alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

: মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রীর দাম প্রতি দিন বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য এতই বেড়েছে যে, দিনমজুর মানুষের প্রতিদিনের আয়ের সবটুকু খ্যাদ্যপণ্য কিনতে শেষ হয়ে যায়। অথচ বিকল্প আয় বা কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ ঘটছে না। জুলাই মাসে যে লাউ ২৫ টাকা দিয়ে কেনা যেত তার বর্তমান বাজার মূল্য ৫৫ টাকা (রাজশাহীর সাহেব বাজারের হিসাবে)। এখানে মূল্য বৃদ্ধির হার ১২০ শতাংশ। জুলাই মাসে এক কেজি মোটা চালের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা কেজি, বর্তমানে সেই চালের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকা কেজি। এখানে মূল্য বৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ। কাঁচামরিচ জুলাই মাসে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। কাঁচামরিচের মূল্য বৃদ্ধির হার ৭০০ শতাংশ।

প্রতিটি পণ্য ধরে ধরে হিসাব করলে দেখা যায়, সব ধরনের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় ৩০ শতাংশের উপরে। কোন কোন পণ্যের মূল্য এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, যার হার ৭০০ থেকে ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অর্থনীতির নিয়মানুসারে বাজারে অর্থ সমাগম বাড়লে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ মানুষের আয় যদি বেড়ে যায় তাহলে তার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। ব্যক্তির ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে মূল্যস্ফীতি দেখা যায়। এখানে প্রশ্ন হলো গত জুলাই মাসে ব্যক্তির যা আয় ছিল তা কি বেড়েছে? সাদা চোখে এর উত্তর হবে না। বরেন্দ্র অঞ্চলে একজন দিনমুজুরের দৈনিক মজুরি ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বর্তমানে ওই মজুরিটা তো বাড়েনি বরং কমেছে। মজুরি কমার কারণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়া কৃষকেরা এখন আর কৃষি কাজে শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারছে না। কারণ নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওই শ্রমিকের কাজগুলো নিজেই পরিবারের অন্য সদস্যদের সহায়তা নিয়ে করে ফেলছেন। কৃষকেরা নিজের সংসার চালাতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে। তাই দেখা যায় কৃষি ক্ষেত্রের কিছু কাজ চুক্তিতে শ্রমিকদের দিচ্ছেন, দিন হিসেবে না দিয়ে। অপরদিকে হাতে কাজ না থাকায়, দিনমজুররা অনেকটা বাধ্য হয়ে কম মূল্যে চুক্তিতে কাজ করার জন্য রাজি হন কৃষকদের সঙ্গে। এর ফলে দেখা যায় এই কাজটি সম্পাদন করার পর তার দৈনকি মজুরিটা জুলাই থেকে অনেকটা কমে গেছে। অন্যদিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, কোন সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়েনি অর্থাৎ মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। ক্রেতার হাতে প্রকৃতার্থে অর্থ সমাগম হয়নি, কিন্তু বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। অর্থনীতির কোন নিয়মে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে তা বোধ্যগম্য হচ্ছে না সাধারণ মানুষের।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যন ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতেÑ জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগষ্ট মাসে তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি সর্ম্পকে বিবিএস যা বলছে, তা বাস্তবের সাথে কতটা মিলে? বিবিএসের তথ্য এক ধরনের। তার সাথে বাস্তবতার আদৌও মিলে না। তাই যথাযথ হিসাব করলে দেখা যাবে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বিবিএসের চেয়ে বাস্তবে অনেক বেশি। বিবিএসের একটি তথ্য বলছে, এই সময়ে নাকি দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৭ দশমিক ৯৩ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ হয়েছে। এই হিসাবে মজুরি বাড়ল শূন্য্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ; যা অনুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যাবে না। বিবিএসের প্রকাশিত তথ্য থেকে আরও জানা যায় জুলাই মাসে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। তবে এটা প্রকৃত বিচারে কতটা সঠিক তাও প্রশ্নবিদ্ধ। রাজস্ব রীতি অনুযায়ী বলা হয়, একটি দেশের সরকার সাধারণত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে জন্য বিদেশ থেকে ঋণ বা সহায়তা গ্রহণ করেন এবং গ্রহণ করা অর্থ উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করে, তখন বাজারে অর্থ সরবরাহ বেড়ে যায়, আর তখন ঘটে মুদ্রাস্ফীতি।

মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পণ্যমূল্যের ওপর পড়ার জন্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে দেশের অর্থ বাজারে তার প্রভাবও পড়েনি তারপরও দ্রব্যমূল্য হু-হু করে বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্পগুলোর ফান্ড না আসায় প্রান্তিক ঠিকাদাররা অর্থকষ্টে ভুগছে।

বর্তমানে দেশের খাদ্য পণ্যমূল্য বৃদ্ধির হারটা গাণিতিক হারেই বেড়ে চলেছে। বর্তমানে পণ্যর মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাজার ব্যবস্থা অনেকটা অরাজক হয়ে যাচ্ছে বললে ভুল হবে না। দেশের কাঁচাবাজারে খাদ্য পণ্যের দাম চাওয়ার বিষয়টি বদলে গেছে। আগে বেগুন বিক্রেতাকে বেগুনের মূল্য জিজ্ঞেস করলে বলতোÑ প্রতি কেজি ৩০ টাকা। এখন বাজারে বেগুন বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলে বলে আধা কেজি বেগুন ৬০ টাকা। এখানে দাম চাওয়ার একটি পরিমাণগত অবস্থার পরির্বতন হয়েছে। কারণ মানুষ আগের পরিমাণে জিনিস কিনছে না। কাঁচামরিচের ক্ষেত্রে এখন বিক্রেতা দাম চায় এভাবেÑ ১০০ গ্রাম কাঁচামরিচ ৫০ টাকা। অথচ দুই মাস আগে দাম চাওয়া হতোÑ আড়াইশ কাঁচামরিচ ২০ টাকা। এ ধরনের মূল্য বৃদ্ধিতে নাভিঃশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কারের দিকে নজর দিয়েছেন। তবে সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়া। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বেশি জরুরি দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা। তা না হলে মেল নিউট্রেশনের কবলে দেশের প্রায় শতকরা ৫০ শতাংশ মানুষ পতিত হবে।

[লেখক : উন্নয়নকর্মী]

বায়ুর অপর নাম জীবন

ছবি

হাওরের জীবন ও সংস্কৃতি

বিখণ্ডিত আত্মপরিচয়: তরল সহানুভূতিতে নৈতিক মূলধনের সমাজতত্ত্ব

প্রভাষকের ‘প্রভা’ যখন ‘শোক’: শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি বঞ্চনা

যুদ্ধ বিরতি গাজাবাসীর জন্য জরুরি ছিল

লবলং খালের মৃত্যু: স্মৃতিতে নদী, বাস্তবে দূষণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা: অর্থনৈতিক স্থিতির পূর্বশর্ত

হায় যম! আর কতক্ষণ, হবে অপেক্ষা করিতে মোরে?

পোশাক শিল্প : অগ্রগতি ও শ্রমিকের অধিকার

গণভোটের রাজনৈতিক গুরুত্ব

বামঘরানার বাটখারা...

বাগদা ফার্ম : স্মারকলিপি, অবরোধ, অনশন, আন্দোলন- কিছুতেই বরফ গলেনি

ব্যাটারি-শকট: নতুন সংকট

মতপ্রকাশ কিংবা দ্বিমত পোষণ: নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক বাস্তবতা

সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন ব্যাংক কি আদৌ প্রয়োজন

ট্রাম্প ও শি’র ‘কৌশলগত শান্তি’

আশার সমাজতত্ত্ব: বিভ্রান্তির যুগে ভবিষ্যৎ নির্মাণের বিপ্লবী বিজ্ঞান

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

ডিম নয় তবু অশ্বডিম্ব!

