শিতাংশু গুহ
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মিশেল ওবামা দেরিতে হলেও শেষপর্যন্ত কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন। ইতোপূর্বে প্রেসিডেন্ট বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সিনেট নেতা চাক স্যুমার, হাউস ডেমোক্র্যাট নেতা হেকিম জেফরী, সাবেক স্পিকার ন্যান্সী পেলোসি, বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট গভর্নর, ডেলিগেট, বিভিন্ন স্টেস্টের ডেমোক্র্যাট নেতারা কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানান। দৃশ্যত : কমলা হ্যারিসের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এর ফলে ১৯ আগস্ট শিকাগোতে অনুষ্ঠিতব্য ডেমোক্র্যাট সম্মেলনে তিনি দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হচ্ছেন তা স্পষ্ট।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেয়ায় তিনি দ্রুত এগিয়ে যেতে সমর্থ হন এবং দক্ষতার সঙ্গে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। প্রশ্ন উঠেছে, কমলাকে সমর্থন দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঠিক কাজ করেছেন কিনা? কারণ যুক্তরাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক প্রথা হচ্ছে, সিটিং প্রেসিডেন্ট সম্মেলনের পরেই কেবল প্রার্থীকে সমর্থন জানান। আরো প্রশ্ন যে, কমলা একটি ভোটও পাননি, একটি ডেলিগেট জেতেননি, অর্থাৎ তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এমনকি ২০২০-তেও তিনি কোনো ভোট বা ডেলিগেট পাননি। কারণ বাইডেন সম্মেলনের আগে তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দেন। এটা কি গণতন্ত্র?
কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। ৪৮ ঘণ্টায় তার নির্বাচনী তহবিলে ১০০ মিলিয়ন ডলার চাঁদা ওঠে। বাইডেন বুধবার ওভাল অফিস থেকে ১১ মিনিটের এক ভাষণে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, গণতন্ত্রের জন্যই তার সরে দাঁড়ানো। কেন্টাকির রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জেমস কমার বলেছেন, বাইডেন গণতন্ত্রের মুখ চপেটাঘাত করেছেন। বাইডেন অবশ্য ট্রাম্পের নাম না নিয়ে তার সমালোচনা করেছেন। কমলা হ্যারিস বলেছেন, এবারের নির্বাচন চরমপন্থার বিরুদ্ধে। ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বায়রন ডোনাল্ডস বলেছেন, কমলা এলিটদের সমর্থন পেয়েছেন, ভোটারদের নন।
সিএনএন জানায়, ট্রাম্প ৪৯% ভোটে কমলা হ্যারিস ৪৬% থেকে এগিয়ে। ইমারসন জরিপ বলেছে, ৪টি ব্যাটেলগ্রাউন্ড টেস্টে ট্রাম্প এগিয়ে আছেন। ইমারসন কলেজ পোলিং/দ্য হিল সার্ভে বলেছে, আরিজোনায় ট্রাম্প (৪৯-৪৪%), জর্জিয়ায় (৪৮-৪৬), মিশিগান (৪৬-৪৫), পেনসিলভানিয়া (৪৮-৪৬), উইসকনসিন (৪৭-৪৭)। এসব স্টেটে যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তাদের পরিসংখ্যান হচ্ছে, আরিজোনা, জর্জিয়া, পেনসিলভানিয়া ৭%, মিশিগান ৯%, উইসকনসিন ৫%। এদিকে কমলা হ্যারিস কাকে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট নেবেন তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। প্রায় এক ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। পেনসিলভানিয়ার গভর্নর হোজে সাপিরো, নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপার, আরিজোনার সিনেটর মার্ক কেলী এই তালিকায় এগিয়ে আছেন। তবে কমলা হয়তো তার ভিপি হিসেবে একজন শ্বেতাঙ্গ-পুরুষ মনোনয়ন দেবেন।
এদিকে নর্থ ক্যারোলিনার শার্লোটে বুধবার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, গুলি খাওয়ার পর আমি ভদ্র হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু ওরা এত খারাপ যে ওদের সঙ্গে ভদ্রতা চলে না। এরপর তিনি কমলা হ্যারিসকে উদ্দেশ করে বলেন, কমলা রেডিক্যাল বাম, পাগল, কমলা জিতলে এক বছরের মধ্যে আমেরিকাকে ধ্বংস করে দেবে। তিনি বলেন, কমলা যাতে হাত দেন, সেটাই শেষ। তিনি বর্ডারে হাত দিয়েছেন, ২ মিলিয়ন এলিয়েন ঢুকে গেছে। তিনি ইউরোপ গেছেন রাশিয়াকে ঠেকাতে, ফিরে আসার পাঁচ দিনের মধ্যে পুতিন ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে। ট্রাম্প একপর্যায়ে বলেন, কমলা, ইউ আর ফায়ার্ড।
[লেখক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী]
শিতাংশু গুহ
রোববার, ২৮ জুলাই ২০২৪
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মিশেল ওবামা দেরিতে হলেও শেষপর্যন্ত কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন। ইতোপূর্বে প্রেসিডেন্ট বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সিনেট নেতা চাক স্যুমার, হাউস ডেমোক্র্যাট নেতা হেকিম জেফরী, সাবেক স্পিকার ন্যান্সী পেলোসি, বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট গভর্নর, ডেলিগেট, বিভিন্ন স্টেস্টের ডেমোক্র্যাট নেতারা কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানান। দৃশ্যত : কমলা হ্যারিসের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এর ফলে ১৯ আগস্ট শিকাগোতে অনুষ্ঠিতব্য ডেমোক্র্যাট সম্মেলনে তিনি দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হচ্ছেন তা স্পষ্ট।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেয়ায় তিনি দ্রুত এগিয়ে যেতে সমর্থ হন এবং দক্ষতার সঙ্গে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। প্রশ্ন উঠেছে, কমলাকে সমর্থন দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঠিক কাজ করেছেন কিনা? কারণ যুক্তরাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক প্রথা হচ্ছে, সিটিং প্রেসিডেন্ট সম্মেলনের পরেই কেবল প্রার্থীকে সমর্থন জানান। আরো প্রশ্ন যে, কমলা একটি ভোটও পাননি, একটি ডেলিগেট জেতেননি, অর্থাৎ তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এমনকি ২০২০-তেও তিনি কোনো ভোট বা ডেলিগেট পাননি। কারণ বাইডেন সম্মেলনের আগে তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দেন। এটা কি গণতন্ত্র?
কমলা হ্যারিস প্রার্থী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। ৪৮ ঘণ্টায় তার নির্বাচনী তহবিলে ১০০ মিলিয়ন ডলার চাঁদা ওঠে। বাইডেন বুধবার ওভাল অফিস থেকে ১১ মিনিটের এক ভাষণে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, গণতন্ত্রের জন্যই তার সরে দাঁড়ানো। কেন্টাকির রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জেমস কমার বলেছেন, বাইডেন গণতন্ত্রের মুখ চপেটাঘাত করেছেন। বাইডেন অবশ্য ট্রাম্পের নাম না নিয়ে তার সমালোচনা করেছেন। কমলা হ্যারিস বলেছেন, এবারের নির্বাচন চরমপন্থার বিরুদ্ধে। ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বায়রন ডোনাল্ডস বলেছেন, কমলা এলিটদের সমর্থন পেয়েছেন, ভোটারদের নন।
সিএনএন জানায়, ট্রাম্প ৪৯% ভোটে কমলা হ্যারিস ৪৬% থেকে এগিয়ে। ইমারসন জরিপ বলেছে, ৪টি ব্যাটেলগ্রাউন্ড টেস্টে ট্রাম্প এগিয়ে আছেন। ইমারসন কলেজ পোলিং/দ্য হিল সার্ভে বলেছে, আরিজোনায় ট্রাম্প (৪৯-৪৪%), জর্জিয়ায় (৪৮-৪৬), মিশিগান (৪৬-৪৫), পেনসিলভানিয়া (৪৮-৪৬), উইসকনসিন (৪৭-৪৭)। এসব স্টেটে যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তাদের পরিসংখ্যান হচ্ছে, আরিজোনা, জর্জিয়া, পেনসিলভানিয়া ৭%, মিশিগান ৯%, উইসকনসিন ৫%। এদিকে কমলা হ্যারিস কাকে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট নেবেন তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। প্রায় এক ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। পেনসিলভানিয়ার গভর্নর হোজে সাপিরো, নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপার, আরিজোনার সিনেটর মার্ক কেলী এই তালিকায় এগিয়ে আছেন। তবে কমলা হয়তো তার ভিপি হিসেবে একজন শ্বেতাঙ্গ-পুরুষ মনোনয়ন দেবেন।
এদিকে নর্থ ক্যারোলিনার শার্লোটে বুধবার এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, গুলি খাওয়ার পর আমি ভদ্র হয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু ওরা এত খারাপ যে ওদের সঙ্গে ভদ্রতা চলে না। এরপর তিনি কমলা হ্যারিসকে উদ্দেশ করে বলেন, কমলা রেডিক্যাল বাম, পাগল, কমলা জিতলে এক বছরের মধ্যে আমেরিকাকে ধ্বংস করে দেবে। তিনি বলেন, কমলা যাতে হাত দেন, সেটাই শেষ। তিনি বর্ডারে হাত দিয়েছেন, ২ মিলিয়ন এলিয়েন ঢুকে গেছে। তিনি ইউরোপ গেছেন রাশিয়াকে ঠেকাতে, ফিরে আসার পাঁচ দিনের মধ্যে পুতিন ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে। ট্রাম্প একপর্যায়ে বলেন, কমলা, ইউ আর ফায়ার্ড।
[লেখক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী]