alt

উপ-সম্পাদকীয়

পরিবেশ বিপর্যয় : শিক্ষার্থীদের করণীয়

এজি কায়কোবাদ

: বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ এবং কার্যক্রম একত্রিত হয়ে বিশাল পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীরা পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ তারা আগামী দিনের ভবিষ্যত নির্মাতা এবং সমাজে পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে। পরিবেশের বিপর্যয় বিশৃঙ্খলা রুখে দিতে তাদের কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো- পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করা ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুল বা কলেজে পরিবেশের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে। তারা সেমিনার, আলোচনা সভা, এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের আয়োজন করতে পারে, যা তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।

পুনঃব্যবহার এবং রিসাইক্লিং প্রচার ঃ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক, কাগজ, কাচ ইত্যাদি পুনঃব্যবহার এবং রিসাইক্লিংয়ের প্রতি মনোযোগী হতে পারে। তারা যদি নিজে এই অভ্যাস গড়ে তোলে, তা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়বে।

পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অংশগ্রহণ ঃ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এবং উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে। তারা পরিবেশ রক্ষায় সামাজিক প্রচারণায় অংশ নিতে পারে বা নিজেরাই নতুন পরিবেশবান্ধব প্রকল্প শুরু করতে পারে, যেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা জল সংরক্ষণ প্রকল্প।

পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধি ঃ শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রেম তৈরি করতে পারে। তারা যেন জানে, প্রকৃতির প্রতি যতœ নিলে তা নিজের জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উপকারি। প্রতিবেশী জীবজন্তু ও উদ্ভিদদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের আশেপাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে। তারা স্কুল বা আশেপাশের এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন করতে পারে, যা পরিবেশকে আরো সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন করে তুলবে। গাছ পরিবেশের জন্য উপকারী, কারণ এটি বাতাসে অক্সিজেন যোগায় এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে।

পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলা ঃ শিক্ষার্থীরা পরিবেশবান্ধব অভ্যাস যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পানি সাশ্রয়, গাড়ি বা বাইক ব্যবহার কমিয়ে হাঁটা বা সাইকেল চালানো ইত্যাদি গ্রহণ করতে পারে। এইসব অভ্যাসগুলো তাদের জীবনযাত্রায় অন্তর্ভুক্ত হলে তা পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।

প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো ঃ শিক্ষার্থীরা একক ব্যবহারের প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার পরিহার করতে পারে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য যেমন স্টিলের পানি বোতল, কাপ, ব্যাগ ব্যবহার করতে পারে। স্কুলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে।

পরিবেশ সম্পর্কিত শিক্ষা গ্রহণ ঃ শিক্ষার্থীরা পরিবেশের সংকট এবং তার সমাধান নিয়ে আরও বেশি পড়াশোনা করতে পারে। তারা পরিবেশবিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং পরিবেশ আইন বিষয়ে অবগত হলে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে পোস্ট, ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে পারে। তাদের দ্বারা পরিবেশ সম্পর্কিত সচেতনতা বার্তা প্রচার হলে সমাজে দ্রুত পরিবর্তন আসবে।

শিক্ষার মাধ্যমে আগামীর নেতৃত্বে আসা ঃ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পরিবেশ বিষয়ক কোর্স, ওয়ার্কশপ, এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পরবর্তীতে পরিবেশ রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে পারে। তারা আরও বেশি প্রযুক্তিগত ও গবেষণামূলক সমাধান নিয়ে আসতে পারে যা পরিবেশের সংকট সমাধান করতে সহায়তা করবে।

আজকের শিক্ষার্থী, আগামী দিনের পরিবেশবাদী নেতা হয়ে উঠতে পারে। এজন্য তাদের সচেতনতা, উদ্যোগ এবং প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজই পরিবেশের জন্য বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

[লেখক : প্রভাষক, পরিবেশকর্মী ]

বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা

কিশোর অপরাধ ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন

চাই জীবনমুখী যুগোপযোগী উচ্চশিক্ষা

খেজুর গুড়ের বাণিজ্যিক গুরুত্ব

হামাস-ইসরাইলের অস্ত্র বিরতি

ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি

আদিবাসীদের প্রাণের স্পন্দন

ছবি

ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য ও যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্ক

কৃতিত্ব অস্বীকারের অপসংস্কৃতি

পশ্চিমবঙ্গ : স্যালাইনে ফাঙ্গাস, অসহায় মানুষ

ছবি

আত্মপরিচয় ও জাতিসত্তার অঙ্গীকার : বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য

