এ এ জাফর ইকবাল
করোনা সংকট এবং তার পরপরই শহরগুলোতে ডেঙ্গুর আক্রমণ তৈরি করেছিল অর্থ সংকট। এই অর্থ সংকটের কারণে বিপুলসংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্ত শহর ছেড়ে গ্রামমুখী হয়েছিলেন অনটন ও অর্থসংকট থেকে সাময়িক রেহাই পাওয়ার জন্য। তাদের পরিবার-পরিজনবর্গ এই সময় গ্রামে গিয়েছিল আদিকালের পুরুষের ভিটার সন্ধানে। তাদের ছেলে-মেয়েরাও পরিবারের সঙ্গে গ্রামে গিয়েছিল এবং দীর্ঘদিন গ্রামে থাকতে হবে ভেবেই ভর্তি হয়েছিল স্কুল-কলেজগুলোতে। সরগরম হয়ে উঠেছিল গ্রাম। স্কুল-কলেজগুলোতে এসেছিল প্রত্যাশিত প্রাণবন্ত পরিবেশ। এখন সময় পাল্টেছে। শহরের অর্থনীতি আবারো পূর্বাবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ফলে যারা গ্রামে সাময়িক আশ্রয় পেতেছিল তারাও পরিবারকে সঙ্গে করে আবার শহরমুখী হতে শুরু করেছে। গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুরু হয়েছে ভাটার টান। হয়তো অচিরেই তারা পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে বাধ্য হবে।
এতে ক্ষতি হলো কার? কী ক্ষতি হলো? কী কাজে লাগানো যেত ক্ষতিভেদ করে শুভদিনের সুযোগ? অনেকগুলো প্রশ্ন। সব প্রশ্নের জবাব একটাই। গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থাকে অবলম্বন করে গ্রামকে শহরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমানোর একটি সুযোগ এসেছিল যা পাল্টে দিতে পারত দেশের সামগ্রিক সামাজিক অবস্থা এবং গ্রামের পরিবেশগত উন্নয়ন।
এই দুর্যোগের মুহূর্তে গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো ভালো শিক্ষক নিয়োগ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার সুলভ ব্যবস্থা যদি করা যেত তাহলে অনায়াসে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের গ্রামেই রেখে দিতেন।
শহরে ইট-কাঠ দিয়ে দালান তৈরির মাধ্যমে আধুনিক স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা যায়। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি শিক্ষাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে এমন ধরনের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কিন্তু ধনাঢ্যদের এই চেষ্টা মুক্ত আকাশের সন্ধান দিতে পারেনি ছাত্র-ছাত্রীদের এবং একইসঙ্গে হাত-পা ছড়িয়ে খেলাধুলা করার মতো পরিবেশও দেয়া সম্ভব হয়নি।
অর্থ হলেই সব হয় না। সুযোগেরও প্রয়োজন আছে। এ সুযোগ গ্রামে আছে, শহরে নেই। তাছাড়া শিক্ষাব্যবস্থাকে সাশ্রয়ী করতে হলে অনুকরণীয় যে পরিবেশ প্রয়োজন, তা-ও এখন শুধু গ্রামেই আছে।
আমরা গ্রামকে শহরের কাছে নিতে চাই। গ্রামের আর্থিক দৈনতা কাটিয়ে ওঠার জন্য সবাই সময় চিন্তা করি কী করে আর্থিক সহায়তা দিয়ে গ্রামকে শহরের কাছাকাছি নেয়া যায়। কিন্তু কেউ কখনো ভেবে দেখি না যে, আর্থিক দৈনতা দূর হলেও সামাজিক দৈনতা কমানো না গেলে গ্রাম শহরের দূরত্ব কমানো সম্ভব নয়।
গ্রামে এক-দুইটা ভালো স্কুল হলেই গ্রাম শহরের দূরত্ব সহজে দূর হওয়ার নয়। ভালো রাস্তাঘাট করলে যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত হয় বটে, তা সার্বিক সামাজিক গ্রামীণ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থাই পারে এই ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে
গ্রামে এক-দুইটা ভালো স্কুল হলেই গ্রাম শহরের দূরত্ব সহজে দূর হওয়ার নয়। ভালো রাস্তাঘাট করলে যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত হয় বটে, তা সার্বিক সামাজিক গ্রামীণ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থাই পারে এই ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে এবং সে সুযোগটাই এসেছিল করোনা ও ডেঙ্গুর ওপর ভর করে।
শহরের অসংখ্য বেসরকারি স্কুল এই সংকটকালে ছাত্র-ছাত্রীর অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চাকরি হারিয়ে অসহায় শিক্ষক শিক্ষিকারা কেউ গ্রামে গিয়েছিলেন আশ্রয় পাততে আর অনেকে শহরে ঘরকুনো হয়ে সময় কাটিয়েছেন ভবিষ্যতের সুদিনের আশায়। সেই সময় ভালো শিক্ষকেরও অভাব হতো না গ্রামে। অভাব একটাই ছিল এবং তা হলো সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ।
উদ্যোগ নিতে পারতেন সরকার। উদ্যোগ নেয়ার সুযোগ ছিল ধনাঢ্য সমাজপতিদেরও। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুযোগও হাতছাড়া হয়ে গেছে।
গ্রামের স্কুলগুলোতে তৃতীয় শ্রেণীতে পাশ করা ম্যাট্রিক আর বিএ পাশ শিক্ষকরা ভালো আর সৃজনশীল কিছু দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং এদের কাছে ভালো কিছু আশা করা উচিত নয়। প্রয়োজন ছিল গ্রামে গ্রামে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুল গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে স্কুলগুলোতে সাশ্রয়ী হোস্টেলের ব্যবস্থা করা। প্রতি গ্রামে না হোক অন্তত প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রয়োজন ছিল এক বা একাধিক রেসিডেনশিয়াল মডেল একাডেমি গড়ে তোলা সরকারি সহযোগিতায়।
সুযোগটাকে যদি কাজে লাগানো হতো, তাহলে পরিবর্তন আসতো গ্রামেই সামাজিক অবস্থায় শিক্ষকতা করার প্রয়োজনে কিছু শিক্ষিত লোক গ্রামে বসতি স্থাপন করত এবং অভিভাবক যারা গ্রামে সন্তানদের রেখে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থা নিত, তারাও সময়-অসময়ে গ্রামে যাতায়াত করত। হয়তো বা ধনী নাগরিকরা এটাকে তেমন আমল দিত না। কিন্তু যারা গরিব কিংবা সীমিত সঙ্গতির তারা ভাবতে বাধ্য হতো এই প্রক্রিয়াই তাদের ভবিষ্যত বিনির্মাণের একমাত্র পথ।
অর্থ দিয়ে গ্রামকে শহর বানানো যাবে না। পাঁচ মৌলিক অধিকারের অন্যতম শিক্ষা খাতকে যদি প্রয়োজনমতো উন্নত ও আধুনিক করা সম্ভব হয়, একমাত্র তাহলেই শহরকে আসতে হবে গ্রামের কাছে। মুক্ত বাতাস, উন্মুক্ত আকাশ এবং পর্যাপ্ত দৌড়ঝাঁপ করার মাঠ যখন আমরা আমাদের কিশোর-কিশোরীদের উপহার দিতে পারব, তখন দলবদ্ধভাবেই তাদের মাঝে ফিরে আসবে এক সজীব ও সুশৃঙ্খল সামাজিক জীবন। এবং এইটাই আমাদের এখন সবচাইতে বেশি প্রয়োজন।
সুযোগ এসেছিল। আমরা সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলাম না। কেউ উদ্যোগ নিল না। যারা সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন তারাও গভীরে গিয়ে ভাবলেন না। বারংবার এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক, তা আমরা চাই না। তবে এ পরিস্থিতিতে আমাদের সুযোগসন্ধানী যে হতে হবে এটা নিশ্চিত।
পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল অবশ্যই উন্নতির মাইলস্টোন। কিন্তু শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাপূর্ণ সামাজিক উন্নয়ন সুযোগমতো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যদি সুযোগসন্ধানী না হই তাহলে, আমাদের অন্ধকারে পথ হাতড়াতে হবে দীর্ঘকাল। কারণ, সামাজিক সঙ্গতির অভাব আমাদের উন্নতি নামক অন্ধকারেই আটকে রাখবে।
[লেখক : সাবেক ব্যাংকার]
এ এ জাফর ইকবাল
রোববার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
করোনা সংকট এবং তার পরপরই শহরগুলোতে ডেঙ্গুর আক্রমণ তৈরি করেছিল অর্থ সংকট। এই অর্থ সংকটের কারণে বিপুলসংখ্যক নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্ত শহর ছেড়ে গ্রামমুখী হয়েছিলেন অনটন ও অর্থসংকট থেকে সাময়িক রেহাই পাওয়ার জন্য। তাদের পরিবার-পরিজনবর্গ এই সময় গ্রামে গিয়েছিল আদিকালের পুরুষের ভিটার সন্ধানে। তাদের ছেলে-মেয়েরাও পরিবারের সঙ্গে গ্রামে গিয়েছিল এবং দীর্ঘদিন গ্রামে থাকতে হবে ভেবেই ভর্তি হয়েছিল স্কুল-কলেজগুলোতে। সরগরম হয়ে উঠেছিল গ্রাম। স্কুল-কলেজগুলোতে এসেছিল প্রত্যাশিত প্রাণবন্ত পরিবেশ। এখন সময় পাল্টেছে। শহরের অর্থনীতি আবারো পূর্বাবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ফলে যারা গ্রামে সাময়িক আশ্রয় পেতেছিল তারাও পরিবারকে সঙ্গে করে আবার শহরমুখী হতে শুরু করেছে। গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুরু হয়েছে ভাটার টান। হয়তো অচিরেই তারা পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে বাধ্য হবে।
এতে ক্ষতি হলো কার? কী ক্ষতি হলো? কী কাজে লাগানো যেত ক্ষতিভেদ করে শুভদিনের সুযোগ? অনেকগুলো প্রশ্ন। সব প্রশ্নের জবাব একটাই। গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থাকে অবলম্বন করে গ্রামকে শহরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমানোর একটি সুযোগ এসেছিল যা পাল্টে দিতে পারত দেশের সামগ্রিক সামাজিক অবস্থা এবং গ্রামের পরিবেশগত উন্নয়ন।
এই দুর্যোগের মুহূর্তে গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো ভালো শিক্ষক নিয়োগ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের থাকা-খাওয়ার সুলভ ব্যবস্থা যদি করা যেত তাহলে অনায়াসে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের গ্রামেই রেখে দিতেন।
শহরে ইট-কাঠ দিয়ে দালান তৈরির মাধ্যমে আধুনিক স্কুল-কলেজ গড়ে তোলা যায়। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি শিক্ষাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়ে এমন ধরনের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কিন্তু ধনাঢ্যদের এই চেষ্টা মুক্ত আকাশের সন্ধান দিতে পারেনি ছাত্র-ছাত্রীদের এবং একইসঙ্গে হাত-পা ছড়িয়ে খেলাধুলা করার মতো পরিবেশও দেয়া সম্ভব হয়নি।
অর্থ হলেই সব হয় না। সুযোগেরও প্রয়োজন আছে। এ সুযোগ গ্রামে আছে, শহরে নেই। তাছাড়া শিক্ষাব্যবস্থাকে সাশ্রয়ী করতে হলে অনুকরণীয় যে পরিবেশ প্রয়োজন, তা-ও এখন শুধু গ্রামেই আছে।
আমরা গ্রামকে শহরের কাছে নিতে চাই। গ্রামের আর্থিক দৈনতা কাটিয়ে ওঠার জন্য সবাই সময় চিন্তা করি কী করে আর্থিক সহায়তা দিয়ে গ্রামকে শহরের কাছাকাছি নেয়া যায়। কিন্তু কেউ কখনো ভেবে দেখি না যে, আর্থিক দৈনতা দূর হলেও সামাজিক দৈনতা কমানো না গেলে গ্রাম শহরের দূরত্ব কমানো সম্ভব নয়।
গ্রামে এক-দুইটা ভালো স্কুল হলেই গ্রাম শহরের দূরত্ব সহজে দূর হওয়ার নয়। ভালো রাস্তাঘাট করলে যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত হয় বটে, তা সার্বিক সামাজিক গ্রামীণ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থাই পারে এই ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে
গ্রামে এক-দুইটা ভালো স্কুল হলেই গ্রাম শহরের দূরত্ব সহজে দূর হওয়ার নয়। ভালো রাস্তাঘাট করলে যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত হয় বটে, তা সার্বিক সামাজিক গ্রামীণ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থাই পারে এই ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে এবং সে সুযোগটাই এসেছিল করোনা ও ডেঙ্গুর ওপর ভর করে।
শহরের অসংখ্য বেসরকারি স্কুল এই সংকটকালে ছাত্র-ছাত্রীর অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। চাকরি হারিয়ে অসহায় শিক্ষক শিক্ষিকারা কেউ গ্রামে গিয়েছিলেন আশ্রয় পাততে আর অনেকে শহরে ঘরকুনো হয়ে সময় কাটিয়েছেন ভবিষ্যতের সুদিনের আশায়। সেই সময় ভালো শিক্ষকেরও অভাব হতো না গ্রামে। অভাব একটাই ছিল এবং তা হলো সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ।
উদ্যোগ নিতে পারতেন সরকার। উদ্যোগ নেয়ার সুযোগ ছিল ধনাঢ্য সমাজপতিদেরও। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুযোগও হাতছাড়া হয়ে গেছে।
গ্রামের স্কুলগুলোতে তৃতীয় শ্রেণীতে পাশ করা ম্যাট্রিক আর বিএ পাশ শিক্ষকরা ভালো আর সৃজনশীল কিছু দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং এদের কাছে ভালো কিছু আশা করা উচিত নয়। প্রয়োজন ছিল গ্রামে গ্রামে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুল গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে স্কুলগুলোতে সাশ্রয়ী হোস্টেলের ব্যবস্থা করা। প্রতি গ্রামে না হোক অন্তত প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রয়োজন ছিল এক বা একাধিক রেসিডেনশিয়াল মডেল একাডেমি গড়ে তোলা সরকারি সহযোগিতায়।
সুযোগটাকে যদি কাজে লাগানো হতো, তাহলে পরিবর্তন আসতো গ্রামেই সামাজিক অবস্থায় শিক্ষকতা করার প্রয়োজনে কিছু শিক্ষিত লোক গ্রামে বসতি স্থাপন করত এবং অভিভাবক যারা গ্রামে সন্তানদের রেখে পড়াশোনা করানোর ব্যবস্থা নিত, তারাও সময়-অসময়ে গ্রামে যাতায়াত করত। হয়তো বা ধনী নাগরিকরা এটাকে তেমন আমল দিত না। কিন্তু যারা গরিব কিংবা সীমিত সঙ্গতির তারা ভাবতে বাধ্য হতো এই প্রক্রিয়াই তাদের ভবিষ্যত বিনির্মাণের একমাত্র পথ।
অর্থ দিয়ে গ্রামকে শহর বানানো যাবে না। পাঁচ মৌলিক অধিকারের অন্যতম শিক্ষা খাতকে যদি প্রয়োজনমতো উন্নত ও আধুনিক করা সম্ভব হয়, একমাত্র তাহলেই শহরকে আসতে হবে গ্রামের কাছে। মুক্ত বাতাস, উন্মুক্ত আকাশ এবং পর্যাপ্ত দৌড়ঝাঁপ করার মাঠ যখন আমরা আমাদের কিশোর-কিশোরীদের উপহার দিতে পারব, তখন দলবদ্ধভাবেই তাদের মাঝে ফিরে আসবে এক সজীব ও সুশৃঙ্খল সামাজিক জীবন। এবং এইটাই আমাদের এখন সবচাইতে বেশি প্রয়োজন।
সুযোগ এসেছিল। আমরা সুযোগটি কাজে লাগাতে পারলাম না। কেউ উদ্যোগ নিল না। যারা সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন তারাও গভীরে গিয়ে ভাবলেন না। বারংবার এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক, তা আমরা চাই না। তবে এ পরিস্থিতিতে আমাদের সুযোগসন্ধানী যে হতে হবে এটা নিশ্চিত।
পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল অবশ্যই উন্নতির মাইলস্টোন। কিন্তু শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাপূর্ণ সামাজিক উন্নয়ন সুযোগমতো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যদি সুযোগসন্ধানী না হই তাহলে, আমাদের অন্ধকারে পথ হাতড়াতে হবে দীর্ঘকাল। কারণ, সামাজিক সঙ্গতির অভাব আমাদের উন্নতি নামক অন্ধকারেই আটকে রাখবে।
[লেখক : সাবেক ব্যাংকার]