alt

উপ-সম্পাদকীয়

চরের কৃষি ও কৃষকের জীবন

এম মনির উদ্দিন

: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের নদ-নদীবেষ্টিত চর এলাকায় ৬.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস করে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ এবং এ চরাঞ্চলের আয়তন দেশের মোট জমির প্রায় ৫ শতাংশ। বদ্বীপ অববাহিকা বরাবর জমে থাকা পলি থেকে চর বা নদী দ্বীপ তৈরি হয়। বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীর উপকূলীয় এলাকা ও মোহনায় শত শত চর রয়েছে। পলি জমে এবং চর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠী উর্বর পলি মাটির টানে আকৃষ্ট হয়ে নুতনভাবে বাঁচার আশায় এই চরগুলোতে বসতি স্থাপন করে কৃষিকাজ শুরু করে। এসব চরে বসবাসকারী মানুষ দেশের সবচেয়ে দরিদ্র এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এদের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি কিন্তু চরগুলো নিয়মিত বন্যা, নদীভাঙন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিয়মিত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার কারণে তারা সবসময় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। চরগুলো মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এবং প্রয়োজনীয় সরকারি সুবিধা থেকে অনেকক্ষেত্রেই বঞ্চিত। নৌকার মাধ্যমেই তারা মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দরিদ্রতম এবং এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় দরিদ্রতম একটি জেলা কুড়িগ্রাম। প্রধান নদী যমুনা, ব্রক্ষপুত্র, তিস্তা, ধরলা, জিঞ্জিরা, দুধকুমারসহ ১৬টি ছোট বড় নদী প্রবাহিত হয়েছে এই কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে যা ৪০০টির ও বেশি চরকে সংযুক্ত করেছে। জেলাটির ৭০.৮ শতাংশ মানুষ দরিদ্র এবং ৫৩.২ শতাংশ অতি দরিদ্র। দেশের শিক্ষার দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে এই কুড়িগ্রাম জেলা এবং শিক্ষার হার ৪২.৫ শতাংশ। জেলার ২৪ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৫ লাখ মানুষ বাস করে এই চরগুলোতে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকালে সবাই নদীর প্রবহমান পানি দুকূল ছাপিয়ে আঘাত হানে এসব চরগুলোতে এবং অনেক সময় ভাসিয়ে নিয়ে যায় মানুষের ঘরবাড়িসহ সহায় সম্পদ, গবাদিপশু ইত্যাদি। যার ফলে চরগুলো এখন হয়ে উঠেছে আগের চেয়ে অনেকটাই অনিরাপদ।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার অধীনে একটি বিচ্ছিন্ন চর যার নাম খেওয়ার আলগা চর। এই চরের তরুণ, যুবক ছেলেমেয়েরা মিলে চরটির নাম দিয়েছে ইয়ুথ নেট চর; যার ছোট একটি সাইনপ্লেট টাঙানো আছে। চরটির আশপাশে রয়েছে আরো ৬-৭টি চর। যাত্রাপুর ঘাট থেকে নৌকায় চরটির ঘাটে পৌঁছতেই আরেকটি নৌকায় অপেক্ষামাণ কয়েকটি শিশুকে দেখে জানতে চাইলে শিশুগুলো জানালো যে, তারা পাশের চর থেকে এই চরের স্কুলে পড়তে এসেছিল এবং পড়াশেষে তারা তাদের নিজ চরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

উল্লেখ্য যে, আশপাশের ৬-৭টি চর ঘিরে কোন প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালো, যেহেতু এই চরগুলোতে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই সেহেতু, তারা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথাও ভাবেনা। মেয়েরা একটু বড় হলেই বিয়ে দেয়া হয় আর ছেলেরা চরের কৃষিকে আগলেই জীবন চালায়। তবে সম্প্রতি ফেন্ড্রশিপ নামক একটি এনজিও ইয়ুথ নেট চরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় করে দিয়েছে যেখানে ৩০ জন ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করতে পারে। অন্য চর থেকেও কয়েকজন শিশু পড়তে আসে এই বিদ্যালয়টিতে। স্কুলের মাঠটি ফ্রেন্ডশিপ এনজিও বাড়িগুলোর থেকে বেশি উঁচু করে দিয়েছে যাতে বর্ষায় ঘরবাড়িতে পানি উঠলে চরের মানুষ এখানে আশ্রয় নিতে পারে।

চরগুলোতে কোন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ব্যবস্থা নেই। চরবাসীর তথ্যমতে, চরের অনেক মানুষ বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসবের জটিলতায় পড়ে নৌকায় করে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যাওয়ার বেশ কয়েকটি নজির আছে। যে কোন অসুস্থতার জন্য তাদের শহরের দিকে ছুটতে হয়। হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেক্ষেত্রে চিকিৎসার কোন সুযোগ নেই। এগুলোকে মেনে নিয়েই চরে বসতি গড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অতি দরিদ্র মানুষগুলো। এই সমস্ত চরের খাস জমিগুলো কৃষক ইচ্ছে করলেই চাষবাস করতে পারেনা। প্রতি বিঘা জমি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিয়ে লিজ নিতে হয় দখলসূত্রে হওয়া কোন প্রভাবশালী মালিকের কাছ থেকে। অথচ সরকার এই জমিগুলোকে ভূমিহীন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করে ঢাকা শহরের বস্তিতে আশ্রয় নেয়া অনেক বানভাসী মানুষকে পুর্নবাসন করে কৃষি উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে; যার মাধ্যমে বাড়তে পারে দেশের উৎপাদন এবং জীবনের নতুন ঠিকানায় আশ্রয় পেতে পারে অনেক মানুষ।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ৫নং কাজলা ইউনিয়নের নিশ্চিতপরল চরে দীর্ঘদিন ধরে বাস করা অভিজ্ঞ কৃষক জহুরুল বেপারী, আশরাফ আলী, ঝন্টু প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানা গেলো চরকে ঘিরে তাদের সংগ্রামী জীবনের কথা। সরকার থেকে অনেক প্রণোদনার কর্মসূচি থাকলেও তার কোন কিছুই পৌঁছায় না এই চরে। তারা অধিকাংশ সময় স্থানীয় পর্যায়ের মহাজনদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে মূলধন সংগ্রহ করে কৃষিতে বিনিয়োগ করে। ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে সেই মহাজনেরাই বাজার মূল্যের চাইতে কমদামে ফসল কিনে নিয়ে যায় সেইসঙ্গে কেটে নেয় সুদসহ দেয়া মূলধন। অর্থাৎ কৃষকের হাতে থাকে না তেমন কোনই লাভ। এইভাবেই, এই চরের কৃষকেরা উর্বর পলিতে ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, পাট, ধান, তিল ইত্যাদি অর্থকরী ফসল ফলায় ঠিকই কিন্তু মৌসুম শেষে কৃষকেরা হিসেব মিলাতে পারে না। চরের দরিদ্র মানুষগুলো হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দেশের মানুষের জন্য খাদ্য ফলায় আবার সেই মানুষগুলোর ঘরেই অনেক সময় খাবার থাকে না।

ইয়ুথ নেট চরের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেরিয়ে আসলো বেশ কয়েকজনের কষ্টের গল্প। তাদের অনেকের ঘরবাড়ি ৪-৫ বার ভাঙতে হয়েছে নদী ভাঙনের কারনে। বর্ষাকালে প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ে ও আতংকে থাকতে হয় কখন নদীর তীব্র ¯্রােত মুহূর্তের মধ্যে বিলীন করে দেয় পুরো চরটিকে। নিশ্চিতপরল চরের ঘরবাড়িতে বর্ষার পানি উঠার দাগ দেখে জানা গেল যে, প্রতিবছরই এই চরের সব ঘরবাড়িতে পানি উঠে যায় এবং শুরু হয় তাদের মানবেতর জীবন। প্রতি পরিবারে রয়েছে দুই-চারটি করে গবাদিপশু এবং তাদের জন্য তৈরি করা হয় বাড়ির উচ্চতা থেকে আরো উঁচু করে একটু ভিটা, যেখানে বর্ষার সময় এই গবাদিপশুর ভিটার একপাশে থাকে গবাদিপশুগুলো আর অন্যপাশে থাকে পরিবারের সবাই মিলে। বর্ষার পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত এভাবেই রাতদিন কাটাতে হয় এই চরবাসীর।

দেশের অবহেলিত কয়েক মিলিয়ন চরবাসীর উৎপাদিত কৃষি খাদ্যপণ্য চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেশের মানুষের খাদ্যের জোগানে নীরবে, নিভৃতে অবদান রেখে চলেছে এই চরের দরিদ্র মানুষগুলো অথচ এই মানুষগুলো জানে না রাষ্ট্রের কাছে তাদের অধিকার রয়েছে শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্ন, বস্ত্রের, বাসস্থানের। যে চরবাসী দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখে তারাই আবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে হারিয়ে ফেলে তাদের শেষ সহায়-সম্বল ঘরবাড়ি ও চাষের জমি। তাদের নিজেদেরই আর খাবারের কোন নিরাপত্তা থাকে না। তখন এই বানভাসী পবিারগুলোর পেটের ক্ষুধা মেটাতে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় হয় ঢাকা শহরের কোন বস্তি। হয়তো জেগে ওঠে নতুন কোন চর যেখানে কোন প্রভাবশালী মহল লাল পতাকা তুলে জানান দেয় তার নতুন চরের রাজত্বের। আবার নতুন কোন পরিবার টাকাপয়সা দিয়ে লিজ নেয় কিছু জমি এবং আশায় বুক বেঁধে শুরু করে সংগ্রামী জীবন। এভাবেই ভাঙ্গাগড়ার মধ্য দিয়েই এই দরিদ্র মানুষগুলো অবদান রেখে যায় দেশের জন্য যদিও শেষপর্যন্ত তাদের জীবনের গন্তব্য থাকে অজানা। প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষ দেশের চরগুলোর ভাঙনের শিকার হয়ে পরিণত হচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে এবং এরা আশ্রয় নিচ্ছে বড় বড় শহরের বস্তিগুলোতে। যারা আজকে বিশ্বের জলবায়ুকে অস্থির করে তুলেছে তাদের বাংলাদেশের এসব জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন করার দায়িত্ব নিতে হবে। উন্নত দেশগুলোর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের বাতাস যদি উত্তপ্ত হতে পারে, যদি বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া হতে পারে, জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে তাহলে সেই সবাই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের আশ্রয়ের অধিকার রয়েছে বিশ্বের যেখানে অনিরাপদ বাসস্থান রয়েছে। অবশ্যই বাংলাদেশের সবাই জলবায়ু উদ্বাস্তুদের ভালো আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করতে হবে সেই সব দেশকে যারা বিশ্বের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে রেকর্ড তৈরি করছে।

অবহেলিত চরবাসীর তথা প্রান্তিক কৃষি পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, উচ্চ ফলনশীল, নিরাপদ এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসলের নতুন জাত সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের ফসলের উৎপাদন বাড়ানো সেইসঙ্গে উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য পাইয়ে দিতে গেইন বাংলাদেশ দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কৃষি স্বপ্ন এবং এগ্রিভেঞ্চারের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে এই চরগুলোর মধ্যে দুটি চর যথাক্রমে- খেওয়ার চর এবং নিশ্চিতপরল চরে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত বিশেষ কয়েকটি জলবায়ুবান্ধব তথা খরা বা উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল, পুষ্টিসমৃদ্ধ, স্বাস্থ্যকর এবং উচ্চমূল্যের ফসল যেমন বারি চিনা-২, বারি কাউন-২, বারি কাউন-৪, বারি বার্লি-৮, বারি বার্লি-৯, বারি সরগম-১, বারি কালোজিরা-১ ইত্যাদি এই চরগুলোতে সম্প্রসারনের জন্য গেইন তার দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করছে।

ইতোমধ্যে গেইন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রেশমা সুলতানাসহ কয়েকজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একমত হয়েছেন এবং একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে। বারির কারিগরি সহযোগিতা পেলে গেইন চরের কৃষকদের জন্য এই ফসলের উন্নত জাতগুলো সম্প্রসারনের মধ্য দিয়ে চরের কৃষকদের চলমান কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে সহযোগিতা করতে পারবে।

সবশেষে যেটি বলা যায় যে, দেশের চরগুলোতে বসবাসকারী কৃষকদের যদি সরকার থেকে সামান্য সহযোগিতা দেয়া যায়, চরের উর্বর পলিতে চাষের জন্য সামান্য বীজ কৃষকের হাতে তুলে দেয়া যায়, তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এই চরবাসী কৃষকেরা দেশের বর্তমান কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে অতিরিক্ত কয়েক লাখ টন খাদ্যপণ্য এবং কৃষকের জীবনযাত্রার মানকে পরিবর্তন করা সম্ভব। আমরা যারা কৃষকের উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল এবং কৃষকের ঘামঝরা পরিশ্রমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য খেয়ে জীবন চালাই- সবাই এ দেশের অবহেলিত কৃষকের পাশে দাঁড়াই। থাকি কৃষির সঙ্গে, কৃষকের পাশে।

[লেখক : এগ্রোনমিস্ট অ্যান্ড কনসালট্যান্ট, গেইন বাংলাদেশ]

ছবি

বিজয় সংগ্রামের সূচনার সন্ধানে

মানসম্মত কনটেন্ট ও টিআরপির দ্বৈরথ

জিকা ভাইরাস রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার গুরুত্ব

ঢাকার বাতাস বিষাক্ত কেন

নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো নাই

সবার আগে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার

পুলিশ কবে পুলিশ হবে

জীবন ফিরে আসুক বাংলার নদীগুলোতে

কান্দন সরেন হত্যা ও ভূমি বিরোধ কি এড়ানো যেত না

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র: রাষ্ট্র বিনির্মাণে সমস্যা কোথায়?

মানবাধিকার দিবস : মানুষের অধিকার নিয়ে কেন এত কথা?

আমলাতান্ত্রিক স্বচ্ছতা : সংস্কারের পথে নাকি পুনরাবৃত্তি?

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কিছু কথা

ছবি

বেগম রোকেয়া : নারী জাগরণের অগ্রদূত

দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তার বন্ধ করতে হবে

মা তোর বদনখানি মলিন হলে

ব্যবসায়ী নেতৃত্বশূন্য ই-ক্যাব

মূল্যস্ফীতির হিসাব নির্ণয়ে নতুন পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা

মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা চায়

সবার উপরে মানুষ সত্য

এইচএসসিতে ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় কেন, করণীয় কী

ছবি

নিরাপদ এবং সুষম পরিবেশের পরিকল্পনা

ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার সংস্কার প্রয়োজন

মশার কয়েলের প্রভাব : জনস্বাস্থ্যের অদৃশ্য হুমকি

“আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

কুষ্ঠজনিত প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি ও করণীয়

এই সর্বনাশের দায় কার?