এইচএমপিভি ভাইরাস : প্রয়োজন জনসচেতনতা

সিভিল সার্ভিস ক্যাডারে কেন সংস্কার জরুরি

কেন দ্যাখাও মিথ্যে স্বপ্ন

অনিয়ন্ত্রিত অটোরিকশা ও সড়ক দুর্ঘটনা

অপরিকল্পিত ভ্যাট ও কর বৃদ্ধি

ছবি

‘বেগমপাড়া’ হইতে খোলা চিঠি

সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টানবে কে

মকর সংক্রান্তি : বাঙালির উৎসব ও ঐতিহ্যের ধারক

শৃঙ্খলে আবদ্ধ সামাজিক মানুষ

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : অপসংস্কৃতি ও নৈতিক প্রশ্ন

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কূটতর্ক

শৃঙ্খলে আবদ্ধ সামাজিক মানুষ

রজিনাদের বেঁচে থাকার লড়াই

মানব পাচার প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা

সংবিধান সংশোধন : আমাদের বলার আছে

চিন্তা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা

গ্রাম উন্নয়নে যুব সমাজের ভূমিকা

‘দেশজ নাট্যশৈলী’র কেন্দ্রীয় নাট্যআঙ্গিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ও কিছু প্রশ্ন

রাখাইন পরিস্থিতি : বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির বড় পরীক্ষা

রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব

রম্যগদ্য : নিশুতিরাতের আগন্তুক

গুরু রবিদাস জির কথা

গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের জন্য অশনিসংকেত

নতুন বছরের প্রত্যাশা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

পরিবেশ বিপর্যয় : শিক্ষার্থীদের করণীয়

এজি কায়কোবাদ

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ এবং কার্যক্রম একত্রিত হয়ে বিশাল পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীরা পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ তারা আগামী দিনের ভবিষ্যত নির্মাতা এবং সমাজে পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে। পরিবেশের বিপর্যয় বিশৃঙ্খলা রুখে দিতে তাদের কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হলো- পরিবেশ সচেতনতা তৈরি করা ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুল বা কলেজে পরিবেশের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে। তারা সেমিনার, আলোচনা সভা, এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের আয়োজন করতে পারে, যা তাদের সহপাঠী ও শিক্ষকদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।

পুনঃব্যবহার এবং রিসাইক্লিং প্রচার ঃ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক, কাগজ, কাচ ইত্যাদি পুনঃব্যবহার এবং রিসাইক্লিংয়ের প্রতি মনোযোগী হতে পারে। তারা যদি নিজে এই অভ্যাস গড়ে তোলে, তা সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়বে।

পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অংশগ্রহণ ঃ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এবং উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে। তারা পরিবেশ রক্ষায় সামাজিক প্রচারণায় অংশ নিতে পারে বা নিজেরাই নতুন পরিবেশবান্ধব প্রকল্প শুরু করতে পারে, যেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা জল সংরক্ষণ প্রকল্প।

পরিবেশের প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধি ঃ শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রেম তৈরি করতে পারে। তারা যেন জানে, প্রকৃতির প্রতি যতœ নিলে তা নিজের জীবন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উপকারি। প্রতিবেশী জীবজন্তু ও উদ্ভিদদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের আশেপাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে। তারা স্কুল বা আশেপাশের এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন করতে পারে, যা পরিবেশকে আরো সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন করে তুলবে। গাছ পরিবেশের জন্য উপকারী, কারণ এটি বাতাসে অক্সিজেন যোগায় এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে।

পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলা ঃ শিক্ষার্থীরা পরিবেশবান্ধব অভ্যাস যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পানি সাশ্রয়, গাড়ি বা বাইক ব্যবহার কমিয়ে হাঁটা বা সাইকেল চালানো ইত্যাদি গ্রহণ করতে পারে। এইসব অভ্যাসগুলো তাদের জীবনযাত্রায় অন্তর্ভুক্ত হলে তা পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।

প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো ঃ শিক্ষার্থীরা একক ব্যবহারের প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার পরিহার করতে পারে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য যেমন স্টিলের পানি বোতল, কাপ, ব্যাগ ব্যবহার করতে পারে। স্কুলে প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে।

পরিবেশ সম্পর্কিত শিক্ষা গ্রহণ ঃ শিক্ষার্থীরা পরিবেশের সংকট এবং তার সমাধান নিয়ে আরও বেশি পড়াশোনা করতে পারে। তারা পরিবেশবিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং পরিবেশ আইন বিষয়ে অবগত হলে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার ঃ শিক্ষার্থীরা তাদের সামাজিক মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব নিয়ে পোস্ট, ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে পারে। তাদের দ্বারা পরিবেশ সম্পর্কিত সচেতনতা বার্তা প্রচার হলে সমাজে দ্রুত পরিবর্তন আসবে।

শিক্ষার মাধ্যমে আগামীর নেতৃত্বে আসা ঃ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পরিবেশ বিষয়ক কোর্স, ওয়ার্কশপ, এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পরবর্তীতে পরিবেশ রক্ষায় নেতৃত্ব দিতে পারে। তারা আরও বেশি প্রযুক্তিগত ও গবেষণামূলক সমাধান নিয়ে আসতে পারে যা পরিবেশের সংকট সমাধান করতে সহায়তা করবে।

আজকের শিক্ষার্থী, আগামী দিনের পরিবেশবাদী নেতা হয়ে উঠতে পারে। এজন্য তাদের সচেতনতা, উদ্যোগ এবং প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজই পরিবেশের জন্য বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

[লেখক : প্রভাষক, পরিবেশকর্মী ]

back to top