নয়ন সরকার
সম্প্রতি ঢাকার বায়ুমান ও বায়ুদূষণ নিয়ে ফেসবুকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন একজন তরুণ চিকিৎসক। দুঃখজনকভাবে হাঁপানি জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর দায়ভার কেউ নেবে না; কিন্তু পরিবেশগত অবক্ষয় এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলেই আজ ভয়াবহ বায়ুদূষণ ঘটছে এবং ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে আমাদের বেঁচে থাকা প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে। শীতকালে প্রতি ঘরে ঘরে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, নানাবিধ শ্বাসকষ্টজনিত অসুখ লেগেই আছে; কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। বায়ুদূষণের কারণে প্রতিদিন নীরব মৃত্যু ঘটছে। অসুস্থতা বাড়ছে। বেঁচে থাকতে হলে সুস্থতা জরুরি। আর সুস্থতার জন্য পরিবেশগত সুস্থতা জরুরি। সবার আগে দরকার দূষণমুক্ত বায়ু ও পানি। কিন্তু এখনো এর কোনো নিশ্চয়তা আমরা পাচ্ছি না।
বাংলাদেশের বায়ুমান সূচক ক্রমশই নিম্নগামী। বছর বছর ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ বায়ুদূষিত নগর হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। বস্তুকণা, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড,, সালফার ডাই-অক্সাইড এবং ওজোন এ পাঁচ প্রকার দূষণের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। বায়ুর মান সূচকের ০-৫০ (ভালো), ৫১-১০০ (মাঝারি ভালো), ১০১-১৫০ (সাবধানতা), ১৫১-২০০ (অস্বাস্থ্যকর), ২০১-৩০০ (খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং ৩০১ পরবর্তী স্কোর হলো (বিপজ্জনক)। খুব অস্বাস্থ্যকর থেকে বিপজ্জনক হলেই এ সময় অন্য দেশের শহরগুলো স্কুল বন্ধ করে দেয়। শহরের মধ্যে নির্মাণ কাজ সীমিত করে। নিয়মিত পানি ছিটায়। আর আমাদের শহরে শুনছেন কোনো সংবাদ? সরকার থেকে কিছু শুনছেন? অথচ আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর জানে আসলে ইমিডিয়েট কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। সম্প্রতি ঢাকাতে বায়ুমান ৫৮১ পর্যন্ত স্কোর উঠেছিল।
বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণা বলছে, ঢাকার বায়ু দূষণের উৎস নির্মাণকাজ (৩০%), ইটভাটা ও কারখানা (২৯%), যানবাহন (১৫%), আন্তঃদেশীয় বায়ু (৯.৫%), রান্নার চুলা (৮.৫%),বর্জ্য পোড়ানো (৮%) থেকে আসে।
ক্যাপস বলছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ঢাকার জনগণ ৪৯ দিন (২%) নির্মল বায়ুর নিঃশ্বাস নিয়েছিল। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, দেশের ১৬ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ সারা বছর দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করছে। দূষিত বায়ুতে থাকার কারণে বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৮ মাস কমে যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে বায়ু দূষণের প্রভাবে ২০১৯ সালে অন্তত ৭৮ হাজার ১৪৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং জিডিপির ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় সবসময় আমরা দূষিত বায়ু সেবন করছি। দূষিত বায়ু সেবন করার কারণে আমাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ছে। নানান মেয়াদে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশের বায়ুদূষণ কি রাতারাতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? আসলে না। রাতারাতি সম্ভব না। তবে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা রকেট সায়েন্সও না। তবে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ নিলে বায়ুমানে উন্নতি করা যাবে। আমাদের ড্রাপটে থাকা নির্মল বায়ু আইন পাশ করা উচিত এবং বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা উচিত। এছাড়াও কিছুদিন আগে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ণ করা হয়েছে। দেখা যাক- বর্তমান সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কতটুকু এগোতে পারে।
ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাব :
প্রতিদিন দুই বেলা করে সড়কে পানি ছিটাতে হবে (এজন্য হাইকোর্টের সাবেক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে)।
সড়কে যেসব খোঁড়াখুঁড়ি বর্তমানে চলছে তা নির্মাণ বিধি মেনে ৭ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে, নয়তো এই দুই মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা।
নির্মাণবিধি মেনে নির্মাণ কাজ করার কড়াকড়ি নির্দেশনা দিতে হবে; বায়ুমানে অবনতি হলে নির্মাণ কাজও বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে হবে (এজন্য কড়াকড়িভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে)।
গাবতলী, যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা দিয়ে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক ও ফিটনেসহীন হাজারও যেসব ট্রাক বালি, ইট নিয়ে শহরে প্রবেশ করে সেসব মালমাল ঢেকে নেয়ার নিয়ম কার্যকর করতে নজরদারি বাড়াতে হবে। পরিস্থিতির অবনতি হলে এসব মালবাহী ট্রাক শহরে প্রবেশ সীমিত থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ফিটনেসহীন যানবাহন সড়ক থেকে সরাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। (ইতোমধ্যে ৬ মাসের সময় দেয়া হয়েছে; যা অত্যন্ত অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল। এ সময়ে বাসগুলোর রং পরিবর্তন করা হচ্ছে। ১-২ মাস সময় দেয়া যেত; সময় বেঁধে দেয়া অবস্থাতেও বিআরটিএকে ফিটনেসহীন বাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে)।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে হবে।
শিল্প-কলকারখানার দূষণ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশব্যাপী বর্জ্য না পোড়ানো ও পরিষ্কারের সময় ধুলোবালি যাতে না উড়ে এজন্য এলজিআরডি থেকে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে কড়াকড়ি নিদর্শেনা দিতে হবে। (ধুলোবালি পরিষ্কারের জন্য ভ্যাকুয়াম টাইপ সুইপিং গাড়িগুলো ব্যবহার করতে হবে; ইতোমধ্যে একাধিক সিটি কর্পোরেশনে এটি আছে)।
জনগণকে সচেতন করতে হবে। মাস্ক পরিধান করতে উৎসাহিত করতে হবে। (এজন্য আমরা তরুণরা ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কাজ করতে মুখিয়ে আছি)।
শহরের ডিসপ্লেগুলোতে বায়ুমান দেখানো ও সতর্কতা প্রচার করতে হবে।
আসুন সবাই মিলে বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করি। আসুন নিজে দূষণের কারণ না হই এবং মাস্ক পরিধান করি।
[লেখক : প্রধান সমন্বয়ক, সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ]
নয়ন সরকার
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি ঢাকার বায়ুমান ও বায়ুদূষণ নিয়ে ফেসবুকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন একজন তরুণ চিকিৎসক। দুঃখজনকভাবে হাঁপানি জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুর দায়ভার কেউ নেবে না; কিন্তু পরিবেশগত অবক্ষয় এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলেই আজ ভয়াবহ বায়ুদূষণ ঘটছে এবং ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে আমাদের বেঁচে থাকা প্রশ্নের মুখে দাঁড়াচ্ছে। শীতকালে প্রতি ঘরে ঘরে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, নানাবিধ শ্বাসকষ্টজনিত অসুখ লেগেই আছে; কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। বায়ুদূষণের কারণে প্রতিদিন নীরব মৃত্যু ঘটছে। অসুস্থতা বাড়ছে। বেঁচে থাকতে হলে সুস্থতা জরুরি। আর সুস্থতার জন্য পরিবেশগত সুস্থতা জরুরি। সবার আগে দরকার দূষণমুক্ত বায়ু ও পানি। কিন্তু এখনো এর কোনো নিশ্চয়তা আমরা পাচ্ছি না।
বাংলাদেশের বায়ুমান সূচক ক্রমশই নিম্নগামী। বছর বছর ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ বায়ুদূষিত নগর হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। বস্তুকণা, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড,, সালফার ডাই-অক্সাইড এবং ওজোন এ পাঁচ প্রকার দূষণের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। বায়ুর মান সূচকের ০-৫০ (ভালো), ৫১-১০০ (মাঝারি ভালো), ১০১-১৫০ (সাবধানতা), ১৫১-২০০ (অস্বাস্থ্যকর), ২০১-৩০০ (খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং ৩০১ পরবর্তী স্কোর হলো (বিপজ্জনক)। খুব অস্বাস্থ্যকর থেকে বিপজ্জনক হলেই এ সময় অন্য দেশের শহরগুলো স্কুল বন্ধ করে দেয়। শহরের মধ্যে নির্মাণ কাজ সীমিত করে। নিয়মিত পানি ছিটায়। আর আমাদের শহরে শুনছেন কোনো সংবাদ? সরকার থেকে কিছু শুনছেন? অথচ আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর জানে আসলে ইমিডিয়েট কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার। সম্প্রতি ঢাকাতে বায়ুমান ৫৮১ পর্যন্ত স্কোর উঠেছিল।
বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণা বলছে, ঢাকার বায়ু দূষণের উৎস নির্মাণকাজ (৩০%), ইটভাটা ও কারখানা (২৯%), যানবাহন (১৫%), আন্তঃদেশীয় বায়ু (৯.৫%), রান্নার চুলা (৮.৫%),বর্জ্য পোড়ানো (৮%) থেকে আসে।
ক্যাপস বলছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ঢাকার জনগণ ৪৯ দিন (২%) নির্মল বায়ুর নিঃশ্বাস নিয়েছিল। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, দেশের ১৬ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ সারা বছর দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করছে। দূষিত বায়ুতে থাকার কারণে বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৮ মাস কমে যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে বায়ু দূষণের প্রভাবে ২০১৯ সালে অন্তত ৭৮ হাজার ১৪৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং জিডিপির ৩ দশমিক ৯ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় সবসময় আমরা দূষিত বায়ু সেবন করছি। দূষিত বায়ু সেবন করার কারণে আমাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ছে। নানান মেয়াদে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বাংলাদেশের বায়ুদূষণ কি রাতারাতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? আসলে না। রাতারাতি সম্ভব না। তবে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা রকেট সায়েন্সও না। তবে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ নিলে বায়ুমানে উন্নতি করা যাবে। আমাদের ড্রাপটে থাকা নির্মল বায়ু আইন পাশ করা উচিত এবং বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০২২ কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা উচিত। এছাড়াও কিছুদিন আগে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ণ করা হয়েছে। দেখা যাক- বর্তমান সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কতটুকু এগোতে পারে।
ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাব :
প্রতিদিন দুই বেলা করে সড়কে পানি ছিটাতে হবে (এজন্য হাইকোর্টের সাবেক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে)।
সড়কে যেসব খোঁড়াখুঁড়ি বর্তমানে চলছে তা নির্মাণ বিধি মেনে ৭ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে, নয়তো এই দুই মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা।
নির্মাণবিধি মেনে নির্মাণ কাজ করার কড়াকড়ি নির্দেশনা দিতে হবে; বায়ুমানে অবনতি হলে নির্মাণ কাজও বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে হবে (এজন্য কড়াকড়িভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে)।
গাবতলী, যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা দিয়ে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক ও ফিটনেসহীন হাজারও যেসব ট্রাক বালি, ইট নিয়ে শহরে প্রবেশ করে সেসব মালমাল ঢেকে নেয়ার নিয়ম কার্যকর করতে নজরদারি বাড়াতে হবে। পরিস্থিতির অবনতি হলে এসব মালবাহী ট্রাক শহরে প্রবেশ সীমিত থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ফিটনেসহীন যানবাহন সড়ক থেকে সরাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। (ইতোমধ্যে ৬ মাসের সময় দেয়া হয়েছে; যা অত্যন্ত অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল। এ সময়ে বাসগুলোর রং পরিবর্তন করা হচ্ছে। ১-২ মাস সময় দেয়া যেত; সময় বেঁধে দেয়া অবস্থাতেও বিআরটিএকে ফিটনেসহীন বাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে)।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে হবে।
শিল্প-কলকারখানার দূষণ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশব্যাপী বর্জ্য না পোড়ানো ও পরিষ্কারের সময় ধুলোবালি যাতে না উড়ে এজন্য এলজিআরডি থেকে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে কড়াকড়ি নিদর্শেনা দিতে হবে। (ধুলোবালি পরিষ্কারের জন্য ভ্যাকুয়াম টাইপ সুইপিং গাড়িগুলো ব্যবহার করতে হবে; ইতোমধ্যে একাধিক সিটি কর্পোরেশনে এটি আছে)।
জনগণকে সচেতন করতে হবে। মাস্ক পরিধান করতে উৎসাহিত করতে হবে। (এজন্য আমরা তরুণরা ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কাজ করতে মুখিয়ে আছি)।
শহরের ডিসপ্লেগুলোতে বায়ুমান দেখানো ও সতর্কতা প্রচার করতে হবে।
আসুন সবাই মিলে বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করি। আসুন নিজে দূষণের কারণ না হই এবং মাস্ক পরিধান করি।
[লেখক : প্রধান সমন্বয়ক, সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ]