মাছুম বিল্লাহ
যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। দেশের ওপর মার্কিন ভিসানীতিতে কোন পক্ষ বা কোন দলের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমেরিকা তার নিজের স্বার্থে যে কোন সময় যে কোন দেশে নিষেধাজ্ঞাসহ বহু ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। তাদের সেই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল রয়েছে, সামর্থ্য আছে। যে কোন সরকারের সময় তারা যে কোন কিছু করতে পারে। চীনের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রতিযোগিতার কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা কাজ করে যাচ্ছে। আবার চীন থেকে প্রচুর নাগরিক বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আমেরিকা যাচ্ছেন, থাকছেন, প্রচুর ছাত্রছাত্রী যাচ্ছেন, পড়াশোনা করছেন আমেরিকায়। সেখানে আমাদের তো কথাই নেই। তাছাড়া যারা ভিসানীতির আওতায় আসবেন তারা আমেরিকায় না গেলেও তাদের সন্তান ও ভবিষ্যৎ বংশধরদের আমেরিকায় যেতে হবে। তাদের জন্যও এই ভিসানীতি এক অশনিসংকেত। অঘোষিতভাবে মার্কিনভুক্ত অন্য দেশগুলো যেমন- অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাও কিন্তু ভিসীনীতির আওতাভুক্ত দেশগুলোকে প্রায় একই নজরে দেখবে। অতএব এর ভবিষ্যৎ কোনদিকে যাবে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারে না, তবে এটি বলা যায় জনগণের জন্য দুঃসংবাদ একটির পর একটি যেমন আসছে তেমনই হয়তো আসতে থাকবে। জনগণ নিয়ে যেহেতু কোন রাজনৈতিক দলেরই তেমন কোন চিন্তা নেই তাই তারা সবাই ভিসানীতিকে অন্যভাবে দেখছেন।
এটি যেমন একদিকে সত্য যে, তাবতবিশ্বের রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী সবাই কিন্তু সঙ্গত কারণেই আমেরিকা যেতে চান, বসবাস করতে চান এবং করছেনও। অনেকেই চাকরি জীবন শেষে সেখানকার নির্মল বায়ুর স্বাদ নিতে চান। সমস্ত বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে এখনকার সামাজিক নিরাপত্তা, থাকার বিভিন্ন সুবিধা সত্যিই আলাদা। আমেরিকাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী, বিজ্ঞানী, শিক্ষক সবাইকে স্বাগত জানায়। এ ধরনের পরিবেশ ও অবস্থা কিন্তু শক্তিধর দেশ রাশিয়া বা চীনে নেই। উন্নত ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশ জাপানেও নেই। কজন লোক জাপান, রাশিয়া বা চীনে বাস করার জন্য যান? সবার গতি একদিকে, সেটি হচ্ছে আমেরিকা।
গ্রেট ব্রিটেনের অবস্থা তো অনেক বছর আগে থেকেই খারাপ হতে শুরু করেছে। তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করে ব্যবসার জন্য। আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আমেরিকা যাওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন কেন? আমাদের দেশে যত ভালো রেজাল্টই করুক না কেন তাদের কোন নিশ্চয়তা নেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেন যেটি তাদের আশা থাকে। কারণ সেখানে বহু প্যারামিটার কাজ করে। আবার শিক্ষক হলেও তারপর কী কী তাদের ফেস করতে হয় সেগুলো আমরা সবাই জানি। অতএব, তারা আটলান্টিকের ওপারে পাড়ি জমাতে চান। বড় কোন কাজ না পেলেও জীবন চলে যায় শান্তিতে। আমাদের যদিও ব্রেইন ড্রেনের কারণে পরোক্ষ ক্ষতি হয় কিন্তু দেশ কিছু ডলারও তো পায়। ভিসানীতির কারণে কিন্তু সবই কঠিন হয়ে পড়লো। এখন এ ধরনের শিক্ষার্থীদেরও ভিসা পেতে ভোগান্তি হতে পারে। এই নীতির প্রভাব রাজনীতির মাঠ ছাপিয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের ওপর পড়বে যা এ দেশের সতের কোটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে ফেলবে। এই ভিসানীতি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকেও প্রভাবিত করবে।
