alt

উপ-সম্পাদকীয়

ডিজিটাল শিল্পযুগ

মোস্তাফা জব্বার

: সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩

তিন ॥

আমি মনে করি যে বাংলাদেশের জন্য এই যে বিশ্বব্যাপী রূপান্তরের জায়গাটা-সেটি খুব ভালো করে উপলব্ধি করা দরকার। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি জামান ভাই বলেছে আমরা যদি কেবল রোবট ব্যবহারকারী হই তাহলে আমাদের জন্য খবর আছে। কারণ রোবট ব্যবহার করলে আমার যে জনসংখ্যা আছে আমার যে মানবসম্পদ আছে এই মানবসম্পদকে কী করব এটা আমি খুঁজে বের করতে পারব না; বরং আমি রোবট ব্যবহারকারী হব আমার যেখানে দরকার সেখানে। অন্যদিকে আমি রোবট বানিয়ে ওদেরকে সাপ্লাই করব। আমাদের এখানে রোবট দরকার আছে। তবে মানুষের বিকল্প হিসেবে নয়।

আমার স্পষ্ট মনে আছে এটুআইয়ের একটা প্রজেক্টে বিচারক ছিলাম আমি। সেখানে বগুড়ার ক্লাস সেভেনে পড়া একটা ছেলেকে পাই। ওর নাম আজমাইল আকমল। এই ছেলেটা আমাকে একটা প্রকল্প দেখাল : সে নিজে একটা রোবট বানিয়েছে। আমি দেখে বললাম যে বাবা তোমার এই রোবট কী কাজ করবে। ওই সময় খিলগাঁওতে একটা বাচ্চা একটা পাইপের ভেতরে পড়ে গিয়েছিল। ওটার ভেতর মানুষ ঢুকতে পারে না বলে বাচ্চা ওই পাইপের ভেতরে মারা গেল। ও বলল, আমার রোবট দরকার বাচ্চাকে উদ্ধার করতে। সে পাইপের ভেতর ঢুকে ও বাচ্চাকে উদ্ধার করবে। প্র্যাকটিক্যালি এটিই হচ্ছে মানবিক চিন্তা। আমার সেইখানে রোবট দরকার যেখানে আমার মানুষ কাজ করতে পারবে না। রোবট মানুষকে সহায়তা করবে। মানুষের যে জায়গাতে যতটুকু সহায়তা করা দরকার ততটুকু সহায়তাই যেন সে করতে পারে। অতএব সেই দিক থেকে আমি মনে করি আমাদের ফোর্থ বা ফিফথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন নিয়ে যখন কথা বলব তখন আমাদের এটাও বলতে হবে যে-হ্যাঁ যন্ত্র আমার দরকার। কিন্তু একে মানবিক যন্ত্র হিসেবে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। অতএব আমি মনে করি যে আমরা আজকে যে আলোচনাটা করছি তাতে পুরো প্রেক্ষিতটিকেই তুলে ধরতে পারলাম।

বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা যদি বলেন তবে আমি বলব বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আছে। তার প্রথম কারণটা হলো : এই দেশের মানবসম্পদ আছে। আছে পপুলেশন ডিভিডেন্ড। ২০৩১ সাল পর্যন্ত আমার এই ডিভিডেন্ডটা বাড়তেই থাকবে। সেই সুযোগটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। প্রশ্ন হতে পারে আমরা কি এটা পারব? প্রশ্নটার জবাব অত্যন্ত সহজ। আমরা গর্ব করি, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা ঊনসত্তরের আন্দোলন করেছি। আমরা কি আমাদের সন্তানদের মনে করি তারা হতভাগা বা অক্ষম? মোটেই না। এখনো যদি দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন আমাদের এখানে বহু বয়স্ক আছেন। তাদের স্মার্ট ফোনটা যদি ঠিকমতো কাজ না করে তবে তারা নাতি-নাতনিদের কাছে গিয়ে বলবে দাদু এটা ঠিক করে দে তো। তার কারণটা হচ্ছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমার নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমি বাচ্চাদের বসিয়ে কাজ করিয়েছি এবং তাদের কম্পিউটার শেখাতে হয়নি। বড়জোর দেখাতে হয়েছে কেমন করে কাজ করতে হয়। শেখর দাকে শিখাতে হয়েছে, কিন্তু আমরা ধারণা শেখর দার নাতিকে আমার এক ঘণ্টা শেখাতে হতো না ও দশ থেকে পনেরো মিনিট পর ও আমার মাস্টার হয়ে যেত।

এই যে মেধাসম্পন্ন মানুষ এবং সত্যিকারভাবেই আপনি যদি পুরা জাতির বিশ্লেষণ করেন এই জগদীশ চন্দ্র বসুর উত্তরাধিকারী আমাদের এই জাতি, তাহলে আপনি ওই মিলিমিটার টেকনোলজি নিয়ে যখন কথা বলবেন এবং সেখানে যখন আমাদের ছেলেমেয়েরা কাজ করবে তখন কিন্তু তাদের ছোট করে দেখার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। আমাদের কাজ হলো আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। ভারত যখন আইআইটি গড়ে তোলে আমরা তখন আইআইটি বানাতে পারিনি। আশির দশকে যদি আমরা এদিকে নজর দিতাম তাহলে হয়তো আমাদের পক্ষে আজকের যে অবস্থা তা আরও অনেক ভালো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেত। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ২১ বছর যে সময়টা গেছে এই সময়টাই কিন্তু ছিল যেই সময়টাতে আইআইটি বা এ ধরনের কাজগুলো হতে পারত। ভারতের জন্য যিনি এই কৃতিত্ব বহন করেন তিনি হচ্ছেন রাজীব গান্ধী। ব্যাঙ্গালুরের বিকাশ অথবা কলকাতার সায়েন্স সিটির বিকাশের ক্ষেত্রে যে নেতৃত্বটা রাজীব গান্ধীর ছিল তার কোন তুলনা নেই। সেই সময়টাতে আমরা কোনো ধরনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাইনি। তবে সেজন্য আমরা হারিয়ে যাইনি।

আমি এটুকু বলব শেখ হাসিনার প্রথম পাঁচ বছর এবং শেখ হাসিনার পরের সাড়ে ১৩ বছর এই সময়কালের ভেতর তিনি যে অবকাঠামো করে দিয়েছেন এবং যে পরিবেশটা তৈরি করে দিয়েছেন সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ কথাটা বলতেই পারি যে ডিজিটাল যুগের নেতৃত্বটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের হাতে আছে। আমি আজকে আপনাদের অবহিত করতে চাই ২০২? সালের এই সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশের মাত্র ১৬৩ ইউনিয়ন ছাড়া বাকি সমস্ত ইউনিয়নগুলো পর্যন্ত ফাইবার অপটিকস অথবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট দিয়ে কানেকটেড হওয়ার মতো অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চল ৪-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। আমি সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটা প্রকল্প পাস করিয়ে এনেছি। প্রকল্পটি এক হাজার ঊনষাট কোটি টাকার। যে প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের সমস্ত উপজেলার বর্তমানে যে ব্যান্ডউইথ আছে এটা অন্তত দশগুণ বৃদ্ধি করার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে যাচ্ছি। চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের জন্য যে মহাসড়কটি দরকার আমরা সেই মহাসড়কটি তৈরি করছি। এই মহাসড়কের মধ্য দিয়ে জাতি যাতে সামনে যেতে পারে সে ভিত্তিটা কিন্তু শেখ হাসিনা করে দিচ্ছেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি আমার ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন তো চলমান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে ফিফথে মিশে যাচ্ছে। অতএব ফিফথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনে আমার দেশে যে তরুণ-তরুণীরা আছে তারা অনেক অনেক সমৃদ্ধির কাজ করতে পারবে।

