alt

উপ-সম্পাদকীয়

যুব ক্ষমতায়ন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণকে ত্বরান্বিত করবে

হীরেন পণ্ডিত

: রোববার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টসমূহ (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি করাই এখন জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সফলভাবে বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশ এখন নতুন কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে। আজকের শিক্ষার্থীরাই একদিন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এই চারটি মূল ভিত্তির ওপর গড়ে উঠবে ২০৪১ সাল একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট জনসংখ্যার চার ভাগের একভাগ তরুণ, যা প্রায় ৫ কোটির কাছাকাছি। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মহীন যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর ও তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যে ১১ বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে কর্মপোযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এটি অবশ্যই একজন তরুণের জন্য আনন্দের। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ সমাজকে শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞানে এবং প্রযুক্তি বিজ্ঞানে অত্যন্ত দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি ও ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ইন্টারনেটে ও স্মার্ট ফোনের সহজলভ্যতার কারণে সরকারি সব সেবা দ্রুত ও ঘরে বসে পাচ্ছে। একসময় যে কাজ করতে প্রচুর অর্থ, শ্রম ও সময় লাগত তা বর্তমানে এক ক্লিকে ঘরে বসে করা যাচ্ছে। তারুণ্যের শক্তি স্মার্ট ও আধুনিক বাংলাদেশের মূল প্রতিনিধিত্ব হিসেবে কাজ করছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের সহযোগিতা বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা আশা করে। তরুণসমাজ, তারুণ্য একটি প্রাণশক্তি, যা অফুরন্ত সম্ভাবনা ও বর্ণিল স্বপ্ন দ্বারা পরিপূর্ণ বাংলাদেশের স্বপ্ন। তরুণদের ভাবনাগুলো হবে বাংলাদেশের ভাবনা, বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার ভাবনা, তরুণসমাজের আপাদমস্তক চিন্তাভাবনা হবে বাংলাদেশকে নিয়ে। সব অস্তিত্বে থাকবে বাংলাদেশ। তরুণদের কাজগুলো হবে বাংলাদেশের কাজ। সব স্বপ্ন দেখতে হবে বাংলাদেশকে নিয়ে। বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তরুণ সমাজের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। জনমিতিক পরিবর্তনে ২০৪১ সালে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স হবে ৩০ বছরের কম; ১৫-২৯ বছর বয়সের তরুণের সংখ্যা কম বেশি দুই কোটি হবে। বাংলাদেশের রূপান্তর ও উন্নয়নে এই তরুণ ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসার করা দরকার। সরকার বলছে, জেলা ও উপজেলায় ৩১ লাখ যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বেকার যুবকদের সর্বশেষ হার ১০.৬ শতাংশ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩.০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত তরুণ ও যুব-সমাজের জন্য যথোপযুক্ত কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগীদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হবে। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি ধীরে ধীরে দেশের সব উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। এসব প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হয় সেটা দেখার বিষয়। দেশে প্রতি বছর ২০ লাখের বেশি মানুষ শ্রম শক্তিতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। শিল্প খাতের বিকাশ এবং নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে এদের প্রত্যেকের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। কর্মসংস্থানের জন্য সবচেয়ে বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা। এ খাতের বাধাসমূহ দূর, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও বিদেশি মানবসম্পদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এ খাতকে আরও শক্তিশালী, সুসংগঠিত ও গতিশীল করে তোলা জরুরি। শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। তরুণ ও যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। গ্রামের তরুণ যুবসমাজের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমাতে গ্রামেই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ওপর জোর দিতে হবে। তরুণদের কৃষি, শিল্প ও ব্যবসায় উৎসাহ বাড়াতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে সেটা আশা করতে চাই। গ্রাম পর্যায়ে কৃষিযন্ত্র সেবাকেন্দ্র, ওয়ার্কশপ স্থাপন করে যন্ত্রপাতি মেরামতসহ গ্রামীণ যান্ত্রিকায়ন সেবা সম্প্রসারণ এবং এ সবের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থানের কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি হালকা যন্ত্রপাতি তৈরি ও বাজারজাত করতে বেসরকারি খাতের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং উপকরণে বিনিয়োগ সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত করার বিকল্প নেই। সরকার বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বেকার যুবকদের সর্বশেষ হার ১০.৬ শতাংশ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩.০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত তরুণ ও যুবসমাজের জন্য যথোপযুক্ত কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগীদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হবে। যুবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি ধীরে ধীরে দেশের সব উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় ‘যুব প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান কেন্দ্র’ স্থাপন করা হবে। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা ১৭.৮ শতাংশ যুবদের অনুপাত আগামী ৫ বছরে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। আগামী ৫ বছরে ২ লাখ যুবকের মাঝে ৭৫০ কোটি টাকা যুব ঋণ বিতরণ করা এবং ২ লাখ ৫০ হাজার যুবককে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আশা করতে চাই যে, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে। তাহলে হয়তো ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য পূরণ হবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে রক্ষা করুন

তরুণদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও মনঃসমীক্ষণ

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ও বাস্তবতা

স্বামী কিংবা স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ের আইনি প্রতিকার ও বাস্তবতা

তথ্য-উপাত্তের গরমিলে বাজারে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে বিভ্রান্তি

দেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব

ইরানে কট্টরপন্থার সাময়িক পরাজয়

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার ভবিষ্যৎ কী

ক্ষমতার সাতকাহন

জলবায়ু সংকট : আমাদের উপলব্ধি

নারী-পুরুষ চুড়ি পরি, দেশের অন্যায় দূর করি!

ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার

ছবি

সাধারণ মানুষেরা বড় অসাধারণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও কারিগরি শিক্ষা

মাদক রুখতে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ

পারিবারিক অপরাধপ্রবণতা ও কয়েকটি প্রশ্ন

ডারউইনকে খুঁজে পেয়েছি

চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফসল উৎপাদন করা জরুরি

পিএসসি প্রশ্নফাঁসের দায় এড়াবে কীভাবে

এত উন্নয়নের পরও বাসযোগ্যতায় কেন পিছিয়েই থাকছে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য কি কেউ নেই?

জলবায়ু রক্ষায় কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে

অধরার হাতে সমর্পিত ক্ষমতা

প্রসঙ্গ : কোটাবিরোধী আন্দোলন

রম্যগদ্য : যে করিবে চালাকি, বুঝিবে তার জ্বালা কী

একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলার পরিণতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন শ্রেণীকক্ষের বাইরে

মেধা নিয়ে কম মেধাবীর ভাবনা

প্রজাতন্ত্রের সেবক কেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বনে যান

ছবি

বাইডেন কি দলে বোঝা হয়ে যাচ্ছেন?

ছবি

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সাপ উপকারী প্রাণীও বটে!

ছবি

বাস্তববাদী রাজনীতিক জ্যোতি বসু

tab

উপ-সম্পাদকীয়

যুব ক্ষমতায়ন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণকে ত্বরান্বিত করবে