দায়িত্বশীল পদে থেকে অনেকে বলছেন, ‘মার্কিন ভিসানীতিতে আমরা বিচলিত নই’। তখন মনে হয় এসব বলে তারা জনসাধারণের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছেন। আমরা তো জানি যখন বাজারে আলু পাওয়া যায় না। আলুর কেজি ষাট টাকা, গরিবের প্রোটিন ডিম বাজারে দুষ্পাপ্য এবং আলুর কেজি ষাট টাকা তাতে আপনারা কেউ বিচলিত নন। ঢাকা শহর এক সপ্তাহ পানির নিচে থাকে তাতে আপনারা বিচলিত নন। পাঁচ টাকার সবজি চাঁদাবাজি আর সিন্ডিকেটের কারণে পঞ্চাশ টাকা তাতে আপনারা বিচলিত নন। হাসাপাতালে সাধারণ মানুষে কেনা চিকিৎসা নেই তাতে আপনারা বিচলিত নন। ডেঙ্গুতে মৃত্যুসংখ্য হাজার খানেকের কাছাকাছি পৌঁছেছে, আপানার এসবের কোনকিছুতে বিচলিত নন, এটা তো সাধারণ মানুষ জানে।
রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই বিপুলসংখ্যক মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি প্রয়োজন পানির স্তর উপরে উঠার জন্য, ধুলা-বালি পরিষ্কার হওয়ার জন্য, জীবন ও গাছপালায় সতেজতা আনয়ন করার জন্য কিন্তু এই বৃষ্টি যদি দুই তিন দিন পর পর হয় তাহলে ঢাকাবাসীকে পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়। আমাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এতে কিছু যায় অসেনা বা এ নিয়ে তারা বিচললিত নন, তারা এ নিয়ে মাথা ঘামান না। সে তো আমরা জানি। এবার তো পানির মধ্যে বিদ্যুতের তার পড়ে থাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজন মানুষও মারা গেছে, এতে তারা কেউ বিচলিত নন। দেশের ব্যাংক খালি, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তাতে আপনারা বিচলিত নন। বিচলিত যে, নন তাতো সাধারণ মানুষ দেখতেই পাচ্ছে, তারপরও কেন এগুলো বলে বলে আরও কষ্ট দিচ্ছেন মানুষের মনে।
শক্তিধর দেশগুলো পৃথিবীতে না থাকলে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত রাষ্ট্রগুলো তাদের জনগনের ওপর যে স্টিমরোলার চালায় সেটি অনবরনত চলতেই থাকতো। গাদ্দাফি এবং সাদ্দাম হোসেনের পরিণতি বিশ্ববাসী দেখেছে। মার্শাল টিটো কিংবা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মতো বিশ্বনন্দিত নেতারা কিন্তু তাদের নিজ নিজ দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের সমর্থন জুগিয়েছিলেন, তাদের মন জয় করতে পেরেছিলেন। তারা আমেরিকার শক্তির কাছে নস্যি হলেও আমেরিকার বিরুদ্ধেই থেকেছেন সারাজীবন। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে কিন্তু অবস্থা সেরকম নয়।
পৃথিবীর কোন দেশ কিংবা দেশ পরিচালনার নীতিও ধোয়া তুলসি পাতা নয়। তারপরেও কোন কোন প্র্যাকটিস কিংবা কোন কোন দিক দিয়ে একেকটি দেশ এগিয়ে থাকে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সব দেশ থেকে প্রাকৃতিকভাবেই বহু এগিয়ে। একটি দেশ হিসেবে, একটি বড় দেশ হিসেবে তার সাধারণ যে সমস্যা থাকার কথা সেগুলো সেখানে আছেও কারণ আমেরিকা তো আর স্বর্গ নয়। তবে দুনিয়ার স্বর্গ বললে হয়তো ভুল বলা হবে না। যারা সেখানে নিয়মিত যান, গিয়েছেন আর যারা থাকছেন পৃথিবীর বহু দেশের তুলনায় দেশটি বহু এগিয়ে, বহু দিকে দিয়ে আলাদা। আর তাই সমগ্র বিশ্ব থেকে প্রতিদিন বৈধ ও অবৈধভাবে সেখানে ঢোকায় চেষ্টা করে থাকে বহু মানুষ। এসব সত্যকে অস্বীকার আমরা কোনোভাবেই করতে পারি না, নিজেদের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এবং ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে। কাজেই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সৃজনশীল ও ভবিষ্যৎ চিন্তা নিয়ে সামনে এগোতে হবে। হয়তো কিছু সেক্রিফাইসও করতে হবে; কিন্তু দেশের স্বার্থে যদি আমরা তা করি, তাহলে দেশও আমাদের মনে রাখবে।
[লেখক : প্রেসিডেন্ট, ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ]
মাছুম বিল্লাহ