ছবি

অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নির্বাচন

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

প্রকৃতার্থে ফকির কারা

এনসিপি চায় অবিনাশী জুলাই সনদ

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

আলুর প্রাচুর্যে কৃষকের সংকট

তাহলে কী ‘কোটা’ই জয়যুক্ত হবে!

ব্যাংকিং খাতে বিষফোঁড়া: বাংলাদেশের অর্থনীতির ধমনী বিষাক্ত হয়ে উঠছে

ছবি

ঢাকার নদী ও খালের দখল-দূষণ: পুনরুদ্ধার কোন পথে

জমি কী মূলে রেকর্ড হয়েছে, দলিল মূলে না উত্তরাধিকার মূলে?

কার্বন-নিরপেক্ষ শিশুর অনুপ্রেরণায় দেশ

এবার আমরা সভ্য হলাম!

সোনার প্রাসাদের দেয়ালে ঘামের দাগ

নিরাপদ সড়ক চাই কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ কোথায়?

অবহেলিত শিক্ষার দুর্দশা বাড়ছে

টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত নিরাপদ সড়ক

বাংলার সংস্কৃতি কি মূলধারা হারিয়ে ফেলবে?

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রীর দাম প্রতি দিন বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য এতই বেড়েছে যে, দিনমজুর মানুষের প্রতিদিনের আয়ের সবটুকু খ্যাদ্যপণ্য কিনতে শেষ হয়ে যায়। অথচ বিকল্প আয় বা কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ ঘটছে না। জুলাই মাসে যে লাউ ২৫ টাকা দিয়ে কেনা যেত তার বর্তমান বাজার মূল্য ৫৫ টাকা (রাজশাহীর সাহেব বাজারের হিসাবে)। এখানে মূল্য বৃদ্ধির হার ১২০ শতাংশ। জুলাই মাসে এক কেজি মোটা চালের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা কেজি, বর্তমানে সেই চালের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকা কেজি। এখানে মূল্য বৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ। কাঁচামরিচ জুলাই মাসে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। কাঁচামরিচের মূল্য বৃদ্ধির হার ৭০০ শতাংশ।

