বাংলাদেশের মেয়েদের দক্ষিণ এশিয়া ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতার পিছনে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অবদান অনস্বিকার্য। দীর্ঘদিনের নিরলস প্রচেষ্টায় এসেছে এমন সাফল্য।
রাতে ট্রফি নিয়ে উল্লাসের ফাঁকে কাঠমান্ডুর হোটেল থেকে ফোনে কোচ ছোটন জানান, আগে তো কোনও সময় সিনিয়রদের আসরে শিরোপা জেতা হয়নি। এবার অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হলাম। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব এখন আমাদের দখলে। এই ভালো লাগাটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। জানতাম আমাদের মেয়েরা নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবে। তাদের ওপর বিশ্বাস ছিল। কেননা ওরা আমারই হাতে গড়া। সাবিনা-কৃষ্ণারা কথার প্রতিদান মাঠে দিয়েছে। আজ সে কারণেই আমরা সাফে চ্যাম্পিয়ন।
কোচ ছোটন বলেন, আমাদের দল আগের চেয়ে পরিপক্ক। আগে ওরা বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলে নিজেদের এখানে নিয়ে এসেছে। সাবিনা ছাড়া সবারই বয়স ২০ এর আশেপাশে। ওদের যে অভিজ্ঞতা তাতে যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আমরা কিন্তু মালয়েশিয়াকে নিজেদের মাঠে হারিয়েছি। তখন থেকেই আমাদের আত্মবিশ্বাসের লেভেল বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের কোচ বলেন, আমার ঈদের চেয়ে বেশি আনন্দ লাগছে। কাঠমান্ডুর ১৬ হাজার দর্শকদের সামনে বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে তা প্রশংসনীয়। অনেকে বলেছে দল চাপের মুখে পড়বে, ভেঙে পড়বে; কিন্তু হয়েছে উল্টো। আমাদের মেয়েরা প্রমাণ করেছে তা কঠিন অবস্থায় ম্যাচ জয় করতে পারে। পারে দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতেও।
‘২০০৯ সালে যখন মেয়েদের কোচ হয়েছি তখন বন্ধু-বান্ধবসহ অনেকেই টিটকারি-টিপ্পনী কেটেছে। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। সেটা কানে তুলিনি। ধৈর্য ধরেছি, পরিশ্রম করে গেছি। এতদিন যারা টিটকারি মারতো আজ তারাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এছাড়া আমি কোচিংয়ে আসার আগে ঢাকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি দল এসেছিল। আমি গ্যালারিতে বসে তখন দেখেছিলাম আমাদের দল তাদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। তখন থেকে মনে জেদ চেপে যায়। যদি কোনও সময় সুযোগ পাই তাহলে মেয়েদের কোচ হবো। সেই কথা এখনও মনে পড়ে। সেই জেদ আমাকে এতদূর এনেছে।’
গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, তখন মেয়েরা ফুটবল ছাড়াও ভলিবল, হ্যান্ডবল খেলতো। আমি তাদের বলেছিলাম সাফল্য পেতে হলে একটি খেলাতে মনোযোগ দিতে। মাঠে ছেলে না মেয়ে খেলছে তা দেখবো না। শুধু পারফরম্যান্স দেখবো। ওরা আমার কথা শুনেছে। বর্তমান ফুটবল ফেডারেশনও মেয়েদের খেলায় জোর দিয়েছে। অনেকদিন ধরেই দীর্ঘমেয়াদে আবাসিক ক্যাম্প করছে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিও সাহায্য করছে। সবার চেষ্টায় আজ আমাদের এই সাফল্য।
বাংলাদেশের এই সাফল্য ধারাবাহিক খেলার ফসল। আমাদের মেয়েরা বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে শিখে আসছে। এখন ওরা পরিপক্ক কিংবা অভিজ্ঞ হয়ে ভারত কিংবা নেপালের বিপক্ষে সাবলীল খেলেছে। এবার যেমন ভারত ম্যাচে জয়ের পর মনে হয়েছে ট্রফি আমরা জিততে পারবো। শারীরিক-মানসিক দিক দিয়ে আমরা এগিয়ে ছিলাম। আগে ওদের সামনে পেলে ভয় পেতো। এখন ভারত ও নেপাল দলকে মনে হয়েছে উল্টো আমাদের দেখে ভয় পেয়েছে!
‘বয়সভিত্তিক দল থেকে ওরা গোল করে আসছে। আমাদের পরিকল্পনা তেমন ছিল। আমরা সেটপিস কিংবা সব পজিশন থেকে গোল করার জন্য অনুশীলন করি। সেভাবেই ওরা বেড়ে উঠেছে। সাবিনার পজিশন বদলে খেলাটা পরিকল্পনার অংশ। মনিকা-মারিয়ার সঙ্গে সাবিনা যেন বল বানিয়ে দিতে পারে। সেই জন্য ওকে নম্বর ১০ পজিশনে খেলানো হয়েছে। ওর জায়গায় ও সফল হয়েছে। এখন মেয়েরা পরিপক্ক হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অবশ্যই আরও ওপরের দিকে দেখতে চাই ওদের। সামনের দিকে এশিয়ান পর্যায়ে সম্মানজনক অবস্থায় থাকলে পারলে নিজের কাছে ভালো লাগবে।
মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
বাংলাদেশের মেয়েদের দক্ষিণ এশিয়া ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতার পিছনে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অবদান অনস্বিকার্য। দীর্ঘদিনের নিরলস প্রচেষ্টায় এসেছে এমন সাফল্য।
রাতে ট্রফি নিয়ে উল্লাসের ফাঁকে কাঠমান্ডুর হোটেল থেকে ফোনে কোচ ছোটন জানান, আগে তো কোনও সময় সিনিয়রদের আসরে শিরোপা জেতা হয়নি। এবার অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হলাম। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব এখন আমাদের দখলে। এই ভালো লাগাটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। জানতাম আমাদের মেয়েরা নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে বহুদূর এগিয়ে যেতে পারবে। তাদের ওপর বিশ্বাস ছিল। কেননা ওরা আমারই হাতে গড়া। সাবিনা-কৃষ্ণারা কথার প্রতিদান মাঠে দিয়েছে। আজ সে কারণেই আমরা সাফে চ্যাম্পিয়ন।
কোচ ছোটন বলেন, আমাদের দল আগের চেয়ে পরিপক্ক। আগে ওরা বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলে নিজেদের এখানে নিয়ে এসেছে। সাবিনা ছাড়া সবারই বয়স ২০ এর আশেপাশে। ওদের যে অভিজ্ঞতা তাতে যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আমরা কিন্তু মালয়েশিয়াকে নিজেদের মাঠে হারিয়েছি। তখন থেকেই আমাদের আত্মবিশ্বাসের লেভেল বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের কোচ বলেন, আমার ঈদের চেয়ে বেশি আনন্দ লাগছে। কাঠমান্ডুর ১৬ হাজার দর্শকদের সামনে বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে তা প্রশংসনীয়। অনেকে বলেছে দল চাপের মুখে পড়বে, ভেঙে পড়বে; কিন্তু হয়েছে উল্টো। আমাদের মেয়েরা প্রমাণ করেছে তা কঠিন অবস্থায় ম্যাচ জয় করতে পারে। পারে দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতেও।
‘২০০৯ সালে যখন মেয়েদের কোচ হয়েছি তখন বন্ধু-বান্ধবসহ অনেকেই টিটকারি-টিপ্পনী কেটেছে। তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। সেটা কানে তুলিনি। ধৈর্য ধরেছি, পরিশ্রম করে গেছি। এতদিন যারা টিটকারি মারতো আজ তারাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এছাড়া আমি কোচিংয়ে আসার আগে ঢাকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি দল এসেছিল। আমি গ্যালারিতে বসে তখন দেখেছিলাম আমাদের দল তাদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। তখন থেকে মনে জেদ চেপে যায়। যদি কোনও সময় সুযোগ পাই তাহলে মেয়েদের কোচ হবো। সেই কথা এখনও মনে পড়ে। সেই জেদ আমাকে এতদূর এনেছে।’
গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, তখন মেয়েরা ফুটবল ছাড়াও ভলিবল, হ্যান্ডবল খেলতো। আমি তাদের বলেছিলাম সাফল্য পেতে হলে একটি খেলাতে মনোযোগ দিতে। মাঠে ছেলে না মেয়ে খেলছে তা দেখবো না। শুধু পারফরম্যান্স দেখবো। ওরা আমার কথা শুনেছে। বর্তমান ফুটবল ফেডারেশনও মেয়েদের খেলায় জোর দিয়েছে। অনেকদিন ধরেই দীর্ঘমেয়াদে আবাসিক ক্যাম্প করছে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিও সাহায্য করছে। সবার চেষ্টায় আজ আমাদের এই সাফল্য।
বাংলাদেশের এই সাফল্য ধারাবাহিক খেলার ফসল। আমাদের মেয়েরা বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে শিখে আসছে। এখন ওরা পরিপক্ক কিংবা অভিজ্ঞ হয়ে ভারত কিংবা নেপালের বিপক্ষে সাবলীল খেলেছে। এবার যেমন ভারত ম্যাচে জয়ের পর মনে হয়েছে ট্রফি আমরা জিততে পারবো। শারীরিক-মানসিক দিক দিয়ে আমরা এগিয়ে ছিলাম। আগে ওদের সামনে পেলে ভয় পেতো। এখন ভারত ও নেপাল দলকে মনে হয়েছে উল্টো আমাদের দেখে ভয় পেয়েছে!
‘বয়সভিত্তিক দল থেকে ওরা গোল করে আসছে। আমাদের পরিকল্পনা তেমন ছিল। আমরা সেটপিস কিংবা সব পজিশন থেকে গোল করার জন্য অনুশীলন করি। সেভাবেই ওরা বেড়ে উঠেছে। সাবিনার পজিশন বদলে খেলাটা পরিকল্পনার অংশ। মনিকা-মারিয়ার সঙ্গে সাবিনা যেন বল বানিয়ে দিতে পারে। সেই জন্য ওকে নম্বর ১০ পজিশনে খেলানো হয়েছে। ওর জায়গায় ও সফল হয়েছে। এখন মেয়েরা পরিপক্ক হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অবশ্যই আরও ওপরের দিকে দেখতে চাই ওদের। সামনের দিকে এশিয়ান পর্যায়ে সম্মানজনক অবস্থায় থাকলে পারলে নিজের কাছে ভালো লাগবে।