প্রিমিয়ার ক্রিকেটে লীগ
ঢাকা লীগের ২৪তম শিরোপা জয় করলো আবাহনী
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে ভাসল আবাহনী। মঙ্গলবার, (২৯ এপ্রিল ২০২৫) শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। প্রতিপক্ষের ২৪০ রান তারা পেরিয়ে গেছে ৫৬ বল বাকি থাকতে।
এবারের লীগে দুই দলের শেষ রাউন্ডের ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল ফাইনালে। যেখানে হাসি ফুটল আবাহনীর মুখে। হার দিয়ে আসর শুরু করা ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের সফলতম দলটি ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা ১৫ জয়ে ধরে রাখল মুকুট। সব মিলিয়ে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের শীর্ষ টুর্নামেন্টে আবাহনীর এটি ২৪তম শিরোপা। গত ২০১২-১৩ মৌসুমে লিস্ট ‘এ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর তাদের সপ্তম শিরোপা এটি, যার মধ্যে ২০১৯-২০ আসর হয়েছিল টি-২০ সংস্করণে। এই সময়ে অন্য কোনো দলের নেই একাধিক শিরোপাও। ঢাকার শীর্ষ ক্রিকেট লীগে এনিয়ে পঞ্চমবার শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক করল আবাহনী।
বিপরীতে মোহামেডানের শিরোপা ৯টি। তবে ঢাকা লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর কোনো শিরোপা জেতেনি মোহামেডান। সর্বশেষ ২০০৯-১০ মৌসুমে শিরোপা জিতেছে তারা।
শেষ লীগ ম্যাচে আবাহনীর জয়ের নায়ক মোসাদ্দেক। অফ স্পিনে ৩৯ রানে ২ উইকেট নেয়ার পরে রান তাড়ায় ৫ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৫ বলে ৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন অধিনায়ক।
অবদান রাখেন জিশান আলম ও মিঠুনেরও। তিনে নেমে ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৫৫ রান করেন জিশান। আর পাঁচে নেমে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মিঠুন।
মোহামেডানের দেয়া সহজ লক্ষ্যটা ৪০.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তাড়া করেছে আবাহনী। ৬ উইকেটের এই জয়ে তৃতীয়বার হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলেছে আকাশী-নীল জার্সিধারীরা।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ঘিরে সেই অর্থে তেমন উত্তেজনা ছিল না। মাঠের লড়াইটা হয়েছে পুরোপুরি একপেশে। টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মোহামেডান ২৪১ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই আবাহনীর ওপেনার শাহরিয়ার কমলকে (১) ফেরেন। এরপর পারভেজ ইমন ও জিসান আলম মিলে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। পারভেজ ২৮ রানে আউট হওয়ার পর মেহরবা হোসেন (১০) দ্রুত ফেরেন। জিসান অবশ্য ৫৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তাতে ১০৪ রানে চার উইকেট হারানোর পর মোসাদ্দেক হোসেন ও মিঠুন মিলে অবিচ্ছিন্ন ১৩৫ রানের জুটি গড়ে আবাহনীর জয় নিশ্চিত করেন।
মিঠুন ৬৯ বলে ৬৬ এবং মোসাদ্দেক ৬৫ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের ব্যাটিংয়ে ৪১তম ওভারের চতুর্থ বলে নাসুম আহমেদকে মিডউইকেট দিয়ে চার মেরে আবাহনীকে হ্যাটট্রিক শিরোপার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান মোসাদ্দেক। বল বাউন্ডারি লাইনে যেতেই আবাহনীর ড্রেসিংরুম থেকে দৌড়ে উইকেটে চলে আসেন বাকি ক্রিকেটাররা। স্মারক হিসেবে সংরক্ষণ করতে যে যার মতো স্ট্যাম্প তুলে নেন। আবাহনী যখন জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা, মোহামেডান তখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে ব্যস্ত। ঠিক তখনই উত্তেজনা ছড়ায় মাঠে। মোহামেডানের গ্যালারিতে থাকা বেশ কিছু দর্শক ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাহমুদউল্লাহ। দেয়াল টপকে তিনি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে ওঠে ভক্তের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান!
সকালে টস জিতে মোহামেডানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আবাহনী। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও তৌফিক খান তুষার (১৬) ৫০ রানের জুটির পর কিছুটা ছন্দ হারায় মোহামেডান। পরে রনি ফিরেন ৪৬ রানে । এরপর আনিসুল (১৫) ও ফরহাদ (৪২) আউট হলে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল গড়েন ১০০ রানে গুরুত্বপূর্ণ জুটি। কিন্তু এরপরও ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির ইনিংস থামে ৭ উইকেটে ২৪০ রানে। আরিফুল ও মাহমুদউল্লাহ দু’জনই খেলেন ৫০ রানের ইনিংস। শেষ দুই ওভারে আসে ১২ রান । আবাহনীর বোলারদের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয় ও মোসাদ্দেক সৈকত দুটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : মোহামেডান স্পোর্টিং ২৪০/৭ (রনি ৪৫, তৌফিক ১৬, আনিসুল ১৫, ফরহাদ ৪২, মাহমুদউল্লাহ ৫০, আরিফুল ৫০; মৃত্যুঞ্জয় ২/৪৬, মোসাদ্দেক ২/৩৯)।
আবাহনী ৪০.৪ ওভারে ২৪৩/৪ (পারভেজ ২৮, জিশান ৫৫, মেহরব ১০, মিঠুন ৬৬*, মোসাদ্দেক ৭৮*; নাসুম ২/৫৯)।
ম্যাচসেরা : মোসাদ্দেক হোসেন।
প্রিমিয়ার ক্রিকেটে লীগ
ঢাকা লীগের ২৪তম শিরোপা জয় করলো আবাহনী
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে ভাসল আবাহনী। মঙ্গলবার, (২৯ এপ্রিল ২০২৫) শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। প্রতিপক্ষের ২৪০ রান তারা পেরিয়ে গেছে ৫৬ বল বাকি থাকতে।
এবারের লীগে দুই দলের শেষ রাউন্ডের ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল ফাইনালে। যেখানে হাসি ফুটল আবাহনীর মুখে। হার দিয়ে আসর শুরু করা ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের সফলতম দলটি ঘুরে দাঁড়িয়ে টানা ১৫ জয়ে ধরে রাখল মুকুট। সব মিলিয়ে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের শীর্ষ টুর্নামেন্টে আবাহনীর এটি ২৪তম শিরোপা। গত ২০১২-১৩ মৌসুমে লিস্ট ‘এ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর তাদের সপ্তম শিরোপা এটি, যার মধ্যে ২০১৯-২০ আসর হয়েছিল টি-২০ সংস্করণে। এই সময়ে অন্য কোনো দলের নেই একাধিক শিরোপাও। ঢাকার শীর্ষ ক্রিকেট লীগে এনিয়ে পঞ্চমবার শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক করল আবাহনী।
বিপরীতে মোহামেডানের শিরোপা ৯টি। তবে ঢাকা লিগ লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর কোনো শিরোপা জেতেনি মোহামেডান। সর্বশেষ ২০০৯-১০ মৌসুমে শিরোপা জিতেছে তারা।
শেষ লীগ ম্যাচে আবাহনীর জয়ের নায়ক মোসাদ্দেক। অফ স্পিনে ৩৯ রানে ২ উইকেট নেয়ার পরে রান তাড়ায় ৫ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৫ বলে ৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন অধিনায়ক।
অবদান রাখেন জিশান আলম ও মিঠুনেরও। তিনে নেমে ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৫৫ রান করেন জিশান। আর পাঁচে নেমে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মিঠুন।
মোহামেডানের দেয়া সহজ লক্ষ্যটা ৪০.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তাড়া করেছে আবাহনী। ৬ উইকেটের এই জয়ে তৃতীয়বার হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলেছে আকাশী-নীল জার্সিধারীরা।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ঘিরে সেই অর্থে তেমন উত্তেজনা ছিল না। মাঠের লড়াইটা হয়েছে পুরোপুরি একপেশে। টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় মোহামেডান ২৪১ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই আবাহনীর ওপেনার শাহরিয়ার কমলকে (১) ফেরেন। এরপর পারভেজ ইমন ও জিসান আলম মিলে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। পারভেজ ২৮ রানে আউট হওয়ার পর মেহরবা হোসেন (১০) দ্রুত ফেরেন। জিসান অবশ্য ৫৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। তাতে ১০৪ রানে চার উইকেট হারানোর পর মোসাদ্দেক হোসেন ও মিঠুন মিলে অবিচ্ছিন্ন ১৩৫ রানের জুটি গড়ে আবাহনীর জয় নিশ্চিত করেন।
মিঠুন ৬৯ বলে ৬৬ এবং মোসাদ্দেক ৬৫ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের ব্যাটিংয়ে ৪১তম ওভারের চতুর্থ বলে নাসুম আহমেদকে মিডউইকেট দিয়ে চার মেরে আবাহনীকে হ্যাটট্রিক শিরোপার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান মোসাদ্দেক। বল বাউন্ডারি লাইনে যেতেই আবাহনীর ড্রেসিংরুম থেকে দৌড়ে উইকেটে চলে আসেন বাকি ক্রিকেটাররা। স্মারক হিসেবে সংরক্ষণ করতে যে যার মতো স্ট্যাম্প তুলে নেন। আবাহনী যখন জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা, মোহামেডান তখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে ব্যস্ত। ঠিক তখনই উত্তেজনা ছড়ায় মাঠে। মোহামেডানের গ্যালারিতে থাকা বেশ কিছু দর্শক ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাহমুদউল্লাহ। দেয়াল টপকে তিনি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে ওঠে ভক্তের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান!
সকালে টস জিতে মোহামেডানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আবাহনী। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও তৌফিক খান তুষার (১৬) ৫০ রানের জুটির পর কিছুটা ছন্দ হারায় মোহামেডান। পরে রনি ফিরেন ৪৬ রানে । এরপর আনিসুল (১৫) ও ফরহাদ (৪২) আউট হলে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল গড়েন ১০০ রানে গুরুত্বপূর্ণ জুটি। কিন্তু এরপরও ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির ইনিংস থামে ৭ উইকেটে ২৪০ রানে। আরিফুল ও মাহমুদউল্লাহ দু’জনই খেলেন ৫০ রানের ইনিংস। শেষ দুই ওভারে আসে ১২ রান । আবাহনীর বোলারদের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয় ও মোসাদ্দেক সৈকত দুটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : মোহামেডান স্পোর্টিং ২৪০/৭ (রনি ৪৫, তৌফিক ১৬, আনিসুল ১৫, ফরহাদ ৪২, মাহমুদউল্লাহ ৫০, আরিফুল ৫০; মৃত্যুঞ্জয় ২/৪৬, মোসাদ্দেক ২/৩৯)।
আবাহনী ৪০.৪ ওভারে ২৪৩/৪ (পারভেজ ২৮, জিশান ৫৫, মেহরব ১০, মিঠুন ৬৬*, মোসাদ্দেক ৭৮*; নাসুম ২/৫৯)।
ম্যাচসেরা : মোসাদ্দেক হোসেন।