প্রতিটি পণ্য ধরে ধরে হিসাব করলে দেখা যায়, সব ধরনের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় ৩০ শতাংশের উপরে। কোন কোন পণ্যের মূল্য এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, যার হার ৭০০ থেকে ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অর্থনীতির নিয়মানুসারে বাজারে অর্থ সমাগম বাড়লে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ মানুষের আয় যদি বেড়ে যায় তাহলে তার ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। ব্যক্তির ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে মূল্যস্ফীতি দেখা যায়। এখানে প্রশ্ন হলো গত জুলাই মাসে ব্যক্তির যা আয় ছিল তা কি বেড়েছে? সাদা চোখে এর উত্তর হবে না। বরেন্দ্র অঞ্চলে একজন দিনমুজুরের দৈনিক মজুরি ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বর্তমানে ওই মজুরিটা তো বাড়েনি বরং কমেছে। মজুরি কমার কারণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়া কৃষকেরা এখন আর কৃষি কাজে শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারছে না। কারণ নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওই শ্রমিকের কাজগুলো নিজেই পরিবারের অন্য সদস্যদের সহায়তা নিয়ে করে ফেলছেন। কৃষকেরা নিজের সংসার চালাতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে। তাই দেখা যায় কৃষি ক্ষেত্রের কিছু কাজ চুক্তিতে শ্রমিকদের দিচ্ছেন, দিন হিসেবে না দিয়ে। অপরদিকে হাতে কাজ না থাকায়, দিনমজুররা অনেকটা বাধ্য হয়ে কম মূল্যে চুক্তিতে কাজ করার জন্য রাজি হন কৃষকদের সঙ্গে। এর ফলে দেখা যায় এই কাজটি সম্পাদন করার পর তার দৈনকি মজুরিটা জুলাই থেকে অনেকটা কমে গেছে। অন্যদিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, কোন সেক্টরের শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়েনি অর্থাৎ মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। ক্রেতার হাতে প্রকৃতার্থে অর্থ সমাগম হয়নি, কিন্তু বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। অর্থনীতির কোন নিয়মে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে তা বোধ্যগম্য হচ্ছে না সাধারণ মানুষের।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যন ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতেÑ জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগষ্ট মাসে তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি সর্ম্পকে বিবিএস যা বলছে, তা বাস্তবের সাথে কতটা মিলে? বিবিএসের তথ্য এক ধরনের। তার সাথে বাস্তবতার আদৌও মিলে না। তাই যথাযথ হিসাব করলে দেখা যাবে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বিবিএসের চেয়ে বাস্তবে অনেক বেশি। বিবিএসের একটি তথ্য বলছে, এই সময়ে নাকি দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৭ দশমিক ৯৩ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ হয়েছে। এই হিসাবে মজুরি বাড়ল শূন্য্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ; যা অনুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যাবে না। বিবিএসের প্রকাশিত তথ্য থেকে আরও জানা যায় জুলাই মাসে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। তবে এটা প্রকৃত বিচারে কতটা সঠিক তাও প্রশ্নবিদ্ধ। রাজস্ব রীতি অনুযায়ী বলা হয়, একটি দেশের সরকার সাধারণত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে জন্য বিদেশ থেকে ঋণ বা সহায়তা গ্রহণ করেন এবং গ্রহণ করা অর্থ উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করে, তখন বাজারে অর্থ সরবরাহ বেড়ে যায়, আর তখন ঘটে মুদ্রাস্ফীতি।

মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পণ্যমূল্যের ওপর পড়ার জন্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে দেশের অর্থ বাজারে তার প্রভাবও পড়েনি তারপরও দ্রব্যমূল্য হু-হু করে বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্পগুলোর ফান্ড না আসায় প্রান্তিক ঠিকাদাররা অর্থকষ্টে ভুগছে।

বর্তমানে দেশের খাদ্য পণ্যমূল্য বৃদ্ধির হারটা গাণিতিক হারেই বেড়ে চলেছে। বর্তমানে পণ্যর মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাজার ব্যবস্থা অনেকটা অরাজক হয়ে যাচ্ছে বললে ভুল হবে না। দেশের কাঁচাবাজারে খাদ্য পণ্যের দাম চাওয়ার বিষয়টি বদলে গেছে। আগে বেগুন বিক্রেতাকে বেগুনের মূল্য জিজ্ঞেস করলে বলতোÑ প্রতি কেজি ৩০ টাকা। এখন বাজারে বেগুন বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলে বলে আধা কেজি বেগুন ৬০ টাকা। এখানে দাম চাওয়ার একটি পরিমাণগত অবস্থার পরির্বতন হয়েছে। কারণ মানুষ আগের পরিমাণে জিনিস কিনছে না। কাঁচামরিচের ক্ষেত্রে এখন বিক্রেতা দাম চায় এভাবেÑ ১০০ গ্রাম কাঁচামরিচ ৫০ টাকা। অথচ দুই মাস আগে দাম চাওয়া হতোÑ আড়াইশ কাঁচামরিচ ২০ টাকা। এ ধরনের মূল্য বৃদ্ধিতে নাভিঃশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কারের দিকে নজর দিয়েছেন। তবে সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেয়া। বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বেশি জরুরি দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা। তা না হলে মেল নিউট্রেশনের কবলে দেশের প্রায় শতকরা ৫০ শতাংশ মানুষ পতিত হবে।

[লেখক : উন্নয়নকর্মী]

back to top