রোববার, ০১ অক্টোবর ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। দেশের ওপর মার্কিন ভিসানীতিতে কোন পক্ষ বা কোন দলের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমেরিকা তার নিজের স্বার্থে যে কোন সময় যে কোন দেশে নিষেধাজ্ঞাসহ বহু ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। তাদের সেই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল রয়েছে, সামর্থ্য আছে। যে কোন সরকারের সময় তারা যে কোন কিছু করতে পারে। চীনের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রতিযোগিতার কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা কাজ করে যাচ্ছে। আবার চীন থেকে প্রচুর নাগরিক বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আমেরিকা যাচ্ছেন, থাকছেন, প্রচুর ছাত্রছাত্রী যাচ্ছেন, পড়াশোনা করছেন আমেরিকায়। সেখানে আমাদের তো কথাই নেই। তাছাড়া যারা ভিসানীতির আওতায় আসবেন তারা আমেরিকায় না গেলেও তাদের সন্তান ও ভবিষ্যৎ বংশধরদের আমেরিকায় যেতে হবে। তাদের জন্যও এই ভিসানীতি এক অশনিসংকেত। অঘোষিতভাবে মার্কিনভুক্ত অন্য দেশগুলো যেমন- অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাও কিন্তু ভিসীনীতির আওতাভুক্ত দেশগুলোকে প্রায় একই নজরে দেখবে। অতএব এর ভবিষ্যৎ কোনদিকে যাবে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারে না, তবে এটি বলা যায় জনগণের জন্য দুঃসংবাদ একটির পর একটি যেমন আসছে তেমনই হয়তো আসতে থাকবে। জনগণ নিয়ে যেহেতু কোন রাজনৈতিক দলেরই তেমন কোন চিন্তা নেই তাই তারা সবাই ভিসানীতিকে অন্যভাবে দেখছেন।
এটি যেমন একদিকে সত্য যে, তাবতবিশ্বের রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী সবাই কিন্তু সঙ্গত কারণেই আমেরিকা যেতে চান, বসবাস করতে চান এবং করছেনও। অনেকেই চাকরি জীবন শেষে সেখানকার নির্মল বায়ুর স্বাদ নিতে চান। সমস্ত বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে এখনকার সামাজিক নিরাপত্তা, থাকার বিভিন্ন সুবিধা সত্যিই আলাদা। আমেরিকাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী, বিজ্ঞানী, শিক্ষক সবাইকে স্বাগত জানায়। এ ধরনের পরিবেশ ও অবস্থা কিন্তু শক্তিধর দেশ রাশিয়া বা চীনে নেই। উন্নত ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশ জাপানেও নেই। কজন লোক জাপান, রাশিয়া বা চীনে বাস করার জন্য যান? সবার গতি একদিকে, সেটি হচ্ছে আমেরিকা।
গ্রেট ব্রিটেনের অবস্থা তো অনেক বছর আগে থেকেই খারাপ হতে শুরু করেছে। তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করে ব্যবসার জন্য। আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা আমেরিকা যাওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন কেন? আমাদের দেশে যত ভালো রেজাল্টই করুক না কেন তাদের কোন নিশ্চয়তা নেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেন যেটি তাদের আশা থাকে। কারণ সেখানে বহু প্যারামিটার কাজ করে। আবার শিক্ষক হলেও তারপর কী কী তাদের ফেস করতে হয় সেগুলো আমরা সবাই জানি। অতএব, তারা আটলান্টিকের ওপারে পাড়ি জমাতে চান। বড় কোন কাজ না পেলেও জীবন চলে যায় শান্তিতে। আমাদের যদিও ব্রেইন ড্রেনের কারণে পরোক্ষ ক্ষতি হয় কিন্তু দেশ কিছু ডলারও তো পায়। ভিসানীতির কারণে কিন্তু সবই কঠিন হয়ে পড়লো। এখন এ ধরনের শিক্ষার্থীদেরও ভিসা পেতে ভোগান্তি হতে পারে। এই নীতির প্রভাব রাজনীতির মাঠ ছাপিয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের ওপর পড়বে যা এ দেশের সতের কোটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে ফেলবে। এই ভিসানীতি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকেও প্রভাবিত করবে।
