তরিকুল ইসলাম
সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) সার্বিক চিত্রকে তুলে ধরতে, রোডক্র্যাশে আহত ও নিহতদের স্মরণে প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেম্বারেন্স ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিম’ দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে মোমবাতি প্রজ্বালন ও পদযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কিন্তু এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সচেতনতা কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের যে রোডক্র্যাশের মহামারী চলছে সেটি থামবে কবে! আমরা একটু লক্ষ্য করলে দেখব করোনা আসার পর থেকে মৃত্যুর ভয়কে রুখতে মানুষ কতইনা সচেতনতা কর্মসূচি অবলম্বন করেছে তাছাড়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কতইনা অভিযান। কিন্তু রোডক্র্যাশের মহামারী রোধে আমার কতটুকু সচেতন কিংবা সরকারি উদ্যোগ কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে?
দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম। অথচ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি যানবাহন যেসব দেশে চলে সেখানেও কিন্তু এত সড়ক দুর্ঘটনা হয় না। বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিশ্বে সড়কপথে বাস সম্পৃক্ত সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর হার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। দেশে সড়কপথে চলাচলরত প্রতি ১০ হাজার বাসের বিপরীতে বাস সম্পৃক্ত দুর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রাণহানি ঘটে ২৮৭ জনের।
সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) পরিসংখ্যান বলে দেয় বাংলাদেশে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনার চিত্র শোচনীয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলে দেয় রোডক্র্যাশে বিশ্বের মধ্যে ১৩তম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৭ সালে এ দেশ ছিল রোডক্র্যাশের দিক থেকে এশিয়ার মধ্যে সপ্তম স্থানে। গবেষকরা ২০১৭ সালের হিসাব উল্লেখ করে লিখেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার কারণে বাংলাদেশ বছরে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৩ শতাংশ হারিয়েছে। রোডক্র্যাশের মূলে রয়েছে যানবাহনের অত্যধিক গতি, চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও মাদক গ্রহণ করে যানবাহন চালানো। বর্তমান সরকার একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী মহাসড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিভিন্ন মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে; নতুন নতুন রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট, অত্যাধুনিক টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার ও ওভারপাস নির্মাণ, পুনর্র্নিমাণ ও মেরামত করা হচ্ছে। টেকসই, নিরাপদ ও মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো এবং সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজও চলছে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
২০২১ সালে মাঝামাঝিতে একটি প্রতিবেদন দেখতে পেলাম, সেই সময় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ হাজারের মতো। আর ঠিক তখনি আরেকটি প্রতিবেদনে লক্ষ্য করলাম ওই বছরে রোডক্র্যাশে মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে বহু দূর। আমারা যদি গড় হিসাব করি তাহলে দেখা যায় প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর চেয়ে রোডক্র্যাশে মৃত্যুর হার অনেক অনেক বেশি ছিল তখন। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? তাহলে কি আমরা করোনাকে যেমন ভয় পেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পেরেছি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি?
বিগত কয়েক বছরের সড়ক দুর্ঘটনায় (রোডক্র্যাশ) মৃত্যুর পরিসংখ্যান যদি আমরা দেখি তাহলে দেখা যায় নিরাপদ সড়ক চাই এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২২ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৮৩ জন। আর, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ২৪টি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০২২ সালের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উপস্থাপনায় নিসচার সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, সড়ক পথে সবচেয়ে বেশি ৫ হাজার ৭৬০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রেলপথে ২৭০ ও নৌপথে নিহত হয়েছেন ২০৪ জন। নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ২৪২ জন আর নারী ৯৯২ জন। বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করার কথা জানান তিনি।
এছাড়া নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাব বলছে, ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব রোডক্র্যাশে নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব রোডক্র্যাশে নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। তাদের হিসাবে, প্রতিদিন সড়কে ১৭ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার বিষয়টি হিসাবে নেয়া হলে, গড়ে দৈনিক ২২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ যখন একটি যানবাহন নিয়মের অতিরিক্ত গতিতে চলে তখন সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে। বেপরোয়া গতিই রোডক্র্যাশের বড় কারণ। এছাড়া রোডক্র্যাশে হতাহত থেকে বাঁচতে মানসম্মত হেলমেট, যথাযথভাবে সিটবেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ মূলত মোটরযান আইন। যেখানে মোটরযানের ফিটনেস, লাইসেন্স, রুট পারমিট ও আইন ভঙ্গের জরিমানাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এই আইনে সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা সম্পর্কে অনুপুস্থিত। তাই এই আইন ব্যবহার করেও পাওয়া যাচ্ছে না আশানুরূপ ফল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং গ্লোবাল ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোডক্র্যাশ অর্জনে প্রয়োজন একটি আলাদা সড়ক নিরাপত্তা আইন। যে আইনটি জাতিসংঘ ঘোষিত সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ-এর আলোতে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা জরুরি। তাই বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে একটি ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ দরকার।
[লেখক: অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন), রোড সেইফটি প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেক্টর,
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]
তরিকুল ইসলাম
রোববার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) সার্বিক চিত্রকে তুলে ধরতে, রোডক্র্যাশে আহত ও নিহতদের স্মরণে প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার ‘ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেম্বারেন্স ফর রোড ট্রাফিক ভিক্টিম’ দিবসটি বাংলাদেশসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে মোমবাতি প্রজ্বালন ও পদযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কিন্তু এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সচেতনতা কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের যে রোডক্র্যাশের মহামারী চলছে সেটি থামবে কবে! আমরা একটু লক্ষ্য করলে দেখব করোনা আসার পর থেকে মৃত্যুর ভয়কে রুখতে মানুষ কতইনা সচেতনতা কর্মসূচি অবলম্বন করেছে তাছাড়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কতইনা অভিযান। কিন্তু রোডক্র্যাশের মহামারী রোধে আমার কতটুকু সচেতন কিংবা সরকারি উদ্যোগ কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে?
দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম। অথচ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি যানবাহন যেসব দেশে চলে সেখানেও কিন্তু এত সড়ক দুর্ঘটনা হয় না। বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিশ্বে সড়কপথে বাস সম্পৃক্ত সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর হার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। দেশে সড়কপথে চলাচলরত প্রতি ১০ হাজার বাসের বিপরীতে বাস সম্পৃক্ত দুর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রাণহানি ঘটে ২৮৭ জনের।
সড়ক দুর্ঘটনার (রোডক্র্যাশ) পরিসংখ্যান বলে দেয় বাংলাদেশে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনার চিত্র শোচনীয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলে দেয় রোডক্র্যাশে বিশ্বের মধ্যে ১৩তম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০১৭ সালে এ দেশ ছিল রোডক্র্যাশের দিক থেকে এশিয়ার মধ্যে সপ্তম স্থানে। গবেষকরা ২০১৭ সালের হিসাব উল্লেখ করে লিখেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার কারণে বাংলাদেশ বছরে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৩ শতাংশ হারিয়েছে। রোডক্র্যাশের মূলে রয়েছে যানবাহনের অত্যধিক গতি, চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও মাদক গ্রহণ করে যানবাহন চালানো। বর্তমান সরকার একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী মহাসড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিভিন্ন মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে; নতুন নতুন রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট, অত্যাধুনিক টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার ও ওভারপাস নির্মাণ, পুনর্র্নিমাণ ও মেরামত করা হচ্ছে। টেকসই, নিরাপদ ও মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো এবং সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজও চলছে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
২০২১ সালে মাঝামাঝিতে একটি প্রতিবেদন দেখতে পেলাম, সেই সময় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৬ হাজারের মতো। আর ঠিক তখনি আরেকটি প্রতিবেদনে লক্ষ্য করলাম ওই বছরে রোডক্র্যাশে মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে বহু দূর। আমারা যদি গড় হিসাব করি তাহলে দেখা যায় প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর চেয়ে রোডক্র্যাশে মৃত্যুর হার অনেক অনেক বেশি ছিল তখন। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? তাহলে কি আমরা করোনাকে যেমন ভয় পেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পেরেছি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি?
বিগত কয়েক বছরের সড়ক দুর্ঘটনায় (রোডক্র্যাশ) মৃত্যুর পরিসংখ্যান যদি আমরা দেখি তাহলে দেখা যায় নিরাপদ সড়ক চাই এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২২ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৮৩ জন। আর, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭ হাজার ২৪টি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০২২ সালের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উপস্থাপনায় নিসচার সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, সড়ক পথে সবচেয়ে বেশি ৫ হাজার ৭৬০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া রেলপথে ২৭০ ও নৌপথে নিহত হয়েছেন ২০৪ জন। নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ২৪২ জন আর নারী ৯৯২ জন। বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করার কথা জানান তিনি।
এছাড়া নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাব বলছে, ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব রোডক্র্যাশে নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব রোডক্র্যাশে নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। তাদের হিসাবে, প্রতিদিন সড়কে ১৭ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৮৫ দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকার বিষয়টি হিসাবে নেয়া হলে, গড়ে দৈনিক ২২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ যখন একটি যানবাহন নিয়মের অতিরিক্ত গতিতে চলে তখন সে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে। বেপরোয়া গতিই রোডক্র্যাশের বড় কারণ। এছাড়া রোডক্র্যাশে হতাহত থেকে বাঁচতে মানসম্মত হেলমেট, যথাযথভাবে সিটবেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ মূলত মোটরযান আইন। যেখানে মোটরযানের ফিটনেস, লাইসেন্স, রুট পারমিট ও আইন ভঙ্গের জরিমানাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এই আইনে সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা সম্পর্কে অনুপুস্থিত। তাই এই আইন ব্যবহার করেও পাওয়া যাচ্ছে না আশানুরূপ ফল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং গ্লোবাল ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোডক্র্যাশ অর্জনে প্রয়োজন একটি আলাদা সড়ক নিরাপত্তা আইন। যে আইনটি জাতিসংঘ ঘোষিত সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ-এর আলোতে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা জরুরি। তাই বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে একটি ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ দরকার।
[লেখক: অ্যাডভোকেসি অফিসার (কমিউনিকেশন), রোড সেইফটি প্রকল্প, স্বাস্থ্য সেক্টর,
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]