হীরেন পণ্ডিত

রোববার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টসমূহ (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি করাই এখন জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সফলভাবে বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশ এখন নতুন কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে। আজকের শিক্ষার্থীরাই একদিন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এই চারটি মূল ভিত্তির ওপর গড়ে উঠবে ২০৪১ সাল একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট জনসংখ্যার চার ভাগের একভাগ তরুণ, যা প্রায় ৫ কোটির কাছাকাছি। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মহীন যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর ও তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যে ১১ বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে কর্মপোযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এটি অবশ্যই একজন তরুণের জন্য আনন্দের। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণ সমাজকে শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞানে এবং প্রযুক্তি বিজ্ঞানে অত্যন্ত দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি ও ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ইন্টারনেটে ও স্মার্ট ফোনের সহজলভ্যতার কারণে সরকারি সব সেবা দ্রুত ও ঘরে বসে পাচ্ছে। একসময় যে কাজ করতে প্রচুর অর্থ, শ্রম ও সময় লাগত তা বর্তমানে এক ক্লিকে ঘরে বসে করা যাচ্ছে। তারুণ্যের শক্তি স্মার্ট ও আধুনিক বাংলাদেশের মূল প্রতিনিধিত্ব হিসেবে কাজ করছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের সহযোগিতা বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা আশা করে। তরুণসমাজ, তারুণ্য একটি প্রাণশক্তি, যা অফুরন্ত সম্ভাবনা ও বর্ণিল স্বপ্ন দ্বারা পরিপূর্ণ বাংলাদেশের স্বপ্ন। তরুণদের ভাবনাগুলো হবে বাংলাদেশের ভাবনা, বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার ভাবনা, তরুণসমাজের আপাদমস্তক চিন্তাভাবনা হবে বাংলাদেশকে নিয়ে। সব অস্তিত্বে থাকবে বাংলাদেশ। তরুণদের কাজগুলো হবে বাংলাদেশের কাজ। সব স্বপ্ন দেখতে হবে বাংলাদেশকে নিয়ে। বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তরুণ সমাজের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। জনমিতিক পরিবর্তনে ২০৪১ সালে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স হবে ৩০ বছরের কম; ১৫-২৯ বছর বয়সের তরুণের সংখ্যা কম বেশি দুই কোটি হবে। বাংলাদেশের রূপান্তর ও উন্নয়নে এই তরুণ ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসার করা দরকার। সরকার বলছে, জেলা ও উপজেলায় ৩১ লাখ যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং তাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বেকার যুবকদের সর্বশেষ হার ১০.৬ শতাংশ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩.০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত তরুণ ও যুব-সমাজের জন্য যথোপযুক্ত কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগীদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হবে। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি ধীরে ধীরে দেশের সব উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। এসব প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হয় সেটা দেখার বিষয়। দেশে প্রতি বছর ২০ লাখের বেশি মানুষ শ্রম শক্তিতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। শিল্প খাতের বিকাশ এবং নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে এদের প্রত্যেকের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। কর্মসংস্থানের জন্য সবচেয়ে বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা। এ খাতের বাধাসমূহ দূর, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও বিদেশি মানবসম্পদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এ খাতকে আরও শক্তিশালী, সুসংগঠিত ও গতিশীল করে তোলা জরুরি। শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। তরুণ ও যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। গ্রামের তরুণ যুবসমাজের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কমাতে গ্রামেই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ওপর জোর দিতে হবে। তরুণদের কৃষি, শিল্প ও ব্যবসায় উৎসাহ বাড়াতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে সেটা আশা করতে চাই। গ্রাম পর্যায়ে কৃষিযন্ত্র সেবাকেন্দ্র, ওয়ার্কশপ স্থাপন করে যন্ত্রপাতি মেরামতসহ গ্রামীণ যান্ত্রিকায়ন সেবা সম্প্রসারণ এবং এ সবের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থানের কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি হালকা যন্ত্রপাতি তৈরি ও বাজারজাত করতে বেসরকারি খাতের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং উপকরণে বিনিয়োগ সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। কর্মক্ষম, যোগ্য তরুণ ও যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত করার বিকল্প নেই। সরকার বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বেকার যুবকদের সর্বশেষ হার ১০.৬ শতাংশ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩.০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত তরুণ ও যুবসমাজের জন্য যথোপযুক্ত কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আত্মকর্মসংস্থানে উদ্যোগীদের সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হবে। যুবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি ধীরে ধীরে দেশের সব উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় ‘যুব প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান কেন্দ্র’ স্থাপন করা হবে। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা ১৭.৮ শতাংশ যুবদের অনুপাত আগামী ৫ বছরে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। আগামী ৫ বছরে ২ লাখ যুবকের মাঝে ৭৫০ কোটি টাকা যুব ঋণ বিতরণ করা এবং ২ লাখ ৫০ হাজার যুবককে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আশা করতে চাই যে, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে। তাহলে হয়তো ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য পূরণ হবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

back to top