাশাই পোক্ত হয়েছে ম্যানচেষ্টার সিটির কোচের।
টানা গত চার সিজনে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ট্রফি জয়। ২০২২-২৩ সিজনের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী দলটি এবং তাদের কোচকে এখন মাঠে দুয়োধ্বনি শুনতে হয়। অথচ এই লোকটি কখনোই টানা এতো ম্যাচ জয়হীন এবং কোন বছর ট্রফি বিহীন থাকেননি।
গত দুই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে যিনি ৭টির বেশি ম্যাচ হারেননি, সেই কোচ এবং তার দল সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত ১০ ম্যাচের ৭ টি হেরে বিব্রতকর রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে। এরচেয়ে বড় হতাশার কি হতে পারে একজন ‘সফল’ ফুটবল কোচের জন্য।
নাকের মাঝ বরাবর একটা নিখুঁত দাগের চিহ্ন। কৌতুহলি সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন কিসের দাগ? সংবাদ সম্মেলনে পেপ গুয়ার্দিওলার সহজ স্বীকারোক্তিঃ নিজেই দিয়েছেন, উত্তেজনা সামলাতে না পেরে।একজন কোচের সবচেয়ে বড় কাজ ম্যাচ টু ম্যাচ এগিয়ে যাওয়া। সেখানে টানা হার তাকে মানসিকভাবে ভীষণ চাপে রাখে, সেই হতাশা থেকেই কি এমনটা!
যদিও যেই ম্যাচে পাগলামি করেছেন সেই ম্যাচ টি সিটি হারেনি। তবে অদ্ভুত ভাবে ড্র করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব ফেইনুর্দের বিপক্ষে। ৭৪ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে পরের ১৫ মিনিটে ৩ গোল হজম করে ড্র করেছিল সিটি। এমন ঘটনা তাদের গত ১৬ বছরের মধ্যে প্রথম ঘটলো। কতোটা হতাশার বুঝতেই পারছেন।
আজকের দিনটি অবশ্য ম্যানচেস্টার ডার্বির। বন্দর নগরী ম্যানচেস্টার শহরের দুটি ক্লাব। হাসিকান্না, আনন্দ, অনূভুতি তাদের ফুটবল ঘিরে। কথিত আছে ডার্বির পর হেরে যাওয়া ক্লাবের সর্মথকরা রাগ করে বিপরীত ক্লাবের এলাকা এড়িয়ে চলেন। জয়ী সর্মথকরা মহিষের সিং রেখে আসেন পরাজিত ক্লাবের আঙিনায়। উচ্চস্বরে হর্ন বাজানো, গায়ে রং ছিটানো কতো কি করে জয়ের উৎসবে মাতোহারা হন তারা।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেই আগের দিন নেই। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন যেখানে রেখে গিয়েছেন তা আজ কেবল সোনায় মোড়ানো অতীত। নিজেদেরকে হারিয়ে খুঁজছেন ইউনাইটেডের তারা। ইংলিশ ফুটবলের অনযাতম সফল ক্লাবটি শেষ প্রিমিয়ার লিগ জিতেছে ২০১২-১৩ মৌসুমে। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় তো দূরের কথা, সেখানে তারা কোয়ালিফাইই করতে পারেনা এখন।
ফার্গুসন ২০১৩ শেষে চলে যাওয়ার পর ক্লাবটি আর আগের অবস্থানে শত চেস্টা করেও ফিরতে পারেনি।পরিবর্তন হয়েছে অসংখ্য কোচ, খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ। কিন্তু ফেরা হয়নি রাজসিক সেই অতীতে।
সে লক্ষেই স্পোর্তিং লিসবনের সফল কোচ রুবেন আমোরিম কে নিয়ে এসেছে ইউনাইটেড নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায়।
দায়িত্ব নিয়ে আমোরিম বলেছেন, যথেষ্ট সময় দিতে হবে তাকে। এবার ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের অবস্থা লিগে আরো খারাপ। তারা পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান করছেন ১৩ নম্বরে। সর্বশেষ দুটি ম্যাচেই হেরেছে। সিটির অবশ্য লিগে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
তবে দুই প্রতিবেশী এখন একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। একদল খুঁজছে তাদের বেশ কিছু বছর আগের ইতিহাস ঐতিহ্য। আর আরেকদল তাদের সাম্প্রতিক অকাতরেই ফেরাতে চাইছে।
আজ এই দুই প্রতিবেশীর লড়াই। লড়াই দুই কোচেরও। সেই লড়াইয়ে অবশ্য আমোরিম এগিয়ে আছেন। গুয়ার্দিওলার সাথে মুখোমুখি সর্বশেষ লড়াইয়ে তিনি ৪-১ গোলে জয়ী হয়েছিলেন। তবে দয়া দল ছিলো স্পোর্তিং লিসবন। তখন আমোরিম ওই পর্তুগীজ দলেরই কোচ। আর এখন ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের ডাগ আউট মাতাচ্ছেন।
আজকের ম্যাচটি অবশ্য দুইদলের জন্যই অনুপ্রেরণা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ হতে পারে।
কারন প্রতিবেশীর সাথে জিতে নিজ সর্মথকদের চাঙ্গা করার সুযোগ কেউই হারাতে চাইবেন না।
এখন অব্দি ম্যানচেষ্টারের দুই প্রতিবেশী ইউনাইটেড এবং সিটি ১৮০ বার প্রতিযোগীতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। তাতে জয়ের পাল্লা ভারী ইউনাইটেডের, তাদের জয় ৭৭ ম্যাচে। আর সিটির জয় ৫৫ ম্যাচে।
ম্যাচটি আজ রাত বাংলাদেশ সময় ১০:৩০ এ ম্যানচেষ্টার সিটির ঘরের মাঠ ইত্তিহাদে অনুষ্ঠিত হবে।