বাংলাদেশে চমৎকার একটা ঘটনা গত কয়েক বছরে ঘটে গেছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের শতকরা ৫৩ ভাগ কিন্তু নারী অথবা মহিলা। এখন ওরা যে অবস্থার ভেতরেই থাকুক আমার ডিজিটাল প্রযুক্তির একটি পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি যাতে সে ঘরে বসে থেকে কাজ করতে পারে যে কাজ সে এর আগে কোনোদিন করতে পারত না। ফলে আমার কাছে মনে হয় যে আমার দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে কোনো অবস্থাতেই নিষ্ক্রিয় রাখার মতো পরিস্থিতিতে এখন আর বিরাজ করি না। একটা প্রশ্ন এক ভদ্রমহিলা করেছিলেন যে অনলাইনে নারীদের অথবা শিশুদের ক্ষেত্রে যে হয়রানির পরিস্থিতি তৈরি হয় সেটা কেমন করে মোকাবিলা করা হবে। বাস্তবতা হলো আপনি যত ডিজিটাল হবেন অপরাধও তত ডিজিটাল হবে। প্রযুক্তি যখন আসবে প্রযুক্তির ভালোটার সঙ্গে খারাপটাও আসবে। আপনি যখন একটি অ্যান্টিবায়োটিক খান ওই অ্যান্টিবায়োটিকের কিন্তু সাইড ইফেক্ট আছে। একটা ছুরি যখন আপনার কাছে থাকে এই ছুরি দিয়ে মানুষ খুন করা যায়। আবার এই ছুরি দিয়ে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়।

আমি প্রযুক্তি নেব তার সঙ্গে জঞ্জাল যেটা আসবে সেটাকে আমি কেয়ার করব না তা কিন্তু হতে পারে না। এর মানে হচ্ছে আমার অপরাধ ডিজিটাল হচ্ছে এবং আমাকে সেই অপরাধ মোকাবিলা করতে হবে

অতএব আমি প্রযুক্তি নেব তার সঙ্গে জঞ্জাল যেটা আসবে সেটাকে আমি কেয়ার করব না তা কিন্তু হতে পারে না। এর মানে হচ্ছে আমার অপরাধ ডিজিটাল হচ্ছে এবং আমাকে সেই অপরাধ মোকাবিলা করতে হবে। এটির জন্য আমি দুটি পথ বেছে নেয়ার কথা বলি। একটি হচ্ছে তুমি প্রযুক্তি দিয়ে অপরাধ করবা প্রযুক্তি দিয়েই আমি তোমাকে সামাল দেব। আপনারা এখন লক্ষ্য করে থাকবেন ঘটনা ঘটছে খুলনার কোনো গ্রামে এবং পুলিশ আসামি ধরছে হয়তো নারায়ণগঞ্জ থেকে। এটা কিভাবে সম্ভব। নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায়।

এখানে একজন আলোচক খুব সুন্দরভাবে কথা বলেছেন যে আমার মাথাব্যথা হলে আমি মাথা কেটে ফেলব এটা তো হতে পারে না। আমি এটুকু বলব যে অনুগ্রহ করে এটিও একটি আন্দোলনের মতো হতে হবে। ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি ডিজিটাল যুগে নিরাপদ থাকা যায় কেমন করে তার ন্যূনতম ধারণাটা যদি আমরা নারী বিশেষ করে শিশুদের দিতে পারি তাহলে আমার মনে হয় যে তারা অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে পারবে। অনেক ক্ষেত্রেই অনেক প্রতারণা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে কেন? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞতার জন্য হচ্ছে। তার মানে হচ্ছে আমি একটু তাকে যদি সচেতন করতে পারি তাহলে অপরাধের যে মাত্রাটা আছে সেই মাত্রাটা তখন আর থাকবে না। এটার প্রতি আমরা গুরুত্ব দেব।

আরেকটা বিষয় আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের হাতে এখন প্রযুক্তি আছে। আমি যখন দায়িত্ব নেই তখন একবারে আমি ২৪ হাজার পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করেছি। ছয় হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। এবং এখনো যদি কেউ পর্নো ও জুয়া বা রাষ্ট্রবিরোধী বা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোথাও কাউকে কোনোভাবে কাজ করতে দেখি তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে সক্ষমতা আমাদের দিয়েছে সেটিকে আমরা নিঃসন্দেহে ব্যবহার করি। আমি শুধু অনুরোধ জানাব আমরা সামনের যে দিনগুলোর কথা বলছি তার বিপজ্জনক দিকটা সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য যদি নিজেকে প্রস্তুত করা না যায় যদি সক্ষমতা অর্জন করা না যায় তাহলে কিন্তু আমরা মহাবিপদের সামনে আছি।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে রূপান্তরটা হওয়া উচিত ছিল সেটি কিন্তু হয়নি। আমাদের ডিজিটাল দক্ষতার জায়গাটাও দুর্বল। আমি ডিজিটাল হচ্ছি আমার সমস্ত কিছু ডিজিটাল হচ্ছে আমার শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়বস্তুর কী পরিবর্তন হয়েছে? আমি তো এখনো পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলের যে শিক্ষাপদ্ধতি, ব্রিটিশ আমলের যে কারিকুলাম ও অন্যান্য জিনিস আছে তার ওপর দিয়েই সামনে যাচ্ছি। সে কারণে সাধারণ শিক্ষার পর আমার কর্মসংস্থানের জায়গাটা তৈরি হচ্ছে না। আমি এই কারণে অনুরোধ করব পরবর্তী প্রজন্মকেÑ যে যে বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক না কেন তাকে ডিজিটাল দক্ষতা দেবেন। এই পৃথিবীতে ডিজিটাল দক্ষতা ছাড়া সে নিজে টিকে থাকতে পারবে না বা তার কোনো পেশাও তৈরি হবে না। এটা ইভেন ডাক্তার হোক বা ইঞ্জিনিয়ার হোক পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়–ক অথবা যাই কিছু হোক ডিজিটাল দক্ষতা তার থাকতেই হবে। একটা মোবাইল ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলাম, আমার ধারণা ছিল যে ইঞ্জিনিয়াররাই এখানে কাজ করে। দেখলাম অল্প বয়সী একটা মেয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে এবং তার দক্ষতা চোখে পড়ার মতো। আমি ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মা তুমি কিসে লেখাপড়া করেছ। জবাব এলো পলিটিক্যাল সায়েন্সে। পলিটিক্যাল সায়েন্সে পড়ে তুমি মোবাইল সংযোজন করো কেমন করে? মেয়েটি বলল, ওরা আমাকে মাসখানেক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এক মাসের প্রশিক্ষণে আমি এই দক্ষতা অর্জন করেছি।

ঢাকা। ২২ এপ্রিল, ২০২২। আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।

[লেখক: ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ডিজিটাল শিল্পযুগ

মোস্তাফা জব্বার

সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩

তিন ॥

আমি মনে করি যে বাংলাদেশের জন্য এই যে বিশ্বব্যাপী রূপান্তরের জায়গাটা-সেটি খুব ভালো করে উপলব্ধি করা দরকার। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি জামান ভাই বলেছে আমরা যদি কেবল রোবট ব্যবহারকারী হই তাহলে আমাদের জন্য খবর আছে। কারণ রোবট ব্যবহার করলে আমার যে জনসংখ্যা আছে আমার যে মানবসম্পদ আছে এই মানবসম্পদকে কী করব এটা আমি খুঁজে বের করতে পারব না; বরং আমি রোবট ব্যবহারকারী হব আমার যেখানে দরকার সেখানে। অন্যদিকে আমি রোবট বানিয়ে ওদেরকে সাপ্লাই করব। আমাদের এখানে রোবট দরকার আছে। তবে মানুষের বিকল্প হিসেবে নয়।

আমার স্পষ্ট মনে আছে এটুআইয়ের একটা প্রজেক্টে বিচারক ছিলাম আমি। সেখানে বগুড়ার ক্লাস সেভেনে পড়া একটা ছেলেকে পাই। ওর নাম আজমাইল আকমল। এই ছেলেটা আমাকে একটা প্রকল্প দেখাল : সে নিজে একটা রোবট বানিয়েছে। আমি দেখে বললাম যে বাবা তোমার এই রোবট কী কাজ করবে। ওই সময় খিলগাঁওতে একটা বাচ্চা একটা পাইপের ভেতরে পড়ে গিয়েছিল। ওটার ভেতর মানুষ ঢুকতে পারে না বলে বাচ্চা ওই পাইপের ভেতরে মারা গেল। ও বলল, আমার রোবট দরকার বাচ্চাকে উদ্ধার করতে। সে পাইপের ভেতর ঢুকে ও বাচ্চাকে উদ্ধার করবে। প্র্যাকটিক্যালি এটিই হচ্ছে মানবিক চিন্তা। আমার সেইখানে রোবট দরকার যেখানে আমার মানুষ কাজ করতে পারবে না। রোবট মানুষকে সহায়তা করবে। মানুষের যে জায়গাতে যতটুকু সহায়তা করা দরকার ততটুকু সহায়তাই যেন সে করতে পারে। অতএব সেই দিক থেকে আমি মনে করি আমাদের ফোর্থ বা ফিফথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন নিয়ে যখন কথা বলব তখন আমাদের এটাও বলতে হবে যে-হ্যাঁ যন্ত্র আমার দরকার। কিন্তু একে মানবিক যন্ত্র হিসেবে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। অতএব আমি মনে করি যে আমরা আজকে যে আলোচনাটা করছি তাতে পুরো প্রেক্ষিতটিকেই তুলে ধরতে পারলাম।

বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা যদি বলেন তবে আমি বলব বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আছে। তার প্রথম কারণটা হলো : এই দেশের মানবসম্পদ আছে। আছে পপুলেশন ডিভিডেন্ড। ২০৩১ সাল পর্যন্ত আমার এই ডিভিডেন্ডটা বাড়তেই থাকবে। সেই সুযোগটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। প্রশ্ন হতে পারে আমরা কি এটা পারব? প্রশ্নটার জবাব অত্যন্ত সহজ। আমরা গর্ব করি, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা ঊনসত্তরের আন্দোলন করেছি। আমরা কি আমাদের সন্তানদের মনে করি তারা হতভাগা বা অক্ষম? মোটেই না। এখনো যদি দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন আমাদের এখানে বহু বয়স্ক আছেন। তাদের স্মার্ট ফোনটা যদি ঠিকমতো কাজ না করে তবে তারা নাতি-নাতনিদের কাছে গিয়ে বলবে দাদু এটা ঠিক করে দে তো। তার কারণটা হচ্ছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমার নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমি বাচ্চাদের বসিয়ে কাজ করিয়েছি এবং তাদের কম্পিউটার শেখাতে হয়নি। বড়জোর দেখাতে হয়েছে কেমন করে কাজ করতে হয়। শেখর দাকে শিখাতে হয়েছে, কিন্তু আমরা ধারণা শেখর দার নাতিকে আমার এক ঘণ্টা শেখাতে হতো না ও দশ থেকে পনেরো মিনিট পর ও আমার মাস্টার হয়ে যেত।

এই যে মেধাসম্পন্ন মানুষ এবং সত্যিকারভাবেই আপনি যদি পুরা জাতির বিশ্লেষণ করেন এই জগদীশ চন্দ্র বসুর উত্তরাধিকারী আমাদের এই জাতি, তাহলে আপনি ওই মিলিমিটার টেকনোলজি নিয়ে যখন কথা বলবেন এবং সেখানে যখন আমাদের ছেলেমেয়েরা কাজ করবে তখন কিন্তু তাদের ছোট করে দেখার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। আমাদের কাজ হলো আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা। ভারত যখন আইআইটি গড়ে তোলে আমরা তখন আইআইটি বানাতে পারিনি। আশির দশকে যদি আমরা এদিকে নজর দিতাম তাহলে হয়তো আমাদের পক্ষে আজকের যে অবস্থা তা আরও অনেক ভালো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেত। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ২১ বছর যে সময়টা গেছে এই সময়টাই কিন্তু ছিল যেই সময়টাতে আইআইটি বা এ ধরনের কাজগুলো হতে পারত। ভারতের জন্য যিনি এই কৃতিত্ব বহন করেন তিনি হচ্ছেন রাজীব গান্ধী। ব্যাঙ্গালুরের বিকাশ অথবা কলকাতার সায়েন্স সিটির বিকাশের ক্ষেত্রে যে নেতৃত্বটা রাজীব গান্ধীর ছিল তার কোন তুলনা নেই। সেই সময়টাতে আমরা কোনো ধরনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাইনি। তবে সেজন্য আমরা হারিয়ে যাইনি।

আমি এটুকু বলব শেখ হাসিনার প্রথম পাঁচ বছর এবং শেখ হাসিনার পরের সাড়ে ১৩ বছর এই সময়কালের ভেতর তিনি যে অবকাঠামো করে দিয়েছেন এবং যে পরিবেশটা তৈরি করে দিয়েছেন সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ কথাটা বলতেই পারি যে ডিজিটাল যুগের নেতৃত্বটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের হাতে আছে। আমি আজকে আপনাদের অবহিত করতে চাই ২০২? সালের এই সময়কালের মধ্যে বাংলাদেশের মাত্র ১৬৩ ইউনিয়ন ছাড়া বাকি সমস্ত ইউনিয়নগুলো পর্যন্ত ফাইবার অপটিকস অথবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট দিয়ে কানেকটেড হওয়ার মতো অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চল ৪-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। আমি সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটা প্রকল্প পাস করিয়ে এনেছি। প্রকল্পটি এক হাজার ঊনষাট কোটি টাকার। যে প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের সমস্ত উপজেলার বর্তমানে যে ব্যান্ডউইথ আছে এটা অন্তত দশগুণ বৃদ্ধি করার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে যাচ্ছি। চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের জন্য যে মহাসড়কটি দরকার আমরা সেই মহাসড়কটি তৈরি করছি। এই মহাসড়কের মধ্য দিয়ে জাতি যাতে সামনে যেতে পারে সে ভিত্তিটা কিন্তু শেখ হাসিনা করে দিচ্ছেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি আমার ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন তো চলমান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে ফিফথে মিশে যাচ্ছে। অতএব ফিফথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনে আমার দেশে যে তরুণ-তরুণীরা আছে তারা অনেক অনেক সমৃদ্ধির কাজ করতে পারবে।

বাংলাদেশে চমৎকার একটা ঘটনা গত কয়েক বছরে ঘটে গেছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের শতকরা ৫৩ ভাগ কিন্তু নারী অথবা মহিলা। এখন ওরা যে অবস্থার ভেতরেই থাকুক আমার ডিজিটাল প্রযুক্তির একটি পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছি যাতে সে ঘরে বসে থেকে কাজ করতে পারে যে কাজ সে এর আগে কোনোদিন করতে পারত না। ফলে আমার কাছে মনে হয় যে আমার দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে কোনো অবস্থাতেই নিষ্ক্রিয় রাখার মতো পরিস্থিতিতে এখন আর বিরাজ করি না। একটা প্রশ্ন এক ভদ্রমহিলা করেছিলেন যে অনলাইনে নারীদের অথবা শিশুদের ক্ষেত্রে যে হয়রানির পরিস্থিতি তৈরি হয় সেটা কেমন করে মোকাবিলা করা হবে। বাস্তবতা হলো আপনি যত ডিজিটাল হবেন অপরাধও তত ডিজিটাল হবে। প্রযুক্তি যখন আসবে প্রযুক্তির ভালোটার সঙ্গে খারাপটাও আসবে। আপনি যখন একটি অ্যান্টিবায়োটিক খান ওই অ্যান্টিবায়োটিকের কিন্তু সাইড ইফেক্ট আছে। একটা ছুরি যখন আপনার কাছে থাকে এই ছুরি দিয়ে মানুষ খুন করা যায়। আবার এই ছুরি দিয়ে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়।

আমি প্রযুক্তি নেব তার সঙ্গে জঞ্জাল যেটা আসবে সেটাকে আমি কেয়ার করব না তা কিন্তু হতে পারে না। এর মানে হচ্ছে আমার অপরাধ ডিজিটাল হচ্ছে এবং আমাকে সেই অপরাধ মোকাবিলা করতে হবে

অতএব আমি প্রযুক্তি নেব তার সঙ্গে জঞ্জাল যেটা আসবে সেটাকে আমি কেয়ার করব না তা কিন্তু হতে পারে না। এর মানে হচ্ছে আমার অপরাধ ডিজিটাল হচ্ছে এবং আমাকে সেই অপরাধ মোকাবিলা করতে হবে। এটির জন্য আমি দুটি পথ বেছে নেয়ার কথা বলি। একটি হচ্ছে তুমি প্রযুক্তি দিয়ে অপরাধ করবা প্রযুক্তি দিয়েই আমি তোমাকে সামাল দেব। আপনারা এখন লক্ষ্য করে থাকবেন ঘটনা ঘটছে খুলনার কোনো গ্রামে এবং পুলিশ আসামি ধরছে হয়তো নারায়ণগঞ্জ থেকে। এটা কিভাবে সম্ভব। নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির সহায়তায়।

এখানে একজন আলোচক খুব সুন্দরভাবে কথা বলেছেন যে আমার মাথাব্যথা হলে আমি মাথা কেটে ফেলব এটা তো হতে পারে না। আমি এটুকু বলব যে অনুগ্রহ করে এটিও একটি আন্দোলনের মতো হতে হবে। ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি ডিজিটাল যুগে নিরাপদ থাকা যায় কেমন করে তার ন্যূনতম ধারণাটা যদি আমরা নারী বিশেষ করে শিশুদের দিতে পারি তাহলে আমার মনে হয় যে তারা অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে পারবে। অনেক ক্ষেত্রেই অনেক প্রতারণা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে কেন? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞতার জন্য হচ্ছে। তার মানে হচ্ছে আমি একটু তাকে যদি সচেতন করতে পারি তাহলে অপরাধের যে মাত্রাটা আছে সেই মাত্রাটা তখন আর থাকবে না। এটার প্রতি আমরা গুরুত্ব দেব।

আরেকটা বিষয় আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের হাতে এখন প্রযুক্তি আছে। আমি যখন দায়িত্ব নেই তখন একবারে আমি ২৪ হাজার পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করেছি। ছয় হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। এবং এখনো যদি কেউ পর্নো ও জুয়া বা রাষ্ট্রবিরোধী বা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোথাও কাউকে কোনোভাবে কাজ করতে দেখি তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে সক্ষমতা আমাদের দিয়েছে সেটিকে আমরা নিঃসন্দেহে ব্যবহার করি। আমি শুধু অনুরোধ জানাব আমরা সামনের যে দিনগুলোর কথা বলছি তার বিপজ্জনক দিকটা সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য যদি নিজেকে প্রস্তুত করা না যায় যদি সক্ষমতা অর্জন করা না যায় তাহলে কিন্তু আমরা মহাবিপদের সামনে আছি।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার যে রূপান্তরটা হওয়া উচিত ছিল সেটি কিন্তু হয়নি। আমাদের ডিজিটাল দক্ষতার জায়গাটাও দুর্বল। আমি ডিজিটাল হচ্ছি আমার সমস্ত কিছু ডিজিটাল হচ্ছে আমার শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়বস্তুর কী পরিবর্তন হয়েছে? আমি তো এখনো পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলের যে শিক্ষাপদ্ধতি, ব্রিটিশ আমলের যে কারিকুলাম ও অন্যান্য জিনিস আছে তার ওপর দিয়েই সামনে যাচ্ছি। সে কারণে সাধারণ শিক্ষার পর আমার কর্মসংস্থানের জায়গাটা তৈরি হচ্ছে না। আমি এই কারণে অনুরোধ করব পরবর্তী প্রজন্মকেÑ যে যে বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক না কেন তাকে ডিজিটাল দক্ষতা দেবেন। এই পৃথিবীতে ডিজিটাল দক্ষতা ছাড়া সে নিজে টিকে থাকতে পারবে না বা তার কোনো পেশাও তৈরি হবে না। এটা ইভেন ডাক্তার হোক বা ইঞ্জিনিয়ার হোক পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়–ক অথবা যাই কিছু হোক ডিজিটাল দক্ষতা তার থাকতেই হবে। একটা মোবাইল ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলাম, আমার ধারণা ছিল যে ইঞ্জিনিয়াররাই এখানে কাজ করে। দেখলাম অল্প বয়সী একটা মেয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে এবং তার দক্ষতা চোখে পড়ার মতো। আমি ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মা তুমি কিসে লেখাপড়া করেছ। জবাব এলো পলিটিক্যাল সায়েন্সে। পলিটিক্যাল সায়েন্সে পড়ে তুমি মোবাইল সংযোজন করো কেমন করে? মেয়েটি বলল, ওরা আমাকে মাসখানেক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এক মাসের প্রশিক্ষণে আমি এই দক্ষতা অর্জন করেছি।

ঢাকা। ২২ এপ্রিল, ২০২২। আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।

[লেখক: ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক]

back to top