alt

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য : “ডক্টর.জ্বী-ভাগো...”

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

“কি ভাই বেইন্না ফজরত কাউন্ট লিও টলস্টয়ের “ডক্টর.জীভাগোরে ইকটু ফাঁক কইরা কোন ডাক্তাররে ভাগতে কইতাছেন?”

“ওই ব্যাটা শাখামৃগ, ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা?? যা জানিস না, তা নিয়ে কথা বলতে আসিস না!”

“ওম্মা, এইডা কি কন!! ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা না?? আরে মিয়া বাংলাদেশের সকল শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত এমন কী, অনেক অশিক্ষিত, গাঁওয়াররাও জানে, ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা। আপনে কইলেই হইলো ডক্টর. জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা না!! জানেন ডক্টর. জীভাগো, ডেভিড লীনের সিনেমা পাঁচটা অস্কার পাইছে। ওমর শরীফ বেস্ট অ্যাক্টর।” “ও বাব্বারে, এতো কিছু জানো অথচ, আসল লেখকের নাম জানো না!!”

“তায়লে আবার কোইয়েন না যে ডক্টর.জীভাগো, উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখা?”

‘ধুর তোর মতো উড়-ঝুড়ে বাঙালের সাথে কথা বলতে গেলে, মাথা গুলিয়ে যায়। মহাকবি উইলিয়াম শেক্সপিয়র হচ্ছেন ষোলো শতাব্দীর ইংল্যান্ডের ইংরেজি সাহিত্যের দীকপাল আর ডক্টর. জীভাগো হচ্ছে রাশিয়ান সাহিত্য তুই তো দেশ-কাল-পাত্রের কোনো কন্টিনিউটি রাখছিস না।’

“তায়লে ডক্টর.জীভাগো ক্যেঠাই লিখছে, ম্যাক্সিম গোর্কি না কি আন্তান চেখভ??”

“আরে বকনা পাঁঠার বংশধর ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা নয়, ম্যাক্সিম গোর্কি না কি আন্তান চেখভও না, ডক্টর.জীভাগো, লিখেছেন, বরিস পাস্তারনায়েক।”

“হ্যা হ্যা, কি যে কন! ডা. লুই পাস্তুর দুধ পাস্তুরাইজ করে হ্যেইডা শুনছি, আজকালকার পোলাপান পাস্তা খায় তাও হনছি, কিন্তু ফ্রান্সের লুই পাস্তুর. রাশিয়ার, ডক্টর.জীভাগো, লিখছে এইডা গাঞ্জা খায়াও বিশ্বাস করতে পারুম না।”

“তোর বিশ্বাস যাই হোক, তোর বিশ্বাস নিয়ে তুই থাক, তবে বাস্তব হচ্ছে, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত ডক্টর.জীভাগো, লিখেছেন, বরিস পাস্তারনায়েক, যিনি রাশিয়ান সরকারের গোঁয়ার্তুমির কারণে নোবেল পুরস্কার আনতে যেতে পারেননি।

তার মৃত্যুর বেশ কিছু বছর পর তার ছেলে মনে হয় নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেন।”

“কি কন, সরকার হালায় নোবেল পুরস্কার আনতে দ্যেয় নাই!! এ্যইডা আমার বিশ্বাস হয় না। সরকার হালায় কী এতোই ভুদাই যে নোবেল পুরস্কার আনতে যাইতে দ্যেই নাই!!”

“তোমার বিশ্বাস যাই হোক আসল সত্য তৎকালীন রাশিয়ান সরকার বরিস পাস্তারনায়েককে নোবেল পুরস্কার আনতে যেতে দ্যেয়নি।”

“ছিঃ ছিঃ লজ্জা লজ্জা, হালায় সরকার না কী কতগুলা শুয়োরের আখড়া!!”

“শোন ব্যাটা বরিস পাস্তারনায়েক যখন ডক্টর.জীভাগোর জন্য নোবেল পান, তখন রাশিয়ার সংসদ কি বলেছিল শোন, “আমাদের. স্যোশালিস্ট সমাজের মাঝে একজন কুলাঙ্গার আছে যার নাম হচ্ছে বরিস পাস্তারনায়েক। বুঝতেই পারছিস সে সময় সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সব চলতো।”

“ওম্মা এইডা তো আমাগো বিগত স্বৈরাচারের মতো, কার্টুন আঁকলে কান চাপাতিতে থাপড়ায়া মার্ডার।”