দায়িত্বশীল পদে থেকে অনেকে বলছেন, ‘মার্কিন ভিসানীতিতে আমরা বিচলিত নই’। তখন মনে হয় এসব বলে তারা জনসাধারণের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছেন। আমরা তো জানি যখন বাজারে আলু পাওয়া যায় না। আলুর কেজি ষাট টাকা, গরিবের প্রোটিন ডিম বাজারে দুষ্পাপ্য এবং আলুর কেজি ষাট টাকা তাতে আপনারা কেউ বিচলিত নন। ঢাকা শহর এক সপ্তাহ পানির নিচে থাকে তাতে আপনারা বিচলিত নন। পাঁচ টাকার সবজি চাঁদাবাজি আর সিন্ডিকেটের কারণে পঞ্চাশ টাকা তাতে আপনারা বিচলিত নন। হাসাপাতালে সাধারণ মানুষে কেনা চিকিৎসা নেই তাতে আপনারা বিচলিত নন। ডেঙ্গুতে মৃত্যুসংখ্য হাজার খানেকের কাছাকাছি পৌঁছেছে, আপানার এসবের কোনকিছুতে বিচলিত নন, এটা তো সাধারণ মানুষ জানে।
রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই বিপুলসংখ্যক মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি প্রয়োজন পানির স্তর উপরে উঠার জন্য, ধুলা-বালি পরিষ্কার হওয়ার জন্য, জীবন ও গাছপালায় সতেজতা আনয়ন করার জন্য কিন্তু এই বৃষ্টি যদি দুই তিন দিন পর পর হয় তাহলে ঢাকাবাসীকে পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়। আমাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এতে কিছু যায় অসেনা বা এ নিয়ে তারা বিচললিত নন, তারা এ নিয়ে মাথা ঘামান না। সে তো আমরা জানি। এবার তো পানির মধ্যে বিদ্যুতের তার পড়ে থাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজন মানুষও মারা গেছে, এতে তারা কেউ বিচলিত নন। দেশের ব্যাংক খালি, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তাতে আপনারা বিচলিত নন। বিচলিত যে, নন তাতো সাধারণ মানুষ দেখতেই পাচ্ছে, তারপরও কেন এগুলো বলে বলে আরও কষ্ট দিচ্ছেন মানুষের মনে।
শক্তিধর দেশগুলো পৃথিবীতে না থাকলে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত রাষ্ট্রগুলো তাদের জনগনের ওপর যে স্টিমরোলার চালায় সেটি অনবরনত চলতেই থাকতো। গাদ্দাফি এবং সাদ্দাম হোসেনের পরিণতি বিশ্ববাসী দেখেছে। মার্শাল টিটো কিংবা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মতো বিশ্বনন্দিত নেতারা কিন্তু তাদের নিজ নিজ দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের সমর্থন জুগিয়েছিলেন, তাদের মন জয় করতে পেরেছিলেন। তারা আমেরিকার শক্তির কাছে নস্যি হলেও আমেরিকার বিরুদ্ধেই থেকেছেন সারাজীবন। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে কিন্তু অবস্থা সেরকম নয়।
পৃথিবীর কোন দেশ কিংবা দেশ পরিচালনার নীতিও ধোয়া তুলসি পাতা নয়। তারপরেও কোন কোন প্র্যাকটিস কিংবা কোন কোন দিক দিয়ে একেকটি দেশ এগিয়ে থাকে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সব দেশ থেকে প্রাকৃতিকভাবেই বহু এগিয়ে। একটি দেশ হিসেবে, একটি বড় দেশ হিসেবে তার সাধারণ যে সমস্যা থাকার কথা সেগুলো সেখানে আছেও কারণ আমেরিকা তো আর স্বর্গ নয়। তবে দুনিয়ার স্বর্গ বললে হয়তো ভুল বলা হবে না। যারা সেখানে নিয়মিত যান, গিয়েছেন আর যারা থাকছেন পৃথিবীর বহু দেশের তুলনায় দেশটি বহু এগিয়ে, বহু দিকে দিয়ে আলাদা। আর তাই সমগ্র বিশ্ব থেকে প্রতিদিন বৈধ ও অবৈধভাবে সেখানে ঢোকায় চেষ্টা করে থাকে বহু মানুষ। এসব সত্যকে অস্বীকার আমরা কোনোভাবেই করতে পারি না, নিজেদের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এবং ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে। কাজেই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সৃজনশীল ও ভবিষ্যৎ চিন্তা নিয়ে সামনে এগোতে হবে। হয়তো কিছু সেক্রিফাইসও করতে হবে; কিন্তু দেশের স্বার্থে যদি আমরা তা করি, তাহলে দেশও আমাদের মনে রাখবে।
[লেখক : প্রেসিডেন্ট, ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ]