alt

উপ-সম্পাদকীয়

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে তালগাছ

কাজী তারিক আহম্মদ

: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরামের তথ্যমতে, এ দেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ি ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। তবে শহরের ভবনগুলোতে বজ্রপাত প্রতিরোধক দ- থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। ২০১১-এর শুরু থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১২ বছরে দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬২ জনের। সাধারণত এপ্রিল ও জুনে বজ্রপাত বেশি হয়।

জানা গেছে, মার্চ থেকে অন্তত তিন মাস বোরো আবাদে হাওরে বিপুল সংখ্যক মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে। ওই সময় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি ঘটে। এদিকে দেশের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা সুনামগঞ্জে হতাহত কমাতে বসানো হয়েছে ২৪টি বজ্রনিরোধক লাইটনিং অ্যারেস্টার।

দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুরোধ করতে প্রযুক্তির দিকে মনোযোগী হতে হবে; যাতে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। যখনই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শুনবেন বৃষ্টি হবে, তখনই বজ্রপাত হবে ধরে নিতে হবে। বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুনের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকবে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে খোলা জায়গায় না থেকে নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে। এ সময় বড় গাছের নিচে থাকাটা সবচেয়ে অনিরাপদ। কারণ বজ্রপাত উঁচু কিছুর ওপরেই আঘাত হানে।

বজ্রপাতে ২০১১ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ৩৬২ জনে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৪০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়লে ২০ শতাংশ বজ্রপাত বেড়ে যায়। এ হিসেবে বজ্রপাত বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ ভিত হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে বজ্রপাত বেশি হয়। আর বাংলাদেশে মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রাকৃতিক বিরূপ প্রভাবে বজ্রপাত হচ্ছে, তারপরও মানুষ থেমে নেই। কিভাবে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়? স্থানীয় জ্ঞান থেকে বের হয়ে এসেছে এক অভিমত। আর তা হলো তালগাছ লাগানো। বজ্রপাত নিরোধে তালগাছ অনেকটাই কার্যকর।

বিশেষজ্ঞারা বলছেন, তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ তালগাছের বাঁকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও তালগাছ বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক হতে পারে। তালগাছের পাশাপাশি নারকেল গাছ, সুপারি গাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ লাগাতে হবে। প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রকৃতিই বাঁচার উপায়। তাই প্রকৃতির সহায়তা নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

বজ্রপাত শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। বজ্রপাত নিরোধে তালগাছ অনেকটাই কার্যকর। তাই স্থানীয় এই জ্ঞানকে কাজে লাগানো দরকার। সরকারের পাশাপাশি এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ কার্যক্রমকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তালগাছ লাগানোর পাশাপাশি নারকেল গাছ, সুপারি গাছ লাগানোর উদ্যোগকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৩১ লাখ ৬৪ হাজার তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। নাসার তথ্য অনুযায়ী বজ্রপাতের অন্যতম হটস্পট বাংলাদেশ। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে প্রাকৃতিকভাবে লম্বা গাছ যেমন- তালগাছ, সুপারি গাছ, নারকেল গাছ, বটগাছ কমে যাবার কারণেও বজ্রপাত এখন যেখানে সেখানে আঘাত হানছে। আগে বড় বড় বটগাছ, তালগাছ ও সুপারি গাছ মাথা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকত বলে বজ্রপাত হতো এসব গাছের ওপর। বড় বড় গাছ কেটে ফেলায় বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়িতে, রাস্তার পাশে, ফসলি জমির আইলে তালগাছ, সুপারি গাছ, নারকেল গাছ রোপণ করতে হবে।

প্রতি বছর যে হারে গাছ কাটা হয় সে অনুপাতে গাছ রোপণ করা হয় না। আগে গ্রামের মাঠঘাটে তালগাছ দেখা যেত। তালগাছ বজ্রপাত ঠেকানোর অন্যতম উপায়। এখন তালগাছের সংখ্যা কমে এসেছে। বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে মাঠেঘাটে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি বাড়িতে আরথিন ব্যবস্থা সেট করতে হবে।

পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বজ্রপাতের আঘাত থেকে রেহাই পেতে হলে কিছু সতর্কমূলক ব্যবস্থা সবার জেনে রাখা ভালো। বজ্রপাতের শঙ্কা থাকলে পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। উঁচুস্থান পরিহার করতে হবে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের শঙ্কা বেশি থাকে বিধায় বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘরে থাকলে জানালা থেকে দূরে থাকতে হবে। ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলতে হবে। বজ্রপাতে শুধু প্রাণহানি হয় না, নষ্ট হচ্ছে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিও, বিধায় এ সময় ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর সুইচ বন্ধ করে রাখা উত্তম।

[লেখক : সংবাদকর্মী]

আকস্মিক বন্যা প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির কৌশল

পতিতাবৃত্তি কি অপরাধ?

বন্যা-পরবর্তী কৃষকের সুরক্ষা করণীয়

নদী সংস্কার : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

নিজের চরকায় তেল দেবার নাম দেশপ্রেম

রম্যগদ্য : ডাক্তারি যখন আইসিইউতে

ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য

বাঙালির ইলিশচর্চা

এসডিজি অর্জনে চ্যালেঞ্জ হতে পারে কুষ্ঠ রোগ

প্রসঙ্গ : পরিসংখ্যানের তথ্য বিকৃতি

বোরো ধান বিষয়ে কিছু সতর্কতা এবং সার ব্যবস্থাপনা

বন্যার জন্য ভারত কতটুকু দায়ী

গ্রাফিতিতে আদিবাসীদের বঞ্চনার চিত্র

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা

পুলিশের সংস্কার হোক জনগণের কল্যাণে

জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের মনস্তত্ত্ব

উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে হবে

বন্যার বিভিন্ন ঝুঁকি ও করণীয়

প্রশ্নে জর্জরিত মানুষ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবির্ভাব

রম্যগদ্য : এ-পাস, না ও-পাস?

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি, উত্তরণের উপায়

গৃহকর্মী নির্যাতনের অবসান হোক

মাঙ্কিপক্স : সতর্কতা ও সচেতনতা

সবার আগে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে

শিক্ষাক্ষেত্রে দ্রুত যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে

বাদী কিংবা বিবাদীর মৃত্যুতে আইনি ফলাফল কী?

নদ-নদীর সংজ্ঞার্থ ও সংখ্যা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

রাষ্ট্র সংস্কার ও পরিবেশ ন্যায়বিচার

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য কি দূর হবে

আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তহীন কাজ

নিষ্ঠার সাথে নিজের কাজটুকু করাই দেশপ্রেম

দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে

ছবি

ইসমাইল হানিয়ের করুণ মৃত্যু

ক্যাপিটল : মার্কিনিদের গণতন্ত্রের প্রতীক

হাওর উন্নয়নে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে তালগাছ

কাজী তারিক আহম্মদ

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরামের তথ্যমতে, এ দেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ি ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। তবে শহরের ভবনগুলোতে বজ্রপাত প্রতিরোধক দ- থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। ২০১১-এর শুরু থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১২ বছরে দেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬২ জনের। সাধারণত এপ্রিল ও জুনে বজ্রপাত বেশি হয়।

জানা গেছে, মার্চ থেকে অন্তত তিন মাস বোরো আবাদে হাওরে বিপুল সংখ্যক মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকে। ওই সময় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি ঘটে। এদিকে দেশের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা সুনামগঞ্জে হতাহত কমাতে বসানো হয়েছে ২৪টি বজ্রনিরোধক লাইটনিং অ্যারেস্টার।

দেশে বজ্রপাতে মৃত্যুরোধ করতে প্রযুক্তির দিকে মনোযোগী হতে হবে; যাতে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। এছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। যখনই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শুনবেন বৃষ্টি হবে, তখনই বজ্রপাত হবে ধরে নিতে হবে। বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুনের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত এমন আবহাওয়া থাকবে। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে খোলা জায়গায় না থেকে নিরাপদ জায়গায় থাকতে হবে। এ সময় বড় গাছের নিচে থাকাটা সবচেয়ে অনিরাপদ। কারণ বজ্রপাত উঁচু কিছুর ওপরেই আঘাত হানে।

বজ্রপাতে ২০১১ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ৩৬২ জনে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৪০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়লে ২০ শতাংশ বজ্রপাত বেড়ে যায়। এ হিসেবে বজ্রপাত বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ ভিত হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে বজ্রপাত বেশি হয়। আর বাংলাদেশে মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রাকৃতিক বিরূপ প্রভাবে বজ্রপাত হচ্ছে, তারপরও মানুষ থেমে নেই। কিভাবে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়? স্থানীয় জ্ঞান থেকে বের হয়ে এসেছে এক অভিমত। আর তা হলো তালগাছ লাগানো। বজ্রপাত নিরোধে তালগাছ অনেকটাই কার্যকর।

বিশেষজ্ঞারা বলছেন, তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ তালগাছের বাঁকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও তালগাছ বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক হতে পারে। তালগাছের পাশাপাশি নারকেল গাছ, সুপারি গাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ লাগাতে হবে। প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রকৃতিই বাঁচার উপায়। তাই প্রকৃতির সহায়তা নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

বজ্রপাত শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। বজ্রপাত নিরোধে তালগাছ অনেকটাই কার্যকর। তাই স্থানীয় এই জ্ঞানকে কাজে লাগানো দরকার। সরকারের পাশাপাশি এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সামাজিক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ কার্যক্রমকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তালগাছ লাগানোর পাশাপাশি নারকেল গাছ, সুপারি গাছ লাগানোর উদ্যোগকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৩১ লাখ ৬৪ হাজার তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। নাসার তথ্য অনুযায়ী বজ্রপাতের অন্যতম হটস্পট বাংলাদেশ। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে প্রাকৃতিকভাবে লম্বা গাছ যেমন- তালগাছ, সুপারি গাছ, নারকেল গাছ, বটগাছ কমে যাবার কারণেও বজ্রপাত এখন যেখানে সেখানে আঘাত হানছে। আগে বড় বড় বটগাছ, তালগাছ ও সুপারি গাছ মাথা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকত বলে বজ্রপাত হতো এসব গাছের ওপর। বড় বড় গাছ কেটে ফেলায় বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়িতে, রাস্তার পাশে, ফসলি জমির আইলে তালগাছ, সুপারি গাছ, নারকেল গাছ রোপণ করতে হবে।

প্রতি বছর যে হারে গাছ কাটা হয় সে অনুপাতে গাছ রোপণ করা হয় না। আগে গ্রামের মাঠঘাটে তালগাছ দেখা যেত। তালগাছ বজ্রপাত ঠেকানোর অন্যতম উপায়। এখন তালগাছের সংখ্যা কমে এসেছে। বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে মাঠেঘাটে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি বাড়িতে আরথিন ব্যবস্থা সেট করতে হবে।

পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বজ্রপাতের আঘাত থেকে রেহাই পেতে হলে কিছু সতর্কমূলক ব্যবস্থা সবার জেনে রাখা ভালো। বজ্রপাতের শঙ্কা থাকলে পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। উঁচুস্থান পরিহার করতে হবে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের শঙ্কা বেশি থাকে বিধায় বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘরে থাকলে জানালা থেকে দূরে থাকতে হবে। ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলতে হবে। বজ্রপাতে শুধু প্রাণহানি হয় না, নষ্ট হচ্ছে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিও, বিধায় এ সময় ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর সুইচ বন্ধ করে রাখা উত্তম।

[লেখক : সংবাদকর্মী]

back to top