“জ্বী, পৃথিবীর সব দেশেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই, জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সব চলবেই। আরও দুঃখ লাগে যখন দেখি, তোদের স্বৈরাচারের পতনের জন্য, ৫, আগস্টের, ২০২৪ অভ্যুত্থানে যারা প্রাণ হারালো, ফারহান ফাইয়াজ, মো. আহাদুন, রাহাত হোসেন, মো. ইফতি, নাঈমা সুলতানা, মুগ্ধ, অথচ পাঁচ মাস না পেরুতেই তোর সমন্বয়ক বলে দিল; “যে লেখক স্বৈরাচারের পক্ষে লিখবে তার কলম ভেঙে ফেলবো।” ভাবতে পারিস কিরূপ স্বৈরাচারী আস্ফালন!! তার মানে, তোরা খালি স্বৈরাচার পাল্টালি। এই হাজার হাজার সন্তানের আত্মত্যাগের কোনো মূল্যই থাকলো না। তাহলে কী লাভ হলো!!”

“আপনেরে কি কমু, হালায় ঘর থ্যেইক্কা বাইরাইলেই মিছিল মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, রাস্তা বন্ধ বিশ মিনিটের রাস্তা পার হইতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বয়া থকো। কারে কি কমু!! সাত কলেজের পোলাগুলার লেখাপড়া, মাদ্রাসা শিক্ষকদের পুলিশের লাঠির হিডা, শীতকালে বুইড়া বুইড়া ষাট-সত্তর বছরের টিচারগুলারে ঠা-া পানি মাইরা ছত্রভঙ্গ। পাহাড়ি পোলাগুলারে বিগত স্বৈরাচারের মতুন হেলমেট পইরা হিডান। এই সব কিয়ের লক্ষণ?? আমিতো কিছু

বুজি না!! কিয়ের মইধ্যে আইয়া পড়লাম রে বাবা!!”

“আরে ভাই তোরা যে বাঙালি হয়ে বাঙালি খুন করছিস!! ক্যেনো। সাত কলেজ প্রায় গত সাত আট বছর ধরে তাদের দাবি জানাচ্ছে এর সমাধান করতে এত গড়িমসি ক্যানো। তোমারই বোন রাস্তায় দাবি জানাতে এসেছে তাকে তুমি “চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হতে দোষ কি তাতে ...” বলে টিটকারি মেরে গান গাইছো, অশালীন অঙ্গভঙ্গি করছো!! লজ্জা করে না। নিজেরা নিজের দেশের লোক মারছো। এ কোন আঈয়ামে জাহালীয়া!!”

“ভাই আপনে আমারে ভুল বুইঝেন না ভাই, আপনে আপনের রম্যরচনার টাইটেলটা বদলায়ে দ্যেন ভাই। ওই ডক্টর. জ্বীভাগো এইডা বদলায়া দ্যেন।”

“ক্যেনো! রম্যরচনার টাইটেলটা বদলাবো ক্যানো? তুইও তো তাহলে সেই রাশিয়ার স্ট্যালিনের মতো তোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু লিখলে জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সবগুলোকেই মেনে নিচ্ছিস?”

“আমি কোই কী, আপনে “ডক্টর. জ্বী-ভাগো”, না লিকখ্যা অন্য কিছু লিখেন। যেমন ধরেন ডক্টর. জ্বীহাগো।”

“আচ্ছা ধর তোর কথা শুনলাম, টাইটেল চেঞ্জ করলাম, কিন্তু ক্যেনো করবো??”

“না কোই কেউ যুদি মনে করে আপনে ডক্টর. জ্বী-ভাগো, বলতে বুঝাইছেন যে, ভাই তাড়াতাড়ি ইলেকশান দাও আর ডাক্তার সাহেব, ভাইগগা যাও, তায়লে তো আপনেরে জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম করতে পারে।”

“তাহলে সারাদেশের সব খামখেয়ালিপনা তুই মেনে নিবি??”

“আমি বেশি কিছু কমু না। বিশ্ববিখ্যাত, বরিস পাস্তারনায়েক পর্যন্ত নোবেল প্রাইজ পায়াও সরকারের ভয়ে প্রাইজ আনে নাই। আর আপনে তো হালায় কোন ছারপোকা...”

“তাহলে তুই কী চাস, ২০২৫ সালে নতুন বছরে আমরা আমাদের সবের ব্যক্তিগত জীবন জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারের ইচ্ছায় পুতুল নাচ নাচবো...??”

“আমি আমার কতা কোইছী, মানা না মানা আপনের ব্যাপার ব্যেশ...।”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

tab

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য : “ডক্টর.জ্বী-ভাগো...”

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

“কি ভাই বেইন্না ফজরত কাউন্ট লিও টলস্টয়ের “ডক্টর.জীভাগোরে ইকটু ফাঁক কইরা কোন ডাক্তাররে ভাগতে কইতাছেন?”

“ওই ব্যাটা শাখামৃগ, ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা?? যা জানিস না, তা নিয়ে কথা বলতে আসিস না!”

“ওম্মা, এইডা কি কন!! ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা না?? আরে মিয়া বাংলাদেশের সকল শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত এমন কী, অনেক অশিক্ষিত, গাঁওয়াররাও জানে, ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা। আপনে কইলেই হইলো ডক্টর. জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা না!! জানেন ডক্টর. জীভাগো, ডেভিড লীনের সিনেমা পাঁচটা অস্কার পাইছে। ওমর শরীফ বেস্ট অ্যাক্টর।” “ও বাব্বারে, এতো কিছু জানো অথচ, আসল লেখকের নাম জানো না!!”

“তায়লে আবার কোইয়েন না যে ডক্টর.জীভাগো, উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখা?”

‘ধুর তোর মতো উড়-ঝুড়ে বাঙালের সাথে কথা বলতে গেলে, মাথা গুলিয়ে যায়। মহাকবি উইলিয়াম শেক্সপিয়র হচ্ছেন ষোলো শতাব্দীর ইংল্যান্ডের ইংরেজি সাহিত্যের দীকপাল আর ডক্টর. জীভাগো হচ্ছে রাশিয়ান সাহিত্য তুই তো দেশ-কাল-পাত্রের কোনো কন্টিনিউটি রাখছিস না।’

“তায়লে ডক্টর.জীভাগো ক্যেঠাই লিখছে, ম্যাক্সিম গোর্কি না কি আন্তান চেখভ??”

“আরে বকনা পাঁঠার বংশধর ডক্টর.জীভাগো, কাউন্ট লিও টলস্টয়ের লেখা নয়, ম্যাক্সিম গোর্কি না কি আন্তান চেখভও না, ডক্টর.জীভাগো, লিখেছেন, বরিস পাস্তারনায়েক।”

“হ্যা হ্যা, কি যে কন! ডা. লুই পাস্তুর দুধ পাস্তুরাইজ করে হ্যেইডা শুনছি, আজকালকার পোলাপান পাস্তা খায় তাও হনছি, কিন্তু ফ্রান্সের লুই পাস্তুর. রাশিয়ার, ডক্টর.জীভাগো, লিখছে এইডা গাঞ্জা খায়াও বিশ্বাস করতে পারুম না।”

“তোর বিশ্বাস যাই হোক, তোর বিশ্বাস নিয়ে তুই থাক, তবে বাস্তব হচ্ছে, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত ডক্টর.জীভাগো, লিখেছেন, বরিস পাস্তারনায়েক, যিনি রাশিয়ান সরকারের গোঁয়ার্তুমির কারণে নোবেল পুরস্কার আনতে যেতে পারেননি।

তার মৃত্যুর বেশ কিছু বছর পর তার ছেলে মনে হয় নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেন।”

“কি কন, সরকার হালায় নোবেল পুরস্কার আনতে দ্যেয় নাই!! এ্যইডা আমার বিশ্বাস হয় না। সরকার হালায় কী এতোই ভুদাই যে নোবেল পুরস্কার আনতে যাইতে দ্যেই নাই!!”

“তোমার বিশ্বাস যাই হোক আসল সত্য তৎকালীন রাশিয়ান সরকার বরিস পাস্তারনায়েককে নোবেল পুরস্কার আনতে যেতে দ্যেয়নি।”

“ছিঃ ছিঃ লজ্জা লজ্জা, হালায় সরকার না কী কতগুলা শুয়োরের আখড়া!!”

“শোন ব্যাটা বরিস পাস্তারনায়েক যখন ডক্টর.জীভাগোর জন্য নোবেল পান, তখন রাশিয়ার সংসদ কি বলেছিল শোন, “আমাদের. স্যোশালিস্ট সমাজের মাঝে একজন কুলাঙ্গার আছে যার নাম হচ্ছে বরিস পাস্তারনায়েক। বুঝতেই পারছিস সে সময় সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সব চলতো।”

“ওম্মা এইডা তো আমাগো বিগত স্বৈরাচারের মতো, কার্টুন আঁকলে কান চাপাতিতে থাপড়ায়া মার্ডার।”

“জ্বী, পৃথিবীর সব দেশেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কিছু বললেই, জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সব চলবেই। আরও দুঃখ লাগে যখন দেখি, তোদের স্বৈরাচারের পতনের জন্য, ৫, আগস্টের, ২০২৪ অভ্যুত্থানে যারা প্রাণ হারালো, ফারহান ফাইয়াজ, মো. আহাদুন, রাহাত হোসেন, মো. ইফতি, নাঈমা সুলতানা, মুগ্ধ, অথচ পাঁচ মাস না পেরুতেই তোর সমন্বয়ক বলে দিল; “যে লেখক স্বৈরাচারের পক্ষে লিখবে তার কলম ভেঙে ফেলবো।” ভাবতে পারিস কিরূপ স্বৈরাচারী আস্ফালন!! তার মানে, তোরা খালি স্বৈরাচার পাল্টালি। এই হাজার হাজার সন্তানের আত্মত্যাগের কোনো মূল্যই থাকলো না। তাহলে কী লাভ হলো!!”

“আপনেরে কি কমু, হালায় ঘর থ্যেইক্কা বাইরাইলেই মিছিল মিটিং, অবস্থান ধর্মঘট, রাস্তা বন্ধ বিশ মিনিটের রাস্তা পার হইতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বয়া থকো। কারে কি কমু!! সাত কলেজের পোলাগুলার লেখাপড়া, মাদ্রাসা শিক্ষকদের পুলিশের লাঠির হিডা, শীতকালে বুইড়া বুইড়া ষাট-সত্তর বছরের টিচারগুলারে ঠা-া পানি মাইরা ছত্রভঙ্গ। পাহাড়ি পোলাগুলারে বিগত স্বৈরাচারের মতুন হেলমেট পইরা হিডান। এই সব কিয়ের লক্ষণ?? আমিতো কিছু

বুজি না!! কিয়ের মইধ্যে আইয়া পড়লাম রে বাবা!!”

“আরে ভাই তোরা যে বাঙালি হয়ে বাঙালি খুন করছিস!! ক্যেনো। সাত কলেজ প্রায় গত সাত আট বছর ধরে তাদের দাবি জানাচ্ছে এর সমাধান করতে এত গড়িমসি ক্যানো। তোমারই বোন রাস্তায় দাবি জানাতে এসেছে তাকে তুমি “চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হতে দোষ কি তাতে ...” বলে টিটকারি মেরে গান গাইছো, অশালীন অঙ্গভঙ্গি করছো!! লজ্জা করে না। নিজেরা নিজের দেশের লোক মারছো। এ কোন আঈয়ামে জাহালীয়া!!”

“ভাই আপনে আমারে ভুল বুইঝেন না ভাই, আপনে আপনের রম্যরচনার টাইটেলটা বদলায়ে দ্যেন ভাই। ওই ডক্টর. জ্বীভাগো এইডা বদলায়া দ্যেন।”

“ক্যেনো! রম্যরচনার টাইটেলটা বদলাবো ক্যানো? তুইও তো তাহলে সেই রাশিয়ার স্ট্যালিনের মতো তোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু লিখলে জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম এই সবগুলোকেই মেনে নিচ্ছিস?”

“আমি কোই কী, আপনে “ডক্টর. জ্বী-ভাগো”, না লিকখ্যা অন্য কিছু লিখেন। যেমন ধরেন ডক্টর. জ্বীহাগো।”

“আচ্ছা ধর তোর কথা শুনলাম, টাইটেল চেঞ্জ করলাম, কিন্তু ক্যেনো করবো??”

“না কোই কেউ যুদি মনে করে আপনে ডক্টর. জ্বী-ভাগো, বলতে বুঝাইছেন যে, ভাই তাড়াতাড়ি ইলেকশান দাও আর ডাক্তার সাহেব, ভাইগগা যাও, তায়লে তো আপনেরে জেল, জুলুম, ধর-পাকড়, গুম করতে পারে।”

“তাহলে সারাদেশের সব খামখেয়ালিপনা তুই মেনে নিবি??”

“আমি বেশি কিছু কমু না। বিশ্ববিখ্যাত, বরিস পাস্তারনায়েক পর্যন্ত নোবেল প্রাইজ পায়াও সরকারের ভয়ে প্রাইজ আনে নাই। আর আপনে তো হালায় কোন ছারপোকা...”

“তাহলে তুই কী চাস, ২০২৫ সালে নতুন বছরে আমরা আমাদের সবের ব্যক্তিগত জীবন জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারের ইচ্ছায় পুতুল নাচ নাচবো...??”

“আমি আমার কতা কোইছী, মানা না মানা আপনের ব্যাপার ব্যেশ...।”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

back to top