জ্ঞানই শক্তি

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস : জোর দিতে হবে প্রতিরোধে

ঋণ ব্যবস্থা : তেলা মাথায় ঢালো তেল, ন্যাড়া মাথায় ভাঙো বেল

বিচারকের ওপর হামলা কেন

বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার কবলে রোহিঙ্গা ইস্যু

আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবস

বৈষম্য ঘোচাতে চাই একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়

tab

উপ-সম্পাদকীয়

চরের কৃষি ও কৃষকের জীবন

এম মনির উদ্দিন

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের নদ-নদীবেষ্টিত চর এলাকায় ৬.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস করে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশ এবং এ চরাঞ্চলের আয়তন দেশের মোট জমির প্রায় ৫ শতাংশ। বদ্বীপ অববাহিকা বরাবর জমে থাকা পলি থেকে চর বা নদী দ্বীপ তৈরি হয়। বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীর উপকূলীয় এলাকা ও মোহনায় শত শত চর রয়েছে। পলি জমে এবং চর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠী উর্বর পলি মাটির টানে আকৃষ্ট হয়ে নুতনভাবে বাঁচার আশায় এই চরগুলোতে বসতি স্থাপন করে কৃষিকাজ শুরু করে। এসব চরে বসবাসকারী মানুষ দেশের সবচেয়ে দরিদ্র এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এদের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি কিন্তু চরগুলো নিয়মিত বন্যা, নদীভাঙন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিয়মিত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার কারণে তারা সবসময় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। চরগুলো মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এবং প্রয়োজনীয় সরকারি সুবিধা থেকে অনেকক্ষেত্রেই বঞ্চিত। নৌকার মাধ্যমেই তারা মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দরিদ্রতম এবং এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় দরিদ্রতম একটি জেলা কুড়িগ্রাম। প্রধান নদী যমুনা, ব্রক্ষপুত্র, তিস্তা, ধরলা, জিঞ্জিরা, দুধকুমারসহ ১৬টি ছোট বড় নদী প্রবাহিত হয়েছে এই কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে যা ৪০০টির ও বেশি চরকে সংযুক্ত করেছে। জেলাটির ৭০.৮ শতাংশ মানুষ দরিদ্র এবং ৫৩.২ শতাংশ অতি দরিদ্র। দেশের শিক্ষার দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে এই কুড়িগ্রাম জেলা এবং শিক্ষার হার ৪২.৫ শতাংশ। জেলার ২৪ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৫ লাখ মানুষ বাস করে এই চরগুলোতে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকালে সবাই নদীর প্রবহমান পানি দুকূল ছাপিয়ে আঘাত হানে এসব চরগুলোতে এবং অনেক সময় ভাসিয়ে নিয়ে যায় মানুষের ঘরবাড়িসহ সহায় সম্পদ, গবাদিপশু ইত্যাদি। যার ফলে চরগুলো এখন হয়ে উঠেছে আগের চেয়ে অনেকটাই অনিরাপদ।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার অধীনে একটি বিচ্ছিন্ন চর যার নাম খেওয়ার আলগা চর। এই চরের তরুণ, যুবক ছেলেমেয়েরা মিলে চরটির নাম দিয়েছে ইয়ুথ নেট চর; যার ছোট একটি সাইনপ্লেট টাঙানো আছে। চরটির আশপাশে রয়েছে আরো ৬-৭টি চর। যাত্রাপুর ঘাট থেকে নৌকায় চরটির ঘাটে পৌঁছতেই আরেকটি নৌকায় অপেক্ষামাণ কয়েকটি শিশুকে দেখে জানতে চাইলে শিশুগুলো জানালো যে, তারা পাশের চর থেকে এই চরের স্কুলে পড়তে এসেছিল এবং পড়াশেষে তারা তাদের নিজ চরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

উল্লেখ্য যে, আশপাশের ৬-৭টি চর ঘিরে কোন প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালো, যেহেতু এই চরগুলোতে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই সেহেতু, তারা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার কথাও ভাবেনা। মেয়েরা একটু বড় হলেই বিয়ে দেয়া হয় আর ছেলেরা চরের কৃষিকে আগলেই জীবন চালায়। তবে সম্প্রতি ফেন্ড্রশিপ নামক একটি এনজিও ইয়ুথ নেট চরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় করে দিয়েছে যেখানে ৩০ জন ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করতে পারে। অন্য চর থেকেও কয়েকজন শিশু পড়তে আসে এই বিদ্যালয়টিতে। স্কুলের মাঠটি ফ্রেন্ডশিপ এনজিও বাড়িগুলোর থেকে বেশি উঁচু করে দিয়েছে যাতে বর্ষায় ঘরবাড়িতে পানি উঠলে চরের মানুষ এখানে আশ্রয় নিতে পারে।

চরগুলোতে কোন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ব্যবস্থা নেই। চরবাসীর তথ্যমতে, চরের অনেক মানুষ বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসবের জটিলতায় পড়ে নৌকায় করে হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যাওয়ার বেশ কয়েকটি নজির আছে। যে কোন অসুস্থতার জন্য তাদের শহরের দিকে ছুটতে হয়। হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেক্ষেত্রে চিকিৎসার কোন সুযোগ নেই। এগুলোকে মেনে নিয়েই চরে বসতি গড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অতি দরিদ্র মানুষগুলো। এই সমস্ত চরের খাস জমিগুলো কৃষক ইচ্ছে করলেই চাষবাস করতে পারেনা। প্রতি বিঘা জমি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিয়ে লিজ নিতে হয় দখলসূত্রে হওয়া কোন প্রভাবশালী মালিকের কাছ থেকে। অথচ সরকার এই জমিগুলোকে ভূমিহীন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করে ঢাকা শহরের বস্তিতে আশ্রয় নেয়া অনেক বানভাসী মানুষকে পুর্নবাসন করে কৃষি উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে; যার মাধ্যমে বাড়তে পারে দেশের উৎপাদন এবং জীবনের নতুন ঠিকানায় আশ্রয় পেতে পারে অনেক মানুষ।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ৫নং কাজলা ইউনিয়নের নিশ্চিতপরল চরে দীর্ঘদিন ধরে বাস করা অভিজ্ঞ কৃষক জহুরুল বেপারী, আশরাফ আলী, ঝন্টু প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানা গেলো চরকে ঘিরে তাদের সংগ্রামী জীবনের কথা। সরকার থেকে অনেক প্রণোদনার কর্মসূচি থাকলেও তার কোন কিছুই পৌঁছায় না এই চরে। তারা অধিকাংশ সময় স্থানীয় পর্যায়ের মহাজনদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে মূলধন সংগ্রহ করে কৃষিতে বিনিয়োগ করে। ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে সেই মহাজনেরাই বাজার মূল্যের চাইতে কমদামে ফসল কিনে নিয়ে যায় সেইসঙ্গে কেটে নেয় সুদসহ দেয়া মূলধন। অর্থাৎ কৃষকের হাতে থাকে না তেমন কোনই লাভ। এইভাবেই, এই চরের কৃষকেরা উর্বর পলিতে ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, পাট, ধান, তিল ইত্যাদি অর্থকরী ফসল ফলায় ঠিকই কিন্তু মৌসুম শেষে কৃষকেরা হিসেব মিলাতে পারে না। চরের দরিদ্র মানুষগুলো হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে দেশের মানুষের জন্য খাদ্য ফলায় আবার সেই মানুষগুলোর ঘরেই অনেক সময় খাবার থাকে না।

ইয়ুথ নেট চরের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেরিয়ে আসলো বেশ কয়েকজনের কষ্টের গল্প। তাদের অনেকের ঘরবাড়ি ৪-৫ বার ভাঙতে হয়েছে নদী ভাঙনের কারনে। বর্ষাকালে প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ে ও আতংকে থাকতে হয় কখন নদীর তীব্র ¯্রােত মুহূর্তের মধ্যে বিলীন করে দেয় পুরো চরটিকে। নিশ্চিতপরল চরের ঘরবাড়িতে বর্ষার পানি উঠার দাগ দেখে জানা গেল যে, প্রতিবছরই এই চরের সব ঘরবাড়িতে পানি উঠে যায় এবং শুরু হয় তাদের মানবেতর জীবন। প্রতি পরিবারে রয়েছে দুই-চারটি করে গবাদিপশু এবং তাদের জন্য তৈরি করা হয় বাড়ির উচ্চতা থেকে আরো উঁচু করে একটু ভিটা, যেখানে বর্ষার সময় এই গবাদিপশুর ভিটার একপাশে থাকে গবাদিপশুগুলো আর অন্যপাশে থাকে পরিবারের সবাই মিলে। বর্ষার পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত এভাবেই রাতদিন কাটাতে হয় এই চরবাসীর।

দেশের অবহেলিত কয়েক মিলিয়ন চরবাসীর উৎপাদিত কৃষি খাদ্যপণ্য চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেশের মানুষের খাদ্যের জোগানে নীরবে, নিভৃতে অবদান রেখে চলেছে এই চরের দরিদ্র মানুষগুলো অথচ এই মানুষগুলো জানে না রাষ্ট্রের কাছে তাদের অধিকার রয়েছে শিক্ষা, চিকিৎসা, অন্ন, বস্ত্রের, বাসস্থানের। যে চরবাসী দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখে তারাই আবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে হারিয়ে ফেলে তাদের শেষ সহায়-সম্বল ঘরবাড়ি ও চাষের জমি। তাদের নিজেদেরই আর খাবারের কোন নিরাপত্তা থাকে না। তখন এই বানভাসী পবিারগুলোর পেটের ক্ষুধা মেটাতে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় হয় ঢাকা শহরের কোন বস্তি। হয়তো জেগে ওঠে নতুন কোন চর যেখানে কোন প্রভাবশালী মহল লাল পতাকা তুলে জানান দেয় তার নতুন চরের রাজত্বের। আবার নতুন কোন পরিবার টাকাপয়সা দিয়ে লিজ নেয় কিছু জমি এবং আশায় বুক বেঁধে শুরু করে সংগ্রামী জীবন। এভাবেই ভাঙ্গাগড়ার মধ্য দিয়েই এই দরিদ্র মানুষগুলো অবদান রেখে যায় দেশের জন্য যদিও শেষপর্যন্ত তাদের জীবনের গন্তব্য থাকে অজানা। প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষ দেশের চরগুলোর ভাঙনের শিকার হয়ে পরিণত হচ্ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে এবং এরা আশ্রয় নিচ্ছে বড় বড় শহরের বস্তিগুলোতে। যারা আজকে বিশ্বের জলবায়ুকে অস্থির করে তুলেছে তাদের বাংলাদেশের এসব জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন করার দায়িত্ব নিতে হবে। উন্নত দেশগুলোর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশের বাতাস যদি উত্তপ্ত হতে পারে, যদি বঙ্গোপসাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া হতে পারে, জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে তাহলে সেই সবাই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের আশ্রয়ের অধিকার রয়েছে বিশ্বের যেখানে অনিরাপদ বাসস্থান রয়েছে। অবশ্যই বাংলাদেশের সবাই জলবায়ু উদ্বাস্তুদের ভালো আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করতে হবে সেই সব দেশকে যারা বিশ্বের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে রেকর্ড তৈরি করছে।

অবহেলিত চরবাসীর তথা প্রান্তিক কৃষি পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, উচ্চ ফলনশীল, নিরাপদ এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসলের নতুন জাত সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের ফসলের উৎপাদন বাড়ানো সেইসঙ্গে উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য পাইয়ে দিতে গেইন বাংলাদেশ দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কৃষি স্বপ্ন এবং এগ্রিভেঞ্চারের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে এই চরগুলোর মধ্যে দুটি চর যথাক্রমে- খেওয়ার চর এবং নিশ্চিতপরল চরে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত বিশেষ কয়েকটি জলবায়ুবান্ধব তথা খরা বা উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীল, পুষ্টিসমৃদ্ধ, স্বাস্থ্যকর এবং উচ্চমূল্যের ফসল যেমন বারি চিনা-২, বারি কাউন-২, বারি কাউন-৪, বারি বার্লি-৮, বারি বার্লি-৯, বারি সরগম-১, বারি কালোজিরা-১ ইত্যাদি এই চরগুলোতে সম্প্রসারনের জন্য গেইন তার দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করছে।

ইতোমধ্যে গেইন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রেশমা সুলতানাসহ কয়েকজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একমত হয়েছেন এবং একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে। বারির কারিগরি সহযোগিতা পেলে গেইন চরের কৃষকদের জন্য এই ফসলের উন্নত জাতগুলো সম্প্রসারনের মধ্য দিয়ে চরের কৃষকদের চলমান কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে সহযোগিতা করতে পারবে।

সবশেষে যেটি বলা যায় যে, দেশের চরগুলোতে বসবাসকারী কৃষকদের যদি সরকার থেকে সামান্য সহযোগিতা দেয়া যায়, চরের উর্বর পলিতে চাষের জন্য সামান্য বীজ কৃষকের হাতে তুলে দেয়া যায়, তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে এই চরবাসী কৃষকেরা দেশের বর্তমান কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে অতিরিক্ত কয়েক লাখ টন খাদ্যপণ্য এবং কৃষকের জীবনযাত্রার মানকে পরিবর্তন করা সম্ভব। আমরা যারা কৃষকের উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল এবং কৃষকের ঘামঝরা পরিশ্রমে উৎপাদিত কৃষিপণ্য খেয়ে জীবন চালাই- সবাই এ দেশের অবহেলিত কৃষকের পাশে দাঁড়াই। থাকি কৃষির সঙ্গে, কৃষকের পাশে।

[লেখক : এগ্রোনমিস্ট অ্যান্ড কনসালট্যান্ট, গেইন বাংলাদেশ]

back to top